তুরস্কের একে পার্টি ও এরদোয়ানের আসল পরিচয়
লিখেছেন লিখেছেন এরবাকান ১৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:১৯:৪৪ রাত
চিন্তার খোরাক...
একে পার্টি গঠন ও তার ইতিহাস এবং একে পার্টি কী বর্তমান দুনিয়ার ইসলামী আন্দোলনের জন্য আদর্শ???
উসমানী খিলাফাতের পতনের পর তুরস্কের বুকে নেমে আসে ঘোর অমানিশা। ঐ সময়ে মুসলিমরা সীমাহীন জুলুম ও নির্যাতনের মধ্য দিয়ে সময় কাটিয়েছে। আধুনিক তুরস্ক গঠনের নামে ধর্ম নিরপেক্ষ রূপে গড়ে উঠা তুরস্কে মুসলমানদের উপর নেমে আসে অত্যাচারের ষ্টীম রুলার। আল্লাহ্ তায়ালাকে ডাকা, প্রকাশ্যে ইসলামের কথা বলা, আরবীতে আজান দেয়াসহ ইসলামিক কর্মকাণ্ডকে নিষিদ্ধ করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল পিপলস রিপাবলিকান পার্টি(সিএইচপি)।
তাদের এহেন কর্মকাণ্ডে জনগণ রিপাবলিকান পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। শুধুমাত্র আরবিতে আজান দেয়া, মসজিদে আজান দেয়া এবং নিরবিগ্নে কোরআন-হাদিস পড়ার অনুমতি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টিকে তুরস্কের মুসলিমরা বিপুল ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসীন করান।
তুরস্কের এই পরিস্থিতি অতিবাহিত হওয়ার সময় ১৯৬৯ সালে তৎকালীন বড় আলেম-ওলামাদের (উনাদের মধ্যে প্রনিধান যোগ্যঃ জাহিদ কুতকু রহঃ এবং আবদুল আজিজ বাক্কানি) পরামর্শে ও আরও অন্যন্য ইসলামিক সংগঠনের সাহায্যে যুগের শ্রেষ্ঠ ম্যকানিকাল ইঙ্গিনিয়ার প্রফেসর ডঃ নাজমুদ্দিন এরবাকান ‘’মিল্লি গুরুশ’’ তথা National Vision (এর মাধ্যমে তিনি মিল্লাতে ইব্রাহীম বূঝাতেন ) নামে একটা সম্পূর্ণ ইসলামী আরাজনৈতিক সংগঠন গঠন করেন। তুরস্কের মুসলমানদের একান্ত সহযোগিতা ও মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এই আন্দোলনটি খুব কম সম্যের মধ্যে তুরস্কের প্রতিটি শহর-নগর থেকে শুরু করে গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তার সাথে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ইসলামী আন্দোলনের উত্তর উত্তর সাফল্য দেখে মাসন ও ইহুদীশক্তি প্রথমে এরবাকানের সাথে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করে। তাদের প্রস্তাব ছিল তাদের সাথে মিলেমিশে ও তাদের পরামর্শে কাজ করলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন করা হবে। কিন্তু তিনি ইসলামের এই চিহ্নিত দুশমনদের ফাঁদে পা দেননি। তিনি কোরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য তাঁর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্বঘোষিত মাসন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সোলাইমান দেমিরেলের মাধ্যমে মিল্লি নিজাম পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়। আদা্লেত পার্টির প্রধান সোলাইমান দেমিরেল জনগণের কাছে গিয়ে বলে এরবাকানকে ভোট দিবেননা কারণ তিনি ক্ষমতায় আসতে পারবেনই না বরং মাঝখান থেকে বাম্পন্থি রিপাবলিকান পার্টি ক্ষমতায় চলে আসবে এ বলে সে জনগণকে জুজুর ভয় দেখিয়ে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করত।
একে পার্টি গঠনঃ ১৯৯৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এরবাকানকে ক্ষমতাচ্যুত করার সাথে সাথে রেফা পার্টিকেও নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। এরপর তিনি গঠন করেন ফযিলাত পার্টি নামের আরেকটি নতুন পার্টি। এরবাকানের আপসহীনতা ও সকল ব্যাপারে ইসলামকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা এবং বাতিল শক্তিকে কোন রকম ছাড় না দিয়ে চলার কারণে দলের ভিতর থেকে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি তাঁকে অদূরদর্শী এবং দলের সকল সিদ্ধান্তে নেয়ার ব্যাপারে একনায়কের পরিচয় দেন বলে, প্রপাগান্ডা চালাতে শুরু করে এবং দলের ভিতর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
এমতাবস্থায় কোন রকম রাজনৈতিক কর্মসূচী ছাড়া এরদোয়ান আমেরিকায় যাওয়া আসা শুরু করেন। এরদোয়ান ও এর একটি গ্রুপ নিজেদেরকে তরুণ প্রজন্ম হিসেবে এবং নিজেদের নেতৃত্বকে তরুণদের নেতৃত্ব দাবী করে দলের ভিতর থেকে ইসলামিক কর্মসূচীকে কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালায় এবং বর্তমান দুনিয়ার প্রেক্ষাপটে দলের কর্মসূচী নির্ধারণের আহবান জানায়। একসময় যাদের ইসলামী কবিতা আবৃত্তি ও ইসলামের পক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থানের মাধ্যমে বক্তব্য রাখাটাও রেফা পার্টিকে নিষিদ্ধ করার একটি কারণ ছিল, সেই তাদের পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাব আসায় সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ স্তম্ভিত ও সংকিত হয়ে পড়ে। এমনকি তাঁরা এরবাকানের আনুগত্য না করে তাঁরা তাদের নিজেদের মত করে নিজেদের গ্রুপকে পাকাপোক্ত ও শক্তিশালি করার কাজে নিয়োজিত হয়ে পড়ে। ১৪ মে ১৯৯৯ সালে ফযিলাত পার্টির প্রথম কংগ্রেসে নবীন ও প্রবীণ মানে ২ টি গ্রুপ এর জন্ম হয়। নবীনদের মধ্য থেকে বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল্লাহ গুল ৫২১ ভোট ও প্রবীণদের মধ্য থেকে রেজাই কুতান ৬৩৩ ভোট পেয়ে ফযিলাত পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন। এখানে বলা বাহুল্য ১৯৯৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এরবাকানকে ক্ষমতাচ্যুত করার সাথে সাথে রাজনীতি থেকেও আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু যে কারণে রেফা পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয় সে একেই কারণে ফযিলাত পার্টিকেও নিষিদ্ধ করা হয়।
ফযিলাত পার্টির প্রধান হতে না পারা আব্দুল্লাহ গুল, তাঁর বন্ধু রিজেপ তায়্যিপ এরদয়ান , বুলেন্ত আরিন্স, আব্দুল লতিফ সেনের (আব্দুল লতিফ শেনের ২০০৪ সালে একে পার্টি ইয়াহুদিদের দালালি করছে এই কথা বলে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে নতুন দল গথন করেন। লিংক- https://www.youtube.com/watch?v=CCIRyP_4rhM) আরও কতিপয় বিচিশট ফযিলাত পার্টি নিষিদ্ধ করার পর খোলা সাদেত পার্টিতে যোগ দেয়নি। ইসলামের লেবাস তথা ইসলামী আন্দোলনের পরিচয় খুলে ফেলে ১৪ আগস্ট ২০০১ সালে গঠন করেন একে পার্টি। নব গঠিত এ দলটি নিজেদেরকে আধুনিক পার্টি বলে দাবী করে। লিবারেল অর্থনৈতিক সিস্টেমকে গ্রহণ ও লিবারেল ডেমোক্রেসির স্লোগানকে সামনে রেখে তাদের যাত্রা শুরু করে।
এখানে প্রনিধানযোগ্য যে, এরদোআন দল থেকে বের হয়ে হওয়ার সময় বলেছিলেন –
১। আমি আজ থেকে ইসলামি আন্দোলনের আদর্শকে ছুঁড়ে ফেললাম ।
২। ইসরাইল হবে আমাদের কৌশলগত বন্ধুরাষ্ট্র।
৩। ইউরুপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার জন্য আমাদের সকল প্রচেস্টা অব্যাহত থাকবে।
৪। লিবারেলিজম এর ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।
তাদের ক্ষমতায় আসার জন্য যে সকল বিষয় গুলো ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে তাঁর মধ্যে তাঁরা আগে ইসলামী আন্দোলনের লোক ছিল এটা সকলের জানা, রেফা পার্টিকে ক্যু করে নামানোর পর মুসলিমদের উপর জুলুম নেমে আসছিল, তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্তি দিবে, মাদরাসা থেকে পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দিবে, হিজাব পড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া ইত্যাদি কারণে মানুষ আকৃষ্ট হয়ে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে।
যদি একে পার্টি গঠন না হত তাহলে ৪০-৫০% ভোট পেয়ে আবারও ইসলামী দলের ক্ষমতায় আরোহণ করত বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা ।
ক্ষমতায় আরোহণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার জন্য ইউরোপের আদলে একের পর এক আইন পরিবর্তন করতে থাকে।
এর মধ্য উল্লেখযোগ্য হল-
১- বিবাহিত মহিলা যদি যেনা করে এবং তাঁর স্বামী দেখার পরও স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে পারবেনা,
২- শুকরের মাংসকে বাজারজাতের অনুমতি দান,
৩- ফাঁসী নিষিদ্ধসহ আরও অনেক বিতর্কিত আইন-কানুন।
২০০৩ সালে আমেরিকা যখন ইরাকে হামলা করে তখন তুরস্ক আমেরিকাকে ন্যাটোর সদস্য হিসেবে বিমান ঘাটি প্রদান করে। যেখান থেকে আমেরিকা ইরাকে ৪৬৯৬ টি বিমান হামলা করে এটা ইরাক যুদ্ধের সর্বোচ্চ কোন ঘাটি থেকে হামলা। যে হামলায় ২ মিলিয়ন মুসলিম নিহত হয় ইরাকে।
আমেরিকার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পল Wolfowitz তার তুরস্ক সফরে বলেন, ‘’আমরা ইরাক অপারেশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম, এরদোগান আমাদেরকে অপারেশনে সাহস যুগিয়েছিল।’’
প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষকে হত্যাকারী আমেরিকার সেনাবাহিনীকে তায়্যিপ এরদোগান সম্বোধন করেছিলেন এই বলে, ‘’আমরা আশা ও দোয়া করি যে যেসব সাহসী পুরুষ ও নারী ইরাকে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছেন তারা যেন ন্যুনতম ক্ষতির মাধমে যেন দেশে ফিরে যেতে পারেন,এবং ইরাকের সমস্যার যেন খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যায়।‘
(১- https://www.wsj.com/articles/SB104907941058746300
২- https://www.youtube.com/watch?v=39fzdsGsHEE
৩- https://www.youtube.com/watch?v=R9wSpRYaXQo
৪- http://www.aljazeera.com.tr/.../abd-ucaklari-cami-bombaladi
৫- https://www.youtube.com/watch?v=SgIn7NcQtCk )
একটা সময় মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন করে সাজানো এবং আমেরিকার কন্ট্রোলে একটা নতুন মধ্যপ্রাচ্য করা এবং গ্রেট ইসরায়েল প্রকপ্ল বাস্তবায়ন কমিটির প্রেসিডেন্ট করা হয় এরদোগানকে।
সে এই সব কাজে ইসরাইল ও আমেরিকাকে সাহায্য করে এবং সাহায্যের নিদর্শন হিসেবে তাকে Ajc (american Jewish Association) "Man of Profile" পুরস্কার প্রদান করে গ্রেট মিডল ইষ্ট প্রজেক্টের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে দাবী করে এরদোগান বলেন- ’আমেরিকার পরিকপ্লনায় যে গ্রেট মিডল ইষ্ট প্রজেক্ট আছে, দেয়ারবাকির(তুরস্কের একটি জেলার নাম) হল এ প্রজেক্টের একটা তারকা, এটা একটা সেন্টার বা কেন্দ্রবিন্দুও হতে পারে, এটাতে আমাদের সফল হতে হবে।’’ (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ channel D Tek tek program)।
বিগত ১০ বছরের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়
১- মদ্যপায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিবাহ বিচ্ছেদসহ অন্যান্য সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২- ইয়ুদি লবি এবং আমেরিকার পরিকল্পনার আদলে গড়ে উঠা সংগঠনগুলি আরও বহু গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে, ক্যাপিটালিজম প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করেছে, দেশের অর্থনীতি এক্টী গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত।
৩- ইহুদী লবি ও আমেরিকা পরিকল্পনার আদলে গড়ে উঠা সংগঠন গুলো আরও বহুগুণে শক্তিশালী হয়েছে।
৪- তুরস্কের সরকারের ঋণ ২০০২ সালে একে পার্টি ক্ষমতা গ্রহনের পূর্বে ছিল ২৩২ বিলিয়ন ডলার যেটা এখন ৬৮০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। প্রতি ২০১৪ সালে সরকারকে শুদু মাত্র সুদই পরিশোধ করতে হয়েছে ৫০ বিলিয়ন ডলার।
৫- কৃষি ও পশুপালন আজ ধ্বংসের মুখে। যার কারনে ২০১০ ও ২০১২ অরথবছরে তারা ২৫০ বিলিয়ন ডলারের মাংস ও জীবিত পশু আমদানী করেছে। অথচ তুরস্ক আগে মাংস ও পশু রপ্তানী করত।
অর্থনীতি আজ এতটায় বিদেশীদের হাতে চলে গেছে যে বহিরশক্তি আজ সরকারের বিরুদ্ধে অর্থকে একটি অস্র হিসাবে ব্যবহার করছে , দর কষাকষির ক্ষেত্রে সরকারকে আজ তাদের মত করে ব্যবহার করছে।
৬- রাষ্ট্রীয় কাজে অপচয় ইতিহাসের রেকর্ড দখল করেছে।
৭- গুলেন পন্থীদেরকে একচেটিয়া ভাবে রাষ্ট্রের কেন্দ্র স্থল গুলোতে বসানো হয়েছিলো(২০০২-২০১৪ পর্যন্ত মাখামাখি সম্পর্ক ছিলো এরদোগান ও গুলেনের, কিন্তু পরবর্তীতে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে গুলেন পরাজিত হয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ এর ১৫ জুলাই ও এরদোগানকে ক্ষমতা থেকে নামাতে চেয়েছিলো, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যার্থ হয়েছে।)
৮-সর্বত্র দুর্নীতি ক্যান্সার এর মত এক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে । এটা তাদের ভুলের মাশুল।
তবে এসব কিছুর পাশা পাশি তার সরকারের অনেক সফলতাও রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা বাবস্থা ও যোগাযোগ বাবস্থার ক্ষেত্রে তার সরকার বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।যোগাযোগের ক্ষেত্রে রাস্তা ঘাট; বিমানবন্দর; টানেল ; স্পীড ট্রেন সহ অনেক আধুনিক বাবস্থা। আধুনিক সাস্থসেবার জন্য হাসপাতাল; মেডিক্যাল বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপন এবং জনগনের বাসস্থানের সুবাবস্থার জন্য সরকারী বাবস্থাপনায় বাসভবন নির্মাণ করেছে।মাদ্রসার ছাত্রদেরকে পুনরায় বিশ্ব বিদ্যালয়ে (২০১১)ভর্তির সুযোগ করে দিয়ছে। হিজাবের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা (২০১২) তুলে নেওয়া হয়েছে। সকলকে তাদের মর্জি মত কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এটা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। নাজমুদ্দীন্ এরবাকান হোজা (যিনি ওকে লালন পালন করে গড়ে তুলেছেন, ও যখন ১৭-১৮ বছরের যুবক তেমন কিছু ছিলো না, তিনিই ওকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন, ওকে ইস্তানবুলের মেয়রও বানিয়েছিলেন, এরদোগানকে উনার চেয়ে ভালো কে জানবে??) স্পষ্টভাবে এসব বলে দিয়েছেন যে ওরা কীভাবে কি করছে।
(লিংকঃ
১- https://www.youtube.com/watch?v=ZWeM-Bksiew
২-https://www.youtube.com/watch?v=QKpquYLuiZg
৩- https://www.youtube.com/watch?v=VMMKuA_Wxus
ক্ষমতার লোভ মানুষকে অন্ধ করে দেয়। এরবাকান হোজা প্রায় সময়ই বলতেন- "তায়িপ, তুমি যে রাস্তা দিয়ে ঢুকেছো, সে রাস্তায় কেবল ঢুকাই যায় বের হওয়া যায় না।"
একবার এক বক্তব্যে বলেছিলেন- তায়িপ আগে তুই মানুষ হো, মানুষ। (link- https://www.youtube.com/watch?v=3tznhmcciIA )
নাজমুদ্দীন এরবাকান কে?? কি করেছেন এই উম্মাহর জন্য?? তার্কির জন্য?? তা জেনে থাকলে উনার কথার মর্ম বুঝতে পারবেন।
প্রশ্ন থাকতে পারে- এতোক্ষণ এসকল কথা কেন উল্লেখ করলাম???
উত্তরঃ
১- অনেকেই এরদোগানের পদ্ধতিকে সঠিক মনে করেন। ইতিহাস না জেনে থাকলে তাই মনে করতে পারেন। ও ব্যাক্তি হিসেবে কেমন বা ওর উদ্দেশ্য কি সেটা ওর বাবা সমান উস্তাদ নাজমুদ্দীন এরবাকান বলে দিয়ে গেছেন। মসুলমানের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতার তখতে থাকতে পারাটা কি হেকমত??? ভোট পাওয়াটা আমার মুসলিম ভাইদের রক্তের মূল্যের চেয়েও বেশি নাকি???
ক্ষমতাটা কি একজন মহিলার সম্ভ্রমের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি?? আমি ওর বিরোধী নই, আমি ওর সমালোচক। আমি শুধু ইতিহাস তুলে ধরেছি। আর দোয়া করি, আল্লাহ যেন ওকে হেদায়াত দান করেন।
২- বাংলাদেশের দুইজন নেতৃবৃন্দের হত্যার প্রতিবাদ করায়, দু একটা কথা ইসরাঈল আমেরিকাকে বলার মাধ্যমেই কি খলিফা বানানোর হওয়ার জন্য যথেষ্ঠ???
খলিফা কে?? খিলাফাত কী?? খিলাফাতের কাঠামো কি?? এর অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা কি?? সিস্টেম কি?? সে সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে ওকে সেই ভিত্তিতে যাচাই করে এরপর যদি বলেন ও খলিফা, তাহলে ঠিক আছে। এটা আপনাদের উপর।
৩- ইসলাম কখনো বাতিল শক্তির সাথে আপোষ করে নাই। আর যেখানে মুসলমানদের রক্তের প্রশ্ন সেখানে আপোষের 'আ' উচ্চারণেরও সুযোগ নেই, আমার ক্ষমতা যাক আর যাই যাক না কেনো।
( একটা উদাহরণ দেই- মনে করেন আমরা দুই ভাই। দুইজনই দুই এলাকার চেয়ারম্যান। এখন এক প্রভাবশালী এমপি লোক থেকে এসে বললো- "দেখো, আমাদের তোমার ভাইয়ের চেয়ারটা চাই আমার মামাতো বোনের ননদের জামাইয়ের বোনের ছেলের জন্য, ওর মূল্যবান সম্পত্তি চাই এবং কী নাকি এক নতুন সিস্টেম প্রণয়ন করতে চাচ্ছে সেটা নাকি এই এলাকায় আমার ব্যাবসার জন্য হুমকি। তাই আমি ওর বাসায় হামলা করে ওর সিক্রেট নিবো, সাথে ওর মূল্যবান সম্পদ এবং এর জন্য ও মরতেও পারে, এমনকি ওর স্ত্রী, ছেলে মেয়েও। আর যেহেতু আমি যাচ্ছি সেখানে সেজন্য কয়েকটা লাশ পড়তে পারে ফাও ফাও। আমি এক্ষেত্রে তোমার এলাকা ব্যাবহার করবো, ওর বাসায় হামলার প্রস্তুতি ও হামলার জন্য জন্য। যদি না মানো তাহলে আমি আগে তোমার চেয়ার খাবো পরে ওর দিকে যাবো। দেখো তোমার সাথে আমার ঝামেলা নাই, বাধা দিলে তুমি সম্মানের সাথে যে চেয়ারে আজ বসো সেটা থেকেও নামিয়ে দিবো। আমার কথা মেনে নিলে তোমার কোন সমস্যা হবে না, তুমি তোমার এলাকা সম্মানের সাথে শাসন করতে থাকবে, ভালোভাবে থাকবে। সাথে ওর এলাকা থেকে তোমার ব্যাবসায়ি ক্ষেত্রে আগে যে সমস্যা হতো সেটাও দূর হয়ে যাবে।
আমি ভাবলাম- আমার সম্মান, আমার পোস্ট তো থাকছে সাথে এত ভালো অফার!!! ও গেলে যাক গোল্লায়, মরলে মরুক আমার কী?? সাথে আরও দুই তিনটা লাশ পড়ুক আমার আসে যায় না। আমার এলাকায় তো অন্তত হচ্ছে না। আমি তো ভালোই আছি। ও কেন এই লোকের সাথে পাল্লা দিতে গেলো???
আর আমি আমার বন্ধুদের বললাম- আমি যেহেতু এই লোকের মোকাবেলা করতে পারবোনা, তাই ওর সাথে আপোষ করে নেই, ওর শর্ত মেনে নেই। পরবর্তীতে যখন আমার হাতে ক্ষমতা পুরোপুরি কুক্ষিগত হবে তখন আমি এর প্রতিশোধ নিব। এটা হেকমত কিন্তু
বিষয়: বিবিধ
১৭১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন