গাজার ব্যাপারে শুধু মুখের কথা নয় বাস্তব মুখী পদক্ষেপ নিন এরদগান এর প্রতি সাদেত পার্টির আহ্বান
লিখেছেন লিখেছেন এরবাকান ২১ জুলাই, ২০১৪, ১০:২৪:৩২ রাত
ইসরাইলী সেনাবাহিনী প্রধান মন্ত্রী নেতানিয়াহুর নির্দেশে ১০দিন বিমান হামলার পর গত কয়েকদিন ধরে স্থল হামলা শুরু করছে। তারা তাদের এই হামলা এখন শুধু আর আকাশ পথেই নয় স্থল পথেও শুরু হয়েছে।
ইসরাইল তার জন্মের পর থেকেই নিরস্র গাজা বাসীর উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতি রমযানে তাদের এই হামলা তীব্র থেকে তিব্রতর হচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মুসলিম দেশের সরকার প্রধান ও রাষ্ট্র প্রধান গন ভীরুতা ও মেরুদণ্ড হীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে।যা আমাদের জন্য খুবি লজ্জা জনক। ইসরাইল নিঃসন্দেহে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। বছরের পর বছর ধরে ইসরাইল তার দখল কৃত ভুমিতে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে তাদের এই জুলুমের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফিলিস্তিন আমাদের থেকে দখল কৃতভুমি। সকল শঙ্কা বাদ দিয়ে আমাদের উচিত আমাদের দেশ শত্রু আক্রান্ত হলে আমরা যেভাবে জাপিয়ে পড়ি তেমনি ভাবে ফিলিস্তিন কে রক্ষা করায় আমাদের যাপিয়ে পড়া সময়ের দাবি।
তুরস্কের কর্তব্য হল শুধু মাত্র কথায় নয় ফিলিস্তিনের পাশে দাড়িয়ে ফিলিস্তিন কে মুক্ত করা। এবং বিশ্ব জনমত তৈরি করা।
প্রধান মন্ত্রী এরদয়ান তার এক বক্তৃতায় বলেছিলেন আমাদের যতদিন প্রান আছে ততদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিন এর মুক্তি সংগ্রামে ভুমিকা রেখে যাব। কারন যে জুলুম দেখেও চুপ করে থাকে সেও এই জুলুম এর অংশিদার। শুধু মাত্র এরদয়ান নন অনেকেই এরকম কথা বলে যাচ্ছেন দিনের পর দিন কিন্তু ফিলিস্তিনের ভাগ্যাকাশে কোন সুবহে সাদিক দেখা যায়নি।
হ্যাঁ আমরা জানি জুলুম এর বিরুদ্ধে কথা না বলাও জুলুম এর অংশিদার হওয়া। কিন্তু আপনি যে অন্য পথে সেই জুলুম এর অংশীদার সে বিষয়টি আমরা ভুলবো কিভাবে? আপনি আপনার ১২ বছরের শাসন আমলে ইসরাইল এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন নি। তাদের সাথে সকল ধরনের বাবসা নিরধিদায় চালিয়ে যাচ্ছেন। তুরস্কের ইতিহাসে ইসরাইল এর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্কে আপনিই রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। এবং এই সম্পর্ক উত্তুরুত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কুর্দিস্তানের সরকারের মাধ্যমে তুরস্কের উপর দিয়ে তেল বিক্রি করার অনুমতি আপনি দিয়েছেন। আপনি ইসরাইল এ গিয়েছেন কিন্তু গাজা সফর করবেন বলে পরে আর সফর করেননি। ইসরাইল এর প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেসকে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিয়ে এমপিদের কে জোর করে তার পক্ষে করতালি দিয়েছেন। ২০০৮ সালে ইসরাইল যখন operaation cast lead নামে হামলা চালিয়েছিল তখন গাজা কে সাহায্য কল্পে উত্তোলন কৃত ৭০ মিলিয়ন লিরা ইসরাইল চায়নি বলে গাজা সরকারের কাছে হস্তান্তর করেননি। এবং এই টাকা ভাকিফ ব্যাংক ও ফাইনান্স ব্যাংক এ রেখে এমন সিস্টেম করেছেন যাতে এটা পরবর্তীতে আর হস্তান্তর করা না যায়।
আপনার সময়ে তুরস্ক- ইসরাইল বাণিজ্য ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রেকর্ড করেছে। তুরস্কের কোন সরকার যেটার অনুমোদন করেনি ২০১০ সালের OECD তে ইসরাইল এর অন্তর্ভুক্তির পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
আপনার শাসনামলে মানাভগাঁট নদীর পানি ইসরাইল এ বিক্রয়ের ব্যাপারে চুক্তি করেছেন।
ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনের উপর গণহত্যা চালানোর পরও আরিয়েল শারন কে আপনি বলছেন anti-semitism মানবতার বিরুদ্ধে এক অপরাধ।
ইরানের পরমানু প্রকল্পকে শুধুমাত্র ইরান এর জন্য নয় গোটা দুনিয়ার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন।
জাতীয় সংসদে শিমন পেরেস এর বক্তব্য ‘’ মধ্য প্রাচ্চে তুরস্ক আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা খেলার গুটি ’’ এই কথাকেও নিরধিদায় মেনে নিয়েছেন।
২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে আমেরিকাতে গিয়ে profile of courage পুরুস্কার গ্রহন কারী একমাত্র মুসলিম আপনি।
ইসরাইল এ সফর এর ২ মাস পুরবে আপনার দলের এম পি ও বর্তমান সংস্কৃতি মন্ত্রী ওমের চেলিক এর জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্য ‘’ফিলিস্তিনের সন্ত্রাস ইসরাইল এর দমন‘’ এই বাক্কের কোন প্রতিবাদ আপনি করেন নি।
সিরিয়া সিমান্তে মাইন ট্রাক গুলুকে ইসরাইলী কোম্পানির হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করায় তাদের কে ইয়াহুদি বিরোধী বলে অভিহিত করে তাদের কে অভিযুক্ত করেছেন।
কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে ইসরাইল এর পণ্য বিরোধী কোন প্রচার না চালাতে পারে এই জন্য শিক্ষা মন্ত্রী হুসেইন চেলিক করতিক ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী সকল প্রতিষ্ঠানে প্রজ্ঞাপন জারি করিয়েছিলেন।
ইসরাইল এর নিরাপত্তা রাডার এর নিরাপত্তার সকল দায়িত্ব আপনি গ্রহন করেছিলেন।
২০১২ সালের ডিসেম্বার মাসে ইসরাইল কে NATO র সদস্য হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
আপনার সহকারি প্রধানমন্ত্রী আলি বাবাজান বলেছেন আমরা ইসরাইল এর বাবসায়িক অংশীদার।
আন্তর্জাতিক শক্তি কমিশন যাতে ইসরাইলের পরমানু স্থাপনার ব্যাপারে কথা না বলে এই ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিকভাবে ইসরাইল এর পক্ষাবলম্বন করেছিলেন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগন
উপরে যে কথা গুলু বললাম এমন আরও অনেক বিষয় এ ঘটেছে তাদের শাসনামলে। আর এই সকল কারনেই ইসরাইল মধ্য প্রাচ্চে শক্তিধর হয়ে তার যুলুম নির্যাতন কে বহুমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে।
আর তার শক্তিকে কমাতে হলে শুধু মাত্র কথার মাধ্যমে নয় কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের জাতি কথায় নয় কাজে প্রমান দেখতে চায়। দয়া করে জাতিকে আর প্রতারিত করবেন না। মারিফাত হোটেল এর লবিতে ওয়ান মিনিট বলে পরে আবার বলা যে এটা modarator কে বলেছিলাম এই কথা বলে দুঃখ প্রকাশ করলে চলবে না। কার্যকরী উদ্যোগ নিয়ে ইসরাইল কে থামানোর সকল বাবস্থা গ্রহন করতে হবে।
আপনারা ইসরাইল কে অভিসম্পাত করছেন তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন এটা অবশ্যই গুরুত্ব পূর্ণ কিন্তু রাষ্ট্রের মাধ্যমে সেনা বাহিনী কিংবা কূটনৈতিক অভিযান পরিচালন করা এখন সময়ের দাবি।
ইসরাইল এর বিরুদ্ধে অবশ্যই তুরস্ককে আন্তর্জাতিক প্রচারনা চালাতে হবে। আন্তর্জাতিক সংগঠন গুলোকে অনতিবিলম্বে এই সমস্যা সমাধানে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।
ইসরাইল লবির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও জোরালো ভুমিকা পালনে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।
ইসরাইল শক্তিকে ভয় পায় তাই ইসরাইল এর বিপক্ষে সামরিক শক্তি দাড় করানো।
ইসরাইল এর সকল কূটনীতিক কে অবিলম্বে বহিস্কার করতে হবে। ইসরাইল এর সাথে সামরিক ; বাণিজ্যিক ; রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সকল সম্পর্ক অবিলম্বে ছিন্ন করতে হবে। great middle east project বাস্তবায়ন এর পথে তুরস্ককে বড় ভুমিকা পালন করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১২২৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন