সুন্নাতে রাসূলিল্লাহ সা.
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম ১৫ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:০৯:০১ রাত
ভালো ব্যবহারও ইবাদাত
হযরত হুযায়ফা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম (সা) বলেছেন : তোমরা অপরকে দেখে কাজ করতে অভ্যস্ত হইও না এভাবে যে, তোমরা বলবে : অপর লোক ভাল কাজ ও ভাল ব্যবহার করলে আমরাও ভাল কাজ, ভাল ব্যবহার করব, অপর লোক যদি জুলুমের নীতি গ্রহণ করে, তবে আমরাও জুলুম করতে শুরু করব। বরং তোমরা নিজেদের মনকে এদিক দিয়ে দৃঢ় ও শক্ত করে নাও যে, অপর লোকেরা যদি অনুগ্রহ ও ভাল ব্যবহার করে, তবে তোমরাও তা করবে, আর অপর লোকেরা খারাপ ব্যবহার বা জুলুম করলেও তোমরা জুলুম ও খারাপ কাজ কখনো করবে না। -তিরমিযী
ভালো মানুষের কাজ
সাধারণ লোকদের প্রতি দয়া অনুগ্রহ করা মানুষ হিসাবেই কর্তব্য। এ ব্যাপারে কোন শর্ত আরোপ করা যায় না। দুনিয়ার লোকেরা পারস্পরিক দয়া অনুগ্রহ ও ভাল ব্যবহার করুক আর না-ই করুক, ইনসাফ করুক কিংবা জুলুম করুক, উভয় অবস্থায় ইহ্সান করা, ভাল ব্যবহার করা, লোকদের হক আদায় করা, সর্বক্ষেত্রে ইনসাফ করা ঈমানদার লোকদের একমাত্র কর্তব্য। কেননা কুরআনে বলা হয়েছে, তোমরা মন্দের জবাব ভালোর দ্বারা দাও, তাহলে তোমার শত্রুও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরূপে পরিণত হবে।
ভালো মানুষের খুবই অভাব
দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি অভাব হলো ভালো মানুষের। ভালো মানুষ হতে হলে ভালো কাজ করতে হবে। ভালো কাজ করার জন্য ভালো জ্ঞানের প্রয়োজন। দুনিয়ায় অনেক ডিগ্রি অর্জন করার সাথে সাথে আল্লাহর দেয়া কুরআন ও রাসূলের (সা) হাদিসসহ বিভিন্ন ইসলামী বই পড়ে আল্লাহর পরিচয় লাভ করতে পারলে ভালো মানুষ হওয়া যায়। অন্যথায় হয়তো ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব কিন্তু ভালোমানুষ হওয়া সম্ভব নয় । ভালো মানুষ না হলে সমাজে শুধু নিন্দিত হতে হয়।
মূর্খদের এড়িয়ে চলা
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উয়াইনা ইবনে হিসন উমার ইবনুল খাত্তাব (রা)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, হে খাত্তাবের পুত্র! আল্লাহর শপথ, আপনি আমাদের বেশি দান করেন না এবং আমাদের ব্যাপারে ইনসাফের সাথে ফয়সালা করেন না। এ কথায় উমার (রা) ক্রোধান্বিত হলেন, এমনকি তাকে আক্রমণ করতে উদ্যত হলেন। তখন (হিস্ন-এর ভ্রাতুষ্পুত্র) হুর ইবনে কায়েস (রা) বলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবী (সা)কে বলেছেন : “ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন করো, ভালো কাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদের এড়িয়ে চলো” (সূরা আল আরাফ : ১৯৯)। রাবী বলেন, আল্লাহর শপথ! এ আয়াত শুনে উমার (রা) আর অগ্রসর হননি। তিনি আল্লাহর কিতাবের নির্দেশ শুনামাত্রই অনুগত হয়ে যেতেন। (বুখারী : ৪২৮১ ও ৬৭৭৬)
ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন
ক্ষমা ও উদারতা মানুষের সবচেয়ে বড় ধরনের কুরবানি। মানুষকে ক্ষমা করতে সকলে পারে না। অধিক রাগের সময় ক্ষমা তো দূরের কথা, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন। এ অবস্থায় যদি কেউ ক্ষমা করতে পারে তবে সেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষের অন্তর্ভুক্ত। আর অন্যকে ছাড় দেয়া বা উদারতা দেখানো মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
ভালো কাজের নির্দেশ
ভালো কাজের নির্দেশ দেয়া আল্লাহর নির্ধারিত ফরজ। প্রত্যেক মানুষ পরস্পর ভালো কাজের নির্দেশ দেবে এবং ভালো কাজের জন্য পরস্পরকে উৎসাহিত করবে। একজন খারাপ লোকও যদি ভালো কাজের নির্দেশ দেয় এক্ষেত্রে দোষের কিছু নেই। কেননা ভালো কাজ করা ও নির্দেশ দেয়া উভয়টিই ফরজ। নির্দেশ দিয়ে সেতো অন্তত একটি ফরজ আদায় করলো। পরবর্তীতে দু'টোই করবে।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
১০১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন