শান্তি চুক্তি এবং আমার শৈশব...(শেষ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন কেলিফোরনিয়া ০৮ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:২২:৫৭ রাত
রবিন্দ্রনাথ কোন এক প্রসশঙ্গে বলেছিলেন
"৭ কোটি জনতার মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙ্গালি করে, মানুষ করনি।"
রবীন্দ্রনাথ যখন বেঁচে ছিলেন, তিনি বাঙ্গালি ছিলেন কিন্তু বাংলাদেশী ছিলেন না। ১৯৭১ এ চাষার ছেলেরা একটা পতাকার সত্ত্বাধিকারী হয়েছে। নিজেদের একটা মানচিত্র পেয়েছে। সেই সবুজ মানচিত্রে বাস করে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ,খ্রিস্টান। সবুজ সুতয় গাঁথা একটা পরিবার।
রবীন্দ্রনাথ আজ বেঁচে থাকলে তাঁকে বলতাম
"১৬ কোটি জনতার মুগ্ধ জননী, ধন্য করেছো । বাঙ্গালির চেয়ে বড় পরিচয়, হয়েছি বাংলাদেশী।"
বাংলাদেশী জাতিয়তা বোধের মাঝে বেঁচে থাকতে পারে হাজারো ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম , বর্ন। শুধু মাত্র একটি শ্লোগান "জয় বাংলা " দিয়ে অন্য ভাষা ভাষী দের প্রতারিত করা সম্ভব। দেশ আমাদের একটাই বাংলাদেশ। যারা বিদেশী প্রভুদের ডলারের গন্ধে নিজের স্বকীয়তা কে বিক্রি করতে চায়, নিজেদের পরিচয় গোপন করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়। তাদের এখনই সাবধান হওয়া উচিৎ।
২রা ডিসেম্বর 1997 সালের শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন এর লক্ষে ১২,২২২ টি পরিবার কে মাথা পিছু ৫০,০০০ টাকা নগদ আনুদান সহ পুনর্বাসনের বেবস্থা করা হয়। শুধু মাত্র নগদ টাকার হিসাব অনুযায়ী আনুদান মূল্য দাড়ায় ৬,১১,১০,০০০ (ছয় কোটি এগার লাখ দশ হাজার) টাকা। ৭০৫ জন কে পুলিশের চাকরি সহ সরকারের বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়া হয়। আমার প্রশ্ন হোল চাকরির পদ গুলো মোট ১৩ টি উপজাতি নৃগোষ্ঠীর মধ্যে কি অনুপাতে চাকরি বণ্টিত হয়েছে? ত্রিপুরা থেকে ১২,২২২ টি পরিবারের মধ্যে কতগুল চাকমা, মারমা, মরং, তঞ্ছঙ্গা, ইত্যাদি উপজাতি নৃগোষ্ঠী পরিবার ছিল তার প্রকৃত পরিসংখ্যান জাতি জানতে চায়? সরকারি উনিভার্সিটি গুলতে উপজাতি কোটা শুবিধা পর্যালোচনা করলে ( মানব উন্নয়ন রেখা টানলে) দেখা যাবে , চুক্তির ফায়দা শুধু চাকমারা পাচ্ছে। আমরা, শান্তি চুক্তি না বলে চাকমা অধিকার চুক্তি বলতে পারি এটাকে। বাংলাদেশের সিলেট, টাঙ্গাইল ও রাজশাহীতেও কিছু উপজাতি আছে। তাদের কে নিয়ে সরকারের কিছু করা উচিৎ। বিশেষ করে চাকরি, পড়া লেখার সুযোগ শুবিধার ক্ষেত্রে তাদের কেও একই কোটার অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সারা বিশ্বে শান্তির দূত হিসেবে পরিচিত। পাহাড়ে যারা সেনাবাহিনী কে প্রতিদ্বন্দ্বী আথবা অর্বাচীন মনে করে, তাদের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করা উচিৎ। দেশের অখণ্ডতা রক্ষা এবং দেশ প্রেম যার আছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা ছাউনি নিয়ে এলার্জি থাকার কথা না। কিন্তু উগ্র শান্তি বাহিনী এবং কিছু প্রগতিশীল গন মাধ্যমের এই বিষয়ে যথেষ্ট চুলকানি আছে। আমদের ভুলে যাওয়া উচিৎ না, চুক্তির মাধ্যমে শান্তি বাহিনীর বিনাশ হয়নি। তারা শুধু ইন্ডিয়া থেকে আনা পুরাতন অস্ত্র গুলো জমা দিয়েছে, ট্রেনিং জমা দেয়নি। সেনা ছাওনি গুলি উঠিয়ে না দিলে হয়ত বাঙ্গালি/ পাহাড়ি বিরোধের জের ধরে আজ এত হানা-হানি হত না। এই হতা হতের জন্য শান্তি বাহিনী কে সকল দায় ভার নেয়া উচিৎ।
শান্তি চুক্তি হবার পর এপ্রিল ২০১২ পর্যন্ত ৫১৭ জন নিহত। ৮৭৭ জন আহত, আর অপহৃত হয়েছে ৯৫৯ জন। তাহলে,মোট খতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩৫৩ জন। শান্তি চুক্তির কি অর্থ দাঁড়ালো? যারা আহত কিংবা নিহত হয়েছে তারা সবাই বাংলাদেশের। বাংলাদেশেরই কোন না কোন পরিবারের সদস্য তারা। পাহাড়ি/ বাঙ্গালির চাইতে একজন বাংলাদেশীর হতা হত হবার খবর, আমাদের বেশী পীড়িত করে। শান্তি বাহিনী এই একটা ক্ষেত্রে সফল। তারা পাহাড়ের মানুষ গুলু কে বাংলাদেশী তো বানাতে পারেনি,উলটো পাহাড়ের সহজ সরল মানুষ গুলকে উপজাতি থেকে রুপান্তরিত করে আদিবাসী বানাতে চাচ্ছে। আদিবাসী দাবি করার মাধ্যমে তারা তাদের জাতি সত্তার মানচিত্র বদলে দিতে চাচ্ছে। শান্তি বাহিনী কে বুঝা উচিৎ, অস্ত্র দিয়ে ভাই ভাইয়ের বুকে গুলি চালাতে পারবে। ইতিহাস বদলানো যাবে না। পাহাড়ে স্বায়ত্ত শাসনের অলিক স্বপ্ন না দেখে, সুন্দুর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখা উচিৎ আপনাদের। হোক উপজাতি ,হোক তারা বাঙ্গালি তারা সবাই আমাদের ভাই, বোন। আমরা সবাই বাংলাদেশী। বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ গুলোতে আমরা এক সাথে পড়ি। স্কুলের এসেম্বলিতে আমরা লাল সবুজের পতাকার নিচে একটি শপথ গ্রহন করি। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি আর বিদেশী পরাশক্তির উশকানি উপেক্ষা করে জন সংহতি সমিতির বিলোপ সাধন করার উদ্যোগ, শিক্ষিত পাহাড়ের মানুষ কে নেওয়া উচিৎ। কারণ, জনসংহতি সমিতি একটি অগনতান্ত্রিক সংগঠন।
জন সংহতি সমিতির সন্ত্রাসী সংগঠন 'শান্তি বাহিনী' নিয়ে কিছু প্রাশঙ্গিক প্রশ্ন দিয়ে আজকের আলোচনা শেষ করছি।
* জন সংহতি সমিতি (মেনে নিলাম)এটি একটি উপজাতিদের অধিকার রক্ষা এবং আদয়ের সংগঠন। যে কোন সমিতি পরিচালিত হয় গনতান্ত্রিক ভাবে। শন্তু লারমা কতবছর ধরে এই সমিতির প্রধান পদ টি ধরে আছেন? এই সমিতির গঠনন্তন্ত্র কি? জন সংহতি সমিতির আর্থিক ফান্ড সংগ্রহ এবং এর ব্যয় বিবরনি সরকারের কাছে অওাকিব হাল আছে কি? এটি কি মুনাফা ভোগী না অমুনাফা ভোগী প্রথিষঠান?
*এই সমিতির পরিচালনা পর্ষদে চাকমা ছাড়া আর অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায়ের মাঝে কি ভাবে পদ বণ্টিত হয়েছে? পরিচালনা পরশদের মেয়াদ কাল কত?
* সমিতর কি কি অঙ্গ সংগঠন আছে? এগুলোর সঠিক তথ্য সরকারে কাছে প্রদানে তারা কতটুকু স্বচ্ছ?
এই প্রশ্ন গুলো শুধু আমর না, এই প্রশ্ন সারা বাংলাদেশের মানুষের। এই প্রশ্ন চাকমা ব্যতিত অন্য সকল নৃগোষ্ঠী গুলর।
আলোচনার সমাপ্তি টানের আগে একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় ধর্ম ,বর্ন-গোত্র নির্বিষেশে আমরা সকল বাংলাদেশী এক ছাতার নীচে দাঁড়াবো। সাংবিধানিক ভাবে আদিবাসী হবার দাবিতে গোপন দুরভিসন্ধি স্বাথ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিষয়: রাজনীতি
১৫৫৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সঠিক কথাগুলোই বলেছেন। ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগ্লো...
মন্তব্য করতে লগইন করুন