বানচোত! তুই দায়ী !! জি আপনাকেই বলছি !!
লিখেছেন লিখেছেন মানসুর ২৫ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:৫১:৫৫ সকাল
না। ভুল দেখছেন না। আপনাকেই। যিনি এই লেখাটা পড়তাছেন। না , ভুল পড়তাছেন না। আপনাকেই গালি দিলাম ।
কি করবেন ? কেস করবেন ? ৫৭ ধারায় ঢুকিয়ে ৭ বছর ? ঢুকান। সেইটাই পারবেন। এর বেশি কি করার মুরোদ আছে, আপনার ? ফুহ। আমার গোপন চুল।
ভদ্রতা বজায় রাখছি না ? বংশের অমর্যাদা করছি ?? মরুক, না আপনার বোন, মা , সন্তান কংক্রিট চাপা পরে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু । তখন আপনার মুখের গালি ভিডিও করে রাখতাম। দেখতাম এর থেকে আরো কি সুন্দর গালি আসতো।
আমি আবার বলছি। গার্মেন্টস মালিকদের জন্যে নয়। আপনার অপরাধে ধ্বসে পরেছিল রানা প্লাজার কংক্রিট, যাতে মারা গেছিল ১২০০ শ্রমিক। গার্মেন্টস মালিকদের শুধু শুধু দোষ দিচ্ছেন । আপ্নিও দায়ী। ইয়েস। আপনি।
চেতে যাচ্ছেন ? কেন আপনাকে দায়ী করছি।
আসেন দেখি কেন আপনি দায়ী।
প্রথমে দেখি, কেন ঘটছে রানা প্লাজার বিল্ডিং ধ্বস।
রানা প্লাজার ধ্বসে পরার পরে, অনেক স্টাডি হইছে। সেই গুলোতে একটাই কারণ আসছে, সেইটা হইলো রানা প্লাজার প্রতিটা ফ্লোরে, বিশাল বিশাল জেনারেটর তোলা হইছিল। কারেন্ট চলে গেলে এই জেনারেটর গুলো, যখন চালু হইতো তখন এক সাথে এত গুলো ফ্লোরে যখন জেনারেটর গুলো চলতো, তখন সেই জেনারেটর এর কাঁপুনিতে বিল্ডিং এর কলাম এবং বিম গুলো ধীরে ধীরে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। এইটাই কারণ, রানা প্লাজা ধ্বসে পরে ১২০০ জন বা তদুরধ মানুষের মৃত্যুর।
তো এই রানা প্লাজায়, সোহেল রানা কিভাবে এই জেনারেটর তুলতে পারলো ? যা বিল্ডিং কোডের খুব কড়া ভায়োলেশন। গার্মেন্ট সহ যে কোন ফ্যাক্টরি করতে বাংলাদেশে ২৪ টা লাইসেন্স লাগে, সেই গুলো কোন ক্ষমতার বদলে সোহেল রানা পাইলো ?
আমরা জানি, সোহেল রানার কাছের ব্যক্তি হচ্ছে মুরাদ জং। যে একজন এমপি। এই এমপি হচ্ছে সরকার। এবং এই সরকারের কাছে থাকার ক্ষমতার বদলেই সোহেল রানার বিল্ডিয়ের ফ্লোরে ফ্লোরে জেনারেটার ওঠার পরেও কেউ তারা বাঁধা দেয় নাই। বরং, ইউএনও নিজে ছুটে গিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করে আসছে।
আমরা তো জানি তাই না ? তাইলে এই সরকারের ক্ষমতার উৎস কি ? জনগণ। আর আপনি কি? জনগণ। তাইলে, সোহেল রানার ক্ষমতার উৎস মুরাদ জং। আর মুরাদ জংএর ক্ষমতার উৎস আপনে, পাবলিক। জনগণ। এখন যেই ক্ষমতার বদলে রানা দুনিয়ার সকল নিয়ম নীতি ভেঙ্গে, এই অবৈধ বিল্ডিং এ , ৭ তলায় সাত টা জেনারটার বসাইল, সেইটা আপনার দেয়া।
আপনি এদেরকে যা ইচ্ছা টা করার লাইসেন্স দিছেন। জ্বি, আপনেই দিছেন।
আপনার ক্ষমতা বলেই, ইউএনও আগের দিন গিয়া বলে আসছিল, বিল্ডিং ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই। সেই লাইসেন্স পাওয়ার পরেই, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গুলো চিন্তা করছে, কোন সমস্যা নাই। ইউ এন ও যদি না বলতো, বা ইউএনও যদি বলতো, এই বিল্ডিং রিস্কি, তাইলে কি কোন গার্মেন্টস মালিকের বাপ এর সাধ্য থাকত সেই বিল্ডিং এর ফ্যাক্টরি চালানোর ?
না। থাকত না। এই ইউএনও, যে কোন ইঞ্জিনিয়ার না, যার বলার কোন এখতিয়ার না কোন বিল্ডিং সেফ কি সেফ না , সে কেন গিয়ে বলছে বিল্ডিং ঠিক আছে, এবং এর ফলে, বিল্ডিং ধ্বসে যাওয়াতে এই ১২০০ মানুষ মারা গ্যাছে ? বলছে কারণ, রানা এমপি মুরাদ জং এর বন্ধু। হয়ত দেখেন, এই এমপি মুরাদ জং নিজেই এই ইউএনও কে পোস্টিং করাই আনছে সাভারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে রিকুয়েস্ট করে ।
সোহেল রানা ছিল, মুরাদ জং এর ডান হাত।মুরাদ জং এর কাচরা কাজ গুলো করতো সোহেল রানা। এই মুরাদ জং হচ্ছে সোহেল রানার ক্ষমতার উৎস , যেই ক্ষমতার বলে, সোহেল রানার জন্যে ইউএনও এত গুলো মানুষকে মারতে দ্বিধা করে নাই ।
এই এমপি সোহেল এর ক্ষমতার উৎস কি ? আপনি । জি। পাবলিক, ম্যান্দা মারা জনগণ। এবং আপনি যাকে ক্ষমতা দিছেন, তার ক্ষমতার অপব্যবহারের দুর্নীতির অন্যায়ের কোন প্রতিকার আপনি চান নাই। এই যে সোহেল রানা আর মুরাদ জং রানা প্লাজা ধ্বসে যাওয়ার পরে, তাদের নিয়ে অনেক প্রতিবেধন বের হইছে। তারা ভুমি দস্যু। তারা ঝুট ব্যবসার মালিক।
আপনি যাকে ক্ষমতায় বসাইছেন, সেই হইলো দস্যু, গুন্ডা, লুটেরা বদমাশ – আর এর দায় আপনি নিবেন না ? এতো সোজা ?
এবং রানা প্লাজার বিল্ডিং ধ্বসে যখন ১২০০ জন মারা গেল, তার পরে জানা সত্ত্বেও আপনি কি খোজ করছেন, এই এই ইউএনও এর কি বিচার হইছে নাকি ? না হয় নাই। তার হয়ত পোস্টিং হইছে। রাঙ্গামাটি আমি জানিনা। ক্যান রাঙ্গামাটির মানুষেরা মানুষ না ? এই ধরনের হত্যাকারীর সহযোগীকে ক্যান, এই দেশের আইন বিচার করতে পারেনা ? আপনি কি তার জন্যে সরকারকে চাপ দিছেন ?
আপনি তো বলতাছেন, জনগন ক্ষমতার উৎস। আপনার সংবিধান সেইটা বলে। এই সংবিধান নিয়া তো আপনি গলা ফাটাই ফেলতাছেন। তাইলে আপনার বিচার কেন হবেনা, ক্ষমতার ঠিক মত ব্যবহার না করার জন্যে ?
এই যে সোহেল রানা এবং মুরাদ জং।যার ক্ষমতার উৎস বলে, সোহেল রানা এই ধরনের একটা বিল্ডিং এ ৭ টা ফ্লোরে জেনারেটর তুলতে পারে।
এই যে রানার প্লাজার পরে, রিপোর্ট। মুরাদ জং সাভারের গডফাদার। মুরাদ জং সাভারের জুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। মুরাদ জং জমি দখল করে প্লট বানাচ্ছে। সাভারের আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর হতে।
http://www.dhakatribune.com/crime/2013/apr/29/murad-%E2%80%9Ceverything%E2%80%9D-savar
তারপর এই যে ছবি, মুরাদ জং ক্ষমতার শীর্ষ কাতারে
এই যে মুরাদ জং, ভারতের প্রাইম মিনিস্টারের এর সাথে।
এর ক্ষমতার উৎস কি ?
আপনি স্যার। আপনে।
আপনেই এদেরকে বসাইছে। আপনিই তাদের বিচার চান নাই।
সোহেল রানা কে ? সে তো একটা গ্যাং লিডার মাত্র। আওয়ামী লিগ তারে দরকার মত টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলে দিবে
এদেরকে সহ্য করা এবং এদেরকে বিনা বাধায়, তাদের আইন শৃঙ্খলা সহ সকল কিছুর কর্তা বনে যাওয়ার পরেও, আপনে তাদের মেনে গেছেন। তাকে আপনি খমতায়ন করছেন। এখন তারা যদি সেই ক্ষমতার বলে ১২০০ মানুষকে হত্যা করে, তাইলে আপনি কেন দায়ী হবেন না ?
=======================================================================
রানা প্লাজার ঘটনা এমন কোন বিশাল ঘটনা না। এই দেশে রকম মানুষ বেশুমার মরে।
দেয়াল ভেঙ্গে মরে, এক্সিডেন্টে মরে, লঞ্চ ডুবিতে মরে , বিনা চিকিৎসায়, ভুল চিকিৎসায় মরে – এই দেশে সব চেয়ে সস্তা জিনিষ মানুষের প্রান। এইটাই ডিমান্ড এবং সাপ্লাই থিওরি। আমাদের দেশের ৫০০ ৬০০ মানুষের মরার ঘটনা এখন অন্যান্য দেশে নিউজে আসেনা, যেই খানে আম্রিকাতে ১০ জন মানুষ মারা গেলে প্রথম আলো পর্যন্ত খবর হয়ে যায়। কিন্তু রানা প্লাজা মানুষকে নাড়া দিছে। সারা বিশ্বের মানুষকে নাড়া দিছে। কিন্তু, আমাদের নেতাদের কাছে দুর্ঘটনা হইলো, , আল্লার মাল এই রকম আল্লাহ উঠায় নিয়া যাওয়া , তাদের কিছু করার নাই
কিন্তু, এইটা নিয়ে আমি আপনি বেশী কথা বলি, কারন এইটা ছিল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ছিল।
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে যদি আগুন লাগে, বা মানুষ মারা যায় তাইলে সেইটা নিয়া একটা ওয়েস্টার্ন লিবারেল পলিটিক্স আছে, সেই পলিটিক্স আবার আমাদের বাম পন্থিরা পছন্দ করে, এবং মেডিয়াতে বাম ঘরানার লোক বেশী। এই পলিটিক্স এর কারণে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলে কিছু নাড়াচাড়া হয়। আমরা এখনো তাজরিনের কথা বলি। কিন্তু নিমতলীর ১১০ জন মানুষের মৃত্যুর কথা বলিনা। এই গুলো আমাদের মধ্যবিত্ত রিএকসনারী পলিটিক্স । এই গুলোতে কোন সততা নাই। এই জন্যে আমাদের এক একটা ঘটনায় এক এক দিন,দুইটা গরম গরম আলাপেই সার হয়। তাই আমাদের রিএকশন ই সার, একশনের দরকার পরেনা।
আমরা মুলত এই সব শ্রমিকের মৃত্যুতে মোটেও কেয়ার করিনা। এই জন্যেই, রানা প্লাজা ধ্বসে যাওয়ার এক বছরেও সরকার ক্ষতিপূরণ না দিয়ে থাকতে পারে, কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহে মৃত অফিসারদেরটা দিয়ে দেয়।
আমরা এইগুলো ফলো আপ করিনা, কারণ আমরা কেয়ার করিনা। আমরা পলিটিক্স করি। গার্মেন্টস ওয়ালাদের দুইটা গালি দিয়া নিজেরে সাধু ভাবতে পছদ করি । কিন্তু এই গারমেন্ট ওয়ালারা আমাদের সমাজের থেকেই উঠে আসে। তারা সমাজের কাছ থেকেই শিখে যে, গ্রামের মেয়েদেরকে ২৪ ঘণ্টা খাটাইয়া পেটে ভাতে রেখে মাসে১০০০ থেকে ২০০০ টাকা দেয়া যায়। এবং তাদের জায়গায় থাকলে আমরা ঠিক এই কাজটাই করতাম। ওদেরকে খাটাই পয়সা কামাইতাম।
কিন্তু, যে কারণেই হোক। রানা প্লাজা বিশ্ব মানবতাকে কান্দাইছে, দেশের মানুষকে কান্দাইছে।
আগুনের মৃত্য হইলো স্পট মৃত্যু। কিন্তু বিল্ডিং চাপা পরে মারা যাওয়ার মৃত্য হচ্ছে ধীরে ধীরে মৃত্যু, চোখের সামনে লাইট একশন ক্যামেরা সহ সিনেমাটিক মৃত্যু। এই জন্যে রানা প্লাজার কনক্রিটে চাপা একজন আরেকজনকে আঁকড়ে ধরে থাকা ছবিতে অনেক আন্তর্জাতিক প্রাইজ এবং বিদেশ যাত্রাও জুটছে অনেকের।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল সমস্যা কি সেইটা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে,
কিন্তু আমি খুব পরিষ্কার এই দেশের প্রধান সমস্যা আজকে, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ বিত্ত মিলে শহরকেন্দ্রিক একটা লুটপাটের সুযোগ হইছে। যাতে লিড দিচ্ছে পলিটিক্স, কর্পোরেট , প্রশাসন, মেডিয়া, বিজনেসমেন, সিভিক সোসাইটি, মিলিটারি এবং কালোটাকার মালিকেরা । এই গোষ্ঠীর লুটপাট করার পরে, যা কিছু উচ্ছিষ্ট আছে, সেইটা কামড়া কামড়ি করে টিকে আছে যারা তাদের আমরা বলি মধ্যবিত্ত।
এবং, এই উচ্চবিত্তে আর মধ্যবিত্ত যদিও বিত্তের তফাত কিন্তু মন এবং মানসে খুব কাছাকাছি । এই গ্রুপটার বিভিন্ন রকম চাহিদা যেমন চুল কাটা, এদের জন্যে পণ্যে জোগাড় দেয়া, এদের গাড়ি চালানো , এদের জনে রিক্সা চালানো এদের অর্থনীতিকে চালানোর জন্যে গার্মেন্টস, এদের খাবার পৌঁছানোর জন্যে কৃষি সহ বিভিন্ন সেক্টরে খুব অল্প আয়ে যেই পেশাজীবী শ্রেণীটা আছে, তারা হইলো নিম্নবিত্ত এবং হত দরিদ্র।
এই মধ্যবিত্ত এবং-উচ্চবিত্ত হইলো রাষ্ট্রের ভোক্তা শ্রেণী। যার কনজিউম করার ক্ষমতা আছে।
এই কনজিউমার শ্রেণীর সাথে দিন আনে দিন খায়, শ্রেণিটার যে পার্থক্য তার সব চেয়ে চমৎকার বর্ণনা দিছেন, আওয়ামী লীগের মখা মন্ত্রী – যিনি বলেছিলেন , রানা প্লাজায় যেই সব হাড় আছে সেই গুলো হচ্ছে গরুর হাড়। মধ্যবিত্ত রিএকশনারি নৈতিক মানদণ্ডে হয়তো কথাটা খারাপ লাগছে। কিন্তু বাস্তবতা হইলো এই দুইটার শ্রেণীর যে সম্পর্ক তাতে এইটা একটা প্রকৃত উপমা- একটা হইলো গরুর মালিক, আরেকটা হইলো গরু। গরুকে জবাই করতে যেমন আমাদের কষ্ট লাগেনা, এই নিম্নবিত্ত বা হত দরিদ্র শ্রেণীটাকে বিভিন্ন ভাবে জবাই করতে আমাদের কষ্ট লাগে না। আমি
মখা মন্ত্রীরে কনগ্রেচুলেট করি তার সততার জন্যে। উনি স্বীকার করছেন, আমরা স্বীকার করি না।
যদি তা না হইতো, তবে রানা প্লাজার উদ্ধার কাজ যেই ভাবে চালানো হইছে এবং তারপরে যেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হইছে, সেই গুলো অন্য ভাবে নেয়া হইতো।
প্রথম ক্রিটিকাল সিদ্ধান্তটা নিছিল সরকার, হইলো রানা প্লাজা ধ্বসে যাওয়ার পরে। রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে চাপা পরা শ্রমিকদেরকে উদ্ধার করতে, বিদেশি সাহাজ্য নেওয়া হবেনা।
আমি এক কোটি টাকা বাজি ধরতে পারি,রানা প্লাজার বদলে যদি বসুন্ধরা সিটি, বা ইস্কাটনের ইস্টার্ন প্লাজা ধ্বসে পরত সেই যেই খানে আপনার আমার মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্ত শ্রেণীর প্রতিনিধির ভাই ব্রাদার আর ছেলে মেয়েরা থাকত, তাহলে সরকার অবশই বিদেশী সাহায্য নিতো।
রানা প্লাজার ধ্বসে পরার পর পরেই এইটা সারা পৃথিবীতে লিড নিউজ হইছে। বিশ্বের অনেকে দেশের খবর লাইভ দেখাইতে। আমরা অমানুষ হয়ে গেলেও, সারা পৃথিবীর মানুষ , মানুষকে গরু আর মানুষে বিভাজন করেনা।
শেখ হাসিনার সরকারকে, জাতিসংঘ, ইন্ডিয়া আমেরিকা, জাপান, টার্কি সহ অনেক অনেক অনেক দেশ তাদের উদ্ধার করি সরঞ্জাম এবং টেকনিকাল সাহায্যের জন্যে হাত বাড়াইছে। বিশ্ব মানবতা এইটাকে একটা বিশ্ব-মানবিক বিপর্যয় হিসেবে দেখছে। যেই ভাবে চিলির আটকে পরা খনি শ্রমিক, বা হাইতির ভূমিকম্প বা প্রশান্ত মহাসাগরে সুনামি, বা মালয়েশিয়ার প্লেন দুর্ঘটনায় সারা বিশ্ব হাত বাড়াইছে ঠিক তেমনি রানা প্লাজার যারা বেচে আছে তাদেরকে উদ্ধার করার জন্যে হাত বাড়াইছে বিশ্ব মানবতা।
চার পাঁচ টা সি ১৩০ বা সি ৫ কার্গো প্লেন বা দিয়ে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই উদ্ধারকরি এবং যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে চলে আসতে পারতো। এই দেশ গুলোর বিশেষত জাপানের রয়েছে এই ধরনের দুর্ঘটনাকে মোকাবিলার প্রস্তুতি এবং বিশ্বের অনেক গুলো দেশ মাত্র কয় এক বছর আগে, হাইতির রাজধানীতে একটা সম্মিলিত উদ্ধার অভিযান চালাইছে ভূমিকম্পের পরে। ফলে অনেক দেশের এই ধরনের বড় বড় বিল্ডিং ভেঙ্গে মানুষ উদ্ধারের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু সরকার তাদের সেই আহবানে সারা দেয় নাই।
কাজটাটা দিছে, আর্মিকে। যেই আর্মির এই ধরনের কাজের কোন অভিজ্ঞতা নাই। যন্ত্রপাতি নাই। আমি শুনছি, ৭ আট জন ট্রেন করা অফিসার আছে, কিন্তু সেইটা কোনই এক্সকিউজ না। এত গুলো মানুষ, তাদের এত যন্ত্রণা, তাদের মধ্যেই এক জনকেও যদি বাঁচানোর সম্ভাবনা থাকত তবে, সরকারের উচিত ছিল, বহির্বিশ্বের হেল্প নেওয়া। কিন্তু সরকার নেয় নাই। কেন নেই নাই। সরকার জানে।
আমার ধারণা সরকারের প্রথম টেনশন ছিল, যদি বহির্বিশ্বের লোকেরা এই উদ্ধার কাজে হেল্প করে, তবে তারা ছবি তুলবে,ভিডিও করবে এবং বিদেশী মিডিয়ার সাথে কথা বলবে। যা বাংলাদেশের গার্মেন্টস এর ইমেজ এর জন্যে ক্ষতিকর হবে। অর্ডার কমে যাবে। আমার কাছে এই একটাই ব্যাখ্যা।
গার্মেন্টসের ইমেজ এবং ভবিষ্যৎ অর্ডার।
এরপরে কি হইছে, আমরা জানি । আমরা দেখছি, ফেসবুকে উদ্ধারকারিদের স্ট্যাটাস। অক্সিজেন দাও। হাতুড়ি দাও, বাটালি দাও। কনক্রিট কাটারের শান পাথর নাই। সেইটা দাও। কোন কোরডিনেশান ছিলনা।
এই ভাবে করে, এই সব গরুকে হত্যা করি আমরা।
আমি নিশ্চিত, এই দুর্ঘটনা যদি রানা প্লাজার পোশাক শ্রমিক না হয়ে ইস্টার্ন প্লাজা বা বসুন্ধরা হতো তবে অবশ্যই সরকার বিদেশী সাহায্য নিতো। সরকারের সাহস হতো না সেই সাহায্য ফেলে দেয়ার।
কিন্তু, রানা প্লাজার গরুদের জবাই করতে, সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহীতার দের একটা পলক পড়েনি।
আজকে বছর ঘুরে আবার সেই কোরবানির ঈদ আসছে, আমরাও সেই বিগত বছরের ঈদের জবাইকে স্মরণ করে স্ট্যাটাস দিচ্ছি।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
১৬১০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশে শ্রমিকদের মজুরী কম বিধায় মালিকেরা বিদেশী বায়ারদেরকে তুলনামূলক কম দামে পোশাক দিতে পারে ।
এর ফলে ইউরোপ আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের ভালই এক্সেস হয়েছে ।
শুধু ইপিজেড নয়, এখন কোন কোন আবাসিক এলাকাতেও গার্মেন্টের কারখানা দেখতে পাওয়া যায় ।
বাইরের বড় বড় বায়ারদের ধরতে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশাল প্রতিযোগিতা দেখতে পাওয়া যায় । এবং সাথে মুরাদরাও থাকে পয়সার ভাগ পাবার জন্য ।
তারা অল্পতেই বেশী পেতে চায় বলে রানা প্লাজার মত ঘটনা এখন সিরিয়ালি হচ্ছে ।
এসব গার্মেন্টস বানানো হয়ই বিদেশীদের পোশাক সরবরাহের জন্য । তাদের সরবরাহের পর যে সব উচ্ছিষ্ট থাকে তা আমরা সাধারণ মানুষেরা পাই ।
তাই এসব দূর্ঘটনার জন্য আপনি যেরকম সাধারণ জনতাকে বানচোত বলতে চাচ্ছেন , সেটা তাদের না বলে বলা উচিত ছিল এইসব বিদেশী বায়ারদেরকে । কারণ তাদেরকে প্লিজড করে তাদের কাছ থেকে বড় অংকের ডিল হাতাতেই তো গার্মেন্টস মালিকরা এরকম অর্থগৃধ্নু হয়ে পড়ে । তাদের মাথায় থাকে শুধু টাকা কামানোর ধান্ধা । শ্রমিক এবং বিল্ডিং নিয়ে তাদের কোন কালেই মাথা ব্যথা থাকে না ।
আপনার বানচোত বলা উচিত ছিল সে সব বিদেশী বায়ারদের যাদেরকে ধরতে আমাদের ৩য় বিশ্বের গার্মেন্টস মালিকরা এরকম একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে ।
ভাইজান কি ইউরোপ আমেরিকার কোন দেশে থাকেন যে বায়ারদের কথা একরকম চুপ মেরে গেলেন বা বায়ারদেরকে একেবারেই একিউজড বা বানচোত বললেন না যেমনটা বলেছেন দেশের সাধারণ মানুষকে ?
“বানচোত! তুই” শব্দদ্বয় সংশোধন করে দিলে আকর্ষণ আরো বেড়ে যেতো। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন