চলো পাল্টাই

লিখেছেন লিখেছেন সূর্য তরুণ ২৬ জুন, ২০১৪, ১১:১১:০৭ সকাল



অনেকদিন ধরে আরেকটি গল্প লিখার চেস্টা করছিলাম।কিন্তু লিখতে বসে হয় মন বসেনা, না হলে গল্পের বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ করে আমার অগোছালো জীবনটাকে।শেষ পর্যন্ত একটা ইরানি গল্প পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে গল্পটা লিখলাম।

ছেলেটির নাম নাজিম।হয়তবা আর আট দশটা ছেলের মত নাজিমেরও স্কুল জীবন শেষ করে কলেজে যাওয়ার কথা ছিল।কিন্তু অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবা মারা যাওয়ায় তার আর পড়াশোনা করা হয়নি।সংসারের অভাব অনটন ঘুচানোর জন্য নাজিম একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ নেয়।যা বেতন পায় তা দিয়ে কোনরকমে মা আর তার দিন কেটে যেত।কিন্তু দুমাস হল তার মাও চলে গেছেন না ফেরার দেশে।আপনজন বলতে আছেন এক খালা।খালাত ভাই তপু প্রায় নাজিমের সমবয়সী।তাই প্রায় খালার বাসায় নাজিমের যাওয়া হয়।

আর যাহোক অন্য অনেকের মত নাজিম কখনও নামাজ কাযা করেনা।শত কাজের মধ্যেও সে পাচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে পড়ার চেস্টা করে।মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারনে নাজিমের ইসলামি জ্ঞানের পরিধিও অন্য অনেকের চেয়ে বেশি।মাঝে মাঝে ইমাম সাহেবের বিভিন্ন আলোচনায় নাজিম অংশগ্রহন করে।এছাড়াও এলাকার প্রতিবেশিদের খোজখবর নেয়া যেন নাজিমের দৈনন্দিন রুটিনের অন্তরভুক্ত।তাই প্রতিবেশিদের কাছেও নাজিম খুব প্রিয়।

অনেকটা অভাব অনটনের মধ্যেও একটা দামী ফোন ব্যাবহার করা নাজিমের বহুদিনের শখ।এ উদ্দেশ্যে নাজিম বহুদিন যাবত কিছু টাকা সঞ্চয় করেছে।তাই তপুকে নাজিম আগে থেকেই বলে রেখেছে কাল তাকে নিয়ে সে বের হবে।

প্রতিদিনকার মত আজও নাজিম প্রতিবেশি শুভদের বাসায় গেল শুভর ভাইকে দেখতে। শুভর ভাই দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ।কিন্তু তাদের বাসার আজকের পরিবেশটা নাজিমের কাছে অনেকটা অস্বাভাবিক লাগল।শুভকে জিজ্ঞাসা করে নাজিম জানতে পারল ডাক্তার বলেছে তার ছোট ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু টাকার প্রয়জন।না হলে তাকে বাচানো সম্ভব না।শুভর বাবা নেই মা আর তিন ভাইবোনের সংসার তাকেই কষ্ট করে চালাতে হয়।সে এত টাকা কিভাবে সংগ্রহ করবে মাথায় আসছেনা।

শুভকে একটু অপেক্ষা করতে বলে নাজিম বাসায় গিয়ে তার সঞ্চয় করা টাকাগুলো নিয়ে ফিরে এলো।নাজিমের হাতে দিয়ে বলল এগুলো রাখ তোমার ভাইয়ের চিকিৎসায়

কাজে আসবে।কৃতজ্ঞতায় শুভর দুচোখ দিয়ে অশ্রু বেয়ে পরে।

নাজিম যেহেতু তপুকে আগে থেকে বলে রেখেছিল তাই পরদিন সে তপুদের বাসায় গেল।তপুকে ব্যাপারটা খুলে বলল।তপু বলল তাহলেত তোমার ফোন কেনা হলনা। প্রত্যুরে নাজিম বলে ফোনটা আমি আজ নাহলেও কয়েক দিন পর কিনতে পারব কিন্তু ছেলেটা বেচে থাকলে তাকে দেখেই আমার আনন্দ লাগবে। আর তুমিকি কুরানের এই আয়াতটি শোননি ,"যে স্বতস্ফুর্তভাবে সৎকাজ করবে আল্লাহ তার পুরষ্কারদাতা ও সর্বজ্ঞ"।

বিষয়: সাহিত্য

১০৩৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

239045
২৬ জুন ২০১৪ সকাল ১১:৪৭
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : সুন্দর একটি শিক্ষনীয় গল্প। শেষটায় আবেগের পরশ মাখা শিক্ষা। অনেক ভাল লাগলো। Rose
২৬ জুন ২০১৪ সকাল ১১:৫৬
185519
সূর্য তরুণ লিখেছেন : Happyধন্যবা।দোয়া করবেন আরো যেন এরকম লিখতে পারি।
239059
২৬ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো পিলাচ
২৬ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:৪৮
185544
সূর্য তরুণ লিখেছেন : Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File