দৃষ্টিতে রমজান
লিখেছেন লিখেছেন প্রফেসর ফারহান ০২ জুলাই, ২০১৪, ০৪:১২:২৭ বিকাল
প্রতি রমজান এলেই বিভিন্ন ধরনের কুতুব বাবু দেখি আশেপাশে। এরা কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠে সেহরি করে, আবার ইফতারিও করে কিন্তু নামাজ পড়েনা। কোন কোন কুতুব রোজা রেখে সেই আগের মতই জীবন যাপন করে। মানে আগের মত জীবনযাপনের উপরে জাস্ট রমজান মাসের হাল্কা ছোঁওয়া। মেয়ে কুতুবদের মাথায় স্কার্ফ উঠে ঠিকই কিন্তু তাদের বক্ষপ্রদেশে ওড়না থাকেনা। অত্যাধুনিক স্টাইলে ওড়না থাকে গলায়। ওড়না কি গলায় পেঁচানোর জন্য? কতিপয় কিছু বালকদের আগের মতই হাফ প্যান্ট পরে সেহরি ও ইফতার করতে যাওয়া, মাথায় টুপি দিয়ে পরনিন্দায় ব্যস্ত থাকা এসবও কম দেখা যায় না। রোজাদার ব্যক্তি যদি এই মাসে ৫বার নিয়মিত সালাত আদায় করতে না পারেন তাহলে কেমনে সম্পূর্ণ ফজিলত পাবেন? আর রমজান মাসেই তো ৫ ওয়াক্ত সালাত ভালভাবে আদায় করা সহজসাধ্য বিষয়। কেননা আপনাকে ফজরের সময় কষ্ট করে উঠতে হয় না, সেহরি খেতেই উঠে যান আর বাকি ৪ ওয়াক্ত নামাজ তো অবলীলায় আপনি জাগ্না অবস্থায় পাচ্ছেন। ৫ ওয়াক্ত সালাত যদি আপনি মসজিদে গিয়েও জামাতে আদায় করেন তাতে আপনার কি পরিমাণ সওয়াব হবে সেটা কি আপনি গুণতে পারবেন? প্রথমত, মসজিদে প্রবেশ পর্যন্ত আপনার প্রতি কদমে কদমে নেকী, তারপর নামাজের মধ্যে কিরাআত শোনার নেকী, নামাজ সম্পূর্ণ ভালভাবে আদায় করার নেকী, নফল নামাজ আদায় করলে বাড়তি নেকী। এই নেকী গুলা হচ্ছে ন্যূনতম এবং কয়েকগুণে পাবেন। এছাড়াও আপনি যদি মসজিদে সামনে বসা ভিক্ষুককে দান করেন, কোন মুসলিমের খোঁজ নিলেন, মসজিদ থেকে কোন অসুস্থ ব্যক্তির খবর শুনে তাকে দেখতে গেলেন ইত্যাদি এসবের জন্যও আপনি বাড়তি নেকী পাবেন যেগুলো আপনার ফরজ ইবাদতের নেকীর পাশাপাশি বোনাস নেকী হিসেবে যুক্ত হবে।আমাদের মুসলমানদের জন্য মসজিদ হচ্ছে একটি অনন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেখান থেকে আমরা আমাদের জীবনের অনেকগুলো বিষয় শিখতে পারি এবং ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করতে পারি। প্রতি জুম্মায় সব মসজিদে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিষয়গুলোই কিন্তু কুরআন ও হাদিসের আলোকে আলোচনা করা হয়, উপরন্তু মসজিদে আমরা আমাদের ঈমানদার ও অন্য সব মুসলিম ভাই, মুরুব্বিদের সাথে দেখা করতে পারি। এছাড়াও আরও অনেকদিক দিয়ে লাভবান হই। আর মসজিদে যদি এসি বা হাইস্পিডের ফ্যানের বাতাস, টাইলস ফ্লোর, নরম কার্পেট, দেওয়ালে সুদৃশ্য আরবি হরফ ও বর্ণমালার কারুকাজ থাকে তাহলে আপনি মসজিদে যাবেন না? কেন বাসাবাড়ি, অফিসের চেয়েও শুধু ৫ ওয়াক্ত নামাজের জন্য মসজিদকে ব্যবহার করবেন না? যে সৃষ্টিকর্তা আপনাকে বানিয়েছেন কেন তার ঘরে যাবেন না?
সবশেষে বলব যে,আমার নিজেরও ইসলামের জ্ঞ্যানের গভীরতা কম, তারপরেও সবাইকে অনুরোধ করব যে, আজকে তৃতীয় রমজান অতিবাহিত হচ্ছে। সবাই আশা করি বাকি রমজানগুলো সিয়াম পালন, ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাআতে আদায়, কুরআন তেলাওয়াত, দান খয়রাত, ইসলামিক বেশভূষা ইত্যাদি পরিপূর্ণভাবে পালন করে রমজানের ফজিলত আদায় করবেন এবং রমজানের পরেও রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগাবেন।
বিষয়: বিবিধ
১২৭৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর এখান থেকে ঘুরে আসুন জানতে পারবেন রোজা সম্বন্ধে
মন্তব্য করতে লগইন করুন