১লা বৈশাখ : বিলাসিতা নাকি গরীবদের প্রতি উপহাস???
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের সৈনিক ২ ১৪ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:০১:০৮ রাত
পহেলা বৈশাখ। বাঙ্গালীদের প্রাণের মেলা। বাঙ্গালীদের প্রধান উৎসব। বৈশাখের প্রথম দিনে পান্তা-ইলিশ খাওয়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জায়গায় গিয়ে নেচে-গেয়ে বৈশাখকে বরণ করে।
এর আগে দেখিয়েছি ইসলামের দৃষ্টিতে পহেলা বৈশাখ। এবার দেখব পহেলা বৈশাখে গরীবদের সাথে কিভাবে উপহাস করা হয়।
পহেলা বৈশাখে পান্তা খাওয়ার ব্যাপারটি মনে পড়লেই আমার কেন জানি মনে হয়, আমরা গরীবদের উপহাস করি। ওদের নিয়মিত খাবারকে আমরা কৃত্রিম পান্তা বানিয়ে একদিন উৎসব করে খেয়ে থাকি।
বৈশাখে ইলিশ পাওয়া যায়না। যদিও ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। যদি পাওয় যাইও তার দাম থাকে খুব বেশী। সারা বছর চলে চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট,পিৎজা হাটের মতো রেষ্টুরেন্টে গিয়ে দামী খাবার খাওয়া। তখন পর্যন্ত কারও মনে থাকেনা পান্তা ভাতের কথা। শুধুমাত্র পহেলা বৈশাখ আসলেই মনে পড়ে। পহেলা বৈশাখে যারা পান্তা-ইলিশ খায় তাদের দেখে খুবই কষ্ট হয়। মনে হয় আহারে না জানি কতদিনের অভূক্ত। কি আগ্রহ নিয়েই না খাচ্ছে!
পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত খাওয়া যদি বাঙ্গালীত্বের প্রমাণ হয়;তাহলে যারা সারা বছর সকালে পান্তা খাচ্ছে তাদের আমরা কি বলবো? মানুষ একদিন পান্তা-ইলিশ খাওয়ার জন্য একদিকে হাজার টাকা খরচ করে। আর অন্যদিকে মানুষ সারা বছর স্ত্রী,সন্তানদের নিয়ে শুধু মাত্র পিঁয়াজ-মরিচ দিয়ে পান্তা ভাত খায়! কি অপূর্ব দৃশ্য। কি সুন্দর আমাদের দেশের মানুষের মন। যে দেশে মানুষ সারা দিন কাজ করে একবেলা পেট পুরে খেতে পায়না। সেদেশে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার জন্য খরচ করছে হাজার হাজার টাকা।
ছোটবেলায় ছড়া পড়েছিলাম সবার সুখে হাসবো আমি,কাঁদবো সবার দুঃখে। নিজের খাবার বিলিয়ে দেবো অনাহারীর মুখে। কবিতাটি পড়তে খুবই ভালো লাগে। পড়ার সময় জাগ্রত হয় মানুষের প্রতি দরদ-ভালোবাসা। কিন্তু যখনই কবিতার কথা অনুযায়ী বাস্তবতার মুখোমুখি হয়, তখন সব দরদ-ভালোবাসা নিমিষেই মুছে যায়।
মানুষ বিলাসিতা করতে পছন্দ করে। তবে সেই বিলাসিতা মানুষকে দেখিয়ে দেয় আমরা মানুষ হিসেবে কতটা নীচ। মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য। এই গানের কথাটি আমরা শুধুমাত্র গানেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। অথচ আমাদের দরকার ছিলো এই গানের কথার মতো নিজেদের পরিচালনা করা। আমাদের দরকার মানুষ হিসেবে গরীব-অসহায় মানুষদের পাশে দাড়ানো। শুধুমাত্র নিজেদের গান-ছড়ার কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সত্যিকার ভাবে অসহায়দের সাহায্য করা। সেই চেষ্টাই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার।
বিষয়: বিবিধ
২৩২৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন