কালকের দিনলিপি

লিখেছেন লিখেছেন আল ইমরান ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০২:৪৬:০৭ দুপুর

কালকের দিনলিপিটা আমার লেখা হয়নি। পরিক্ষার পরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে পূর্ব পরিকল্পনা মতে সবাই একসাথে রওয়ানা দিলাম। রাতের টিকেট ও নিয়ে নিলাম। প্রথম কাকরাইল তারপর বইমেলা যাবো। ঢুকেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের পাশের গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দিতে। গেট দিয়ে স্বাভাবিকভাবে ঢোকা যায় না। আগে পা তারপর মাথা না হয় তার উল্টো। সেখান থেকে মেলাতে যাওয়া যায় কিন্তু পুলিশ যেতে দিবে না, এক পথশিশু আন্তরিক হয়ে নিজ থেকে তথ্যটা দিল।

স্বাধীনতা স্তম্বের পূর্ব পাশে অপরিস্কার পানি সামনে রেখে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিবো বলে ভাবছি, পুলিশ মামা একশ গজ দূর থেকে হুইসেল দিয়ে উঠে যেতে বলল, যদিও আমাদের খানিক দূরে কিছু মানুষ বসা, তারা সস্হানে থাকবে। শিখা চিরন্তনের পাশ দিয়ে যেতে হচ্ছে বই মেলার দিকে। কিছুক্ষণ হাঁটার পর চোখ ছানাবড়া অবস্থা, একজন অতি চেতনাজীবী খুব আরামছে সিগারেট টানছে আর দুলছে। ধোয়া আকাশের দিকে দিয়ে মেঘ কালো করে দিতে চাচ্ছে। দেখে বুঝা যায় সে অভ্যাসগত সিগারেট খোর। ছবিতে দেখলেও বাস্তবে এমন চিত্র দেখার আগে সৌভাগ্য (!) হয়নি। কারণ সে একটি মেয়ে।

দ্বিতীয় প্রবেশপথ। শরীর সার্চ করার পর ব্যাগ চেকের পালা। খোঁচা দাড়িওয়ালা পুলিশ ভাই বললেন ব্যাগে কী! সরল ভাষায় বললাম জামা-কাপড়, নিরক্ষণ না করে খুব সুন্দর করে বললেন যান। ভিতরে ঢুকে বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বই দেখছি আর মেলা দেখছি, এর আগে কখনো বইমেলায় আসা হয়নি। কারণে অকারণে আসি আসি করেও তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। মেলায় চোখে পড়ার মত কোন ইসলামিক স্টল নেই। ধর্মীয় বইয়ের সংখ্যা একেবারে নগণ্য। ক্রেতা-বিক্রেতা, দর্শনার্থীর চেয়ে টিভি সাংবাদিকের আনাগোনা বেশি। যা আমার কাছে একেবারে হাস্যকর মনে হল। তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টিত মেলাঙ্গন। যেখানে বাহির সেখানে প্রবেশ নয়। নারি-পুরুষ পুলিশের সমান উপস্থিতি।

মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ, পাশে চলছে থিয়েটার কেমন উদ্ভট কাণ্ড। বেশিক্ষণ বসে থাকা গেল না কচিকাঁচার দৌড়াদৌড়ির উপভোগ্য পরিবেশটায়। তারপর বাংলা একাডেমিতে। সেখানেও ব্যাগ সার্চে পুলিশের আচরণ চোখে পড়ার মত। কিছুক্ষণ ঘুরে দেখার পর ডক্টর শহীদুল্লাহ ভবনে মাগরিবের নামাজ। ভবনটিতে রুচিশীল মানুষের পদচারণা আছে তা প্রথম দর্শনেই বুঝা যায়। কিন্তু অজু করতে গিয়ে রুচিশীলতার সংজ্ঞা মিলাতে পারিনি। সরকারি মহলে আমার খুব একটা যাওয়া হয়নি তবে যে কয়েকটায় গিয়েছি সবখানে ওয়াশরুমের বেহাল দশা। জাতি হিসেবে আমাদের রুচি এমন কি না সেটা এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

টিএসসিতে এসে আবারো হোঁচট খাওয়া অবস্থা। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ছাত্র-ছাত্রীরা অবর্ণনীয় অবস্থায় সময় গুজরান করছেই। যা দেখতে দেখতে আমাদের সয়ে যাওয়া অবস্থা। তার উপর আবার প্রধান সড়কের পাশে বসে কিছু নারীর চেহারা ধারীরা অনায়াসে সিগারেট টানছে। দেখলে বুঝা যাবে এ অভ্যাসে তারা কতটা অভ্যস্ত। তাদের দেহ মন থেকে নারীত্ব খসে পড়েছে। তারা এখন শুধু একটা নাম।

তারপর জাতীয় কবির কবরটা দেখে জিয়ারত করে আসবো কিন্তু অজানা কারণে প্রধান ফটক বন্ধ। দূর থেকে আবছা আবছা দেখা যায় জিয়ারত করার পরিবেশ না থাকায় ফেরার পথ ধরলাম। শাহবাগ আসার পর তিনজনের দল থেকে একজন বিয়োগ হল। রমনার ভিতরে আলো-আধারির পথ ধরে কাকরাইল চলে এলাম। রাত এগারোটা গাড়ি ধরে সোজা বাড়ি

বিষয়: বিবিধ

৮২২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381784
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:২২
হতভাগা লিখেছেন : এরচেয়ে বাসায় ঘুম দিলে ভাল করতেন । খামাখা নিজেকে একটা প্যারায় নিয়ে গেছেন।
381794
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ রাত ০৮:০৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার অভিজ্ঞতা!!!
ধূমপান কে কিছু নারী মনে হয় নারী অধিকার এর প্রথম ষ্টেপ মনে করে। ক্যান্সার এরও প্রথম ষ্টেপ সেটা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File