নববী প্রেমের বিরল দৃষ্টান্ত-৫
লিখেছেন লিখেছেন আল ইমরান ২৯ জুলাই, ২০১৬, ০৩:৪৪:৪০ দুপুর
কখনো দম্ভ করেন না, বিজয়ী হয়ে উল্লাস না করে শুকরিয়া আদায় করেন। পরস্পর তাঁরা সম্প্রীতিশীল কিন্তু দুশমনের ব্যাপারে কঠোর। দিন দিন ইসলাম ও দেশ-জাতির উন্নতি। ইসলামের শত্রুরা বসে নেই। তাদের অব্যাহত কূটচালের ফলে মদিনায় তারাই হামলা করতে আসল। সালমান ফারসি রা. অভিনব কৌশলে মদিনাবাসী আত্মরক্ষা করতে পারল।
কিছুদিন পর রাসুল সা. তাওয়াফ স্বপ্নে দেখলেন। লেবাসে তাওয়াফে তাঁরা রওয়ানা হলেন প্রাণের মক্কায়। হুদায়বিয়া এলে, অগ্রে প্রেরণ করা হল হযরত উসমান রা.কে। মক্কার মোড়লরা চাচ্ছে না নবী করিম সা. ও সাহাবায়ে কেরাম তাওয়াফ করুক। এক সন্ধিচুক্তি হল, অবান্তর কিছু শর্ত দিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দেয়া হল। বলা হল আগামী বছর হজ করবে। পক্ষান্তরে সেটাই ছিল ফাতহে মুবিন বা সুস্পষ্ট বিজয়। কিন্তু মক্কাবাসি তাদের চুক্তি রক্ষা করেনি।
এবার সময়, সুযোগ এলো মক্কা বিজয়ের। রাসুলে আরাবি সা.এর ইচ্ছে কোন প্রকার রক্তপাত ছাড়াই প্রাণের মক্কা বিজয় করা। আকস্মিক আক্রমণে মক্কাবাসি দিকভ্রান্ত হয়ে গেল। তিনি ঘোষণা করলেন 'যত পাপ করেছ জমা করতে এসেছি ক্ষমা, প্রতিশোধ নিতে আসিনি'। যে নিজের ঘরে, আবু সুফিয়ানের ঘরে, বাইতুল্লাহ এ থাকবে তারা নিরাপদ। আবু সুফিয়ান, হিন্দা, ওহাশিসহ একে একে সকল দাগি আসামিকে ক্ষমা ঘোষণা করা হল।
এভাবে আস্তে আস্তে সকল এলাকায় ইসলামের হেলালি পতাকা উড্ডীন হল। দিক্বিদিকে তাঁদের বিজয়ী ডঙ্কা বেজেই চলল। কেসরা-কায়সার সকলে তাঁদের প্রতাপে প্রকম্পিত হল। আর এদিকে নবুওয়তির সময়ও ধীরে ধীরে কমতে লাগলো। ক্রমান্বয়ে ইসলামের সকল বিধি-নিষেধ, হুকুম-আহকাম সকলের কাছে পৌঁছে দেয়া হল।
অনেক ঘটনাপ্রবাহর মধ্য দিয়ে নবুওয়তের জীবন লক্ষ্য পানে চলতে লাগল, সকল ঘাত-প্রতিঘাত, প্রতিকূলতা সহ্যকরে মনজিলে মাকসাদে যাওয়ার দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে। দেখতে দেখতে বিদায় হজ এলো। এ ভাষণ-সম্ভাষণতো অন্য কথার মত নয়। তাতে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ঈঙ্গিত রয়েছে। তা শুনেই সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে এক আশংকা দেখা দিয়েছে।
তাঁরা বুঝে নিলেন নবুওয়তির সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় হল। তাতে আরো দৃঢ়তা এনে দিল রাসুল সা.এর দীর্ঘ জ্বর। তিনি আর স্বাভাবিক হতে পারেননি। সাড়া দিলেন রফিকে আ'লার ডাকে, ছেড়ে গেলেন এ নশ্বর পৃথিবী। শোকের সাগরে ভাসিয়ে গেলেন তাঁর প্রাণ প্রিয় সাহাবায়ে কেরামকে। এভাবেই নবুওয়তের সূর্য দীর্ঘ দিনের জন্য অস্তমিত হল।
বিষয়: বিবিধ
১২২১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসংখ্য ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন