একটি অপূর্ব কাহিনী.....
লিখেছেন লিখেছেন সুস্থ মন ০৮ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:৪৩:১৯ সকাল
♣হযরত ওমর (রাঃ) এবং তাঁর সময়কার একটি ওয়াদা♣
খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এরসময়কার একটি ঘটনা।পারস্যের নিহাওয়ান্দ প্রদেশেরশাসনকর্তা হরমুযান। পর পর অনেকগুলো যুদ্ধে মুসলমানদেরবিরুদ্ধে লড়বার পর এবং অগনিতমুসলমানকে নিজ হাতে হত্যা করার পর তিনি অবশেষে মুসলমানদেরহাতে বন্ধী হলেন । হরমুযানভাবলেন , খলিফা ওমর (রাঃ) নিশ্চয়ই তার প্রানদন্ডের হুকুম দেবেন, না হয় অন্ততঃ তাকে গোলাম হিসাবে কোথাওবিক্রি করে দেবেন। কিন্তু হযরত ওমর (রাঃ) বিশেষ কর দেওয়ার ওয়াদায় হরমুযানকে ছেড়ে দিলেন।হরমুযান নিজ রাজ্যে ফিরে ওয়াদারকথা ভুলে গেলেন। অনেক টাকা-পয়সা ও বিরাট সৈন্য সমাবেশ নিয়ে তিনি আবার মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলেন। তুমুল যুদ্ধ শুরু হলো । অবশেষে হনমুযানপরাজিত হয়ে আবার মুসলমানদেরহাতে বন্দী হলেন। তাকে হযরত ওমর (রাঃ) এর দরবারে হাজিরকরা হলে খলিফা জিজ্ঞেসকরলেন,: আপনিই কি কুখ্যাত নিহাওয়ান্দ শাসনকর্তা হরমুযান?: হ্যাঁ খলিফা , আমিই নিহাওয়ান্দ এর অধিপতি হরমুযান।: আপনিই বার বার আরবেরমুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহঘোষনা করেছেন এবং বারবার অন্যায় যুদ্ধের কারন ঘটিয়েছেন?: এ কথা সত্যি যে, আমি আপনারঅধীনতা স্বীকার করতে রাজী হইনি, তাই বার বার যুদ্ধ করতে হয়েছে।: কিন্তু এ কথা কি মিথ্যে যে,আপনাকে পরাজিত ও বন্দী করার পরও আপনার প্রস্তাবানুসারেসোলেহনামার শর্ত মতে আপনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বারবার আপনি সোলেহনামার শর্ত ভংগ করেছেন এবং অন্যায়যুদ্ধে মুসলমানদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন?: এ কথা মিথ্যা নয়।: আপনি কি জানেন আপনারকি সাজা হবে?: জানি, আমার সাজা মুত্যু এবং আমি সেজন্য প্রস্তত আছি।: এবং এই মুহুর্তেই?: তাও বেশ জানি।: তা হলে আপনার যদি কোন শেষবাসনা থাকে তা প্রকাশ করতে পারেন।: খলিফা, মৃত্যুরআগে আমি শুধুই এক বাটি পানি পান করব। খলিফার হুকুমে বাটিতে পানি এল। হরমুযানের হাতে দেওয়া হলে খলিফা বললেন,: আপনি সাধ মিটিয়ে পানি করে নিন।: আমার শুধুই ভয় হয় পানি পানের সময়ই জল্লাদ না এক কোপে আমার মাথাটা দেহ থেকে আলাদা না করে দেয়।: না হরমুযান, আপনার কোনইভয় নেই। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি, এই পানি পান শেষনা হওয়া পর্যন্ত কেউ আপনাকে কতল করবে না ।: খলিফা, আপনি বলেছেন এইপানি পান করা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ আমায় কতল করবে না। ( বাটির পানি মাটিতে ফেলেদিয়ে) সত্যি এ পানি আরআমি পান করছিনা এবং তাইআপনার কথা মত কেউই আমাকেআর কতল করতে পারবে না।চমৎকৃত হযরত ওমর (রাঃ) খানিক চুপ করে থেকে হেসে ফেললেন। বললেন, হরমুযান:আপনি সত্যিই একটি নয়া উপায় বের করেছেন নিজেকে রক্ষা করারজন্যে। কিন্তু ওমরও যে আপনাকে কথা দিয়েছে তার খেলাপ হবে না।আপনি আযাদ, আপনি নির্ভয়ে নিজ রাজ্যে চলে যান। হরমুযান চলে গেলেন। অল্পদিন পরে বহু সংখ্যক লোক নিয়ে আবার এলেন।খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এরদরবারে হাজির হয়ে বললেন,: আমিরুল মু’মিনিন! হরমুযানআবার এসেছে। এবার সে এসেছেবিদ্রোহীর বেশে নয়, এক নবজীবনের সন্ধানে। আপনি তাকে তার অনুচরবর্গসহ ইসলামে দীক্ষিতকরুন। হরমুযান আর বলতে পারলেন না। তার কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে এলো। হযরত ওমর (রাঃ) দেখলেন,লৌহমানব হরমুযানের দু’চোখপানিতে হলহল করছে । হরমুযানকে তিনি আলিংগন করলেন।Its called Islam.
বিষয়: বিবিধ
১২৭৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন