একজন ভন্ড যখন মানুষকে কাঁদাইয়া ফেলে
লিখেছেন লিখেছেন সত্য কন্ঠ ২৩ মে, ২০১৪, ০৪:২৫:৪২ রাত
এতদিন ইসলামপন্থীরা আফসোস করতো তাদের শাহবাগীদের মত একজন জাফর ইকবাল নেই বলে।
গোলাম মাওলা রনির আবির্ভাবে আশা করি সেই শূন্যতা পূরন হয়ে গিয়েছে।জাফর ইকবাল হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মত পুরা জাতিকে হিপনোটাইজ করে চেতনা ইনজেক্ট করতো,,এখন জাফর বিপরীতে এন্টি জাফর অর্থাৎ রনি সাহেব তার জাদুকরী লেখা দিয়ে পুরো জাতির মধ্যে ইসলামের সুমহান বাণী পৌছায় দিবে।
অলরেডী আমাদের ভাইরা গোলাম মাওলা রনিকে মাথায় তুলে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে।
"রনি ভাইয়ের কথায় চোখে অশ্রু ধরে রাখতে পারলাম না"
" আল্লামা সাঈদী নির্দোষ,রনি ভাইয়ের লেখাটা একবার পড়েই দেখুন"।
"রনি ভাইকে আল্লাহ নিশ্চই এর জন্য উত্তম প্রতিদান দিবেন।"
এ ধরনের আবেগী লেখাতে নিউজ ফিড ভেসে যাচ্ছে।
তো,ভাইদের চোখ থেকে অশ্রু বের করে ফেলেছেন রনি সাহেব,,তো তাকে সফল ধরে নেয়া যায়।তবে এই সফলতার মূল সূত্র তিনি জাফর স্যার থেকেই ধার করলেন,,ইমোশন,ইমোশন,ইমোশন।
জাফর স্যার মুক্তিযুদ্ধের ইমোশন নিয়ে খেলা করেন,আর রনি সাহেব ইসলামের ইমোশন নিয়ে খেলা শুরু করলেন।
তবে এক্ষেত্রে রনি সাহেব অবশ্যই কিছুটা এগিয়ে।
কেননা,ইসলামপন্থীদের চোখের মনি এই রনি কিনা আওয়ামী লীগ করেন!
যেই আওয়ামী লীগকে ইসলামপন্থীরা নাস্তিক্যবাদী শত্রু,ইসলামের দুশমন বলে আখ্যায়িত করে,সেই দুশমনদের একজনই কিনা হয়ে গেলেন তাদের প্রিয় লেখক,যিনি কিনা তার লেখনী দিয়া আবেগী ভাইদের চোখ থেজে অশ্রু বের করে ফেলতেসে!
সম্পূর্ণ বিপরীত মেরু থেকে এসে রনি সাহেব যেই অভিযোজন ক্ষমতা দেখালেন তা জাফর স্যারকে মোকাবেলা করতে হয় নি।তাই এখনই বলে দেয়া যায় রনি সাহেব অনেক দূর পর্যন্ত দৌড়াতে পারবেন।
এবার আসি আসল কথায়,আমার স্পষ্ট মনে আছে আজ থেকে প্রায় ১ বছর আগে বিটিভিতে একটা অনুষ্ঠানে রনি সাহেব এসেছিলেন ইসলামী বয়ান করতে।তো তিনি সেখানে অনেক কায়দা কানুন করে বুঝাতে চাইলেন যে মওদূদীবাদ অতি খারাপ মতবাদ,ইহা ইসলামের কলংক,হ্যান ত্যান,ব্লা ব্লা ব্লা।
একপর্যায়ে তিনি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের নাম উল্লেখ করে বললেন,'এরা ইসলামের নামে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে।'
সেসময় তিনি আল্লামা সাঈদীরও নাম নিলেন।
অতঃপর ১ বছরের মধ্যে দুনিয়া উল্টাই গেল,সাঈদী এখন রনি সাহেবের চোখের মনি,সাঈদী সাহেবকে নিয়ে রনির কত সুখস্মৃতি!আহা!
নিজের পঙ্গু পিতার সাথে সাঈদী সাহেবের ওয়াজ নিয়ে কত মর্মস্পর্ষী বেদনা!
রনি সাহেব এই ব্যাপারটাই ভাল জানেন,কোথায় পাঠককে কাঁদাতে হবে,কোথায় কিছু বিশ্বাসযোগ্য কথা লিখতে হবে,কথায় গিয়ে পাঠককে স্মৃতিচারনের সুযোগ দিতে হবে। এভাবেই পাঠককে সহজেই বশীভূত করে চলেছেন রনি সাহেব।
গ্রামের ওয়াজ মাহফিলে কিছু মজার ঘটনা ঘটে।হুজুর তারমত ওয়াজ করতে থাকেন,যখন দেখেন শ্রোতারা চিল্লাচিল্লি,গল্প-গুজব করছে তখন জাহান্নামের বর্ণনা দিয়ে উচ্চস্বরে মাইক কাপাই তুলে।
শ্রোতারাও ভয়ের চোটে মনযোগ দেয়।
অতঃপর আরও কিছুক্ষন ওয়াজ চলে,,এক পর্যায়ে শ্রোতাদের ওয়াজ শুনতে শুনতে ঘুম এসে যায় চোখে,,হুজুর এটা বুঝতে পেরে ঘুম যাতে না আসে সেজন্য কতক্ষন সমস্বরে 'আল্লাহুম্মা,সাল্লেয়ালা,সায়িদ্যিনা মাওলানা মোহাম্মদ্ִ বইলা সুর ধরে আর শ্রোতাদেরও গলা মিলাতে বলে।
ব্যস শ্রোতাদের ঘুম মুহূর্তেই গায়েব হয়ে যায়।
রনি সাহেব এই কৌশলটাও ভালভাবে রপ্ত করেছেন,,
রনি সাহেব বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী,অনলাইন নিউজ সাইট চালান,রাজনীতি করেন,উপন্যাস লেখেন,,পত্রিকায় কলাম লেখেন,'মোঘল হেরেমের দুনিয়া কাঁপানো প্রেম্ִ লিখে পুরা বঙ্গে প্রেমের সুবাতাস ছড়ায় দেন।
যেহেতু এখন দেশে ডানপন্থীদের জয়জয়কার,তো রনি এই সুযোগটা মিস করবেন কেন?
আব্দুল কাদের মোল্লার কাহিনী লিখে তিনি সকলের হৃদয়ে প্রথমে জায়গা করে নিলেন,,তারপর সাঈদী সাহেবকে নিয়ে লিখে তিনি এখন দ্বীনি ভাইদের চোখের মনি,সোনা মনি,কলিজার টুকরো হয়ে গেলেন।
তো নেক্সট কার ফাঁসির রায় আসছে?
তো বস! হবে নাকি আরেকটা মর্মস্পর্ষী লেখা? ফাঁসির রায় না আসা পর্যন্ত নতুন কলাম তো আর পাবো না,,তো ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলাম।
আপাতত সাঈদী সাহেবকে নিয়া লেখাটাই ধুমাইয়া শেয়ার দিতে থাকেন আর অশ্রুবর্ষন করতে থাকেন।
(সংগ্রহ)
বিষয়: বিবিধ
১৭২২ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওরিয়নের সাথে একমত
ওরিয়নের মন্তব্যের সাথে একমত। আমরাও এও জানি না তিনি কি আসলেই খেলছে না কি??? তার লেখাগুলো দেখে বুঝা যায় যে, তিনি ইদানিং পড়াশুনা করছেন। আল্লাহ রা্বুল আলামীন যখন চান তখন তিনি দুষ্টদের দিয়েও ইসলামের পক্ষে কথা বলান এরকম অসংখ্য নজীর এই দুনিয়াতে আছে। তবে রনির জন্য আপাতত আফসোস আর তার সাথে সাথে দু'আ রইল। আল্লাহ যাতে করে তাকে হেদায়াত দেন আর ইসলামের কল্যাণে কাজ করার তৌাফিক দেন। (আমীন)
এটারই সুযোগ নেয় চালাকেরা । তাদের ধান্ধাবাজিকে কাজে লাগায় এই আবেগকে সামনে রেখে।
বাস্তবতা হল ... আবেগ থাকা ভাল , তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয় না যদি তা বাস্তবে কার্যকর করানো না হয় ।
ঐদিন দেখলাম ফেরাউনরে নিয়া লিখছে।
তার নিয়তই নিয়তির দিকে টেনে নেবে।
আবেগ থাকা ভাল নইলে চক্ষু দিয়া পানি বেরুবে না। আর আবেগে ভুল করলে থামাইতে পারবেনা।
আপনি আছেন কিনা গোলাম মওলা রনি সাহেবের পশ্চাতের লুকানো শুকনো গু'য়ের মধ্যে পানি ডালতে ষড়যন্ত্র করছেন!
এই মিনাহ ফারা ছিলেন (আছেনও)উগ্র হিন্দু । অথচ বিয়ে করেছেন মুসলিমকে । তার ছেলে ছিল মুসলিম । ছেলেটা মারা যাওয়ার পর তিনি তার ছেলেকে হিন্দু নিয়ম অনুযায়ী আগুনে পোড়ান । অথচ তার স্বামী আমেরিকার কত জায়গায় ঘুরলেন তাদের ছেলেকে মুসলিম নিয়ম অনুযায়ী কবর দেওয়ার জন্য । নয়া দিগন্তে মিনাহ ফারাহ নিয়মিত লিখেন । দিগন্ত টিভি থাকতেন বেশ কয়েক বার ওয়াজ নসিয়তও করেছেন ।
বিজেপি এখন জামায়াত-শিবিরের প্রিয় ।
এখন গোলাম মাওলা রনি । এই গোলাম মাওলা রনি সাইদীর ফাসির পর এক লেখায় বলেছিলো সাইদী আধা শিক্ষিত ধর্ম ব্যবসায়ী এবং তিনি তাফসির করার অধিকার রাখেন না । এবং এই কথাটা খুব নোংড়া ভাষায়ই বলেছিলেন ।
সময়ের বিবর্তনে গো.ম.র এখন জামায়াতী বা মওদুদি বা সালাফী বা আহলে হাদিসি বা ওহাবী বা সৌদি রাজতন্ত্রীপন্হীদের কাছে প্রিয় ।
আর শুধু শুধু লোকেরা কি বলে জামায়াতে ইসলামী হলো : ১. যমের হাতে ইসলাম ২. জামা-তে ইসলামী ।
আপনাগো ষড়যন্ত্র সফল হতে দিমুনা।
আপনি সত্যই গ্যাঞ্জাম লাগাতে পারবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন