ডিজিটাল হুজুর
লিখেছেন লিখেছেন সত্য কন্ঠ ০১ মে, ২০১৪, ০৫:০৫:০৪ সকাল
ডিজিটাল শিক্ষক
চট্টগ্রামের মাদ্রাসাশিক্ষক হাফেজ আল্লামা মোহাম্মদ মহিউল হক। ব্রিটিশ কাউন্সিলের 'কানেকটিং ক্লাসরুম প্রজেক্ট'-এ মুনশিয়ানা দেখিয়ে পেয়েছেন কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। মাইক্রোসফট স্বীকৃত বাংলাদেশের একমাত্র 'এক্সপার্ট এডুকেটর' তিনি। গত মাসে স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত মাইক্রোসফট গ্লোবাল ফোরামে 'পোভার্টি' বিভাগে ৯৭টি দেশের এক হাজার ১০০ প্রতিযোগীর মধ্যে হয়েছেন প্রথম রানারআপ।
২০০৯ সালে চট্টগ্রামের অজপাড়াগাঁর নজিরিয়া নঈমিয়া মাহমুদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মহিউল। সে বছরই মাদ্রাসাটিকে যুক্ত করেন 'কানেকটিং ক্লাসরুম'-এর সঙ্গে। কানেকটিং ক্লাসরুম হলো ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুলভিত্তিক একটি প্রকল্প, যার মাধ্যমে এক দেশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা আরেক দেশের স্কুলের নিয়মকানুন ও সিলেবাস সম্পর্কে জানতে পারে। শিক্ষাবিষয়ক নানা অভিজ্ঞতাও একে অন্যের সঙ্গে আদান-প্রদান করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, কানেকটিং ক্লাসরুমের অন্তর্ভুক্ত বিদেশি স্কুলগুলোর বিজ্ঞান মেলা, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়া যায়। নজিরিয়া নঈমিয়া মাহমুদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাটি যুক্তরাষ্ট্রের ডারহ্যাম-সান্ডারল্যান্ডের চারটি স্কুলের সঙ্গে 'কোলারভেটিভ পার্টনারশিপ' হিসেবে যুক্ত হয়। মহিউলের এ উদ্যোগ অল্প কয়েক দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নতুন মাত্রা যোগ করে। তিনি দেখিয়েছেন লেখাপড়াটা শিক্ষার্থীদের কাছে বিরক্তিকর নয়, বরং মজার। অজপাড়াগাঁর যে ছেলেমেয়েদের ইন্টারনেট ব্যবহার করাটা স্বপ্নের ব্যাপার ছিল, সেখানে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান করতে পারছে। এতে মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার মানোন্নয়ন হয়েছে। যে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কয়েকটা বিষয়ে ফেল করত, তারাই এই প্রকল্পের বদৌলতে রাতারাতি বদলে গেল। মহিউল হকের হাত ধরে এই মাদ্রাসা শুধু শিক্ষায় উন্নতি করেনি, বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের নামটাও আরো উঁচুতে তুলে ধরেছে। কানেকটিং ক্লাসরুম প্রজেক্টে অসামান্য সাফল্য অর্জনের প্রতিদান হিসেবে মাদ্রাসাটি ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় যুক্তরাজ্য থেকে পেয়েছে ২০১০ সালে 'স্টার পার্টনারশিপ অ্যাওয়ার্ড', ২০১১ সালে '১০০ ওয়ার্ডস ড্রামা অ্যাওয়ার্ড', ২০১২ সালে বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যাওয়ার্ড (আইএসএ)'।
২০১২ সালে বাংলাদেশ থেকে একমাত্র মাদ্রাসা হিসেবে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত প্যারা অলিম্পিক গেইমসে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায় নজিরিয়া নঈমিয়া মাহমুদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা। এমনকি ২০১৩ সালে ১০০ ওয়ার্ড অডিও বিজয়ী হিসেবে নাম লেখায় এই মাদ্রাসা।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৫ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা পেলে মাদ্রাসা পড়ুয়ারা আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজের সৃজনশীল মেধার বিকাশ ঘটিয়ে দক্ষতার নজীর রাখতে পারে- এটা তারই একটি উজ্জল উদাহরণ।
উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা পেলে মাদ্রাসা পড়ুয়ারা আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজের সৃজনশীল মেধার বিকাশ ঘটিয়ে দক্ষতার নজীর রাখতে পারে- এটা তারই একটি উজ্জল উদাহরণ।
আর পুরুষ্কারপ্রাপ্ত ভাইকে অভিনন্দন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন