'শুভ' কেন 'অশুভ'
লিখেছেন লিখেছেন সত্য কন্ঠ ১৪ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:১০:০৬ রাত
‘শুভ’
লিখেছেন : শেখ আবুল কাসেম মিঠুন
(আবু তাহের ভাইয়ের অনুরোধে খুব সংক্ষিপ্তাকারে লেখা)
শুভ সকাল বা শুভ সন্ধা অথবা শুভ রাত্রী, টেলিভিশনেই এই সম্ভাষণগুলো আমরা দেখে ও শুনে থাকি। তাছাড়া শুভ জন্মদিন, শুভ নববর্ষ ইত্যাদি বলে আমরা একে অপরকে সম্ভাষণ জানাই। শুভ শব্দের অভিধানিক অর্থ মঙ্গোল বা কল্যাণ। শুভ সকাল বা শুভ নববর্ষ ইত্যাদি সম্ভাষণগুলো পূর্ণাঙ্গ কোন অর্থ বহন করে না। ধরা যাক আমি এক বন্ধুকে বললাম শুভ সকাল। এর একটাই অর্থ আমারা বুঝাতে চাই তা এই যে, তোমার জন্য সকালটা শুভ হোক বা কল্যাণ হোক। কিন্তু আমার কি ক্ষমতা আছে তার সকালটাকে শুভ করে দেবার! তাহলে আমি কি তার জন্য দোয়া করলাম? কিন্তু কার কাছে! ‘শুভ সকাল’ এই সম্ভাষণের মধ্যে তার কোন উল্লেখ নেই। যাই হোক এটা একটা অপূর্ণাঙ্গ বাক্য বা শব্দ। কোন সত্যবাদী ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি অপূর্ণাঙ্গ বাক্য বলে কাউকে সম্ভাষণ করতে পারেন না। স্পষ্ট অর্থ বহন করে এমন বাক্যই তিনি বলে থাকেন। বরং তারাই এমন অপূর্ণাঙ্গ বাক্য বলেন যারা প্রতারক শ্রেণীর। যদি প্রশ্ন করা হয়, ভাই এই যে বললেন, শুভ সকাল, এটা কি আপনার পক্ষ থেকে বললেন না আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন? সে এই প্রশ্নের উত্তর দেবে আপনি যা পছন্দ করেন এমন একটা উত্তর। যদি বলেন আপনার বাক্যের মধ্যে তো এই কথা বলেন নি? তিনি বলবেন, যা বলেছি তার অর্থ এটাই, তার উদ্দেশ্যও এটাই। অর্থাৎ যুক্তির জোরে নয়, গায়ের জোরেই তিনি তার যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইবেন।
একটি ঘটনা:
আবুল আছ নামক মদীনার খাসরাজ গোত্রের এক ব্যাক্তি মক্কায় এসেছে আবু জেহেলের কাছে একটা বিশেষ সাহায্যের আশায়। আবু জেহেল বললো, এখন মাথা খরাপ কোনো সাহায্য করতে পারবো না। আমাদেরই এক ব্যক্তি পুরো মক্কাবাসীর মধ্যে গোলযোগ সৃষ্টি করেছে। মা-বাপ থেকে ছেলেকে পৃথক করছে, স্ত্রীকে স্বামী থেকে পৃথক করছে। বড় মুশকিলে আছি। অতএব তুমি ফিরে যাও। আবুল আছ ফিরে যাচ্ছে। আবু জেহেল বললো, তোমরা তো মক্কায় এসে কাবা তাওয়াফ না করে যাও না, দেখো লোকটি কিন্তু কাবার কাছে প্রায় বসে থাকে। যদি তাকে দেখো, তার কাছে যাবে না এবং সে তো তোমাকে কিছু বলবেই, তাই আগে থেকে কানে তুলো গুজে দিয়ে কাবায় যাও। আবুল আছ তাই করলো।
মহানবী স: তখন কাবার কাছে একস্থানে বসেছিলেন। আবুল আছ কৌতূহলে কানের তুলো ফেলে মহানবী স:-এ কাছে গেল। এবং সম্ভাষণ জানালো ‘শুভ সকাল।’
আল্লাহর রাসূল স: বললেন, ‘আমার আল্লাহ এর চেয়েও খুব কল্যাণকর সম্ভাষণ আমাকে শিখিয়েছেন। আর তা হলো, ‘আসসালামুআলাইকুম।’ ঘটনা এখনেই শেষ নয়। এর পরে আরো ঘটনা আছে। কিন্তু সে প্রসঙ্গে যাবো না।
আবুল আছ বলেছিলেন শুভ সকাল। এই সম্ভাষণ জাহেলী যুগের সম্ভাষণ। মহানবী স:-এর জবাবে সেটা স্পষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ একজন মুসলমানের সম্ভাষণ হচ্ছে, আসসালামুআলাইকুম। এটা আমাদের নবী স:-এর শিক্ষা। এর অর্থ স্পষ্ট। আল্লাহ আপনার উপর কল্যাণ বর্ষণ করুন। এর মধ্যে কোন প্রতারণা নেই। এটা একটা চির সুন্দর চির কল্যাণকর দোয়াও বটে। যা মহান স্রষ্টার কাছে অপরের জন্য চাওয়া হচ্ছে। শুভনববর্ষের সম্ভাষণে আমরা বলতে পারি,নববর্ষ আল্লাহ আপনার জন্য মংগোলময় করে দিন।
তাই আসুন আমরা যৌক্তিক বিষয়গুলো মেনে চলি। অসৎ প্রতারক অপরাধী গোষ্ঠির ভন্ডামীমূলক বাক্য বা শব্দ চয়ন থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
ধনী লোকের হাত ধরে, চলে গেছ ওপারে পারি না তোমায় কিনে খেতে। ও ইলিশ... ও ইলিশ.. তুমি কোথায়!!!!
যাকগে, লেখাটা ভালো হয়েছে।
খাইরান!
মন্তব্য করতে লগইন করুন