শিশুদের প্রথমে যে জিনিসগুলো শিখানো উচিৎ

লিখেছেন লিখেছেন অরণ্য সৌরভ ৩১ মার্চ, ২০১৪, ০৩:২৭:৩৪ দুপুর



শিশু কিশোরদের জন্য খুব সম্ভবত এর

চেয়ে ভালো কোন শিক্ষাবাণী আমাদের

বাংলা সাহিত্যে আর উচ্চারিত

হয়নি যা কিনা তার

অন্তঃসত্তাকে পরিস্ফুটিত করার জন্য,এক

অমোঘ নিয়ামক হিসাবে কাজ করবে।

আত্মবিশ্বাস একজন মানুষের বেঁচে থাকার

জন্য পানি বাতাস এর মতই অত্যন্ত

জরুরি এবং তাঁর মানব সত্তার জন্য

অপরিহার্য। যুগ যুগ ধরে যে সকল মানুষের

মহৎ অবদানে আজকের মানবজাতি,তাঁদের

প্রত্যেকেরই ছিল অসীম আত্মবিশ্বাস। আর

একজন

মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলার

জন্য শিশুকালের চেয়ে বোধ করি আর কোন

ভাল সময় নেই।

আপনার শিশুর স্কুলের প্রথম বছরটা খুবই

গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে যদি আপনার

শিশুকে তাঁর নিজের জু্তার

ফিতে বাঁধা শিখিয়ে দিতে পারেন তাহলে তাঁর

যে মানুষিক

দৃঢ়তা তৈরি হবে তা হয়তো আপনি বা আমরা কেউই

কল্পনাও করতে পারবো না। একবার

ভাবতে পারেন স্কুলে কখনো তার জুতার

ফিতে খুলে গেলে সে যদি আর দশটা শিশুর

সামনে নিজে নিজেই তার

ফিতে বাঁধতে পারে তাহলে তার নিজের উপর

আত্মবিশ্বাস কোথায় গিয়ে ঠেকবে ?

স্কুলের পড়ার ব্যাগ

আপনি নিজে না গুছিয়ে আপনার

শিশুকে করতে দিন। আপনি শুধু খেয়াল রাখুন

সে ঠিক ঠাক বই খাতা নিচ্ছে কি না,

এতে ছোটবেলা থেকেই

মানসিকভাবে গোছানো হয়ে গড়ে উঠবে।

ক্লাসে ফার্স্ট বা সেকেন্ড

হলো কি না সেটা আসলে শিশুর জন্য কোন

গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার না, তাই

সে ক্লাসে কি পারলো আর

কি পারলো না সেটা নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন

না হয়ে সে তার স্কুলটা উপভোগ

করছে কিনা সে দিকে নজর দেয়া তার শারীরিক

এবং মানসিক উভয়ের জন্যই ভালো।

বাচ্চারা তার খেলনা নষ্ট করবে এটাই

স্বাভাবিক। এজন্য

তাকে বকাঝকা না করে বোঝানোর

চেষ্টা করুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি তার

ভেতরে খেলনাগুলোর যত্ন নেয়ার বোধ

সৃষ্টি করা যায়। খেলার পরে তার

খেলনাগুলো আপনি বা কাজের

লোককে দিয়ে না গুছিয়ে তাকে দিয়েই খেলার

ছলে গুছিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। প্রথমদিক

হয়তো কাজ হবে না। কিন্তু সময়ের

সাথে সাথে আপনার শিশুটি দেখবেন

দায়িত্ববান হয়ে উঠেছে।

স্বামী স্ত্রী এর মধ্যে দাম্পত্যে কলহ

হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে লক্ষ্য রাখবেন

আপনার শিশুটি যেনো এর বলি না হয়। তার

বাবা-মা এর মধ্যকার সম্পর্ক সে যেনো সব

সময় উপলব্ধি করে মধুর,যা তার ভবিষ্যৎ

ব্যক্তিগত জীবনে সুখের ছায়া ফেলবে।

ভিক্ষুক বা কোথাও কোনো কিছু দান করার

সময় যতটা পারেন আপনার

শিশুকে সাথে রাখতে,এতে তার মন উদার হবে।

পৃথিবীকে সে আরও

বেশি ভালোবাসতে শিখবে।

আপনার শিশুর মতামতকে তার

সামনে তুচ্ছতাচ্ছিল্য

না করে এমনভাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন

যেনো সে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।

এতে তার আত্মশ্রদ্ধা বাড়বে।

সপ্তাহে অন্তত একটি দিন এবং ছুটির

দিনগুলোতে আপনার শিশুকে একটু প্রকৃতির

কাছাকাছি নিয়ে যান। তাকে ছেড়ে দিন

খোলা হাওয়ায়, স্পর্শ করান মাটিকে।

ধরতে দিন ফুলের উপর বসা রঙ্গিন

প্রজাপ্রতিটি। দৌড় দিতে দিন, দিতে দিন

ঝাঁপ। দেখবেন প্রকৃতির সান্নিধ্য আপনার

শিশুর মাঝে এক অপূর্ব ভালো লাগার

স্নিগ্ধতার ছাপ ফেলে যাবে যা আপনি হাজার

বা লক্ষ টাকা খরচ করেও কোন সুপার

শপে পাবেন না।

মোটামুটি পড়তে এবং লিখতে পারলে তাকে তার

ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখার বা আঁকার

ব্যাপারে উৎসাহিত করুন।

এতে সে নিজেকে নিয়ে ভাবতে শিখবে,অনুভব

করতে শিখবে। নিজের

কাছে আত্মসমালোচনার দ্বার হবে উন্মুক্ত।

পাঠ্যপুস্তকের বাইরে মজার মজার বই পড়ার

অভ্যাস গড়ে তুলুন।

এতে সে পুরো পৃথিবী নতুন

করে চিনতে শিখবে।

সরকারী সফর আলী কলেজ

আড়াইহাজার,নারায়নগঞ

বিষয়: সাহিত্য

৯২৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

200881
৩১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৩২
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : অনেক সুন্দর পরামর্শ দিয়েছেন ধন্যবাদ
200885
৩১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৫২
রাইয়ান লিখেছেন : দারুন সুন্দর লিখেছেন.... অসংখ্য শুভেচ্ছা ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File