হিজাব - ৬: পার্ট টাইম হিজাবী!
লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ০২ মার্চ, ২০১৮, ০৩:০৪:৩২ রাত
আমার এক পরিচিত আপু আছেন। আপু অনেক দিন থেকেই হিজাব ধরার কথা চিন্তা করছেন, কিন্তু শুরু করতে পারছেন না। আপু সেদিন আমাকে মেসেজ করলেন।
আপু বলছিলেন, "শারিন, আমি হলাম পার্ট টাইম হিজাবী! আমি এই হিজাব পড়ি আবার পড়ি না! স্কুলে গেলে হিজাব পড়ি আবার কোনো বিয়েতে গেলেই পড়ি না। হিজাব পরে কোথাও যাই আবার হিজাব ছাড়া ছবি অনলাইনে আপলোড করে দেই. আমার নিজের কাছে খারাপ লাগে, আমার মনে হয় নিজের সাথে নিজেই চিটিং করছি। তাই ঠিক করেছি এখন থেকে আমি আর হিজাব- ই করব না। একবার ধরা, একবার ছাড়া - এসব না করে হিজাব টা একেবারে ছেড়েই দিবো। পরে যখন নিজের ঈমান আরো শক্ত হবে তখন না হয় করা যাবে ইনশাআল্লাহ। তুমি কি বলো? আমি কি কাজটা ঠিক করছি?"
আমি হেসে বললাম, Well আপু, ডিসিশানটা তো তোমার, সো তুমি আমাকে বলো, তোমার নিজের কাছে কি মনে হয় ? তুমি কি কাজটা ঠিক করছো?
আপু প্রায় সাথেই সাথেই বলেন, "না আপু কাজ টা ঠিক হচ্ছে না." (এ জন্যে আমার আপুকে এতো ভালো লাগে। আপু humble এন্ড honest! যাহোক,
আমি বললাম, আপু তাহলে কাজটা ঠিক না হলে আমাদের কি সেটা করা উচিত হবে? আপু তুমি হিজাবে রেগুলার থাকতে পারবে না এই ভয়ে যতটুকু করছো, সেটাও যদি ছেড়ে দেও, তাহলে তোমার ঈমানের জন্যে ধরে রাখার মতো তো আর কিছু থাকলো না। হ্যাঁ অনেকে এই ভয়ে হিজাব করা ধরে না যে, সে হিজাব শুরু করলে মেইবি রেগুলার থাকতে পারবে না। তাই হিজাব পড়াই ছেড়ে দিলাম কারণ আমি হিজাব ধরে আবার এটা ছেড়ে দিতে পারি। এটা অনেকটা এরকম যে, আমি গোসল করাই ছেড়ে দিলাম কারণ একবার গোসল করার পর আমি তো আবার ময়লা হয়ে যেতে পারি! আমরা কি ময়লা হবার ভয়ে গোসল করা ছেড়ে দেই ? ময়লা যত বেশি হয়, সেটা পরিস্কার করার জন্যে গোসল তত বেশি! ঠিক তেমনি আপু, আমরা যখন আল্লাহর কথা না শুনে খারাপ কোনো কাজ করি সেটা আমাদের হার্টকে ময়লা করে দেয়. তুমি একেবারে হিজাব ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছো আপু, তুমি কি চাও তোমার হার্ট ময়লা হয়ে যাক আল্লাহর সামনে? তোমার ভালো রেকর্ড টা খারাপ হয়ে যাক?
এন্ড আপু, ঈমান নিয়ে ups এন্ড downs তো থাকবেই। কোনো কোনো দিন তোমার হিজাব পড়তে অনেক ভালো লাগবে, আবার কোনো কোনো দিন হিজাব পড়তে কষ্ট হবে - এরকম Fluctuation হওয়া নরমাল। যতক্ষণ তোমার ঈমানের মেইন ফাউন্ডেশনটা ঠিক আছে, কষ্টের দিন গুলো আল্লাহর সাহায্যে easily কেটে যাবে ইনশাল্লাহ। তুমি এর বিনিময়ে যে পরিমান পুরস্কার এন্ড Honor পাবে ( ( in both দুনিয়া এন্ড আখিরাহ), সেটার তুলনায় একটা বিয়েতে চুল না দেখিয়ে যাবার কষ্ট তোমার কাছে কিছুই মনে হবে না! আপু তাই আমি তোমাকে মোটেও সাজেস্ট করবো না যে তুমি হিজাব একেবারে ছেড়ে দেও। তুমি যে রকম মেয়ে, তুমি এর থেকে আরো অনেক ভালো কিছু করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।"
আপুর সাথে এই আলাপ হয় প্রায় এক মাস আগে. আলহামদুলিল্লাহ আপু তখন থেকে হিজাব যে ধরেছেন, আজ পর্যন্ত ছাড়েননি। কোনো বিয়েতে গেলেও ছাড়েন নি, ফেসবুকে আপলোডের সময়ও ছাড়েন নি। আপু আমার সাথে মাঝে মাঝে শেয়ার করেন, কমপ্লিটলি হিজাব শুরু করার পর থেকে আপুর নিজের উপর কনফিডেন্স অনেক বেড়ে গেছে এন্ড আপুর নিজের কাছে অনেক শান্তি লাগে আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ্র রহমতে ওই দিনের পর আপুর হিজাব নিয়ে আর কোনো সমস্যা হয় নি এন্ড সামনেও হবে না ইনশাআল্লাহ। আমার আপুর জন্যে রইলো এত্তগুলা দুআ !
বিষয়: বিবিধ
১০৩৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি একটা লিখার রিকুয়েস্ট করলে তো আমি সেটা মোটেও ফেলতে পারি না - তবে আমি চাই লিখাটা আপনার কাছ থেকেই আসুক।
আমার ডাক্তার আব্দুর রহমান আস সুমাইত এর জীবনী নিয়ে কোন জ্ঞান নেই। আপনি চাইলে আমি জীবনী নিয়ে পড়া-শোনা করে দেখতে পারি ইনশাআল্লাহ্।
আপনার হাতকে আল্লাহ সুবহানুতা'আলা দ্রুত সুস্থ করে দিক, সেই হাতে অনেক বারাকাহ্ দিক যেন আমরা সবাই সেই হাত দিয়ে লিখাগুলি পড়ে দুনিয়া এবং আখিরাতে আমাদের কল্যাণ করতে পারি! জাঝাকাল্লাহু খইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন