শাস্তি
লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:১০:১৬ রাত
একজন ক্রিমিনাল সাইকোলজিস্টকে জিজ্ঞেস করা হলো, “একটা ক্রিমিনালের জন্যে সবচেয়ে বড় শাস্তি কি হওয়া উচিত?” Interestingly তিনি উত্তর দিলেন, “ক্রিমিনালের ক্রাইম করাটাই তার লাইফের সবচেয়ে বড় শাস্তি!” ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে বুঝলাম সেদিন ক্লাসে। আমার টিচার বলছিলেন যে, অনেকে মনে করেন যে, সে যখন নামাজ পরে না, সেটার শাস্তিটা সে অনেক পরে গিয়ে পাবে!
কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে ভীষণ লজ্জায় পড়তে হবে এবং আল্লাহ না করুক আলটিমেট গাফেলতির জন্যে জাহান্নামে যাবার মাধম্যে হয়তো সে সবচেয়ে বড় শাস্তি টা পাবে। কিন্তু সত্যি হচ্ছে, নামাজ পড়তে না পারাটাই আসলে একটা ইমিডিয়েট শাস্তি!!
কেউ যখন একেবারে নামাজ পড়া ছেড়ে দেয়, তাদের মনের শান্তি খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হয়। আর যারা রেগুলার নামাজ পড়ে, তাদের সামনে দুনিয়া ভেঙ্গে পড়লেও তারা মনের মধ্যে শান্তি খুঁজে পেতে পারে। আমার এক বান্ধবী আছে। ওর আব্বু-আম্মুর মারামারি চলছে অনেক দিন ধরেই। ডিভোর্সের খবর ফাইনাল হয়েছে শুনেই ও সবার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়ে। আমি ওর পাশেই বসে ছিলাম। নামাজ শেষ করে আমার হাত ধরে শান্তভাবে আমাকে বলে, "অদ্রি, আমি জানি আমার ফ্যামিলি ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমার ছোট ভাইয়াটাকে আমি কবে আবার দেখবো জানি না, কিন্তু আমি জানি আল্লাহ আমার এন্ড আমার আম্মুর জন্যে অনেক সুন্দর একটা ফিউচার প্ল্যান করে রেখেছেন। দুয়া করো আল্লাহ যেন আমাদের সাথে থাকেন।" ওর চোখে যে শান্তি আমি দেখেছি সেটা বলে বুঝাতে পারবো না।
আমাদের একজন রেগুলার পেশেন্ট আছেন। সারাদিন-রাত যা ইচ্ছা তাই করে, ইচ্ছা মতন ক্লাবিং, ড্রিঙ্কিং, ড্যান্সিং- দিন শেষে বেহুঁশ হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়। তার হয়তো অনেক টাকা এন্ড “ফ্রিডম(!)", কিন্তু তার মনে কোন শান্তি নেই। ডিপ্রেশান সহ অনেক রকমের সাইকোলজিকাল ডিসঅর্ডার তার মেডিকেল রেকর্ডে জমা আছে।
মোটকথা, আল্লাহ কে পিকচার থেকে বের করে দিলে প্রতিদিনের আড্ডা, সেলফি, বন্ধু-বান্ধব সব থাকলেও দিন শেষে খালি খালি লাগবেই! আমরা আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ে গেলে, আল্লাহ আমাদের খানা-পানি বন্ধ করে দেন না। আমাদের নিঃশ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দেন না, আমাদের হার্টবিট-ও বন্ধ করে দেন না। কিন্তু আমাদের অন্তরে যেন সিল মেরে দেওয়া হয়। খারাপ কাজ আমাদের কাছে প্রিয় হয়ে যায়। ভয়ঙ্কর পাপকেও কিছুই মনে হয়না। আমাদের অন্তর Spiritually কালো হয়ে যায়। দিনের পর দিন যেতে থাকে - সুস্থ তরতাজা দেহ নিয়েও আমরা একটা সিজদাও করতে পারি না। এর থেকে বড় শাস্তি আসলে কিছু নেই।
বিষয়: বিবিধ
৮০০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
- হে শায়খ আমার সন্তান মারা গেছে। আমি সবর করতে পেরেছি।
- ঠিক আছে তুমি তো সবর করেছো। কিন্তু সবর করতে যে পেরেছো, এর শুকরিয়া আদায় করেছো কী?
- না শায়খ পারি নি।
- আচ্ছা সবর করতে পারার শুকরিয়া আদায় করো।
- জি, এটাই বাকি ছিলো শায়খ। এটাও আলহামদুলিল্লাহ পূর্ণ করলাম।
(সত্যঘটনা অবলম্বনে)
-
যারা নিয়ামত লাভে ধন্য এটা তাঁদের জীবনের বাস্তব ঘটনা। তবে আমরা এমন অবস্থা থেকে মালিকের কাছে পানাহ চাই।
একমত আপু
মন্তব্য করতে লগইন করুন