ইমাম আহমাদ(রঃ) এর জীবনের একটি কাহিনী
লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ১২ আগস্ট, ২০১৫, ০৯:৩৩:১২ সকাল
ইমাম আহমাদ (রহিমউলাহ্) খুবই সাদাসিধে ছিলেন। তার হালাকায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ ছাড়িয়ে যেত, অথচ তার জীবনযাপন এত সিম্পল ছিল যে কেউ না জানলে চিন্তাও করতে পারবে না যে, এই হচ্ছেন ইমাম আহমাদ।
ইমাম আহমাদ দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের জন্যও অনেক কষ্ট করতেন। যখনই হাদীস, ই'লমের কোন স্কলারের খোঁজ পেতেন, অনেক কষ্ট করে, দূরের মরুভূমির পথ হেঁটে হেঁটে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে যেতেন তার কাছ থেকে শিখার জন্যে। পথের মধ্যে রেস্ট নিবার জন্যে তিনি মসজিদে মসজিদে থামতেন।
এভাবে একবার তিনি travel করার মধ্যে রাত হয়ে গেলে ভাবলেন মসজিদেই রাত কাটিয়ে দিবেন। কিন্তু মসজিদের প্রহরী বাধ সাধলো। প্রহরী বলছে যে, তাকে মসজিদ লক করে ডিউটি ক্লোজ করে ঘরে যেতে হবে। এভাবে সে কাউকে মসজিদে থাকতে দিতে পারবেন না। ইমাম আহমাদ অনেক কাকুতি-মিনতি করলেন যে, তাকে যেন মসজিদে থাকতে দেয়! সুবহানআল্লাহ্! তখন চারপাশে স্কলার হিসেবে ইমাম আহমাদের কত নাম ডাক! তিনি যদি খালি একবার প্রহরীকে বলতেন যে, 'জানো আমি কে?" তাহলেই প্রহরীর ভয়ে জড়োসড় হয়ে যাবার কথা! অথচ কি অহংকার-বিহীন স্বচ্ছ ঈমান তাদের ছিল!! তিনি একবারের জন্যেও তার পরিচয় না দিয়ে শুধু মিনতি করতে লাগলেন যে, দেখো আমার ঘর নেই, আমি এখানে কাউকে চিনি না, আজকের মত মসজিদে থাকতে দাও। শেষ পর্যন্ত প্রহরী বিরক্ত হয়ে ইমাম আহমাদের ২ পা ধরে তাকে মসজিদ থেকে টেনে বের করে মসজিদে তালা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেল।
তো ইমাম আহমাদ আর কি করবেন। তার আর মসজিদে থাকা হলো না।
দূর থেকে একটা রুটির দোকানে কাজ করছিল এক লোক। এই ঘটনা দেখে তার মায়া হল বেশ। তো সে ইমাম আহমাদকে গিয়ে বললো যে, তুমি রাতের জন্যে আমার মেহমান হতে পারো। আলহামদুলিল্লাহ্, ইমাম আহমাদ খুশি মনে তার সাথে তার বেকারীতে চলে গেল।
তো এখন যখন ইমাম আহমাদ লোকটাকে রুটি বানাতে দেখছিলেন, তিনি খেয়াল করলেন যে, লোকটা রুটি বেলছে, আর প্রতিটা ধাপে তাসবীহ্ পাঠ করে যাচ্ছে, Continuous তস্বীহ চলছে তো চলছেই । ইমাম আহমাদ মুগ্ধ হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এই যে তুমি এত সুন্দর করে তোমার রবের পবিত্রতা বর্ণনা করে যাচ্ছ, এতে তোমার কি কি উপকার হচ্ছে?'
রুটি বানানো লোকটি বললো যে, এজন্যে আমি আমার রবের কাছে যেটাই প্রার্থনা করি, তিনি আমাকে সেটাই দিয়ে দেন।
বাহ্!!! সুবহানআল্লাহ্!
আবার একটু থেমে লোকটি বলতে লাগলো, "... তবে আমি বেশ কয়দিন ধরেই আল্লাহ্র কাছে কিছু চেয়ে যাচ্ছি, সেটা এখনো পাওয়া হয়নি আমার।"
ইমাম আহমাদ কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, " আচ্ছা! কি চাচ্ছ তুমি?"
লোকটি জবাব দিল, " আমার অনেক ইচ্ছা আমি ইমাম আহমাদকে একবার নিজ চোখে দেখবো। তার কথা কত শুনেছি!! দ্বীনের ই'ল্ম ছড়াতে তার অবদানের কথা কে না জানে। তাকে দেখার অনেক ইচ্ছা! সেটাই আর কি আল্লাহ্র কাছে চাচ্ছিলাম।"
সুবহানআল্লাহ্!!!
ইমাম আহমাদ হাসতে হাসতে বললেন, এই তোমার দুয়াই আমাকে দুই পা ধরে মসজিদ থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে এনেছে!!
কি স্বচ্ছ, পিউর ছিল আল্লাহ্ পথে চলা মানুষগুলির মনগুলো!! মাশাআল্লাহ্! :")
আল্লাহ্ সুবহানুতা'আলা আমাদের অন্তরকেও তাঁর দ্বীনের প্রতি নরম করে দেক, ভাই/বোনদের প্রতি বিনয়ী করে দেক, আমাদের অন্তরের নানা অসুখঃ হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, লালসা, ইগো, কামনা ইত্যাদি গুলিকে সাড়িয়ে আমাদেরকে পিউর বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হবার তাওফিক দেন যারা উভয় জীবনেই সফল!
আমিন
বিষয়: বিবিধ
১৩১৭ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সূত্র দিলে ভাল হতো।।
অনেক ধন্যবার সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
অনেক ধন্যবার সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
স্মরণ করিয়ে দিলেন,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকিল্লাহ
অনেক ধন্যবার সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
অনেক ধন্যবার সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
সামান্য রুটি ওয়ালার আমলের মর্যাদা দিতে যাইয়া, জগতবিখ্যাত একজন দায়ী ও ইমামে কে মসজিদ থেইক্যা দুই পা চেছড়াইয়া বাহির করা হইল!
আল্লাহ এত বড় বেকুপ নয় যে, একজন আল্লাহ প্রেমিকের মর্যাদা বুঝাইতে যাইয়া, অন্য আরের জন আল্লাহ প্রেমিক কে এভাবে অপদস্ত করেন।
এটা লঘু চিন্তার গল্প এবং আল্লাহর ইজ্জত সম্পর্কে ধারণা না থাকিবার কারণেই এই ধরনের গল্প রচিত হইয়াছে। এই গল্পে আল্লাহ, রুটি ওয়ালা ও ইমাম শাফেয়ি তিন জনকেই বেইজ্জত করা হইয়াছে।
আমনে অবশ্যই ভাল নিয়তের কারণে পোষ্ট দিছেন সেই জন্য আমনেরে অনেক ধন্যবাদ।
অবশ্য মউদুদী এগুলি কইলে বিশ্বাস করা যাইতো।
যেখানে নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা ,সেখানে আল্লাহ পর্দার বিধান দিয়ে জুলুম করেছেন ।-------কুখ্যাত মউদুদী
অার ঈমাম মালিককে নিয়ে যে গল্পটি উনি বললেন,সেটা উপদেশ মূলক। হতে পারে সেটি অতিরঞ্জিত বা বানোয়াট,তবে এটি শিক্ষনীয়। আমি একজন প্রফেসরের কাছে এই গল্পটি শুনেছিলাম কিন্তু সেখানে মসজিদের উক্ত কাহিনীটি ছিলনা। বরং শুনেছিলাম-ঈমাম মালিক এক সন্ধ্যায় উক্ত রুটি ওয়ালার মেহমান হয়েছিলেন।...
ঈমাম মালিক খলিফা হারুনূর রশিদের সময় প্রধান বিচারপতি ছিলেন। খলিফা হারুনূর রশিদ উনার ভয়ে জড়সড় থাকতেন। কারন মানুষ ঈমাম মালিকের কাছে খলিফার বিরুদ্ধে নালিশ করলে তাকে বেইজ্জত হতে হবে এই ভয় তিনি করতেন। ইসলামী খিলাফতে খলিফাকে নিয়ন্ত্রন করার জন্যে একটি আলাদা বিচারালয় থাকে,যেখানে জনগন সরাসরি বিচার চাইতে পারে। এটি শুধু ইসলামী খিলাফত সিস্টেমেই আছে,অন্য কোথাও নেই
জাঝাকাল্লাহু খইর!
অনেক ধন্যবার সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে!
জাঝাকাল্লাহু খইর!
মন্তব্য করতে লগইন করুন