দ্য আল্টিমেট মুক্তি!!
লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ২১ জুলাই, ২০১৪, ০২:২১:১৯ রাত
একজন মুসলিম আর হীনমন্যতা??
কক্ষণো না!
কোন বিষয়েই না! বেশভূষা হোক, গায়ের রঙ হোক, টাকা-পয়সা হোক বা যাই হোক না কেন –কোন দিক থেকেই অন্যান্য সৃষ্টির সাথে তুলনা করে নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগা কোন মুসলিমের বৈশিষ্ট্য নয়...
আলহামদুলিল্লাহ্! আমি মুসলিম! আল্লাহ্ আমাকে এই বিশ্বের এতগুলি মানুষের মধ্য থেকে "লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু" বলার তাওফিক দিয়ে ধন্য করেছেন, আমাকে মনোনীত করেছেন আল্লাহ্-র দ্বীনের কাজের জন্যে, আমাকে তিনি দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তাঁর প্রতিনিধি করে, কত মহান দায়িত্ব আমার! সেই আমি হীনমন্যতায় ভুগতেই পারি না!
বলুক না তারা আমাকে 'তুমি জঙ্গি', 'তুমি ব্যাকডেটেড', 'তুমি ধর্মান্ধ', 'তুমি এই' 'তুমি সেই' ...
.... আমার আল্লাহ্ আমাকে কি বলেছেন জানেন?
-
*"আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে।" *
[সূরা ত্বীনের ৪ নং আয়াত]
আল্লাহ্ সুবহানুতা’আলা আমাকে ইতোমধ্যে কুরআনে বলে দিয়েছেন যে, ... তিনি আমাকে সবচেয়ে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন সুবহানাল্লাহ্! ..তিনি গর্বভরে তার সৃষ্টির সম্পর্কে এই আয়াত নাযিল করেছেন যে, তার এই সৃষ্টি-ই কতই না সুন্দর!! ...ব্যস!
প্রিয় পাঠক বলুন তো, কার জন্যে আল্লাহ্-র এই কমপ্লিমেন্ট? কার জন্যে আল্লাহ্ রব্বুল আ'লামীনের প্রশংসা সাত আসমান থেকে সম্মানিত ফেরেস্তা দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া? কার জন্যে?
- আমার জন্যে,
আপনার জন্যে,
আমাদের জন্যে!
আমাদের কাছে যেখানে দোজাহানের প্রভুর কমপ্লিমেন্ট/প্রশংসা আছে, সেখানে তাহলে আর দুনিয়ার অন্য কারো কোন কমপ্লিমেন্টের আমাদের আর কতটুকু প্রয়োজন??
আমার আল্লাহ্ রব্বুল আ'লামীন আমাকে আরো দারুণ কি শিখিয়ে দিয়েছেন!! শুনবেন সেটা ??
আচ্ছা শুনিয়েই দেই, সেটা হচ্ছে-
*"আপনি বলুন, আমার প্রার্থনা, আমার কোরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ, বিশ্ব-প্রতি পালক আল্লাহরই জন্যে"*
[সূরা আন-আ’মের ১৬২ নং আয়াত]
এই যে, আমাদের অশ্রু সজল চোখে একান্তে করে যাওয়া প্রার্থনাগুলি, আমাদের অশান্ত মনের কুরবান করে দেওয়া উদ্যাম কামনা-বাসনাগুলি, আমাদের জীবনে্র প্রতি মুহুর্তের নিঃশ্বাসগুলি, আর এ ক্ষণস্থায়ী এ জীবন শেষে মৃত্যুর মাধ্যমে শুরু হওয়া পরকালের যাত্রাগুলি-- এগুলি সব কার জন্যে? কিসের জন্যে ??
কেবল মাত্র গোটা মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা এক আল্লাহ্- রাব্বুল আ'লামীনের জন্যে"*!!
সুবহানআল্লাহ্!
আমি-আপনি তো এই পৃথিবীতে এক আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকে Impress করতে আসি নি ... আমাকে পৃথিবীতে আল্লাহ্-র প্রতিনিধি করে পাঠানো হয়েছে তাঁকে সন্তুষ্ট করতেই আমার জীবন-মরণ-প্রার্থনা-কোরবানী সবকিছু! আর মহান আল্লাহ্-র প্রতিনিধি হয়ে কি না শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্য্যের বিচারে, সমাজের তথাকথিত 'স্মার্টনেস' স্কেলের বিচারে, কতিপয় অবুঝ মানুষের ছুড়ে দেওয়া কমেন্টের বিচারে ... আমি নিজেকে ভাববো হীন কেউ?
কক্ষণো না! কোন দিনও না!
আমি মুসলিম, আমি গর্ব ভরে বলি, "I am proud to be a Muslim"...
আমি দাস! আমি গর্ব ভরে বলি, ... আমি আমার রবের দাস!
আমি দৃঢ় হবো, বিনয়ী হবো, আত্মবিশ্বাসী হবো। আমি নিজেকে নিয়ে কখনো হীনমন্যতায় ভুগবো না !! আমি যে আশরাফুল মাখলুকাত!
আমার রব, মহান আল্লাহ্ - তিনি যে আমার অন্তরের সৌন্দর্য্য দিয়েই আমাকে বিচার করবেন !! সুবহান আল্লাহ্!
আর তাই, আমাদের যত হীনতা প্রকাশ কেবল এক আল্লাহ্-রাব্বুল আ’লামীনের সামনে ... জায়নামাজের কিয়ামে, তাঁর জন্যে করা সিজদাতে ... তাঁর কাছে করা মুনাজাতে ...
তাছাড়া আর কারো সামনে না, আর কোথাও না !!
আর আপনি যদি আল্লাহ্র সামনে মাথা নিচু না করেন, যদি একমাত্র আল্লাহ্-র আদেশ-নিষেধের কাছেই নিজেকে সঁপে দিতে না পারেন... তবে মনে রাখবেন, অবশ্যই আপনি অন্য কিছু না কিছুর সামনে ঠিক-ই মাথা নিচু করছেন!
যদি আপনি আল্লাহ্-র দাসত্ব ছেড়ে দেন, তাহলে হয় শয়তানের দাসে পরিণত হয়েছেন, নাহলে সমাজের, নতুবা নিজেই নিজের কুপ্রবৃত্তির বা নফ্সের গোলাম হয়ে গেছেন!!
এই প্রতিটি দাসত্বের পরিণাম ভয়াবহ অকল্যাণের- দুনিয়াতেও এবং আখিরাতেওও !!
অথচ এক আল্লাহ্ রব্বুল আ'লামিনের দাসত্ব স্বীকার করে নেওয়ার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত শান্তি, অন্তরের পরিতৃপ্তি!
হাজার হোক, যিনি কি না এই অন্তরের স্রষ্টা- তাঁর থেকে ভালো আর কে জানবে কি সে এই অন্তর শান্ত হবে ??
"নিশ্চয়ই একমাত্র আল্লাহ্-র স্মরণেই তাদের চিত্ত প্রশান্তি লাভ করে"
(সূরা রা'দঃ ২৮)
আর এভাবেই একমাত্র এক মহান সত্তার দাসত্ব স্বীকার করে নিবার মাধ্যমে আল্লাহ্ আজ’ওয়াজাল আমাদেরকে সমাজের দাসত্ব, শয়তানের দাসত্ব, নিজের নফ্সের দাসত্বের মতন আরো হাজার হাজার মিথ্যা প্রভুর দাসত্ব থেকে মুক্তি প্রদান করে থাকেন আলহামদুলিল্লাহ্ !! —
তাই, আল্টিমেট মুক্তি এখানেই !! নিজেকে আল্লাহ্-র দাস হিসেবে মেনে নেওয়ার মাঝেই সত্যিকারের মুক্তি!! নতুবা, মিথ্যা প্রভুদের দাসে নিমজ্জিত হয়ে অন্ধকারের মধ্যে যতই হাতড়াতে থাকি না কেন, 'মুক্তি' -র সন্ধান মিলবে না !!
বিষয়: বিবিধ
১২২৯ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ফি আমানিল্লাহ্!
আপনার মত করে যদি সবাই চিন্তা করা শুরু করে, তবে মুসলিমদের ভবিষ্যৎ আশা করি অনেক সুন্দর হবে।
লিখাটি সময় ও ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যে অসংখ্য শুকরিয়া!
ফি আমানিল্লাহ্, দুয়াপ্রার্থী!
তবে এখনও মনে হচ্ছে শৃঙ্খলাবদ্ধ রয়েছি ...
আশা রাখি মুক্তির ...
লিখাটি সময় ও ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যে অসংখ্য শুকরিয়া!
ফি আমানিল্লাহ্!
লিখাটি সময় ও ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যে শুকরিয়া!
লিখাটি সময় ও ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যে অসংখ্য শুকরিয়া! ভালো থাকবেন আপুণি!
আলহামদুলিল্লাহ্! আমি মুসলিম! আল্লাহ্ আমাকে এই বিশ্বের এতগুলি মানুষের মধ্য থেকে "লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু" বলার তাওফিক দিয়ে ধন্য করেছেন। আপনার লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ।
০ তাহলে কেন ২য় বিয়ে করতে গেলে স্বামীকে স্ত্রীর অনুমতি নেবার মনুষ্য আইন বানানো হয়েছে যেখানে আল্লাহই পুরুষদের অনুমতি দিয়েছেন যদি সামর্থ্য থাকে ৪ টা পর্যন্ত বিয়ে করার ? আল্লাহর আইনটা কি মনঃপুত ছিল না ?
০ তাহলে কেন নারী নির্যাতন আইন ও আদালত বানানো হয়েছে যেখানে আল্লাহই স্বামীদের পারমিশন দিয়ে রেখেছেন একটা বিশেষ পর্যায়ে গিয়ে স্ত্রীকে প্রহার করার ?
আল্লাহর বিধান মানাকেই যদি আল্টিমেট শান্তি বলতে চান তাহলে কেন উপরোক্ত আইন গুলো করা হয়েছে ?
লিখাটি সময় ও ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যে অসংখ্য শুকরিয়া আপনাকে!
যখন নিজেদের উপর ব্যাপারটা চলে আসে তখনই পিছলাতে শুরু করে । এভাবেই আপনারা চিরটা কাল চলে আসছেন ।
কিতাবের কিছু অংশ পছন্দ হল , তা গ্রহন করলেন । আর কিছু অংশ পছন্দ হল না - তা বর্জন করলেন বা মনুষ্য আইন বানালেন ।
পরিপূর্ণ রুপেই ইসলামে প্রবেশ করার জন্য আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন - এটা কি জানেন ?
দুয়া রাখবে আপুণি, ফী আমানিল্লাহ্! আল্লাহ্ তা'আলা তোমাকেও ভালো রাখেন যেন
মন্তব্য করতে লগইন করুন