'ফ' তে ফেসবুক, 'ফ' তে ফিতনাঃ কিছু উপকারী টিপ্স
লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ১০ মে, ২০১৪, ১১:২০:৫২ সকাল
ফেসবুক বর্তমান বিশ্বে আলোড়ন তোলা এক সামাজিক অন্তর্জাল তৈরির ওয়েবসাইট। আলহামদুলিল্লহ অনেক দায়ীরা সুন্দর ফেসবুকের মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াহ করে যাচ্ছেন। কিন্তু, শয়তান যে ফেসবুক নিয়ে কি পরিমণ জ্বালায়--সেটা কেউই অস্বীকার করতে পারবে না. একে তো সময় নষ্ট করায়... প্লাস রিয়াহ্ আর ফিতনার ভয় তো আছেই...
কিন্তু, সে জন্যে আবার একাউন্ট Deactivate করে বসে থাকাটাও আমার কাছে permanent কোন সমাধান মনে হয় না. কারণ, আবার log in করলে দেখা যায় যে, যে-ই সে-ই!! মাথা ব্যথা করলে তো আর মাথা কেটে ফেলে দিতে পারি না, ওষুধ দিয়ে ঠিক করাতে হবে ...
তাই ভাবলাম এক্ষেত্রে নিজের জন্যে কিছু Thumb rules ঠিক করে নেই... আর এ ফাঁকে সবার সাথেও উপকারী কিছু টিপ্স শেয়ার করি... ফেসবুকের নেশা, রিয়া ও এই নিয়ে শয়তানের ওয়াসওয়াসা, থেকে বাঁচতে আমরা যা যা করতে পারি-
১. সবসময় 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" বলে লগ-ইন করা.
২. বেশি ঘন ঘন নোটিফিকেশন চেক না করা. যত কম করা যায় ততই ভালো.
৩. নিজের প্রফাইল কম ভিসিট করা, হোম পেইজ আরো বেশি ভিজিট করা, কারণ বার বার নিজের প্রোফাইলে গিয়ে গিয়ে কি কয়টা Like পড়ল- সেটাতে চোখ বুলাতে বুলাতে যদি ভালো লাগার এই অভ্যাস থেকে রিয়া শুরু হয়ে যায় তাহলে, সমস্যা আছে ! পারলে নিজে নিজে পোস্ট লিখার কথা কম চিন্তা করা, অন্যদেরটা বেশি শেয়ার করা।..
৪. আর পারলে একটা পোস্ট দিয়েই সাথে সাথে লগ-অফ করে বের হয়ে আসা. আমি সেটাই করি সাধারণত। কারণ Like পরা শুরু হলেই শয়তান ওয়াসওয়াসা শুরু করে দিতে পারে. এভাবে নিজেকে বুঝানো যায় যে, “আমি যা লিখেছি একমাত্র আল্লাহর জন্যে লিখেছি, আর কে আমার লিখা পড়ে খুশি হলো বা হল না, পছন্দ করল কি করল না-- সেটা জানাটা এতটাও ইম্পর্টেন্ট না !!”
৫. এভাবে নিজেকে চেক করা যায় মাঝে মাঝে যে, যে লেখায় তুলনামূলক কম Like পরেছে , আর যে লেখায় অনেক like পরেছে- দুই টার দিকেই তাকিয়ে আমাদের যেন SAME Exact ফিলিং হয়. “কষ্ট করে লিখলাম আর কেউ like দিল না”- এরকম চিন্তা যেন কখনো না আসে কারণ, এটাও শয়তানের ওয়াসওয়াসা !
কেউ না পড়লে কি যায় আসে? আল্লাহ তো ঠিক-ই পড়েছেন, তাই না? আর লিখার বিনিময় টাও আসবে আল্লাহর কাছ থেকে, তাহলে এখানে মন খারাপের কিছু নেই !
৬. আর যখন দেখা যায় যে ফেসবুকে বসে নোটিফিকেশন চেক করতে হাত নিশ -পিশ করছে, ওখানেই স্টপ হয়ে যাওয়া উচিত আমাদের। বেশি বেশি "আউযুবিল্লা হিমিনাশশায় তানির রাজিম" পড়া যায়। কারণ এমন নিশ-পিশানিকে বার বার প্রশ্রয় দিতে থাকলে চোখের পলকে অনেক অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যাবে! আমাদের বুঝি এত সময় আছে? আল্লাহ-র জন্যে, ইসলামের জন্যে এখন কত কিছু করা বাকি- তাইলে, এত সময় নষ্টের সময় কই !!
৭. আর সবসময় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে থাকতে হবে. সবসময় ! সবসময়! কারণ, আমরা যত যাই করি, সত্যিকার সাহায্য আসে আল্লাহ-র পক্ষ থেকে। ..
এক্ষেত্রে এরকম গোপন শির্ক থেকে দূরা থাকার একটা উপকারী দুয়া আছে-
اللّهُمَّ إِنّي أَعوذُبِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنا أَعْلَمْ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِما لا أَعْلَم
Allaahumma 'innee 'a'oothu bika 'an 'ushrika bika wa 'anaa 'a'lamu, wa 'astaghfiruka limaa laa 'a'lamu
O Allah, I seek refuge in You lest I associate anything with You knowingly, and I seek Your forgiveness for what I know not.
Ahmad 4/403. See also Al-Albani, Sahihul-Jami' As-Saghir 3/233 and Sahihut-Targhib wat- Tarhib 1/19
ইনশা আল্লাহ,, আমাদের আন্তরিক চেষ্টা থাকলে অবশ্যই আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করবেন. তখন দেখা যাবে যে শুধু ফেসবুকে না, যেখানেই হোক না কেন শয়তান আমাদের টিকি তাও ছুটে পারবে না। ..
আল্লাহ আমাদের সবাই কে ফেসবুকের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন।.
আমিন
[ বিঃদ্রঃ টিপ্সগুলি শুধু ফেসবুক না, ব্লগ বা অন্য যে কোন ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে... এমন যেন না হয়ে যায় যে ব্লগের মন্তব্য থেকে আমাদের অন্তরে 'রিয়াহ্'-র আশংকা দেখা যায় ... বার বার নিজেদের ইখলাস কে, নিয়ত কে চেক করে শুদ্ধ করে নেওয়া উচিত... যা লিখছি না লিখছি, এই মন্তব্য, প্রতি মন্তব্য- কেবল এবং কেবল আল্লাহ্ কে সন্তুষ্ট করতেই করছি তো ?
আল্লাহ আমাদের সবাই কে সব রকমের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন।.
আমিন ]
বিষয়: বিবিধ
১৪১৪ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন