রাগ করতে মানা!!
লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ১৪ এপ্রিল, ২০১৪, ০৮:৫০:৫১ সকাল
যখন কেউ আমার সামনে প্রচন্ড রাগী অবস্থায় থাকে, আমি খুব চেষ্টা করি একদম চুপ থাকতে। অবস্থা বেগতিক হলে মাঝে মাঝে বলার চেষ্টা করি, “ না না! এত্ত রাগ না! এত্ত রাগ না !! এটা শয়তান! আউ’যুবিল্লাহ্ পড় প্লিস, “আউ’যুবিল্লাহি মিনাশশায়তানির রাজীম” পড়তে থাকো!শয়তান পালাবে তাইলে! “ তাও কাজ না হইলে বলি যে, “উল্টা গুনতে থাকো তো দেখি, দশ থেকে শূন্য পর্যন্ত উল্টা গুনো, উল্টা গুনো! ছিঃ ছিঃ কিভাবে শয়তান রাগাচ্ছে, আর তুমিও রাগ করতেসো!”, আবার মাঝে মাঝে মনে হ বলি যে, “যাও শুয়ে পড়! শুয়ে পড়!” ( হাদিসে পড়েছিলাম, বেশি রাগ উঠলে দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়তে, বসে থাকলে শুয়ে পড়তে, শান্ত হবার জন্যে আর কি!)
মাঝে মাঝে অপর রাগী পক্ষ হয়তো একটু করে শান্ত হয়। আবার মাঝে মাঝে কোন কাজ-ই হয়না, উল্টা ব্রাশ ফায়ার হয় আমার উপর, “ যাও তুমি গিয়ে শোও গা! পড়ো গা আউ’যুবিল্লাহ্! একদম চুপ!! মেয়ে বেশি কথা শিখছে!”
এহেন প্রতিউত্তর পাইয়া আমার কষ্টে বুক ফেটে যাবার কথা! কিন্তু মজার কান্ড হচ্ছে, আমার কেন জানি দাঁত-কেলানো হাসি পায়! কিভাবে দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে যে একেকজন রাগী মানুষ বলে, “ এই! মাতবরি কম!” ... আমার কাছে মনে হয়, রাগের সময় তাদের মুখের সামনে আয়না ধরে যদি চেহারার এই এক্সপ্রেশানটা ওদেরকে দেখানো যেত, তারা নিজেরাও নির্ঘাত হেসে দিতো আর মনে মনে ভাবতো, “আল্লাহ্! শয়তান আমাকে অধৈর্য্য করে করে আমার এই হাল বানাইসে!”
বেশী রাগ উঠলে পুরা চেহারার ভোলটাই পাল্টে যায়! শয়তানের শয়তানী কৌশলের রূপ ফুটে উঠে চেহারার মধ্যেই! রাগ উঠা টাকেও আল্লাহ্-র একটা রহমত হিসেবে দেখা উচিত। যত বেশি রাগ উঠতে চাবে, দাঁত-টাত চেপে তত বেশি ধৈর্য্য ধারণ করলেই এত্ত এত্ত সওয়াব প্লাস আল্লাহ্-র রহমত ও বরকত তো আছেই, যার জন্যে শান্তি বিরাজ করবে আপনা থেকেই, ঘর থেকে ঘরে, সম্পর্ক থেকে সম্পর্কে!ব্যস শুধু আল্লাহ্ কে স্মরণ করে নিজের ইগো ভুলে গিয়ে একটু খানি ধৈর্য্য- আর কিছু লাগবেনা!
তাবারানীর ওই হাদীসটা মনে পড়ে গেলো-
“এক ব্যক্তি একবার রাসূল(সাঃ) এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “ হে আল্লাহ্-র রাসূল! আমাকে এমন একটা কাজের কথা বলুন যেটা করতে পারলে ওই কাজ আমার জান্নাতে যাবার কারণ হয়ে দাঁড়াবে?”
তিনি, রাসূল(সাঃ) বললেন, “তুমি কখনো রাগ করো না আর জান্নাহ্ হবে তোমার ঠিকানা!”
রাসূল(সাঃ) আরো বলেন,
“ক্রোধ ঈমানকে এমনভাবে বিনষ্ট করে দেয়, যেমনিভাবে ছাবির [এক প্রকার তিক্ত ফল] মধুকে নষ্ট করে দেয়”
(হাকীম সম্পর্কিত)
যাক্ গেহ্ সবার রাগ উঠলে আমি মাতবরি করাতে একটা ভালো জিনিস হয়েছে, একটু অভিমান গাল ফুলেছি কি ফুলে নাই, ওমনি শুরু হয়ে যাবে, “হ্যাঁ হ্যাঁ! নিজে সবাইকে রাগ করতে না বলে এখন নিজেই রাগ করে বসে আছে!”
ভালোই তো ভালো না??
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে এই রাগ করা থেকে বাঁচাক, শয়তানের কৌশলে না পরে ধৈর্য্য ধারণের তৌফিক দিন! আমীন
বিষয়: বিবিধ
১২২৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দি আইডিয়াল।
খুব সুন্দর লেখা...
ভালো লাগ্লো...
জাঝাকিল্লাহু খাইরান
আরো একটা জিনিস জানতাম রাগ উঠলে ওযু করলে খুব সম্ভবত রাগ কমতে থাকে! আগুন যেমন পানি নিভিয়ে দেয়, ওযুও তেমনি করে রাগ কে ঠান্ডা করে দেয়!
আল্লাহ্ আমাদের বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন। আমীন !
মন্তব্য করতে লগইন করুন