..............letter..................

লিখেছেন লিখেছেন ব্যর্থ জীবন ২৯ মার্চ, ২০১৪, ০৬:১৬:৪৭ সন্ধ্যা

::: একজন ছোট্ট মুজাহিদ, আব্দুল হামীদ হামজার চিঠি :::\

আমি তোমাকে ভালবাসি বাবা... দয়া করে আর কেঁদো না...আমরা একদিন সাক্ষাৎ করব... একসাথে ইসলামের পথে।বাবা... বলো আমরা জিহাদ করি শান্তির জন্য; শুভ বিদায় বাবা...আল্লাহ্ যেন সবসময় তোমার সাথে থাকেন। ও আল্লাহ্! তুমি কতনা করুণাময়, তুমি আমাদেরকে অনেক কিছু রহমত স্বরূপ দিয়েছ, অথচ আমরা তোমাকে সেগুলোর জন্য ধন্যবাদ জানাই না, তা সত্ত্বেও, তুমি প্রতিদিন আমাদেরকে বিভিন্নভাবে তোমার নিয়ামত দান করে যাচ্ছো। ও আল্লাহ্! তুমি কত সুন্দর, তুমি আমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছ এবং জান্নাতে যাওয়ার জন্য যেমন কাজআমাদের করা উচিৎ তা সম্পর্কে অবহিত করেছ, যাহোক, আমরা এতটাই উদ্ধত যে আমরা ঐসব কাজগুলোকে অবজ্ঞা করি যা আমাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। ও আল্লাহ্! আমার বাবা সবকিছুছেড়ে তার জীবন উৎসর্গ করেছেন তোমার দ্বীনকে সমুন্নত করতে। তিনি এ দুনিয়াতে কোন কিছুকেই প্রাধান্য দেননি; না টাকা পয়সা,না সম্পত্তি; প্রকৃতপক্ষে তিনি সবকিছু ভুলে গিয়েছিলেন এবং শুধুমাত্র স্মরণ রেখেছিলেন যে দুনিয়ায় ইসলামকে উঁচু ও প্রতিষ্ঠিত

করতে হবে। ও আল্লাহ্! এ কারণেই তিনি আমাদেরকে মুহাম্মদ

কাসিম, মাহমুদ গযনবী, তারিক বিন যিয়াদ এবং খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) – এর গল্প বলতেন, অবশেষে, তিনিও, তাদের মতো, শত্রুদের বিপক্ষে অস্ত্র ধরলেন এবং তার শরীরের শেষ

রক্তবিন্দু বের হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করতে থাকলেন। ও আল্লাহ্! বাবার

কাছে আমার সালাম পৌঁছে দিও এবং তাঁকে বলে দিও তাঁর ছোট্ট

ছেলেটি খুব ভাল আছে। ও আল্লাহ্! দয়া করে তাকে এটাও বল যে, তাঁর ছোট্ট ছেলেটি এই রমজানে জীবনের প্রথম রোজা রাখবে।

ও আল্লাহ্! আমাদের অনুপস্থিতিতে বাবাকে উদ্বিগ্ন হতে নিষেধ কর; এ দুনিয়ার জীবন অনেক ছোট। মা বলে, এ দুনিয়ার জীবন হঠাৎ

করেই শেষ হয়ে যাবে, আর তখন কোনও মা, বাবা, ভাই, বোন,

ছেলে অথবা মেয়ে কেউই কাজে আসবে না। ঐ দিন একজন শহীদ

তাঁর পরিবারের সত্তর জন সদস্যের জন্য সুপারিশ করতে পারবে এবং তাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। ও আল্লাহ্! বাবাকে বলে দিও

যে মা যখনই তাঁর কথা বলে, অনেক কষ্ট পায়। কিন্তু সে আমাকে অনেক সাহস দেয়। সে নিঃশব্দে কাঁদে, কিন্তু সে কখনো অধৈর্য ও

অসংযমী হয়ে কাঁদেনি। ও আল্লাহ্! বাবাকে বলো হতাশ না হতে। আমার মা অনেক সাহসী মহিলা, সে কাপড় সেলাই করে এবং প্রতিবেশীদের বাসন ধুয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। সে আমাকে দিনে স্কুলে এবং রাতে মসজিদে পাঠায়। মসজিদে আমি ক্বারীর কাছ থেকে কুরআন শিখি, আমার মা কারো কাছে কখনো অভিযোগ

করেনি। বরং, রাতে কাজ শেষ করে, সে আমাকে সাহসী ও

বীরদের গল্প বলে, যেমনটি বাবা করতেন, এবং বলে, আমি যেন

আমার বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেই। ও আল্লাহ্! ঈদ প্রায় চলে আসছে। অন্য ছেলে-মেয়েরা তাদের বাবার সাথে নতুন জুতা কিনবে। তাদের দর্জি দিয়ে বানানো নতুন কাপড় আছে এবং ঈদ

উপহারও কিনেছে বন্ধুদের সাথে দেয়া- নেয়া করতে। যখনই মাকে নতুন জুতা ও কাপড় কিনে দিতে বলি মা উত্তর দেয় না। সে শুধু

নিশ্চুপ থাকে আর অন্য ঘরে চলে যায়। এখন আর আমি তার

কাছে আবদার করি না। হয়তো এর পিছে কোন ভাল কারণ আছে।

কিন্তু আল্লাহ্! বাবাকে বলে দিও উদ্বিগ্ন না হতে। যদিও আমি নতুন

কাপড় না পাই, যদিও আমি নতুন জুতা না পাই- তাতে কী? ঈদ

তো একটি দিনই, এটা কেটে যাবে। দিনটা কাটানোর পরিবর্তে খেললাম, যা ছেলে- মেয়েরা করে এবং বাজারে না গিয়ে সময়টা আমি মার সাথে কাটাব। যাহোক, আমি আর বাচ্চা নেই। আমি বুঝতে শিখেছি। আমার সাহস ও সংকল্প অনেক মজবুত। ও আল্লাহ্! বাবাকে বলে দিও আমরা অনেক খুশি। আমার কিছুর অভাব

নেই। শুধু বাবাকে বলো আমাদেরকে মনে করতে। এবং আল্লাহ্,

বাবাকে বল দুশ্চিন্তা না করতে, যেহেতু আমি আর কাঁদি না। কেও নেই যে আমাদের আদর করে কিছু বলবে, কেও নেই যে আমার সাথে কোন খেলা খেলবে, কেও নেই যে আমার সাথে রাগ করবে,

কিন্তু মা সবসময় চেষ্টা করে আমাকে খুশি রাখতে। যখন আমি শুনি অত্যাচারীরা আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিস্তিন, গুজরাট, আমবন

(ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপ) এবং চেচনিয়ার ছেলে- মেয়েদের ঘর ধ্বংস করে দিয়েছে এবং তাদের বাবা- মাকে মেরে ফেলেছে, আমি নিজের দুঃখ ভুলে যাই। আমি খবরের কাগজে তাদের ছবি দেখি;

তারা হতাশ হয়ে বসে আছে; কেও বসে আছে তাদের ভাঙ্গা ঘরের স্তুপের উপর; কেউ বা অসহায়ের মতো তাদের পরিবার পরিজনের মৃতদেহের পাশে। আর এজন্যই আল্লাহ্! তুমি আমার বাবাকে বলে দিও চিন্তা না করতে, কারণ আমি (তার অবর্তমানে) দুঃখ পাই না।

¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤

হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে শক্তি আর হিম্মত বাড়িয়ে দাও, যেন

আমরা জালিমদের উপর প্রতিশোধ নিতে পারি। হে বারি তা'য়ালা! তোমার কাছে আমার একান্ত মোনাজাত, আমাকে শাহাদাতের

অমীয় সুধা পান করার তৌফিক দাও। আমীন........

বিষয়: বিবিধ

১২৭৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

199910
২৯ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪১
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : জাজাকাল্লা খায়র... অনেক ভালো লাগলো পড়ে। আরো বেশী বেশী লিখুন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File