উপজেলা নির্বাচনে ইসলাম পন্থিদের ফলাফল বিশ্লেষণী ভাবনা
লিখেছেন লিখেছেন হক সাহেব ২৫ মার্চ, ২০১৪, ০২:০৩:৩১ দুপুর
এবারের উপজেলা নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান ইসলাম পন্থি রাজনৌতিক দল হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ফলাফল নিয়ে রাজনৌতিক বোদ্বা দের নানান জনের নানা মত। তবে মতের পার্থক্য থাকলে ও সবাই যে মোটামোটি অবাক হয়েছে সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই।
মজার বিষয় হচ্ছে এই ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে অথবা এই সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অনেকে হয়েছেন বিব্রত অনেকে আবার নিয়েছেন নানা চল চাতুরীর আশ্রয়।
যাই হউক, আমার ভাবনার বিষয় বিশ্লেষক দের চমকপ্রদ বিশ্লেষণ নয়। আমি ভাবছি এই ফলাফল নিয়ে, দলটির কি ভাবনা।
এখন পর্যন্ত চার ধাপের নির্বাচনের ফলাফল হিসেব করলে দেখা যায়, দলটি চেয়ারম্যান পদে ৩৩টি ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০৩ টি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯টি উপজেলায় বিজয়ী হয়েছে। যা এই দলটির বিগত নির্বাচন গুলোর সাফল্যের তুলনায় অনেক বেশি।
তার মানে কি জামায়াতে ইসলামের ব্যাপক দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে দেশের মানুষ আগের চেয়ে বেশি গুনে ইসলামের ভাবাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দলটিকে ভোট দিয়েছে?? অথবা, দেশের মানুষ বুজে গেছে যে আওয়ামিলীগ দিয়ে কিছু হবেনা জামায়াত ইসলামী ই একমাত্র ভরসা?? অথবা, মানুষ কি জামায়াতের অপপ্রচারের ফলে বিভ্রান্ত হয়ে দলটিকে ভোট দিয়েছে?? অথবা, দেশে কি জামায়াতে ইসলামীর বড় একটা সমর্থক গোষ্ঠী তৌরি হয়ে গেছে যারা জামায়াত শিবিরের জনশক্তি দের মত আজীবন দলটির ভোট ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে???
আমার মনে হয় এগুলোর কোন টাই নয়। জামায়াত শুধু মাত্র তাদের নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংকের মাধ্যমে এই নির্বাচন গুলোতে জয়লাভ করে নাই। যারা এবার জামায়াত কে ভোট দিয়েছে তারা সব সময় জামায়াত কে ভোট দিবে, এমনটা ভাবার কোন কারন নেই, তবে এমন পরিবেশ সৃস্টির সুযোগ আছে।
আমি মনে করি, জামায়াতের জয় লাভের পেছনে যে ভোট গুলো কাজ করেছে এগুলো অস্থায়ী। তাই এই ভোট গুলোকে স্থায়ী করে নেয়া হবে, জামায়াতের অন্যতম কাজ। অনেকেই এই নির্বাচনে জামায়াতের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়েছে, জামায়াত যে নির্যাতিত এটা বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ খুব কাজ থেকে দেখেছে।যার প্রভাব পরেছে নির্বাচনে। আরো একটা বিষয় কাজ করেছে, সেটা হচ্ছে মিডিয়া তে প্রচারিত জামায়াত এবং বাস্তবের জামায়াত এর পার্থক্য মানুষ অনেক কাছ থেকে দেখতে পেরেছে।
এখন এই অস্থায়ী ভাসমান ভোট গুলোকে স্থায়ী করার জন্য মানুষের আস্থার প্রতিফল দেখাতে হবে জামায়াত কে। আনন্দে আত্বতৃপ্তি বা আত্বতুষ্টি তে ভোগার কোন সুযোগ নাই। সমাজে প্রতিষ্ঠিত অসৎ নেতৃত্বের মূল উৎপাটন করে, যে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন এতো দিন মানুষ কে দেখিয়েছেন। এখন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার সময় এসেছে।
এই স্বপ্ন যদি কোন ভাবে দু:স্বপ্নে পরিনত হয়, তবে এর সুদূর প্রসারী প্রভাব ও পরবে পুরো ইসলাম পন্থিদের উপর।যা হবে অনেক বেশি ভয়াবহ। তাই মানুষের এই আস্থার মুল্য দিতে হবে দলটিকে। যা বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতিতে দলটির জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। কিন্তু এটা ছাড়া যে অন্য কোন উপায় ও নেই, দলটির।
বিষয়: রাজনীতি
১২৬৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন