চিলড্রেন অফ ওয়ার (মুভি রিভিউ)
লিখেছেন লিখেছেন অলীক সুখ ২৩ মে, ২০১৪, ১১:১০:১৬ রাত
চিলড্রেন অফ ওয়ার (প্রথমে নাম
ছিল The Bastard Child )
দেখে একটা কথাই মনে হইলো--
অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী।
সিনেমাটা দেখে কেউ কেউ
বিহবল হয়ে হল
থেকে বেরোচ্ছেন... যেন
একাত্তরের
ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
কেউ কেউ নাক-মুখ কুঁচকে বলছেন,
এইডা কিছু হইলো!! আমি দ্বিতীয়
দলে।
পরিচালক
নাকি সিনেমাটা করার
আগে তিন বছর গবেষণা করেছেন।
গবেষণার ফলাফল, 'মুক্তিযোদ্ধা'
ইন্দ্রনীলের কুর্তা-
পায়জামা পরে অটোমেটিক
রিভলবার
দিয়ে পাকিস্তানি মারা।
একাত্তরের সিনেমায়
'অ্যাডিডাস' লেখা গেঞ্জি।
বাঙালীদের পাকিস্তানিদের
মতোই গড়গড় করে উর্দু বলা।
সবচেয়ে অদ্ভুত
পাকিস্তানি ক্যাম্প... অবশ্য
ক্যাম্প বলা যায়
কিনা কে জানে... দুইটা টিনের
ঘর আর কিছু আধুনিক ফ্লাডলাইট (!)।
ক্যাম্পে সব
মিলিয়ে পাকিস্তানির
সংখ্যা চার-পাঁচজনের
বেশি হবে কিনা সন্দেহ আছে।
ক্যাম্পে বন্দী মেয়েদের
গায়ে আধুনিক হোসপাইপ (!)
দিয়ে বেশ কয়েকবার
পানি ছিটিয়েছে খান
সেনারা, যেটার
কোনো ব্যাখ্যা আমি বের
করতে পারিনাই!
সবচেয়ে বড় কথা, এই বিগ বাজেট
ফিল্মের নির্দিষ্ট
কোনো কাহিনী নাই, নির্দিষ্ট
ভাষা নাই। পরিচালক সম্ভবত
প্যারালাল কাহিনী টাইপ কিছু
চিন্তা করছিলেন... কিন্তু অ্যাট দ্য
এন্ড
আমি সেটাকে খিচুড়ি ছাড়া কিছুই
বলবো না। আর পদে পদে অসঙ্গতি।
একই সিনে একও শট দিনের বেলা,
পরের শট রাত। এক
শটে পেছনে নদী, আরেক
শটে পাহাড়। কলকাতার বাঙলা,
আমাদের বাঙলা আর আঞ্চলিক
বাঙলা মিলে অদ্ভুত
একটা ভাষায় ডাবিং হয়েছে।
উর্দু কথাগুলোর
বাংলা সাবটাইটেল
নিচে দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল,
যেগুলার কোনো কোনোটার অর্থ
ডিকশনারিতে আছে বলে আমার
জানা নাই (চেতবানি,
সার্থকতাকারী)।
মূল ধর্ষিতার
চরিত্রে রাইমা সেনের অভিনয়
ভালোই ছিল। কিন্তু আমার মনে হয়
পরিচালক তার মধ্যে 'গ্ল্যামার'
রাখার লোভ
সামলাতে পারেননি।
ধর্ষিতাদের যেভাবে উপস্থাপন
করা হয়েছে সেটাও আরোপিত
লেগেছে। অরুণোদয়ের
অগ্নিসাক্ষী, শ্যামল ছায়া,
গেরিলায় এত
স্পষ্টভাবে বীরাঙ্গনাদের
তুলে ধরা হয়নি, কিন্তু তারপরও
সেসবের দৃশ্যগুলো মনকে অনেক
বেশি স্পর্শ করেছিল।
সিনেমাটার নামটা আরেক বড়
অসংগতি। চিলড্রেন অফ ওয়ার
বা বাস্টার্ড চাইল্ড--
কোনো নামের সাথেই
কাহিনীর তেমন কোনো সম্পর্ক
আছে বলে আমার মনে হয়না।
রাইমা সেন, ভিক্টর
ব্যানার্জি আর কওসর ছাড়া সবার
কাস্টিং ফালতু লেগেছে।
বাংলাদেশি অন্তত একজন
অভিনেতাকে রাখা যেত।
আমার কাছে এখনও
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
নিয়ে সেরা ছবি আগুনের
পরশমণি। এর
ধারেকাছে কোনোটা নাই। বিগ
বাজেট দরকার নাই, সবার
আগে মুক্তিযুদ্ধের
উপলব্ধিটা দরকার। যেটা আগুনের
পরশমণিতে ষোলআনা আছে।
আর অবভিয়াসলি, মুক্তিযুদ্ধ
নিয়ে আমার দেখা ওর্স্ট
সিনেমা চিলড্রেন অফ ওয়ার।
কলকাতার একজন পরিচালক
আমাদের একাত্তর নিয়ে এত বড়
বাজেটের একটা ফিল্ম
তৈরি করেছেন, এই
ইন্সপিরেশনটা ছাড়া আমি পজিটিভ
আর কিছুই দেখছি না।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন