রমজান আলোচনাঃ ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। (পর্ব -২)

লিখেছেন লিখেছেন আহ জীবন ২৩ জুলাই, ২০১৪, ০৯:৪৩:২৯ সকাল

পর্ব - ১

আজ নেট ঘেঁটে যা পেয়েছি তা জানাব।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।

একজন ইমানদার ব্যক্তির মৌলিক বৈশিষ্ট্যের অন্যতম হলো ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বর্ণনাগুলো অধ্যয়ন করলে বোঝা যায়, অঙ্গীকার রক্ষা করা ইমানের দাবি। মুমিন ওয়াদা ভঙ্গ করতে পারে না। ‘মুমিন ব্যক্তি ওয়াদা করলে তা পূরণ করে।’ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের বেশ কয়েকটি আয়াতে ওয়াদা পূরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো। নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৪)। তোমরা যখন পরস্পর আল্লাহর নামে কোনো ওয়াদা করো তা পূর্ণ করো। (সুরা নাহ্ল, আয়াত ৯১)। ‘হে ইমানদাররা! তোমরা ওয়াদাগুলো পূরণ করো।’ (সুরা মাইদা, আয়াত ১)।

মানুষের পারস্পরিক ওয়াদা-অঙ্গীকার বা চুক্তি হতে পারে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির, ব্যক্তির সঙ্গে সমষ্টির বা সমষ্টির সঙ্গে সমষ্টির। একাধিক ব্যক্তি সম্মিলিত হয়ে যদি কোনো অঙ্গীকার বা চুক্তি করে, তাহলে প্রত্যেকেই চুক্তি বাস্তবায়নে দায়বদ্ধ থাকবে। চুক্তির অপর পক্ষ তাদের যেকোনো ব্যক্তির কাছেই চুক্তিবদ্ধ অধিকার দাবি করতে পারবে এবং সে তা পূরণে বাধ্য থাকবে। কম্পানি এবং সরকারি চুক্তিও আলোচ্য অঙ্গীকারের আওতাভুক্ত। চুক্তির ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন। কম্পানি বা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ীই তাকে চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা ভঙ্গ করে কোনো চুক্তি সম্পাদন করলে তার দায়-দায়িত্ব নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বহন করতে হবে এবং সে জন্য প্রতিষ্ঠান কোনো ক্ষতির শিকার হলে সেটা ওই কর্মকর্তাকেই বহন করতে হবে। হজরত ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান! তোমরা সবাই দায়িত্বশীল, আর সবাইকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

যেকোনো ধরনের ওয়াদা-অঙ্গীকার বা চুক্তি পূরণ করা ওয়াজিব এবং এটা ইমানের পরিপূর্ণতার জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত। আর ওয়াদা ভঙ্গ করা বা চুক্তিবিরোধী কাজ করা ইমানের পরিপন্থী, যাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুনাফেকির আলামত বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তির মধ্যে চারটি গুণ একত্রে পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মুনাফিক আর যার মধ্যে চারটির কোনো একটি পাওয়া যাবে, সেও মুনাফিক হিসেবে গণ্য হবে যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করে। গুণ চারটি হলো_(ক) তার কাছে কোনো আমানত রাখা হলে সে তার খিয়ানত করে। (খ) সে কথা বললে মিথ্যা কথা বলে। (গ) সে অঙ্গীকার করলে তা ভঙ্গ করে। (ঘ) সে কারো সঙ্গে বিরোধ হলে অশ্লীলতার আশ্রয় নেয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)। রাসুলে করিম (সা.) অঙ্গীকার রক্ষা করার বিষয়ে অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন। নবুয়তপ্রাপ্তির আগেও কোনো দিন তিনি কারো সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করেননি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু হাসমা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে তাঁর নবুয়তপ্রাপ্তির আগে আমি কিছু কেনাবেচা করেছিলাম। তাতে ক্রয়কৃত বস্তুর মূল্যের কিছু অংশ বাকি রয়ে গেল। তখন আমি তাকে বললাম, আপনি এখানে অপেক্ষা করুন, আমি অবশিষ্ট মূল্য নিয়ে এখানে আসছি। কিন্তু আমি বাড়িতে যাওয়ার পর সে ওয়াদার কথা ভুলে গেলাম। তিন দিন পর বিষয়টি আমার স্মরণ হলো। অতঃপর আমি গিয়ে দেখি, তিনি সেখানেই আছেন। আমাকে দেখে তিনি বললেন, তুমি আমাকে কষ্ট দিলে, আমি তিন দিন ধরে এখানে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। (আবু দাউদ)।

ইসলামে ওয়াদা পূরণের বিষয়টিকে অত্যধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সে কারণে কোনো ব্যক্তি যদি কারো সঙ্গে ওয়াদা করার পর সে ওয়াদা পূরণ করার আগেই মারা যায়, তাহলে তার ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারীদের ওপর সে ওয়াদা পূরণ করা ওয়াজিব। ফকিহরা এ বিষয়ে একমত যে যদি কেউ কোনো আর্থিক বিষয়ে কারো সঙ্গে কোনো ওয়াদা করে তা পূরণ না করে মারা যায়, তাহলে তার পরিত্যক্ত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ দিয়ে সেটা পূরণ করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিছু ওয়াদা করেছিলেন, যা পূরণ করার আগেই তাঁর ওফাত হয়ে যায়। অতঃপর হজরত আবু বকর (রা.) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সেসব ওয়াদা পূরণ করেন। বুখারি ও মুসলিম উভয় সহিহ গ্রন্থে সংকলিত একটি হাদিস হজরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর যখন বাহরাইনের গভর্নর আলা ইবনে হাজরামির কাছ থেকে কিছু সম্পদ এলো, তখন আবু বকর (রা.) ঘোষণা করলেন, যার কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কোনো ঋণ আছে অথবা রাসুল (সা.) কাউকে কোনো ওয়াদা করে থাকলে, সে যেন আমার কাছে আসে। তখন আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে এভাবে, এভাবে, এভাবে দেবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন। তিনি (সা.) তিনবার তাঁর দুই হাত প্রসারিত করে এটা বলেছিলেন। অতঃপর আবু বকর (রা.) এ পুঁটলি ভরে আমাকে দিলেন আর আমি গুণে দেখলাম তাতে ৫০০ দিনার আছে। তারপর হজরত আবু বকর (রা.) বললেন, তুমি আরো দ্বিগুণ (এক হাজার দিনার) নিয়ে নাও।’ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে মিথ্যা প্রলোভন দেওয়াও ওয়াদা ভঙ্গের শামিল। ইমাম বুখারি (রহ.)-এর জীবনী থেকে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে কারো কাছে হাদিস সংগ্রহ করার জন্য গিয়ে দেখলেন, তিনি খাবার দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ঘোড়াকে ডাকছেন। তিনি তার কাছ থেকে হাদিস গ্রহণ না করে ফিরে এসেছেন এ আশঙ্কায়, যে ব্যক্তি একটা প্রাণীকে মিথ্যা প্রলোভন দেখাতে পারে, তার দ্বারা রাসুলের হাদিস সম্পর্কে মিথ্যা বলা কোনো অসম্ভব বিষয় নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমের (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ঘরে বসা ছিলেন, এমন সময় আমার মা আমাকে এ বলে ডাকলেন, এদিকে এসো, আমি তোমাকে কিছু দেব। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে কী দিতে চেয়েছিলে? উত্তরে মা বললেন, খেজুর। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ ধরনের প্রলোভন দেখানোর ব্যাপারে সাবধান। যদি তুমি তাকে কিছুই না দিতে, তাহলে তোমার আমলনামায় একটা মিথ্যা লেখা হতো।’ (আবু দাউদ)।

আগামীকাল পোস্ট করব "বিশ্বাসীদের প্রতি আল্লাহর দেয়া ২৫টি ওয়াদা "আজ নেট ঘেঁটে যা পেয়েছি তা জানাব।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।

একজন ইমানদার ব্যক্তির মৌলিক বৈশিষ্ট্যের অন্যতম হলো ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বর্ণনাগুলো অধ্যয়ন করলে বোঝা যায়, অঙ্গীকার রক্ষা করা ইমানের দাবি। মুমিন ওয়াদা ভঙ্গ করতে পারে না। ‘মুমিন ব্যক্তি ওয়াদা করলে তা পূরণ করে।’ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের বেশ কয়েকটি আয়াতে ওয়াদা পূরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো। নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৪)। তোমরা যখন পরস্পর আল্লাহর নামে কোনো ওয়াদা করো তা পূর্ণ করো। (সুরা নাহ্ল, আয়াত ৯১)। ‘হে ইমানদাররা! তোমরা ওয়াদাগুলো পূরণ করো।’ (সুরা মাইদা, আয়াত ১)।

মানুষের পারস্পরিক ওয়াদা-অঙ্গীকার বা চুক্তি হতে পারে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির, ব্যক্তির সঙ্গে সমষ্টির বা সমষ্টির সঙ্গে সমষ্টির। একাধিক ব্যক্তি সম্মিলিত হয়ে যদি কোনো অঙ্গীকার বা চুক্তি করে, তাহলে প্রত্যেকেই চুক্তি বাস্তবায়নে দায়বদ্ধ থাকবে। চুক্তির অপর পক্ষ তাদের যেকোনো ব্যক্তির কাছেই চুক্তিবদ্ধ অধিকার দাবি করতে পারবে এবং সে তা পূরণে বাধ্য থাকবে। কম্পানি এবং সরকারি চুক্তিও আলোচ্য অঙ্গীকারের আওতাভুক্ত। চুক্তির ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন। কম্পানি বা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ীই তাকে চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা ভঙ্গ করে কোনো চুক্তি সম্পাদন করলে তার দায়-দায়িত্ব নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বহন করতে হবে এবং সে জন্য প্রতিষ্ঠান কোনো ক্ষতির শিকার হলে সেটা ওই কর্মকর্তাকেই বহন করতে হবে। হজরত ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান! তোমরা সবাই দায়িত্বশীল, আর সবাইকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

যেকোনো ধরনের ওয়াদা-অঙ্গীকার বা চুক্তি পূরণ করা ওয়াজিব এবং এটা ইমানের পরিপূর্ণতার জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত। আর ওয়াদা ভঙ্গ করা বা চুক্তিবিরোধী কাজ করা ইমানের পরিপন্থী, যাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুনাফেকির আলামত বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তির মধ্যে চারটি গুণ একত্রে পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মুনাফিক আর যার মধ্যে চারটির কোনো একটি পাওয়া যাবে, সেও মুনাফিক হিসেবে গণ্য হবে যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করে। গুণ চারটি হলো_(ক) তার কাছে কোনো আমানত রাখা হলে সে তার খিয়ানত করে। (খ) সে কথা বললে মিথ্যা কথা বলে। (গ) সে অঙ্গীকার করলে তা ভঙ্গ করে। (ঘ) সে কারো সঙ্গে বিরোধ হলে অশ্লীলতার আশ্রয় নেয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)। রাসুলে করিম (সা.) অঙ্গীকার রক্ষা করার বিষয়ে অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন। নবুয়তপ্রাপ্তির আগেও কোনো দিন তিনি কারো সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করেননি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু হাসমা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে তাঁর নবুয়তপ্রাপ্তির আগে আমি কিছু কেনাবেচা করেছিলাম। তাতে ক্রয়কৃত বস্তুর মূল্যের কিছু অংশ বাকি রয়ে গেল। তখন আমি তাকে বললাম, আপনি এখানে অপেক্ষা করুন, আমি অবশিষ্ট মূল্য নিয়ে এখানে আসছি। কিন্তু আমি বাড়িতে যাওয়ার পর সে ওয়াদার কথা ভুলে গেলাম। তিন দিন পর বিষয়টি আমার স্মরণ হলো। অতঃপর আমি গিয়ে দেখি, তিনি সেখানেই আছেন। আমাকে দেখে তিনি বললেন, তুমি আমাকে কষ্ট দিলে, আমি তিন দিন ধরে এখানে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। (আবু দাউদ)।

ইসলামে ওয়াদা পূরণের বিষয়টিকে অত্যধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সে কারণে কোনো ব্যক্তি যদি কারো সঙ্গে ওয়াদা করার পর সে ওয়াদা পূরণ করার আগেই মারা যায়, তাহলে তার ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারীদের ওপর সে ওয়াদা পূরণ করা ওয়াজিব। ফকিহরা এ বিষয়ে একমত যে যদি কেউ কোনো আর্থিক বিষয়ে কারো সঙ্গে কোনো ওয়াদা করে তা পূরণ না করে মারা যায়, তাহলে তার পরিত্যক্ত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ দিয়ে সেটা পূরণ করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিছু ওয়াদা করেছিলেন, যা পূরণ করার আগেই তাঁর ওফাত হয়ে যায়। অতঃপর হজরত আবু বকর (রা.) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সেসব ওয়াদা পূরণ করেন। বুখারি ও মুসলিম উভয় সহিহ গ্রন্থে সংকলিত একটি হাদিস হজরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর যখন বাহরাইনের গভর্নর আলা ইবনে হাজরামির কাছ থেকে কিছু সম্পদ এলো, তখন আবু বকর (রা.) ঘোষণা করলেন, যার কাছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কোনো ঋণ আছে অথবা রাসুল (সা.) কাউকে কোনো ওয়াদা করে থাকলে, সে যেন আমার কাছে আসে। তখন আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে এভাবে, এভাবে, এভাবে দেবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন। তিনি (সা.) তিনবার তাঁর দুই হাত প্রসারিত করে এটা বলেছিলেন। অতঃপর আবু বকর (রা.) এ পুঁটলি ভরে আমাকে দিলেন আর আমি গুণে দেখলাম তাতে ৫০০ দিনার আছে। তারপর হজরত আবু বকর (রা.) বললেন, তুমি আরো দ্বিগুণ (এক হাজার দিনার) নিয়ে নাও।’ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে মিথ্যা প্রলোভন দেওয়াও ওয়াদা ভঙ্গের শামিল। ইমাম বুখারি (রহ.)-এর জীবনী থেকে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে কারো কাছে হাদিস সংগ্রহ করার জন্য গিয়ে দেখলেন, তিনি খাবার দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ঘোড়াকে ডাকছেন। তিনি তার কাছ থেকে হাদিস গ্রহণ না করে ফিরে এসেছেন এ আশঙ্কায়, যে ব্যক্তি একটা প্রাণীকে মিথ্যা প্রলোভন দেখাতে পারে, তার দ্বারা রাসুলের হাদিস সম্পর্কে মিথ্যা বলা কোনো অসম্ভব বিষয় নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমের (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ঘরে বসা ছিলেন, এমন সময় আমার মা আমাকে এ বলে ডাকলেন, এদিকে এসো, আমি তোমাকে কিছু দেব। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে কী দিতে চেয়েছিলে? উত্তরে মা বললেন, খেজুর। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ ধরনের প্রলোভন দেখানোর ব্যাপারে সাবধান। যদি তুমি তাকে কিছুই না দিতে, তাহলে তোমার আমলনামায় একটা মিথ্যা লেখা হতো।’ (আবু দাউদ)।

আগামীকাল পোস্ট করব "বিশ্বাসীদের প্রতি আল্লাহর দেয়া ২৫টি ওয়াদা "

পর্ব - ৩

শেষ পর্ব

বিষয়: বিবিধ

১৭৫৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

247447
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:০০
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : ধন্যবাদ, খুব ভালো লাগল। আগামী পর্বের আশায় থাকলাম।
২৪ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:৩২
192382
আহ জীবন লিখেছেন : আসসালামুয়ালাইকুম। পোস্টটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
247460
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো লিখাটি
২৪ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:৩৩
192383
আহ জীবন লিখেছেন : আসসালামুয়ালাইকুম। পোস্টটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
247504
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:৪১
আফরা লিখেছেন : আমরা আমাদের ওয়াদা রক্ষার ব্যাপারে যেন সচেতন থাকি তানা হলে আমরা মোনাফিকের কাতারে শামিল হয়ে যাব ।সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
২৪ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:৩৪
192384
আহ জীবন লিখেছেন : নিজের প্রতি নিজের দায়িত্ব সচেতনতা সবছেয়ে বেশি জরুরি।
247523
২৩ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৩০
২৪ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:৩৬
192385
আহ জীবন লিখেছেন : আশা করি মেনে চলবেন,চলতে উৎসাহিত করবেন।
247524
২৩ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৩০
247552
২৩ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২২
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : মাশা আল্লাহ সুন্দর আলোচনা করেছেন
২৪ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:৩৬
192386
আহ জীবন লিখেছেন : আসসালামুয়ালাইকুম। পোস্টটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
259646
৩০ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:২৭
মামুন লিখেছেন : সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে লেখাটি পড়লাম। হাদীসের রেফারেন্সগুলো ভবিষ্যতে উল্লেখ করার জন্য কপি করে রাখলাম। অবশ্য আগেই অনুমতি চাওয়া উচিত ছিল।
ওয়াদা রক্ষার ব্যাপারে এই পোষ্টটি আমাকে ভীষণ ভাবে উৎসাহিত করবে ইনশা আল্লাহ। মিথ্যে প্রলোভনের যে হাদিসটি [ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমের (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ঘরে বসা ছিলেন, এমন সময় আমার মা আমাকে এ বলে ডাকলেন, এদিকে এসো, আমি তোমাকে কিছু দেব। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে কী দিতে চেয়েছিলে? উত্তরে মা বললেন, খেজুর। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ ধরনের প্রলোভন দেখানোর ব্যাপারে সাবধান। যদি তুমি তাকে কিছুই না দিতে, তাহলে তোমার আমলনামায় একটা মিথ্যা লেখা হতো।’ (আবু দাউদ)] আপনি উল্লেখ করেছেন। খুবই ভাববার বিষয়। কারন আমরা আমাদের বাসায় হরহামেশা বাচ্চাদের সাথে এরকম করছি।

অনেক শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য। Rose Rose Rose
০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১৭
205150
আহ জীবন লিখেছেন : গল্প হয়তো আপনার নিজের লিখা তাই সত্ত্বাধিকারী আপনি নিজে। আমি কপি করে নিলে তখন আপনার অনুমতি প্রয়োজন হবে। কিন্তু কোরআন-হাদিস এগুলর ক্ষেত্রে কখনও কোনও ভাবেই অনুমতির প্রয়োজন নেই। আমি যে এই পোস্ট খানা কপি করে এখানে পেস্ত করেছি আমি তো অনুমতি নেই নাই। শুধু মাত্র কপি পেস্ত করার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছি। যদিও এটা অনেক কম হয়ে যায়। তবুও আমি মনে করি সুশিক্ষা এবং স্বশিক্ষা কখনও কুক্ষিগত করে রাখতে নেই। যত পারেন ছড়িয়ে দেওয়া উচিৎ। তাই এসব ব্যাপারে অনুমতির প্রশ্নই আসে না।
ওয়াদা বিষয়ে সব গুলো লিখা। কে জানিনা। কিন্তু আমি খুশি।

দয়া করে রাগ করবেন না। কথাগুলো আপনার মন মত নাও হতে পারে।
261537
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:২৪
মামুন লিখেছেন : প্রথমেই বলে নিচ্ছি, আমার ভিতরে মানুডষ হিসেবে রাগ থাকলেও সত্য কথা বলাতে রাগ করি না। আপনি কপি করার ব্যাপারে সত্য বলেছেন। হ্যা, এ ব্যাপারে আপনার উল্লেখিত পথটিই সঠিক। এখন থেকে সেভাবেই ছড়িয়ে দিবো ইনশা আল্লাহ।
সুন্দর লেখাটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইরান। Rose Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File