এক পিকুলিয়ার মানুষ (ব্লগার নজরুল ইসলাম টিপু ভাইয়ের প্রতি মন্তব্বে)
লিখেছেন লিখেছেন আহ জীবন ২৭ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:৪৭:৩৪ রাত
ব্লগার নজরুল ইসলাম টিপু ভাইয়ের এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১৩ (রোমাঞ্চকর কাহিনী) ব্লগে মন্তব্বে আমার এক বন্ধু এধরনের কাজ করেছে বলায় তিনি আগ্রহী হয়ে জানতে চাইলেন কি করেছিল আমার বন্ধু। প্রতি মন্তব্বে না জানিয়ে পোস্ট আকারে জানালাম।
বলে রাখি আমি টাইপ ফনেটিক এ করছি ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। যতটুকু তার মুখে শুনে ছিলাম এবং মনে আছে তার উপর ভিত্তি করে লিখা।
বন্ধুর নাম শিমন। খুবই দুষ্ট, ডানপিঠে এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। ভ্রমন বিলাসীও বটে
তবে পিতামাতা কে দুশ্চিন্তায় রেখে। ক্লাস থ্রী পড়াকালীন ঘর ছেড়ে লাপাত্তা। কাকা তো (বন্ধুর আব্বা) খুজে হয়রান। সাতদিন পর হাজির।
কই গেছিলি?
কাপ্তাই।
কি করছস?
ঘুরচি।
কি খাইছস? কোথায় থাকছস?
আর কোন উত্তর দেয়না। এর পর আবার ক্লাস সেভেন পড়াকালীন বাহির হইল। এক মাস পর আসল। এরপর ক্লাস টেনে পড়াকালীন। এবার তিন বছর পর আসল। আমাকে আমার বাবা মা তার সাথে মিশতে দিতনা তার উড়নচণ্ডী স্বভাবের কারনে। তিন বছর পর এসে আগে আমার সাথে দেখা করল। দেখা করল বলতে সে নাকি তার বড় ভাই, বড় ভাইয়ের বন্ধু, এলাকার বন্ধু সবার সামনে ঘুরাপিরা করছে কেউ নাকি চিনতে পারে নি। আমিই নাকি প্রথম দেখাতে চিনতে পেরেছিলাম।
তারপর জিজ্ঞেস করলাম কইছিলি এতদিন? বলল প্রথমে কয়েকদিন ঢাকা তারপর সিলেট এরপর ভারত।
কি করছিস? ড্রাগ চোরাচালান।
কেন গেছিলি? তখন বলল হিন্দি সিনেমা দেখে ভারত দেখার শখ জাগছে।
বললাম ভালো কথা এক মাস পর ফিরলেই তো পারতি?
কয় বাপের আলমিরা থেকে ৩৫,০০০ টাকা চুরি করছিলাম বাপের ভয়ে আসিনাই।
তো একদিন আমাদের পাশের বস্তিতে একটা মেয়ে আত্মহত্যা করল। বন্ধু তো মহা খুশি। কারন জিজ্ঞাসিলাম বলল জীন বাধ্য করব। আমার কথা শুনবে। তখন তার বয়স ১৭ বা ১৮ হবে।
কিভাবে করবি?
বলল যে মেয়েটা মারা গেল তার কবরের মাটি আনতে হবে।
আর কিছু শুনতে না চেয়ে মানা করলাম এসব না করতে। কিন্তু আমার কথা শুনল না। সে করলই। মুলত ভারত থাকাকালীন কোন এক বাবার (তার ভাষায়) কাছে শিখেছে। আত্মহত্যা করেছে এমন কুমারী মেয়ের কবর থেকে গভীর রাতে মাটি নিয়ে আসতে হবে। ঘর থেকে উলঙ্গ যেতে হবে মন্ত্র পড়তে পড়তে কবরে গিয়ে মন্ত্র পড়তে পড়তে সাতবার মাথার দিক থেকে পায়ের ঘুরতে হবে এবং একবারে কনুই পর্যন্ত হাত ঢুকিয়ে খাবলা দিয়ে মাথার দিকের এক মুঠ মাটি নিয়ে কোনোদিকে দিকে না তাকিয়ে ঘরে ফিরে পরিস্কার সাদা কাপড়ে মাটি গুলো বেধে শিয়রে রাখতে হবে। সকালে আযান হওয়ার সাথে সাথে জীন হাজির হবে এবং তার হুকুম তামিল করবে। পরদিন দেখা হলে জিজ্ঞাস করলাম-
তুই কি কাজ টা করছস নাকি?
করছি।
ফলাফল?
কাজ হয় নাই।
কেন?
জানিনা।
উল্টাপাল্টা করস নাই তো ?
বলল উল্টাপাল্টা করলে ওইখানেই মাইরা ফেলত।
তাহলে কাজ হয় নাই কেন?
বুঝতেছি না কেন হয় নাই।
বললাম ভয় লাগেনাই?
বলল যখন উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছি কুকুর ছাড়া কেউ নেই। সেকি ঘেউ ঘেউ আমাকে দেখে। কবরস্থান এর কাছাকাছি যাওয়ার পর শুরু হল তুফান গাছ পালা ভাইঙ্গা আমার গায়ে পরবে মনে হল। কত কিছু যে ডাকে। প্রথমে ভয় পাইনি কবরের কাছাকাছি যাওয়ার পর ভয় পেয়েছি। তবে ফিরে আসিনি। কাজ সেরে তারপর ফিরেছি।
কাজ না হওয়ায় মন খুব খারাপ হয় তার।
আমার মত আপনাদের ও প্রশ্ন থাকবে কেন কাজ হয় নাই?
উত্তর পেলাম কয়েক দিন পর। বেচারি কুমারী ছিল না। প্রেম করে গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি পায় নাই বলে আত্মহত্যা করছে।
গত ৫ বছর আগে একটা রেল এক্সিডেন্ট এ বন্ধু টি মারা যায়। তখন সে খুব বিসন্নতায় ভুগছিল। বেছে থাকলে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে আপনাদের জানাতাম। যত টুকু জানালাম স্রিতি হাতড়ে । ব্লগ জীবনের প্রথম পোস্ট ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৮ বার পঠিত, ৩১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি এ বিষয়ে পড়ালেখা করেছি তবে এগুলো করলে ইমান হারা হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র । এগুলো স্পষ্ট হারাম।
ঘটনাটা আমার বন্ধুর এবং বয়স ও উল্লেখ করেছি। আমরা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করি নাই। এসব যে ঈমানের ব্যাপার টা ওই বয়সে চিন্তা ও করি নাই।
হুমমম ঠিক বলেছেন। তখন বয়স কম ছিলো। আর ইসলামিক জ্ঞান ও ছিলোনা তবে এখন তওবা করা উচিৎ। আমি বিষয়গুলো নিয়ে পড়েছি এখন আমাকে আক্রমন করলে আমার অস্ত্র আয়াতুল কুরসী। আলহামদুলিল্লাহ।
এটি সুন্দর ঘটনা, এধরনের অনেক অদ্ভুত চরিত্রের সাথে আমারও জানা আছে। তবে আপনার বন্ধুটি সত্যের সাথে মিথ্যাকে জড়িয়ে ফেলেছে। আসলে এ ধরনের মানুষ গুলো এমনটিই করে থাকে। তারা চায় আলোচিত হতে। যাক আপনার জন্য কল্যাণ কামনা করছি। ইনশায়াল্লাহ অবশ্যই আপনি খ্যতিমান হতে পারবেন। অনেক ধন্যবাদ।
পড়ার এবং প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ।
মনে রাখবেন।
আপনার পদধূলিতে আমি আনন্দিত। আমন্ত্রনের ব্যাপারটা ঠিক বুঝিনা। হয়ত অন্য কেউ পড়ার আমন্ত্রন করছে।
উৎসাহ ও ভালো লাগায় মনটা ভরে গেল আমার কথা তুমি মনে রেখেছ বলে।
চেষ্টা করো.. আগের মতো সময় দিতে... যদি সম্ভব হয়। আমারও মন খারাপ থাকে প্রায়..... তবুও চেষ্টা করি সবার সাথে একটু হাসি খুশি করে থাকতে, নিজের অজানা কষ্টগুলোকে ভুলে থাকতে!
আশা করি এখন থেকে নিয়মিত পাবো তোমাকে। আল্লাহ তোমার সব কিছুকে সহজ করে দিন। আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন