ধর্মের বর্বরতা (নারী-অধ্যায়— ধারাবাহিক পর্ব ২)
লিখেছেন লিখেছেন খেলাঘর বাধঁতে এসেছি ২২ জুন, ২০১৪, ০৪:৩৮:১৭ রাত
সুরা নিসা, আয়াত ৩৪ (৪:৩৪):
পুরুষরা নারীর উপর কর্তৃত্ব শীল। এ জন্য যে আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেমতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাজত যোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাজত করে। আর যাদের মধ্যে আবাধ্যতার আশংকা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করোনা।[/b
না, আর কোন রাখা-ঢাকা নেই, পুরুষের কর্তৃত্বশীলতা বলেই দেয়া হল এখানে। যে কর্তৃত্ব করে, আর যার ওপরে কর্তৃত্ব করা হয়, এ দু’জন কখনো সমান হয় না, হতে পারে না। পুরুষকে কোরান এ কর্তৃত্ব দিল স্পষ্ট ভাষায় সম্ভবতঃ টাকা-পয়সার এবং শারীরিক শক্তির কারণেই। কিন্তু শারীরিক শক্তি কোন যুক্তিই হতে পারে না। তাহলে আফ্রিকার জঙ্গলের গরিলাই হত মহান আশরাফুল মাখলুকাত, সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। কিংবা হাতী বা তিমি মাছ। টাকা-পয়সার ব্যাপারটা তখনকার সমাজে হয়ত ঠিকই ছিল, কিন্তু আজকে?
আজকের পৃথিবীতে বহু মেয়েই উপার্জনক্ষম, বহু মেয়ের উপার্জনেই সংসারে বাপ-ভাইয়ের মুখে অন্ন জুটছে, বহু স্ত্রীর উপার্জন স্বামীর চেয়ে বেশী, পিতৃহারা বহু সন্তানই মানুষ হচ্ছে শুধুমাত্র মায়ের উপার্জনেই। তা ছাড়া প্রহার করা তো সাংঘাতিক একটা মানসিক অপমানও বটে। যে অধিকার একটা ভালো লোককেও রাগের মুহূর্তে পশু বানিয়ে দিতে পারে, কোন বেহেশতি ধর্ম তেমন একটা বিপদজনক অধিকার কাউকে কেন দেবে? বৌ বেচারাদের টাকা-পয়সা উপার্জনের সুযোগই দেয়া হয়নি, তাদের খাওয়া-পরার জন্য স্বামীর ওপরে চিরকাল নির্ভরশীল করে রাখা হয়েছে, সেজন্য? তাহলে যেসব স্বামীরা বৌয়ের উপার্জনে খায়, তারা কি বৌয়ের হাতে মার খাবে? এ অন্যায়টা কিন্তু কোন কোন মওলানার মাথায় ঠিকই ঢুকেছে। তাই কোরানের কোন কোন অনুবাদে আপনি দেখবেন ‘প্রহার কর’ কথাটার সাথে ব্র্যাকেটের ভেতর ‘আস্তে করে’ কথাটা ঢোকানো আছে। মানেটা কি? ‘আস্তে করে প্রহার কর’ – কথাটার মানেটাই বা কি? এ কি সেই ছোটবেলার পাঠশালার পণ্ডিত মশাইয়ের ধমক: অ্যাই! বেশী জোরে গণ্ডগোল করবি না! গণ্ডগোলের আবার আস্তে-জোরে কি?
আসলে ওটা হল অনুবাদকের কথা, কোরানের নয়। প্রায় সবগুলো অনুবাদেই আল্লার কথার সাথে সু প্রচুর ব্র্যাকেটের মধ্যে অনুবাদকের অবারিত লম্বা নাকটা ঢুকে আছে। এদিকে প্রত্যেকটি অনুবাদ বইতেই কিন্তু মস্ত একটা তফসির, অর্থাৎ ব্যাখ্যার অংশ আছে। তোমার যা বলার সেটা ব্যাখ্যার অংশে বল না কেন বাপু! অনুবাদের মধ্যে নিজের কথা ঢোকানোর অধিকার তোমাকে কে দিল? তা নয়, ভাবখানা এই যে আস্তে করে, কথাটা যেন কোরানের-ই কথা। কিন্তু মানুষ কি গাধা? আস্তে করে ‘ছোট্ট কলমই শাক দিয়ে কি প্রহার কর’ বলে বিরাট কুমীরটা ঢাকা যায়? যায় না। এ প্রহার সকাল-বিকাল দিন-রাত চললেও কোন অসুবিধে নেই কারণ সে ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। আর, বৌকে পিটিয়ে স্বামী যাতে মনে মনে অপরাধ বোধে না ভোগে, তার ব্যবস্থাও স্পষ্টভাবে দেয়া আছে হাদিসে।
[b]সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১৪২:
ওমর বিন খাত্তাব বলেছেন: নবী (দঃ) বলেছেন, “কোন স্বামীকে (পরকালে) প্রশ্ন করা হবে না কেন সে বৌকে পিটিয়েছিল”।
কি সাংঘাতিক ধর্মীয় সমর্থন, কল্পনা করা যায়? এ-ই হল সেই নির্লজ্জ সমর্থন, যা শুধু বইয়ের লেখাতে সীমাবদ্ধ থাকে না, কেয়ামতের মত যা নারীর মাথায় ভেঙ্গে পড়ে। এরই শক্তিতে এই ২০০২ সালে দুবাই আদালত বিধান দিয়েছে, স্বামীরা বৌকে পেটাতে পারবে। এই সভ্য যুগে পৃথিবীর কোন দেশের আদালত এই বিধান দিতে পারে, কল্পনা করা যায়? উদ্ধৃতি দিচ্ছি:-
দুবাই, ১লা এপ্রিল। দুবাইয়ের একটি আদালত রবিবার এক রায়ে স্বামীদের বৌ পেটানোর অধিকার দিয়েছে। দুবাই কোর্ট অফ ক্যাসেশনের রায়ে বলা হয়, ‘স্ত্রীদের নিয়ন্ত্রণ’ (নিয়ন্ত্রণে?) রাখতে স্বামীরা তাদের মারধর করতে পারবে। তবে মারধরের মাধ্যমে স্ত্রীদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা ক্ষত সৃষ্টি করা যাবে না’’। সূত্র:- দুবাই থেকে প্রকাশিত দৈনিক গাল্ফ নিউজের বরাতে টরন্টো থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দেশে বিদেশে, ৪ এপ্রিল, ২০০২। টরন্টোর ‘নমস্তে ক্যানাডা’ পত্রিকাতেও এ খবর ছাপা হয়েছে।
এখন বলুন, ইসলামে নারীর এ কেমন মর্যাদা? এর পরে আপনি বৌ-পেটালে আপনাকে ঠেকিয়ে রাখার মত বাপের ব্যাটা দুনিয়ায় পয়দা হয় নি, হবেও না। সাধারণ মুসলমানেরা বৌ পেটায় না, সে শুধু মানুষের স্বাভাবিক মানবতা। কিন্তু তাহলে মেয়েদের বানানোই বা হল কেন? শস্যক্ষেত্রে শুধু চাষ করে ফলানো ছাড়াও এ ব্যাপারে হাদিস কেতাবে কি বলছে তা পরীক্ষা করার আগে খোদ কোরান শরীফ কি বলছে তা দেখা যাক।
সাধারণ মেয়েরা স্বামীর ইসলামী-পিট্টি খাবে, তা না হয় হল। কিন্তু অসাধারণ নারীরা?
এক নির্ভুল সত্য: শারিয়া হয়েছে পুরুষদের স্বার্থে—
ইসলামে শারিয়া বলে একটা কথা আছে, যা কিনা হল ইসলামী আইন। এ আইন মেয়েদের আর অমুসলমানের জন্য এতই বে-আইন যে তা দু এক কথায় বলে শেষ করা যাবেনা। অমুসলমান খুন করলে মুসলমানের মৃত্যুদণ্ড হবেনা। সাত-সাতটা বিষয়ে মেয়েদের চোখের সামনে ঘটনা ঘটলেও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। যারা নিজের চোখে ধর্ষণ দেখেছে, এমন চার জন বয়স্ক মুসলমান পুরুষের সাক্ষ্য আদালতে পেশ না করতে পারলে ধর্ষিতার কপালে জুটবে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড (বিবাহিতা হলে) অথবা চাবুকের আঘাত (অবিবাহিতা হলে)। এইসব হল শারিয়ার আইন-কানুন, এতই উদ্ভট যে বিশ্বাস করাই মুশকিল। এ বইয়ের অন্য জায়গায় বিস্তারিত বলা আছে এ ব্যাপারে, প্রমাণ সহ।
এমনিতে কলমা-নামাজ-রোজা-হজ্ব-জাকাত, ইসলামের এই হল পাঁচটা স্তম্ভ, নবীজির দিয়ে যাওয়া। এর পরেও শারিয়া কি করে যেন ইসলামের অঘোষিত ছয় নম্বর স্তম্ভ হয়ে, ইসলামের অংশ হয়ে বসে আছে?
উত্তরাধিকারে মেয়েরা তো পুরুষের অর্ধেক বটেই, টাকা-পয়সার লেনদেনেও শারিয়াতে মেয়েদের সাক্ষী হল পুরুষের অর্ধেক। সাক্ষীতে কেন অর্ধেক? কারণ তারা ভুলে যেতে পারে। আর পুরুষ? না, পুরুষ হল যেন কম্পিউটার, কোনদিন কোনই ভুল সে করতেই পারে না!
চলুন দেখি এবার কোরান শরীফ, সুরা বাকারা, আয়াত (২:২৮২):
যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋণের আদান প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ
করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গত ভাবে তা লিখে দেবে;
….. দু’জন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে। যদি দু’জন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর – যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
ব্যস, হয়ে গেল। উত্তরাধিকারে বোন ভায়ের অর্ধেক পাবে এটা তো আছেই, তার ওপরে দু’জন নারীকে সাক্ষী হবার ব্যাপারে এই যে এক পুরুষের সমান করা হল, এটা হাদিসে আইনে পরে বাড়তে বাড়তে একেবারে এমন স্বর্গে পৌঁছে গেল যে এখন ইউনিভার্সিটি-কলেজের ছাত্রীবাসে পাঁচিল টপকে ঢুকে আপনি ডজন ডজন ছাত্রীর সামনেই অতি স্বচ্ছন্দে পছন্দসই কোন আসরার সর্বনাশ করে আসতে পারেন, এবং কোর্টকে কাঁচকলা দেখিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে যেতে পারেন।
কারণ? কারণ, ইসলামী আইন অনুযায়ী চারজন মুসলমান পুরুষের চাক্ষুষ সাক্ষী পাওয়া যাবেনা। আর, মেয়েদের সাক্ষী তো নৈব নৈব চ’, তা তিনি ইন্দিরা-হাসিনা-খালেদা হলেও। কি সাংঘাতিক কথা, মেয়েদের কি সাংঘাতিক অপমান, তাই না? বিশ্বাস হচ্ছে না তো? জানি। দেখতে চান দলিল? এ বইয়েরই ইসলামী আইন অধ্যায়ে দেখানো আছে সব, দলিলের আতা পাতাও দেয়া আছে। বটতলার মোল্লা-মুন্সীর নয়, একেবারে বাঘের ঘরের ইসলামী দলিল, পোকায় খেয়ে যাবে তার বাপের সাধ্যি নেই। এরপরেও দরকার হলে ফ্যাক্স নম্বর পাঠাবেন, ফ্যাক্স করে পাঠিয়ে দেব। তার পরেও যদি কোন কাঠমোল্লা তেড়ে আসে, শুধু জিজ্ঞাসা করবেন, পাকিস্তানের জাফরান বিবি, নাইজেরিয়ার আমিনা লাওয়াল কুরামীর কেইস টা কি বলুন তো? এ গুলো তো মধ্যযুগের নয়, এসব এই দু’হাজার এক সালের ইসলামী কোর্টের ঘটনা। দেখবেন, জোঁকের মুখে নুন আর হুঁকোর পানি দু’টোই একসাথে পড়েছে, কাঠমোল্লা বাবাজী প্রচণ্ড গুস্সায় দ্বিগুণ বেগে তসবী ঘোরাতে ঘোরাতে অতিবিলম্বে সবেগে উল্টো পথে হাঁটা ধরেছেন।
একটু মস্করাই হয়তো করছি, কিন্তু বড় দুঃখেই করছি। হাজার হলেও ধর্মটা আমারই, এর মধ্যে এত অন্যায়ের, এত নিষ্ঠুরতার লজ্জা আমি রাখব কোথায়? নবী করিমের হাদিসেই দেখুন:
সহিহ্ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩০:
আবদুল্লা বিন ওমর বলেছেন, আল্লাহর নবী বলেছেন যে তিন জিনিসের মধ্যে অশুভ আছে, নারী, বাড়ী আর ঘোড়া।
সহিহ্ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন, নবী বলেছেন যে আমার পর পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছু রইল না।
দেখলেন? আরও দেখাচ্ছি। এক সহিহ্ হাদিসই যথেষ্ট, তবু এ হাদিস আছে সহিহ্ মুসলিম বই ১, হাদিস ১৪২ নম্বরেও। বর্ণনা দিচ্ছি:
সহিহ্ বোখারি, ভলুম ১, হাদিস ৩০১:
আবু সাইদ আল খুদরী বলেছেন:- একদিন নবী (দঃ) ঈদের নামাজের জন্য মাসাল্লাতে গিয়েছিলেন। সেখানে কিছু নারীদের সামনে দিয়ে যাবার সময় তিনি বললেন, “তোমরা সদকা দাও, কেননা আমি দোজখের আগুনে বেশীর ভাগ নারীদেরই পুড়তে দেখেছি”। তারা বলল:-“এর কারণ কি, ইয়া রসুলুল্লাহ?” তিনি বললেন:-“তোমরা অভিশাপ দাও এবং তোমাদের স্বামীদের প্রতি তোমরা অকৃতজ্ঞ। ধর্মে আর বুদ্ধিতে তোমাদের চেয়ে খাটো আমি আর কাউকে দেখিনি। একজন বুদ্ধিমান সংযমী পুরুষকে তোমাদের কেউ কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে”। তারা বলল:- “ইয়া রসুলুল্লাহ! ধর্মে আর বুদ্ধিতে আমরা খাটো কেন?” তিনি বললেন: “দু’জন নারীর সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সমান নয়?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল বুদ্ধির ঘাটতি। এটা কি সত্যি নয় যে মাসিক-এর সময় নারীরা নামাজ এবং রোজা করতে পারে না?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল ধর্মে ঘাটতি”।
অবাক হচ্ছেন,পাঠক? এ তো সবে শুরু। নারী আর উটের মধ্যে তফাতটাই বা কি?
দেখা যাক এ ব্যাপারে সুনান আবু দাউদ কি বলছে।
সুনান আবু দাউদ ১১ খণ্ড, হাদিস ২১৫৫:
আবদুল্লা বিন আম’র বিন আ’স বলছেন: ‘নবী (দঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ দাস-দাসী কিনলে বা বিয়ে করলে তাকে বলতে হবে- ও আল্লাহ! আমি এর স্বভাব চরিত্রে ভালো কিছুর জন্য তোমার কাছে প্রার্থনা করি। আর এর চরিত্রের মন্দ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি। কেউ উট কিনলেও তাকে উটের কুঁজো ধরে এ কথা বলতে হবে”’।
মাতৃত্ব হল মানবজীবনের সর্বপ্রধান সম্পদ। এর চেয়ে বড় আশীর্বাদ মানুষ কল্পনাই করতে পারে না। এই মাতৃত্বের জন্যই স্বাভাবিকভাবে মাসিকের আয়োজন করেছে প্রকৃতি। অথচ এই একান্ত স্বাভাবিক ব্যাপারটাকে সমস্ত পুরুষতন্ত্র চিরটা কাল এত নিষ্ঠুর ভাবে মেয়েদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে যে ভাবলে অবাক হতে হয়।
হিন্দু (সনাতন)ধর্মে তো কথাই নেই, ইসলামেও মাসিককে ‘রোগ’ বা ‘নোংরামি’ হিসেবে দেখিয়ে মেয়েদের একেবারে অপবিত্র এবং খুঁতযুক্ত বানিয়ে ফেলা হয়েছে। ওই সময়টায় তারা যে ‘নোংরা’, তা বিশ্বাস করতে বাধ্য করা হয়েছে। কোরানের সুরা বাকারা,আয়াত ২২২ (২:২২২) এবং সহিহ্ বোখারি ভল্যুম ৩, হাদিস নম্বর ১৭২-এ একথা স্পষ্ট লেখা আছে। তাই মুসলমান মেয়েদের ওই অবস্থায় ইসলাম নামাজ-রোজা করতে বা কোরান পড়তে দেয় না। মাতৃত্বের জন্য মেয়েদের কেন এ রকম কঠিন মূল্য দিতে হবে? মাসিকের অবস্থায় কি এমন তাদের মানসিক ঘাটতি হবে যে তারা বিরাট জটিল ব্যবসা চালাতে পারবে, বিচারক হয়ে কয়েদীদের জেল দিতে পারবে, খুনিকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারবে, কিন্তু উপাসনা-আরাধনা করতে পারবে না? মেয়েদের বিরুদ্ধে এটা একটা হীন চক্রান্ত ছাড়া আর কি?
এহেন নারীকে ইসলাম কি কোন দেশের রাষ্ট্রপতি অথবা প্রধান মন্ত্রী হতে দেবে?
পাগল আর কি! তাই কি হয়?
সহিহ্ বোখারী ভল্যুম ৫,৭০৯:
সাহাবী আবু বাক্রা বলছেন, নবী (দঃ) বলেছেন যে, যে জাতি নারীর ওপরে নেতৃত্ব দেবে, সে জাতি কখনো সফলকাম হবে না।
মাঝে মাঝে মনে হয়, মেয়েরা কি এমন অন্যায়-অপরাধ করেছে যে জীবনের প্রতি পদে তাদের এত অপমান, অবজ্ঞা আর অত্যাচার সহ্য করতে হবে? পৃথিবীর যত দার্শনিক-বৈজ্ঞানিক-মহাপুরুষ এমনকি নবী-রসুলকে পেটে ধরেনি তারা? মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করে জন্ম দেয় নি তারা? পৃথিবীর যত খুন-জখম দাঙ্গা-হাঙ্গামা সব তো পুরুষই করেছে এবং করে চলেছে। আশ্চর্য! যত শিক্ষিতাই হোক, যত আলোকিত উদার মনাই হোক, যত মেধাবী-বুদ্ধিমতীই হোক, জ্ঞান-বিজ্ঞানে যত প্রাজ্ঞই হোক, মেয়ে হলেই তার আর রক্ষা নেই, সর্বগ্রাসী পুরুষ তন্ত্র ইসলামের অন্ধকার কারাগারে তাকে আবদ্ধ করে রাখবেই। আর তার মাথাটা এমন মোহন ভাবে ধোলাই করে দেবে যে সে মেয়ে নিজেই সেই কারাগারে বসে বেহেশতের স্বপ্ন দেখবে, বেরোতেই চাইবে না সেখান থেকে যেখানে তাদের অপমান করতে করতে একেবারে শয়তান বলা হয়েছে।
অসহ্য! দেখুন:
সহিহ্ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩২৪০:
জাবির বলেছেন: আল্লাহর নবী (দঃ) একদিন এক স্ত্রীলোক দেখে তাঁর স্ত্রী জয়নাবের কাছে এলেন, সে তখন একটা চামড়া পাকা করছিল। তিনি তার সাথে সহবাস করলেন। তারপর তিনি তাঁর সাহাবীদের কাছে গিয়ে বললেন, নারী শয়তানের রূপে আসে যায়। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ কোন নারীকে দেখলে নিজের স্ত্রীর কাছে যাবে, তাতে তার মনের অনুভূতি দুর হবে।
আশ্চর্য লাগে এই ভেবে যে, ইসলাম পুরুষদের ভেবেছে কি? ইসলাম ধরেই নিয়েছে আমাদের পুরুষদের শিক্ষা দীক্ষা নৈতিক বোধ বলতে কিছুই নেই, আমরা পুরুষেরা নারী দেখামাত্র একেবারে উন্মাদ বামা ক্ষ্যাপা হয়ে কাপড় চোপড় খুলে তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ব। নারীর সাথে সাথে আমাদের পুরুষদেরই বা এভাবে অপমান করার অধিকার ইসলামকে কে দিল?
ইমাম গাজ্জালীর মত বুলন্দ সুউচ্চ ধর্মনেতা ইসলামের ইতিহাসে বেশী নেই। তিনি যে শুধু ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক তা-ই নয়, বহু বহু মওলানার মতে তাঁর স্থান স্বয়ং নবী (দঃ) এর পরেই। এ হেন শ্রেষ্ঠ দার্শনিকের লেখা এহিয়া উলুম আল দীন বইতে তাঁর যে উগ্র নারী-বিদ্বেষী চেহারা আছে, তা সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দু’একটা দেখাচ্ছি।
এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৬৭:
শয়তান নারীকে বলে: তোমরা আমার সৈন্যদলের অর্ধেক। তোমরা আমার অব্যর্থ তীর। তোমরা আমার বিশ্বস্ত। আমি যা চাই তা তোমাদের মাধ্যমে হাসিল করি। আমার অর্ধেক সৈন্য হল কামনা, বাকি অর্ধেক হল ক্রোধ।[/i]
[i]একই বই, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৭০-৩৭১ থেকে:
সাইদ ইবনে জুবায়ের বলেছেন, শুধুমাত্র দেখেই দাউদ (দঃ) এর মনে বাসনার উদ্রেক হয়েছিল। তাই তিনি তাঁর পুত্রকে (সুলায়মান দঃ) বললেন:- হে পুত্র! সিংহ বা কালো-কোবরা সাপের পেছনে হাঁটাও ভাল, তবু কোন নারীর পেছনে হাঁটবে না। নবী (দঃ) বলেছেন:-“নারীর প্রতি কামনার চেয়ে পুরুষের জন্য বেশী ক্ষতিকর কিছু আমি রেখে যাচ্ছি না”।
একই বই ভল্যুম ২,পৃষ্ঠা ৩৭৩:
স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় কম থাকতে হবে নতুবা সে তাকে অবজ্ঞা করবে: বয়স,শারীরিক উচ্চতা, ধন সম্পদ, এবং বংশগৌরব। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় বেশী থাকতে হবে:- সৌন্দর্য, চরিত্র, আদব-কায়দা, এবং ধর্মে মতি।
কি লজ্জা, কি লজ্জা! মা-বোনদের সামনে আমাদের লজ্জার আর অবধি রইল না। ওহ! পাঠক! আমাদের মা-বোন কন্যা-স্ত্রীরা যে আমাদের জন্য এত বড় অভিশাপ আমরা তো তা জানতামই না! এখন তাদের নিয়ে কি করা যায় বলুন তো? সবগুলো মেয়েদের ধরে ধরে নিয়ে জেলখানায় পুরে দেব? সে জন্যই বোধ হয় পর্দার নামে আপাদমস্তক ঢাকা বোরখার জেলখানা চালু হয়েছে। পৃথিবীর আর কোন ধর্মে এ উন্মাদনা নেই। তাই বুঝি মোল্লা নন্দ কবি বলেছেন:- “মাথা থেকে পা ঢাকা কাপড়ের বস্তায়, ঘুলঘুলি চোখে ভুত চলছে যে রাস্তায়”।
চলবে (৩য় পর্বে)।
বিষয়: বিবিধ
২৬৩০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
1. শারিয়াতে
মেয়েদের সাক্ষী হল পুরুষের
অর্ধেক। সাক্ষীতে কেন অর্ধেক?
প্রথমত, কোরআনের কোথাও
বলা হয়নি যে পুরুষদের চেয়ে নারীদের
বুদ্ধি কম।
দ্বিতীয়ত, যে আয়াত থেকে এই অভিযোগ
উত্থাপন করা হয় সেটি সম্ভবত কোরআনের
মধ্যে সবচেয়ে বড় আয়াত (২:২৮২)।
অথচ পুরো আয়াত না পড়ে সামান্য একটি অংশ
বার বার উদ্ধৃত করে তোতা পাখির
মতো বুলি আউড়ানো হয়।
আয়াতটি পুরোটা পড়লে কারো মনেই এই
ধরণের অস্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনার উদয়
হওয়ার কথা নয়। কোরআনে একটি নির্দিষ্ট
বিষয়ে ও একটি নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে একজন
পুরুষের স্থলে দু’জন নারী সাক্ষীর
কথা বলা আছে, আর সেটি হচ্ছে ঋণ লেন-দেন।
তবে তার মানে কিন্তু এই নয় যে, পুরুষের
বুদ্ধিমত্তা নারীর বুদ্ধিমত্তার দ্বিগুণ! না,
মোটেও তা নয়। অতিরিক্ত একজন
নারীকে পাশে থাকতে বলা হয়েছে এ
কারণে যে, আসল সাক্ষী কোন কারণে ভুল
করলে অপরজন স্মরণ করিয়ে দেবে। একমাত্র ঋণ
লেন-দেন ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে নারী-
পুরুষের সাক্ষী সমান। তাছাড়া নারীদের কিছু
সমস্যা যেমন গর্ভাবস্থা, রজঃস্রাব, ইত্যাদিও
তো মাথায় রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় ও
রজঃস্রাব কালে নারীদের যে কিছু কিছু
সমস্যা হয় সেটা তো প্রমাণিত সত্য ,
যে সমস্যাগুলো পুরুষদের নেই।
2. উত্তরাধিকারে মেয়েরা তো পুরুষের অর্ধেক
প্রথমত, কোরআনের আগে-পরে কোন
ধর্মগ্রন্থে নারী-পুরুষকে সমান-সমান
সম্পত্তি তো দূরে থাক নারীকে আদৌ কোন
সম্পত্তি দেয়া হয়েছে কি-না সন্দেহ।
এমনকি মুসলিমদের মধ্যে অনেকেই তাদের
নারীদেরকে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তিই দেয় না।
এই যখন বাস্তবতা তখন ‘অর্ধাংশ’ ও ‘এক-
তৃতীয়াংশ’ নিয়ে হৈ-চৈ করার তো কোন
মানে হয় না!
দ্বিতীয়ত, সার্বিকভাবে সবকিছু বিচার-
বিবেচনা করে কোরআনে নারীকে কিছুটা কম
সম্পত্তি দেয়ার পেছনে যথেষ্ট
যুক্তি আছে (৪:৭, ৪:১১-১২, ৪:৭৬)। যেমন:
(১) কোরআনে নারী-পুরুষ উভয়কেই রোজগারের
অনুমতি দেয়া হয়েছে (৪:৩২)
অথচ পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের দায়-
দায়িত্ব শুধু পুরুষের ঘাড়েই
চাপিয়ে দেয়া হয়েছে (৪:৩৪)। অর্থাৎ একজন
নারী যা রোজগার করবে সেটা তার নিজস্ব
কিন্তু পুরুষের রোজগার থেকে সংসারের সকল
প্রকার খরচ বহন করতে হবে।
নারীকে কি এখানে বিশেষ
সুবিধা দেওয়া হলো না? পরিবারের সকল
প্রকার ভরণপোষণের ভার নারীদের
ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হলে গোঁড়া সমালোচকদের
সারা জীবনের ঘুমই হয়তো হারাম হয়ে যেত!
(২) বিবাহ বিচ্ছেদের পরও নারীর ভরণপোষণের
ভার পুরুষের উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে (২:২৪১)।
এমনকি বিধবাদের ভরণপোষণের কথাও
বলা হয়েছে (২:২৪১)।
(৩) কোরআন অনুযায়ী একজন নারী তার স্বামীর
সম্পত্তিরও অংশ পাবে।
(৪) নারী-পুরুষকে সমান-সমান
সম্পত্তি দেয়া হলে পুরুষদের ক্ষেত্রে কিছু
সমস্যার সৃষ্টি হতো। কারণ নারীরা বিয়ের পর
স্বামীর বাড়ি যেয়ে স্বামী-সন্তান সহ
সেখানেই সেটল হয়ে যায়। ফলে ভাইয়ের
পরিবারের এতগুলো সম্পত্তি কীভাবে স্বামীর
বাড়িতে নিয়ে যাবে–এ নিয়ে সমস্যা হতো।
প্রকৃতপক্ষে স্বামীর অর্থনৈতিক অবস্থা খুব
খারাপ না হলে অনেক নারীই তাদের পিতার
পরিবার থেকে কোন সম্পত্তি নেয় না। এবার
দিন শেষে সবকিছু যোগ-বিয়োগ করার পর
নারীদের ‘এক-তৃতীয়াংশ’ কি প্রকৃতপক্ষে ‘এক-
তৃতীয়াংশ’-ই থাকবে নাকি বেশী হওয়ার
কথা? বিষয়টাকে ইসলামের দর্শনের
আলোকে বিচার-বিশ্লেষণ
না করে কোরআনকে হেয় করার জন্য লোক
দেখানো নারীবাদি সেজে অযথায়
মায়াকান্না করলেই তো আর হবে না!
‘প্রহার কর’
কথাটার সাথে ব্র্যাকেটের ভেতর
‘আস্তে করে’ কথাটা ঢোকানো আছে।
মানেটা কি? ‘আস্তে করে প্রহার কর’ –
কথাটার মানেটাই বা কি?
তোমার মাথার ভ্যারা বুদ্ধি নিয়া, আর কপি পেষ্ট করে কোনোই লাভ হবে না। বুদ্ধি চেঞ্জ করো। গত। পর্বে থাপ্পড় খেয়ে পড়ান ভরে নাই? প্রহার করা মানে বুঝো না, আরবী জানো না আর বলেই ফেললা যে, ব্রাকেটের লেখা মোল্লায় লেখছে। তাফসীর গুলা নিজে পড়লেই তো হয়। ব্রাকেটের টার দরকার কি?
কোরানের কোন শব্দের সঠিক
মানে জানতে হলে , ঐ একি শব্দ
দিয়ে কোরানের অন্য
আয়াতে কি বোঝানো হয়েছে ,
সেটা জানা জরুরী। এই
পদ্ধতিকে বলে 'তারতীল' , যার
কথা বলা হয়েছে ৭৩:৪ নং আয়াতে।
বউ পেটানোর আয়াতটির সঠিক
মানে জানতে হলে ২ টা শব্দের
মানে জানা জরুরী ,
যা আমি আরবিতে দিয়েছি।
১) নুশুয (যার মানে করা হয়েছে অবাধ্যতা)
২) ইদরিবুহুন্না (মানে করা হয়েছে প্রহার কর)
'নুশুয'এর সঠিক
মানে জানলে আয়াতটি কি নিয়ে তা জানা যাবে এবং সে কালের
পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পুরুষ শ্রেষ্ঠ , এই
চিন্তা মাথায় রেখেই যে আমাদের আলিম ও
ইমামরা ঐ রকম অনুবাদ করেছিলেন ,
তা পরিস্কার হবে।
'নুশুয' এর অর্থ - উঠে যাওয়া / `to rise / go above'
কোন স্থান থেকে উঠে যাওয়াই যে 'নুশুয'এর
মানে , তা পরিস্কার হবে ৫৮:১১ নং আয়াত
পড়লে।
"মুমিনগণ, যখন
তোমাদেরকে বলা হয়ঃ মজলিসে স্থান
প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত
করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য
প্রশস্ত করে দিবেন। যখন বলা হয়ঃ ('এনশুযু' ﺍﻧﺸُﺰُﻭ
উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো। তোমাদের
মধ্যে যারা ঈমানদার
এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের
মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ খবর রাখেন
যা কিছু তোমরা কর।"
৪:৩৪ আয়াতে স্ত্রী কতৃক
স্বামীকে ছেড়ে চলে যাওয়া বা উপেক্ষার
আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে , অবাধ্যতার
কথা বলা হয় নি। এখনো যদি এটা বিশ্বাস
না হয় তাহলে ৪:১২৮ নং আয়াত দেখুন ,
যেখানে স্বামী কতৃক স্ত্রীকে উপেক্ষার
কথা বলা হয়েছে ও একি শব্দ 'নুশুয' ব্যবহৃত হয়েছে।
"যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ
থেকে (ﻧُﺸُﻮﺯً )অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার
আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন
মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন
গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের
সামনে লোভ বিদ্যমান আছে।
যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু
হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর
রাখেন।"
একি কাজের জন্য তো আর দুই রকম নির্দেশ
হতে পারে না।
স্বামী উপেক্ষা করলে মিমাংসা আর
স্ত্রী উপেক্ষা করলে প্রহার। এখন
দেখি 'ইয়াদরিবুহুন্না' মানে কি?
'ইয়াদরিবুহুন্না' র মূল হলো 'দারাবা"।
দারাবা অনেক আয়াতে আছে , এবং এর ভিন্ন
ভিন্ন মানে করা হয়েছে। নিম্নের আয়াত
থেকে দারাবার মানে আমরা নিতে পারি।
২:২৭৩ "খয়রাত ঐ সকল গরীব লোকের
জন্যে যারা আল্লাহর পথে আবদ্ধ হয়ে গেছে-
জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র (ﺿَﺮْﺑًﺎ)
ঘোরাফেরা করতে (যেতে) সক্ষম নয়। "
এখান থেকে আমরা ইয়াদরিবুহুন্নার
মানে নিতে পারি যেতে দেয়া।
তাহলে ৪:৩৪ এর মানে দাড়ায় -
"পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে,
আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান
করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয়
করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয়
অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য
করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার
হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে ('নুশুয'
ﻧُﺸُﻮﺯَ )চলে যাওয়ার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ
দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর
এবং ('ইদরিবুহুন্না' ﻭَﺍﺿْﺮِﺑُﻮﻫُﻦَّ যেতে দাও
যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর
তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না।
নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।"
দেখুন তো আল্লাহর আইন কত সুন্দর। স্বামী ,
স্ত্রী উভয়ের সমাধিকার।
৩৯:১৮ যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে,
অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই
আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই
বুদ্ধিমান।
সূরা বাকারা ২৮২ আয়াত, সুরা নিসা ৩৪ আয়াত সবাই বুঝে। ধান্ধাবাজি করার জায়গা পান্না?
___এখানকার নিক নামটা জব্বর নিয়েছো৷
গড়তে এসে তো সব ভাঙা শুরু করে দিয়েছো ৷
এ করলে কি এখানে থাকতে পারবে ম্যাডাম!
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। [মুহিউদ্দীন খান]
Men are the protectors and maintainers of women, because Allah has given the one more (strength) than the other, and because they support them from their means. Therefore the righteous women are devoutly obedient, and guard in (the husband's) absence what Allah would have them guard. As to those women on whose part ye fear disloyalty and ill-conduct, admonish them (first), (Next), refuse to share their beds, (And last) beat them (lightly); but if they return to obedience, seek not against them Means (of annoyance): For Allah is Most High, great (above you all). [Abdullah Yusuf Ali]
এ আয়াতএ আল্লাহ্ বলেছেন যে পুরুষদের দায়িত্য হচ্ছে নারীদের দেখাশোনা করা,এবং তাদের সকল ভাবে রক্ষা করা (সামাজিক, অর্থনিতিক, ঈত্যাদি)। সুতরাং মুসলমান সমাজে পুরুষরা পরিপূর্ণ ভাবে একজন নারীর সকল ধরনের প্রয়োজনিয়তা মেটাবে (তার আহার, পশাক, তাকে বিপদ থেকে রক্ষার দায়িত্ত সবই হল পুরুষ এর)। সুতরাং একজন স্ত্রী এর অধিকার আছে তার স্মামীর অর্থের উপর। এখানে একটি হাদিস উল্লেখ করা যায়।
Narated By 'Aisha : Hind, the mother of Mu'awiya said to Allah's Apostle, "Abu Sufyan (her husband) is a miser. Am I allowed to take from his money secretly?" The Prophet said to her, "You and your sons may take what is sufficient reasonably and fairly." [Sahih bukhari Volume 003, Book 034, Hadith Number 413]
মা আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণীত, মুয়ায়িয়ার মা হিন্দ আল্লাহ্ এর নবী (সঃ)কে বললেন, “ আবু সুফয়ান (তার স্মামী) ক্রিপণ। আমিকি গোপোণে তার অর্থ হতে টাকা নিতে পারি। নবী তাকে বললেন, “তুমি এবং তোমার সন্তানেরা তার অর্থ হতে নিতে পার প্রয়োজন মত যতটুকু যৈত্যিক। [Sahih bukhari Volume 003, Book 034, Hadith Number 413]
একজন স্ত্রী তার স্মামীর অর্থের উপর অধিকার রাখে কিন্তু একজন স্মামী কিন্তু তার স্ত্রী এর অর্থের উপর কোন অধিকার রাখে না। অনেকে এই আয়াতের ভুল বেখ্যা দেয় এবং বলে যে ইসলাম এ নারীদের কোন রকম ‘job’ করা নিষিদ্ধ, কিন্তু এ আয়াত এ এমন কিছুই বলা হয় নি। বরং আমরা যদি দেখি ইসলাম এর ইতিহাস এর দিকে আমরা দেখব যে আমাদের প্রিয় নবীর (সঃ) প্রথম স্ত্রী মা খাদিজাহ (রাঃ) একজন অনেক বড় ব্যবসাহি ছিলেন, মা আইশা (রাঃ) একজন শিক্ষিকা ছিলেন, ইত্যদি। সুতরাং ইসলাম মেয়েরাও হিজাব রক্ষা করে ‘job’ করতে পারবে। আর নারীরা ‘job’করে যে অর্থ উপার্যণ করবে সেই অর্থ পুরাই তাদের নিজের। তার স্মামী, ভাই, বাবা, কেঊ ওই অর্থের উপর কোন রকম দাবি করতে পারবে না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন