মুমিন মহলে তসলিমা নাসরিনের স্তন সমাচার!!!
লিখেছেন লিখেছেন খেলাঘর বাধঁতে এসেছি ২৩ মে, ২০১৪, ০৮:৩১:৪৪ সকাল
সম্প্রতি, বাংলাদেশের কিছু পত্রিকায় দেখা গেল নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের স্তন টিউমার নিয়ে মুমিনরা বেশ উত্তেজিত। যদিও টিউমারটা ক্যানসার নয়, একে ক্যানসার বানানো হয়েছে, আর তাতেই মোল্লারা লুফে নিয়েছে স্তন ক্যানসার সংবাদ, কেচ্ছার কমতি নেই। ক্যানসারের খবর শুনে আনন্দ করেছে ধর্মান্ধের দল।
কেউ একজন বললো, স্তনের ওপর ঝড়-ঝাপটা বেশি গেছে বলেই ক্যানসার হয়েছে। কেউ কেউ আরো রসালো করে বললো, স্তনের উপর অসম চাপের কারনেই নাকি এই ক্যানসার? আরেক জন ভাব গম্ভির মুমিন ব্লগার বলেছেন- নারীর স্তন তার স্বামীর জন্য, এটির অযাচিত ব্যাবহার হলে আল্লার গজব তো পরবেই। ভাব খানা এমন নারী দেহে স্তনের পারপাস ঐ একটিই শুধু।
এদের কেউকেউ আবার তসলিমা নাসরিনের জন্য আল্লার কাছে হেদায়েত এবং রোগমুক্তি কামনা করে আর্জি পেশ করেছেন। তবে আল্লাহর কাছে আর্জি পেশ করে তারা নিজ কপালের কিনি রোগমুক্তি ঘটাতে পেরেছেন তা বলেন্নি।
তো, বিষয়টি তসলিমা নাসরিনের স্তন বলেই মুমিনদের এত আগ্রহ? এই ক্যানসার গুজব যদি তার শরীরের স্তনে না হয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে হতো তাহলে কি বিষয়টি এত প্রচার পেত?? পাঠক, একটু ভেবে দেখুন- অজ্ঞ অশিক্ষিত ধর্মান্ধ মানুষের কতটা রুচি বিকৃত হলে এটা সম্ভব।
ব্লগের মন্তব্য কলামে মুমিনরা কে কি বলে তার কিছু নমুনা দেখুন :
"জিএস হাসান লিখেছে, ‘ওটা তো ওরিজিনাল শয়তান, ওর মাংস শরীর থেকে খসে পড়বে, আল্লাহ ওর এমন ভাবে মরণ দাও নাস্তিকরা যাতে ওকে দেখে শিক্ষা নেয়’। সাইফুল ইসলাম লিখেছে, ‘ভালোই হলো দুনিয়া থেকে একটা নাস্তিক কমবে মনে হয়’।
চৌধুরী লিখেছে, ‘তোর জন্য জাহান্নামের আগুন অপেক্ষা করছে। আল্লাহ তোরে কঠিন শাস্তি যেন দিন, সেই দোয়া করছি আমি। নাস্তিক হারামি তুই দুনিয়াতে আরও শাস্তি পেয়ে মর। আমিন’।
নাইম লিখেছে, নাস্তিকদের পরিণতি এই রকমি হয়। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান, আল্লাহ চাইলে ভালো করে দিতে পারে। কারণ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনও মাবুদ নাই, আগুন, পানি, বাতাস, জীব-জন্তু যত কিছু আছে সব কিছুই আল্লাহর গোলাম। তার হুকুম ছাড়া কোনও কিছু হয় নাই, এবং ভবিষ্যতে হবেও না। সবার ধারণা আমি কোনও পাপ করেছি, তাই আমার টিউমার হয়েছে। টিউমারকেই সম্ভবত তারা ক্যানসার বলে মনে করে। কিন্তু টিউমার মানেই যে ক্যানসার নয়, তা বোঝাবে কে তাদের! আর পাপ না করলেও যে ক্যানসার হয় তাই বা কে বোঝাবে।
ইশতিয়াক খান লিখেছে, এখন অবশ্য বুঝতেছেন যে মরার পর যে আরেকটা জীবন আছে, এই জীবনে এত কষ্ট করে যাচ্ছেন তার হিসাব না দিলে কেমনে, এখনো সময় আছে আল্লাহর কাছে মনে প্রাণে ক্ষমা চান, আল্লাহই একমাত্র ক্ষমা করার মালিক, তিনি অসীম দয়ালু ও ক্ষমাশীল।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘যারা ইসলামের বিপক্ষে কটূক্তি করে তাদের পরিণতি এমনই হয়। তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই *** তাসলিমা নাসরিন। এখনো সুযোগ আছে খালিছভাবে তাওবাহ করে ইসলামের সঠিক পথে ফিরে আসার’। নাদিম সাইমান লিখেছে, ‘স্তনে টিউমার ধরা পড়েছে, যা প্রায় এক ইঞ্চি পর্যন্ত বিস্তৃত। উনার স্তন ক্যানসার হওয়া স্বাভাবিক। স্তনের ওপর দিয়ে তো কম ঝড়-ঝাপটা যায়নি।’
মোহাম্মদ সালিম উদ্দিন লিখেছে, ‘তসলিমা ভালো হয়ে যা, না হলে জাহান্নামে যাবি’।"
এ বিষয়ে টুইটারে তসলিমা নাসরিন আক্ষেপ করে লিখেছেন :
মূর্খতার কোনও শেষ নেই। ধর্মের মানুষেরা বিজ্ঞান থেকে কত লক্ষ মাইল দূরে সরে আছে যে তা হিসাব করতেই ভয় হয়। চোখে তাদের যৌন বিকৃতি। কুসংস্কার তাদের আশ্রয়। রূপকথা তাদের বাস্তব। মিথ্যে তাদের সত্যি। ঘৃণা তাদের সহায়।
বিঃ দ্রঃ তসলিমা নাসরিনের টুইটার থেকে সংক্ষিপ্ত সম্পাদলা
বিষয়: বিবিধ
৩০৪২ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তসলিমা নাসরিনের স্তনের টিউমারকে অনেকে দুধের ক্যান্সার বলে প্রচার করছে। তসলিমা নাসরিন এর প্রতিবাদ করে একটি লেখা দিয়েছেন অনলাইনে। আমিও তার কথায় একমত। স্তনের টিউমারকে দুধের ক্যান্সার বলে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি।
আরো একটি বিষয় তিনি বলেছেন যে তার অসুখের খবর শুনে ধার্মিকরা যে মন্তব্য করেছে সেখানে গালাগালিই বেশি।
এখানে একটি কথা বলতে ইচ্ছে করছে যে তসলিমা নিজেও হুজুরদেরকে অনেক বার গালি দিয়েছেন। সেটা এখন তার হয়ত মনে নাই।
যাইহোক তার দুধের ক্যনাসার হোক বা তার স্তনের টিউমার হোক এটা ভাল হয়ে যাক এবং তাকে যেন আল্লাহ হেদায়ত করেন।
আপনি তসলিমা নাসরিনে টিউমার ভালোর জন্য আল্লার হেদায়েত চেয়েছেন!! অথচ আল্লাার এত হেদায়েত পেয়েও আপনাদের টিউমার সারাতে কাফের-পৌত্তলিকের সিংঙ্গাপুর, মাদ্রাজ দৌড়াতে হয়। অবাক কান্ড!
মেয়েরা নাহয় শবলিঙ্গ পূজা করলো কিন্তু পুরুষেরা কি করবে? ও হ্যাঁ, তাদের জন্য তো আপনাদেরটা আছে। তাই না? বেশি চুলকাতে চেষ্টা করবেন না। আমাদেরটা মেয়ে হলে মেয়ের মতই থাকেন।
আমি আমার উপরের মন্তব্যে খারাপ কিছু বলিনি। আপনি ইসলামের নবীকে টেনে এনেছেন। তাই একটু শিবলিঙ্গের কথা মনে করিয়ে দিলাম। তারপরেও যদি চুলকায় আমারটাতে তেজ দেব বলে দিলাম কিন্তু। সুতরাং বেশি চুলকাবেন না।
কিন্তু মোহাম্মদ যে সুবোধ বালক না তা আপনার মত মোহাম্মদপুজারীকে স্মরন করিয়ে দিলাম মাত্র। আবার ধর্মানুভুতিতে আঘাত পেয়ে হাউমাউ কইরেন্না।
তবে মুমিনের সংজ্ঞা ভাল হয়েছে, সে অর্থে নবীর সাহাবীরা সবাই মুমিন। কিন্তু তাদের কারোই স্বভাব চরিত্র ভাল ছিল না। যুদ্ধবন্ধী নারী ধর্ষন তো ভাল কাজ হতে পারে না। কিন্তু মুমিনরা সেটি অবলিলায় করেছে।
সহিহ্ বোখারি ভলুম ৭ বই ৬২ হাদিস ১৩৭: আবু সাইদ আল খুদরি বর্ণনা করলেন: এক জিহাদে আমরা শত্রুপক্ষের নারী বন্দি পেলাম। তারা আমাদের হাতে আসলে আমরা তাদের সাথে আজল করে সহবাস করলাম। এরপর আমরা রসুলুল্লাহকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন: তাই নাকি! তোমরা কি এরূপ করে থাক?” রসুলুল্লাহ তিনবার এই প্রশ্ন করলেন এবং বললেন: আখেরাত পর্যন্ত যত লোক সৃষ্টি হবে তাদের প্রত্যেকটি অবশ্য জন্মলাভ করবে।
আরও আছে- এই মুমিনরাই খেলাফতে রাশেদীন আমলে একে আপরের সাথে ক্ষমতার লোভে যুদ্ধ করেছেন, একজন আরেক জনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে, মুমিনের হাতে মুমিনের রক্ত ঝড়েছে।
এরপরও বলবেন মুমিন মানে ধোয়া তুলশী>
কিন্তু আমরা জানি- নবী স্বয়ং নিজেই কাবা ঘরের মুর্ত্তি ভেংগেছেন। নয় কি?
যে লোকগুলো যুদ্ধ ক্ষেত্রে অসহায় অবলা বন্ধি নারী ধর্ষন করতে পারে তাদের চরিত্রে কোন সমস্যা নেই, এরা শুধু চরিত্রহীনই নয়, এরা অসভ্য জানোয়ার বর্বর।
আপনি বলেছেন- "তারা তো যুদ্ধ ক্ষেত্রে নারী দেখেই তাদের উপর লালসার তাড়নায় পাগল হয়ে ঝাঁপিয়ে পরেন নাই"। তো তারা কি করেছে? ধর্ষন যৌনযজ্ঞ চালিয়ে ওদের সতিত্ব আব্রু রক্ষা করেছে নাকি?
মুসলিম মুমিনদের এই ধর্ষনযজ্ঞ সহিহ প্রমান করার জন্য সেই সময়ের বর্বর যুগের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন। তাহলে বুঝা গেল ইসলাম ধর্ম আসলে পাপ পংকিল যুগ-সমাজ ভাংতে আসেনি। বরং তার ১৬ আনা মজা লুটতে এসেছে। নবী কেন তার সাহাবী(সাঙ্গপাঙ্গ) দের ধর্ষন কর্ম থেকে বিরত থাকার কথা বল্লেন্না, তিনি বরং উসকে দিলেন।
ইসলামের যুদ্ধনীতির বা দাস-প্রথার বিষয়টি বুঝতে লক্ষ পাতার কাহিনী পড়তে হবে কেন। বিষয়টি খুব সিম্পল- নারী ধর্ষন এবং দাসপ্রথা অপরাধ এবং অমানবিক। অথচ ইসলাম এই দুটিকেই বহাল রেখেছে। আর এ কারনেই ইসলামের শরীরের কালি ধামাচাপা দেয়ার জন্য যতসব ধানাইপানাই।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন