নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নেয়া ইসলাম ধর্মে বৈধ.....

লিখেছেন লিখেছেন খেলাঘর বাধঁতে এসেছি ২৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০৪:২১:৩৩ রাত



মুসলমানরা অবলিলায় নারীর মর্যাদা, সম্ভ্রম, সতিত্ব নিয়ে বেশ চড়া গলায় কথা বলতে পছন্দ করেন। অথচ আন্তর্জাতিক মহলে ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়টি হচ্ছে যুদ্ধবন্ধি নারী ধর্ষন এবং ক্রীতদাসীদের সাথে মুসলিম পুরুষের অবাধ, অতিরস্কার যোগ্য যৌনতা। কম্পিউটার প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারনে- ধর্মগ্রন্থ আল কোরাণ, সহিহ আল হাদীসনামা এবং সিরাত এ রাসুল এর বর্ণনায় ইসলাম ধর্মে বিরাট অংশ জুড়ে সে সময়ে যুদ্ধবন্ধি নারী গনিমত ধর্ষন এবং দাসীদের সাথে মুমিন পুরুষদের অতিরস্কারযোগ্য যৌনতার লোমহর্ষক বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে জানাজানি হয়ে যায়। যদিও ইসলামীক ক্লারিকরা এখন অদ্ভুত সব কুযুক্তি দেখিয়ে নারী ধর্ষনের বিষয়টি অস্বীকার করতে চায়। তাহলে দেখা যাক এ বিষয়ে প্রকৃত অর্থে কোরাণ ও হাদীস গ্রন্থে কি বলা আছে।

ছোট্ট কয়েকটি উদাহরন :

১ । সহিহ্‌ বোখারি ভলুম ৭ বই ৬২ হাদিস ১৩৭: আবু সাইদ আল খুদরি বর্ণনা করলেন: এক জিহাদে আমরা শত্রুপক্ষের নারী বন্দি পেলাম। তারা আমাদের হাতে আসলে আমরা তাদের সাথে আজল করে সহবাস করলাম। এরপর আমরা রসুলুল্লাহকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন: তাই নাকি! তোমরা কি এরূপ করে থাক?” রসুলুল্লাহ তিনবার এই প্রশ্ন করলেন এবং বললেন: আখেরাত পর্যন্ত যত লোক সৃষ্টি হবে তাদের প্রত্যেকটি অবশ্য জন্মলাভ করবে।

আল কোরাণ ৩৩:৫০- "হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।"

আল কোরাণ ৩৩:৫২- "এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন।"

নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নেয়া ইসলাম ধর্মে বৈধ????

বিষয়: বিবিধ

৫৪৫৯ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

214672
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:১১
নাহিন লিখেছেন : akna bibaho ka bodota dia hay sa
214673
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:১১
নাহিন লিখেছেন : akna bibaho ka bodota dia hay sa
214674
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:১৪
নাহিন লিখেছেন : ordeo sotto boynker
214716
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:১২
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : ইসলাম ধর্মে কোনো অন্যায়কে বৈধতা দেয়া হয়নি।
তোমার হিন্দু ধর্মে বরং নারীকে ভয়ংকরভাবে অবমাননা করা হয়েছে।

হিন্দু ধর্মমতে, পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো নারীও সর্বনিকৃষ্ট পুরুষ অপেক্ষাও অধম।

তাইতো, ভারত নারীদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ রাষ্ট্র। সেখানে বাবা ধর্ষণ করে মেয়েকে গর্ভবতী করে দেয়।
ভারতে বাবার হাতে ধর্ষিতা মেয়ের সন্তান প্রসব

http://www.onbangladesh.org/newsdetail/detail/200/74971
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
162985
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : বুঝলাম তো হিন্দু ধর্ম ভয়ংকরভাবে খারাপ। কিন্তু ইসলাম ধর্মও তাই, এ বিষয়ে মুখ বন্ধ কেন?
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
163026
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : কোনো মুসলমান নিজ মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বলে আমার জানা নেই।
ইসলাম ধর্মে নারীদের সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তোমাদের মত শিবলিংগ পূজা করতে বলেনি।
214724
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
টালের পাখা লিখেছেন : কারও র্ধম নিয়ে না বুঝে কুটুক্তি করা বা মন্তব্য করা মূর্খের চেয়েও মূর্খের কাজ।
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫০
162987
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : ধর্মের খারাপ দিক ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চান কেন! সেই দিন কি আছে?
214770
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:২৮
মুজিব সেনা লিখেছেন : খেলাঘর কে বলছি,আপনি প্রথমেই একটা ভুল করেছেন।অবশ্য ভুলটা আমরা মুসলিমরাও করে থাকি,আর টা হল "ইসলাম" কোন ধর্ম নয় এটি হচ্ছে দ্বীন এবং পরিপুর্ন জীবন বিধান। ইসলাম একমাত্র দ্বীন যা সব ধর্ম কে শ্রদ্ধা করে।কোন ধর্ম কে অবমাননা করতে একমাত্র ইসলাম-ই নিষেধ করেছে। আপনি না যেনে শুনে ইসলাম এর ভুল ব্যাখ্যা দিবেন তা তো ঠিক নয়। হিন্দু ধর্ম কে সনাতন ধর্ম বলা হয়,কারন এটি ইসলাম আবির্ভাব এর পুর্বের একটি ধর্ম। হিন্দু ধর্মে নারীকে তাঁর প্রাপ্য সম্পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে,এমনকি এই ধর্ম এ সহমরণ এর প্রথাও ছিল। অন্য দিকে খিস্তান ধর্মে নারীদের কোন সম্মান দেয়া হয় নাই,এখন পর্যন্ত একজনের বিবি আর একজনের সাথে অবাধ মেলামেশা করে বাধা দেবার মতো কোন বিধান নেই। ইসলাম নারীদের পুর্ন স্বাধীনতা দিএছে,তবে কিছু বিধি-বিধান রয়েছে(নারীদের সার্থে)।নারীর যথাযথ অধিকার নিশ্চিত করেছে।
সেই সাথে ইসলাম এই কথাও বলেছে "কিছু লোক হাজির হবে ভুল হাদিস নিএ,তারা হাদিস এর ব্যাখ্যাও দিবে কিন্তু তোমরা পথভ্রষ্ট হইয়ো না। তোমাদের মাঝে হাজির হবে কিছু সম্প্রদায় যারা মুসলিম দাবি করবে, কিন্তু তারা মুসলিম নয় তারা তোমাদের মতই পাগড়ি পরবে কিন্তু পাগড়ির মাঝে কোন ভাঁজ থাকবে না এবং পাগড়ির নীচে টুপি থাকবে না।এরা মুহাম্মদ সাঃ কে অস্বীকার করবে শেষ নবী হিসেবে,এরা ইসলাম এর ভুল ব্যাখ্যা দিবে। তোমরা এদের ভুল ব্যাখ্যা কে গ্রহন করো না।
আজ বুঝতে কোন অসুবিধা নেই আপনি ইসলাম এর শত্রু,আপনি বলছেন কম্পিউটার এর যুগে কোন কিছু লুকিয়ে রাখা যায় না,কথা সত্যি কিন্তু পবিত্র আল-কোরআন এর বর্ণনা তো আল্লাহ্‌ তায়ালা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে দুনিয়ায় পাঠান নাই এটা আপনাকে বুঝতে হবে।আল-কোরআন একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান এবং একটি বিজ্ঞান গ্রন্থ,ভাল করে পরেন বুঝেন তারপর বলেন।
১৩ মে ২০১৪ রাত ০১:১৭
168389
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : বুঝলাম তো, হিন্দু ধর্ম খারাপ। কিন্তু ইসলাম ধর্মও তাই, এ বিষয়ে মুখ বন্ধ কেন?
214833
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:১১
বিন হারুন লিখেছেন : ইসলামের প্রথম প্রভাত হতেই ঘোরতর ইসলাম বিদ্বেষী, ধর্মবেত্তা ও তাদের দালাল, কুলাঙ্গাররা চরম শত্রুতাবশতঃ ইসলাম ও ইসলামের নবীর ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টিতে লিপ্ত হয়। হীনস্বার্থ চরিতার্থের অন্ধ উন্মাদনায় মত্ত হয়ে মুসলিম ও মুসলমানদের নবীর ওপর প্রবল আক্রমণ চালিয়ে আসছে। তারা রাসূলুল্লাহ (সা.)এর অবমাননা ও তাঁর রেসালাতের প্রতি আক্রমণাত্মক মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে আসছে। যেন ধর্মপ্রাণ মানুষ তাঁর (সা.) রেসালাতের ওপর ঈমান আনা থেকে বিরত থাকে এবং মুসলমানগণ তাদের ধর্মের ব্যাপারে সন্দেহে নিপতিত হয়।
সে সকল কুলাঙ্গারদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পায়নি রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর মহৎ উদ্দেশিত বহুবিবাহ বিধানটিও। এ ব্যাপারে ইসলাম বিদ্বেষী অনেকেই উচ্চস্বারে বহু কথাই বলেছে। তারা এ বিষয়ে সন্দেহের ধুম্রজাল সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে। তারা চেয়েছে এর দ্বারা মহান রেসালাতের অধিকারী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর মান-সম্মান ও ইজ্জত-আব্রু লুণ্ঠন করতে। তারা বলে থাকে- অবশ্যই মুহাম্মাদ (সা.) ভোগী প্রকৃতির লোক; যিনি ছিলেন ভোগ, উত্তেজনা ও আনন্দ ফূর্তির ব্যাপারে তৎপর এবং আবেগের দ্বারা পরিচালিত হতেন। তিনি তাঁর অনুসারীদের ওপর এক থেকে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন। অথচ তিনি নিজেই একজন থেকে চারজন স্ত্রীর ওপর সন্তুষ্ট ছিলেন না। মনের বাসনা অনুযায়ী তিনি বহু সংখ্যক বিয়ে করেছিলেন। তাঁর স্ত্রীর সংখ্যা ছিলো এগার বা ততোধিক। (নাঊযুবিল্লাহ)।
প্রিয় নবী (সা.)এর ওপর এর চেয়ে বড় আঘাত ও অপবাদ পৃথিবীতে আর কি হতে পারে? সততা, পবিত্রতা, নিষ্ঠা, সংযম ও সাধনা ছিলো যাঁর জীবনের একমাত্র ভূষণ। ছলনা, মিথ্যা আর কপটতাকে করেছেন যিনি সারা জীবন ঘৃণা। তিনি যে এত খারাপ চরিত্রের অধিকারী হবেন, এটা নিছক মিথ্যা ও প্রতিহিংসার বেসাতি বৈ কিছুই হতে পারে না। যদি হুযূর (সা.)এর উদ্দেশ্য ভোগ-বাসনা ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করে চলা কিংবা শুধু নারী সঙ্গের আনন্দ লাভ করা হতো, তাহলে তিনি নিশ্চয় তাঁর পূর্ণ যৌবনেই একাধিক বিয়ে করতেন এবং বিগত যৌবনা ও পৌঢ়া বিধবা তালাক প্রাপ্তা নারীদেরকে বিয়ে না করে সুন্দরী যুবতী ও কুমারীদের বিয়ে করতেন।
পঁচিশ বছরের টগবগে যৌবনকালে চল্লিশ বছরের বৃদ্ধা মহিলা হযরত খাদিজা (রাযি.)কে বিয়ে করতেন না এবং ভরা যৌবনের শেষাব্ধি তাঁর সাথেই অতিবাহিত করতেন না। অথচ বাস্তব সত্য হচ্ছে এটাই যে, তিনি পঁচিশ বছর বয়সে চল্লিশ বছরের বৃদ্ধা হযরত খাদিজা (রাযি.)কে বিয়ে করে তাঁর সাথে যৌবনের মূল সময় তথা পঞ্চাশতম বছর পর্যন্ত অতিবাহিত করেন। এরপর একান্নতম বছর থেকে শুরু করে জীবনের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত তথা তেষট্টিতম বছর পর্যন্ত সময়ে (মোট তের বছর) বাকি স্ত্রীদেরকে বিয়ে করেন। তাঁরা আবার একজন তথা হযরত আয়েশা (রাযি.) ছাড়া সকলেই ছিলেন বিধবা। অনেকে আবার ছিলেন বৃদ্ধা। অথচ তিনি হযরত যাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাযি.)কে সুগন্ধিযুক্ত ও সজীব চেহারার দেখে বিয়ে করেছেন কি না প্রশ্নের উত্তরে বিধবা বিয়ের কথা শুনে কুমারী বিয়ে করা উচিৎ বলে মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, কুমারী বিয়ে করলে না কেন? তাতে তোমরা দু’জনে মিলে আনন্দ করতে পারতে! (বুখারী শরীফ, কিতাবুন নিকাহ- ২-৭৬০)।
এ হাদীসে হুযূর (সা.) হযরত যাবের (রাযি.)কে কুমারী বিয়ে করার দিকে ইশারা করেছেন। কুমারী বিয়ে করা কামনা পূরণের বড় উপায় জানা সত্ত্বেও তিনি বিধবা বিয়ে করতেন কি? যদি তিনি নারী লোভী হতেন!
নবী কারীম (সা.) একাধিক বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন পবিত্র জীবনের পঞ্চাশটি বসন্ত কেটে যাওয়ার পর। তাহলে কি তিনি যৌবনের মূল সময় তথা পঞ্চাশতম বছর পর্যন্ত ছিলেন চরিত্রবান, আর জীবনের শেষ বয়সে এসে হয়ে গেলেন চরিত্রহীন? এটা কি কোন বিবেক প্রসূত কথা? অথচ তিনি চাইলে সে সময় মক্কার শ্রেষ্ঠ সুন্দরী আর ধনী কুমারীদের বিয়ে করতে পারতেন। অনেকেই তাঁকে এমন উপঢৌকনও দিতে চেয়েছে। যেমন- মক্কী জীবনে কাফিররা রাসূলুল্লাহ্ (সা.)কে বহু বারই বলে ছিলো যে, ‘আপনি চাইলে আরবের সব চেয়ে সুন্দরী নারীদেরকে আপনার সামনে নিয়ে এসে হাজির করি’। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছিলেন- ‘আমার এক হাতে সূর্য আর অপর হাতে চন্দ্র এনে দিলেও আমি ইসলাম প্রচার থেকে একটুও পিছপা হবো না (ইন্শাআল্লাহ)’। সুন্দর নারীদের প্রতি যদি রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর লোভই থাকত (নাউযু বিল্লাহ্), তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ঐ সময় মক্কার কাফিরদের কথা মেনে নিয়ে সুন্দরী নারীদের হস্তগত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সে দিকে চোখ তুলেই তাকাননি; বরং নিজ দায়িত্বেই ছিলেন অটল। এ থেকে কি প্রমাণিত হয় না যে, তিনি নারী লোভী ছিলেন না?
নিন্দুকরা যদি তাদের শত্রুতা ছেড়ে নিজেদের জ্ঞান বুদ্ধির আশ্রয় গ্রহণ করে এবং নিরপেভাবে বিচার-বিবেচনা করে, তাহলে তারা অবশ্যই রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর একাধিক বিয়ের তাৎপর্য ও মাহাত্ম স্বীকার করে নিতে বাধ্য হবে। তারা খুঁজে পাবে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর এ বিয়ের মধ্যে মহান মর্যাদাশীল মানুষদের জন্যে একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সাথে সাথে এটাও পাবে যে, বহু বিবাহে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর ব্যক্তিগত ন্যূনতম স্বার্থও ছিলো না; বরং তাতে কেবলই দ্বীনের স্বার্থ সংরণ নিহিত ছিলো।
অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনা নিয়ে বলতে হয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পশ্চিমাপন্থী ও সাম্রাজ্যবাদী মহলের দোসর আমার সোনার বাংলার বুকে সুপরিকল্পিতভাবে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)কে নিয়ে ব্যঙ্গ, কটূক্তি ও উপহাস করে বক্তব্য প্রদান ও নাটক সম্প্রচার করছে।
গত ২৭ মার্চ ২০১২ খ্রীঃ মঙ্গলবার সাতীরার কালিগঞ্জের ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ‘স্বাধীনতা দিবস’ উপলে আয়োজিত নাট্যানুষ্ঠানে স্থানীয় নাট্যকার মীর শাহিনুর রহমান ও বিদ্যালয়ের সহকারী হিন্দু শিক্ষিকা মিতা রাণী কর্তৃক উপস্থাপিত “হুযূর কেবলা” নাটকে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)কে নারী লোভী বলে আখ্যায়িত করে (নাউযুবিল্লাহ্)। কারণ হিসাবে বলে, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মুহাম্মাদ (সা.) ১১ জন নারী বিয়ে করলেন কেন? অথচ বহুবিবাহ কেবল রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর আদর্শ নয়; বরং সকল জাতিতেই এই প্রথা চালু ছিলো। গ্রীক, চৈনিক, ভারতীয়, ককেশীয়, আশেরীয়, মিশরীয় প্রভৃতি সব জাতিতেই এ প্রথা চালু ছিলো। এ জাতিগুলোতে বহুবিবাহ প্রথা চালু ছিলো শুধু তাই নয়; বরং তারা এর কোন সীমা সংখ্যাও মেনে চলতো না। চীনের ‘লেসকী’ আইনে তো একশ ৩০ জন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি ছিলো। চীনের জনৈক শাসকের স্ত্রীর সংখ্যা প্রায় ত্রিশ হাজার ছিলো বলেও শোনা যায়।
পশ্চিম বাংলার একজন জনপ্রিয় উপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার ‘প্রথম আলো’ উপন্যাসে ব্রিটিশ ভারতের সময়কাল ১৯০০ সালের দিকে ত্রিপুরার মহারাজ বীর চন্দ্র মানিক্যের স্ত্রী ব্যতীত যে আরো অনেক রীতা ছিলো, এ তথ্য খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই রীতাদের ঘরে বীর চন্দ্র মানিক্যের অনেক সন্তানও ছিলো, যাদেরকে বলা হতো- মহারাজার পৌরষত্যের প্রতীক। আর রীতাদেরকে ভদ্র ভাষায় উপ-পত্নী বলা হতো। তাদের যখন ৪০ বছর বয়স পেরিয়ে যেত, তখন রাজা মানিক্য লাথি মেরে তাদেরকে রাজপ্রাসাদ থেকে তাড়িয়ে দিতো। তাদের ছিলো না কোন সামাজিক স্বীকৃতি, আর ছিলো না কোন নিরাপত্তা। এমনকি তাদের সন্তানরাও পিতৃ পরিচয় ছাড়াই বড় হতো। ১৯০০ সালের দিকে যদি সমাজপতিরা বিয়ে বহির্ভুত উপায়ে কোন সামাজিক স্বীকৃতি ছাড়াই নারীদেরকে এভাবে ভোগ করে, তাহলে একটু চিন্তা করে দেখুন, ১৭০০-১৮০০ সালের দিকে ঐসব দেশে মেয়েদের অবস্থা কি ছিলো? এছাড়াও আদিকাল হতে আল্লাহ্র সেরা নবী-রাসূলগণও একাধিক বিবাহের আদর্শ পালন করে আসছেন। এ ব্যাপারে খ্রীস্টজগতের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলেও যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন- হযরত ইব্রাহীম (আ.)এর তিনজন স্ত্রী ছিলো। আদি পুস্তক (১৬=৪-১২)। হযরত ইয়াকূব বা ইসরাঈল (আ.)এর চারজন স্ত্রী ছিলো। হযরত মূসা (আ.)এর চারজন স্ত্রী ছিলো। তাওরাতে আল্লাহ্ তাআলা হযরত মূসা (আ.)কে সংখ্যা নির্ধারণ না করে যত ইচ্ছা বিবাহ করার অনুমতি দিয়ে ছিলেন। (দ্বিতীয় বিবরণ- ২১=১০-১৩)। হযরত দাঊদ (আ.)এর ১৯ জন স্ত্রী ছিলো। (বাইবেল ২ শামুয়েল ৩ অধ্যায় ২-৫) ২ শামুয়েল, ২০=৩)। তাওরাতে আরো বলা হয়েছে যে, হযরত সুলাইমান (আ.)এর ৭০০ স্ত্রী এবং ৩০০ দাসী ছিলো।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, বহুবিবাহ শুধু আমাদের মহানবী (সা.) করেছিলেন এমন নয়; বরং প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মানুষ যাদেরকে আল্লাহ্ প্রেরিত পয়গাম্বর বলে বিশ্বাস করে এবং অন্তর দিয়ে ভক্তি-শ্রদ্ধা করে, তারাও বহু বিবাহ করেছিলেন। তাহলে কেন তাদেরকে বহু বিবাহের কারণে কামুক, লম্পট, কপট ও নারীলোভী বলা হয় না? অথচ মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর ওপর তারা এ কারণে জঘন্য অপবাদ দিচ্ছে? এটা কি বিদ্বেষ নয়?
রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর বহুবিবাহের মাহাত্ম ও উদ্দেশ্যঃ পাপ-বিদগ্ধ তৃষিত এ বসুন্ধরায় রাহমাতুল্লিল আলামীনের আগমনে পাপাচারের সয়লাবে ডুবন্ত এ ধরণী ফিরে পেয়েছিলো নতুন প্রাণ। বিদূরিত হয়েছিলো তাঁর হিদায়াতের নূরানী রোশনীতে অজ্ঞতা ও ভ্রষ্টতার কালো আঁধার। হয়ে উঠেছিলো সারা বিশ্ব খুশীতে মাতোয়ারা ও আনন্দে আত্মহারা। তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আখলাক, মহান চরিত্র, সুন্দর ও সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শের ক্ষেত্রে সমগ্র মানবতার ইমাম ও অগ্রনায়ক। তাঁর প্রত্যেক পদেক্ষেপই ছিলো আদর্শের রূপরেখা। তেমনি ছিলো তাঁর বহু বিবাহের মাঝে অসংখ্য আদর্শ ও হিকমত। নিম্নে তার কয়েকটি মৌলিক আদর্শের নমুনা দেয়া হলো-
১. শিক্ষাদানঃ রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর একাধিক বিবাহের মূল উদ্দেশ্য ছিলো- ইসলামী আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞ মেয়েদের জন্যে এমন কতগুলো শিক্ষিকা মহিলার ব্যবস্থা করা, যাঁরা ইসলামী হুকুম-আহকামের শিক্ষাদান করবে। কেননা, পুরুষদের ওপর যে সমস্ত আহকাম পালনের নির্দেশ রয়েছে, মেয়েদের ওপরও ঐ সমস্ত আহকাম পালনের নির্দেশ রয়েছে। বিশেষ করে নারী সম্পর্কীয় ও দাম্পত্য জীবনের গোপনীয় ব্যাপারে। যেমন- হায়েয, নিফাস ও পাক হওয়া, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কীয় মাসয়ালা। এ ধরনের আহকাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে অধিকাংশ মেয়ে লজ্জাবোধ করতেন। রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর নিকট উপরোক্ত মাসয়ালাসমূহ থেকে কোন একটা মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাদের লজ্জা হতো। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর স্ত্রীদের পক্ষেই এই সবের ব্যবস্থা করা এবং তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া সম্ভব ছিলো। আবার অনেক সময় রাসূলুল্লাহ্ (সা.) কিছু বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য পেশ করতে লজ্জা করতেন। তাই ইশারার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতেন। কিন্তু অনেক মহিলা তা বুঝতে সম হতেন না। ফলে তাদের শিক্ষা দেয়ার জন্যে শিক্ষিকার প্রয়োজন ছিলো। যা রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর বিবিগণের মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করেছে। যেমন- হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন, আল্লাহ্ তাআলা আনসার মেয়েদের রহম করুন। যাদের লজ্জাবোধ দ্বীনের জ্ঞান অর্জনে বাধা দেয়নি। তারা রাতের আঁধারে হযরত আয়েশা (রাযি.)এর কাছে দ্বীনের আহকাম জানার জন্যে আসতেন। হায়েয, নিফাস ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক সমাধান শিক্ষা নিতেন। এভাবে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর প্রত্যেক স্ত্রীই ছিলেন তাদের জন্যে উত্তম শিক্ষিকা ও পথপ্রদর্শিকা। তাদের বদৌলতে মেয়েরা ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেছে। অন্যদিকে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর এমন অনেক কাজ আছে, যেগুলো তাঁর বিবিদের মাধ্যমেই আমরা পেয়েছি। অন্যথায় তা অর্জনে অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হতো।
২. সাম্য নীতি প্রতিষ্ঠা : ইসলাম মানবতার ধর্ম, গণমানুষের ধর্ম। একজন অপরজনকে বুকে টেনে নেয়ার ধর্ম। ইসলামে আমীর-প্রজা, দাস-প্রভু, পত্নী-দাসী সবাই সমান। মানুষ মাত্রই মানুষের নিকট সম্মানের অধিকারী। সমান মর্যাদার হকদার। ইহুদী-খ্রীস্টান, চামার, চন্দাল, কুমার, তাঁতী, জেলে, কৃষক প্রভৃতি সকলেই ইসলামের চোখে সমান মর্যাদার। তবে যে যত বড় আল্লাহ্ভীরু এবং যার মধ্যে যত বেশি গুণ আছে, সে তত বড় মর্যাদার অধিকারী। এ নীতি কাজে পরিণত করাও বহুবিবাহের অন্যতম কারণ। হযরত সাফিয়া ও জুয়াইরিয়া (রাযি.) দাসী রূপে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর হাতে এসেছিলেন। বিশেষতঃ হযরত জুয়াইরিয়া (রাযি.) বেদুঈন দস্যু দলপতির মেয়ে ছিলেন। আর হযরত সাফিয়া (রাযি.) ছিলেন ইহুদীর মেয়ে। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) তাঁদেরকে বিয়ে করে হযরত আয়িশা (রাযি.), হাফসা (রাযি.), মায়মূনা (রাযি.) প্রমূখ অভিজাত শ্রেণীর পত্নীদের সমান মর্যাদা দান করেছেন। তাঁরা সকলেই আজ উম্মুল মুমিনীন মর্যাদায় অভিষিক্ত।
৩. ধর্মীয় বিধান জারিঃ রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর বহুবিবাহের অন্যতম হিকমত হলো- ধর্মীয় বিধান জারি ও জাহেলী যুগের ঘৃণ্য অভ্যাসকে বাতিল করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে- ‘পালক আত্মীয়তার প্রথা’। ইসলাম আসার পূর্বে আরববাসীরা অন্যের ছেলেকে পালক নিতো। তারা নিজেদের ঔরসজাত সন্তান নয় এমন কাউকে পালন করত এবং নিজেদের উত্তরাধিকারী ছেলের মত গন্য করত। নিজের ছেলের ওপর আরোপিত সকল বিধান তার জন্যও প্রযোজ্য মনে করত। যেমন- উত্তরাধিকারী, তালাক, বিয়ে, মুহাররামাতে মুছাহারা এবং মুহাররামাতে নিকাহ ইত্যাদির ক্ষেত্রে। এটা তাদের বর্বরতার যুগের অনুসৃত দ্বীন হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। অপরদিকে ইসলাম আসেনি তাদেরকে বাতিলের ওপর অটল রাখার জন্যে। আসেনি তাদেরকে অজ্ঞতার অন্ধকারে পাগলামী করার উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়ার জন্যেও। তাই আল্লাহ্ তাআলা রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর মাধ্যমে যায়েদ বিন হারিস (রাযি.)কে লালন-পালন করান এবং তাঁর পালক পুত্র হিসাবে প্রসিদ্ধ লাভ করান। এমনকি তাঁকে যায়েদ বিন মুহাম্মদ বলা হতো। এক পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর ফুফাত বোন হযরত জয়নাব (রাযি.)এর সাথে বিবাহ বন্ধনে অবদ্ধ করেন। তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় হযরত যায়েদ (রাযি.) জয়নাব (রাযি.)কে তালাক দিলে আসমানে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। এর মাধ্যমে জাহেলী যুগের ঐ প্রথাকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করেন এবং ঘোষণা করেন, পালক পুত্র আপন পুত্রের মত নয়। পালক পুত্রের তালাক দেওয়া স্ত্রীর সাথে পালক শ্বশুরের বিয়ে বৈধ।
৪. নারীত্বের মর্যাদা দানঃ ইসলাম পূর্ব যুগে নারীদেরকে তদানীন্তন আরববাসী পশুতুল্য মনে করত। তাদের না ছিলো কোন মান-মর্যাদা, আর না ছিলো সুন্দরভাবে জীবনযাপন করার অধিকার। বিশেষ করে বিধবাদের দুর্গতি ছিলো সবচেয়ে বেশি। মানুষের মত বেঁচে থাকার অধিকার ছিলো না তাদের। এজন্যেই মানবতার নবী, গণমানুষের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বিধবা নারীদেরকে বিবাহ করে কুমারীদের সমান মর্যাদা দান করতঃ বিশ্বজগতের সম্মুখে একটা উন্নত আদর্শ তুলে ধরেছেন; যা মানবেতিহাসে নজিরবিহীন। হযরত সাওদা (রাযি.), হযরত উম্মুল মাসাকীন জয়নাব (রাযি.) ও হযরত উম্মে সালামা (রাযি.)কে তিনি এই কারণেই বিয়ে করেছিলেন।
৫. সমতা বিধানঃ একাধিক স্ত্রীদের কিভাবে রাখতে হবে এবং তাদের সাথে কিরূপ আচার-আচরণ করতে হবে, এই আদর্শ স্থাপন করাও ছিলো রাসূল (সা.)এর বহুবিবাহের একটি মহান উদ্দেশ্য।
৬. সামাজিক হিকমতঃ রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বংশগত সম্পর্ক স্থাপন এবং তা অটুট রাখার উদ্দেশ্যে বহুবিবাহ করেছেন। যেন একারণে তারা ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যেমন- সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী, রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব হযরত আবু বকর (রাযি.)এর আদরের কন্যা আয়িশা (রাযি.) ও আমীরুল মুমিনীন হযরত ওমর ফারুক (রাযি.)এর কন্যা হযরত হাফসা (রাযি.)কে বিবাহ করেন। যার ফলে তাঁদের অন্তর রাসূল (সা.)এর দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং তাঁরা আল্লাহ্র মহত্ব ও সম্মানের প্রতি ঈমান আনার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর দাওয়াতের দিকে আকৃষ্ট হন।
৭. রাজনৈতিক হিকমতঃ মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কোনো কোনো উম্মাহাতুল মুমিনীনকে বিয়ে করেছেন তাঁর গোত্রের সাথে সম্পর্ক ও আত্মীয়তা করার ল্েয। কারণ, এটা অবিদিত নয় যে, নিশ্চয় মানুষ যখন কোন এক গোত্রে কিংবা কোন এক সম্প্রদায় হতে বিয়ে করে, তখন তাদের উভয়ের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আর এরই মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে সেই ব্যক্তি নতুন সম্পর্কিত গোত্রের লোকদের সাহায্য ও সহযোগিতার আহ্বান করে। উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি উপমা পেশ করা হলো-
রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর বনূ মুসতালাক গোত্রের নেতা হারেসের কন্যা জুয়াইরিয়া (রাযি.)কে বিয়ে করাঃ হযরত জুয়াইরিয়া (রাযি.) সম্প্রদায় ও আত্মীয়-স্বজনসহ বন্দী হয়ে আসার পর স্বীয় সত্ত্বাকে মুক্ত করার জন্যে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর কাছে আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করলে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) তাঁকে তাঁর মুক্তিপণ পরিশোধ করে নিজের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। হযরত জুয়াইরিয়া (রাযি.) এ প্রস্তাবে সম্মতি দিলে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) তাঁকে বিয়ে করে নেন। অতঃপর সাহাবাগণ রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর শ্বশুর সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপারে আত্মীয়তার দিকে ল্য করে সকল বন্দীদের মুক্ত করে দেন। তারাও সাহাবাদের এই মহত্ব, উদারতা , বুদ্ধিমত্তা ও চুলজ্জা দেখে সবাই ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন এবং সবাই আল্লাহ্র দ্বীনের পতাকা তলে সমবেত হন ও মুসলিম হিসাবে আত্মপরিচয় লাভ করেন। জুয়াইরিয়া (রাযি.)এর সাথে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর এ বিয়েই তাঁর নিজের এবং তাঁর সম্প্রদায় ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্যে সৌভাগ্যস্বরূপ এবং ইসলাম গ্রহণ ও মুক্তি লাভের কারণ হয়।
রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বিয়ে করেন সুফিয়া বিনতে হুয়াই বিন আখতাবঃ যিনি খায়বারের যুদ্ধে স্বামীর মৃত্যুর পর বন্দী হয়ে এসেছিলেন এবং কোন মুসলমানের ভাগে পড়ে ছিলেন। তখন বুদ্ধিমান ও সমঝদার সাহাবাগণ বলেন, তিনি হলেন কুরায়যা গোত্রের নেত্রী, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)এর ভাগে পড়া ছাড়া অন্য কারো ভাগে পড়া উচিৎ হবে না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.)কে এ বিষয়টা জানানো হলে, তিনি সুফিয়া (রাযি.)কে দু’টি বিষয়ে এখতিয়ার প্রদান করেন-
(ক) তাঁকে মুক্ত করে নিজ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে নিবেন।
(খ) দাসত্বের বন্ধন থেকে মুক্ত করে দেবেন। অতঃপর সে তাঁর পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাবেন। সুফিয়া (রাযি.) রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর উত্তম ব্যবহার, মহত্ব ও মর্যাদা দেখে আযাদ হয়ে তাঁর (সা.) স্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা.) তাঁকে বিয়ে করে নেন। যার ফলে তাঁর গোত্রের অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করেন।
একইভাবে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) উম্মে হাবীবা (আবু সুফিয়ানের কন্যা রমলা)কে বিয়ে করেনঃ যে আবু সুফিয়ান সে সময় ইসলামের ঘোর শত্রু ছিলেন এবং শিরকের পতাকাবাহী ছিলেন। তিনি যখন আপন মেয়ে রমলাকে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)এর বিয়ের সংবাদ শুনেন, তখন তা স্বীকৃতি দেন। সাথে সাথে তিনি ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়েন। একপর্যায়ে ইসলাম গ্রহণ করে নামের সাথে যোগ করেন রাযিয়াল্লাহু আনহু এবং হয়ে যান ইসলামের এক বিপ্লবী সিপাহসালার।
সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে, এই বিয়ে ছিলো তাঁর ও মুসলমানদের কষ্টকে লাঘব করার জন্যে এবং তাই ঘটেছে। এর চেয়ে উত্তম রাজনীতি আর কি হতে পারে? তার চেয়ে ভাল কোন হিকমত আর আছে কি? এ ছাড়াও রাসূলুল্ল্হ্ (সা.)এর বহুবিবাহের আরো অনেক হিকমত ও উদ্দেশ্য রয়েছে, যার বর্ণনা এই সংপ্তি পরিসরে সম্ভব নয়।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:০৫
163487
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : এসব বস্তাপঁচা আবর্জনা নিজের পোষ্ট হিসেবে দিয়েন, ছাগুদের দোয়া পাবেন। আর কখনো দিলে তা মুছে দেয়া হবে। ধন্যবাদ।
214861
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৭
শুভ্র আহমেদ লিখেছেন : City of Life and Death এই চায়না মুভিটা যারা দেখেছেন তারা জানেন
যে ১৯৩৭ সালের ২য় চায়না জাপান যুদ্ধ যেটাকে বলা হয় Second Sino-
Japanese War এই যুদ্ধে জাপানী সৈন্যরা চীনের Nanjing (or Nanking)
যেটাকে বলা হত দক্ষিন চীনের রাজধানী এই শহরটা জয় করে। তারপর
জাপানী সৈন্যরা নানকিং শহরের সব মেয়েদের কে অপহরন
করে তাদের যৌণদাসী বানায়। এই
মেয়েগুলিকে জাপানী সৈন্যরা Sex Slave Girl বা যৌণ
দাসী হিসাবে ব্যবহার করে।
Sex Slave Girl বা যৌণ দাসী এই শব্দটার সাথে হয়ত আপনারা অনেকেই
পরিচিত। ১ম বিশ্বযুদ্ধ ও ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তি উভয়
গ্রুপই তার শত্রুদেশ সমূহ জয় করে সেই পরাজিত দেশের অসহায়
মেয়েদের কে নিয়ে বিভিন্ন ক্যাম্প করত। গণহারে সেই
ক্যাম্পে মেয়েদের কে কোন পোশাক ছাড়া রাখা হত। সৈন্যরা যুদ্ধ
শেষে তারপর সেই ক্যাম্পে এসে গণহারে মেয়েদের কে ধর্ষন করত।
শত্রু সৈন্যদের ধর্ষনের সময় সেই অসহায় মেয়েরা মারাও যেত। যেমন
ধরেন ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান যখন চীন আক্রমণ করে তখন
জাপানী সৈন্যরা চীনের মেয়েদের কে যৌণদাসী বানিয়েছিল।
Photo Photo
জাপানী সৈন্যদের গনধর্ষনে অনেক চীনা মেয়ে মারাও
গিয়েছিল।
এই মেয়েদের কে comfort Women নামেও অভিহিত করা হত। ছোট ছোট
শিশুদেরকেও ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান ও জাপানী সৈন্যরা তাদের
সাথে বিছানায় যেতে বাধ্য করত।
Photo
২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জাপান যখন বার্মা আক্রমণ করে তখন অনেক
বার্মীজ শিশুকেও জাপানীয সৈন্যরা comfort Women হিসাবে ব্যবহার
করত। এমনকি তাদের দিয়ে Oral Sex পর্যন্ত করাত তারা।
১৯৭১ সালে পকিস্তানী হানাদার বাহিনীও আমাদের দেশের
মেয়েদের কে Sex Slave Girl বা যৌণ দাসী বানিয়ে অনেক
গুলি ক্যাম্প তৈরি করেছিল। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গন
ধর্ষনের কারনে অনেক মেয়ে মারা গিয়েছিল এটা আমরা সবাই
জানি। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যেসকল সদস্য এই গন
ধর্ষনে জড়িত ছিল আমাদের তথাকথিত জাতির পিতা শেখ মুজিব
কিন্তু তার কন্যাদের ধর্ষনকারী পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর
সেই সকল সৈন্যদের কে সসম্মানে বাংলাদেশ ত্যাগ করার
ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।
যাই হোক নাস্তিকরা প্রায়ই বলে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাকি যুদ্ধে পরাজিত গোত্রগুলির মেয়েদের
কে যৌণদাসী বানিয়েছিল। নাউযুবিল্লাহ। আমি এখন নাস্তিকদের
বলতে চাই যে আপনারা আমাকে এমন একটা উদাহরন দেখান
যেখানে মদীনার কোন পরাজিত গোত্রদের নারীদের
কে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন
ক্যাম্প তৈরি করেছিলেন যেখানে সাহাবীরা ইচ্ছামত
যেয়ে নারীদের কে ধর্ষন করত। কিন্তু সারা পৃথিবীর সকল নাস্তিক
মিলেও এমন কোন প্রমান দেখাতে পারবে না যে ইসলাম মদীনার
কোন পরাজিত গোত্রের মেয়েদের কে Sex Slave Girl বা যৌণ
দাসী বানিয়েছিল। যুদ্ধবন্দী নারী এই প্রসঙ্গ
নিয়ে নাস্তিকরা প্রায়ই জলখোলা করতে চায়। যুদ্ধবন্দী নারী এই
প্রসঙ্গটা টেনে নিয়ে এসে নাস্তিকরা দীর্ঘদিন ইসলাম
কে একটা বর্বর সন্ত্রাসের ধর্ম বলে প্রমান করতে ব্যস্ত। কিন্তু ইসলামের
ইতিহাসে এই যুদ্ধবন্দী নারী বলতে খালি ইহুদী গোত্র বনু
কোরাইজা ও হুনাইনের যুদ্ধের পর কিছু যুদ্ধবন্দি নারীর নাম
পাওয়া যায়। কিন্তু সাহাবীরা যে ইরাক ইরান সিরিয়া মিশর
জর্ডান তুরস্ক এত বড় বড় দেশ জয় করল কই সেইসব দেশের কোন নাগরিকদের
তো সাহাবীরা দাসদাসী বানায়নি। বনু কোরায়জা বা হুনাইনের
যুদ্ধের পরে যে নারী গুলি মুসলমানদের হাতে হস্তগত হয়েছিল এদের
মাঝে একটা নারীকেও ধর্ষন করা হয় নি। প্রত্যেক নারীকেই
সাহাবীদের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়েছিল।
সাহাবীরা পরে মুতা বিয়ের মাধ্যমে তাদের সাথে মিলিত
হয়েছিল। ইসলামের মুতা বিয়ের আইন তখনই নাযিল হয়েছিল। যদিও
পরবর্তীতে ইসলাম মুতা বিয়েকে হারাম ঘোষনা করেছে।
যুদ্ধবন্দী নারী এই প্রসঙ্গে নাস্তিকরা সূরা নিসার ২৪
নং আয়াতটা ব্যবহার করে। আমরা এখন সূরা নিসার ২৪
নং আয়াতটা পুরাটা পড়ি
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের
জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-
এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের
জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে,
তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের
মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর।
তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর
তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।
[সুরা নিসা: ২৪]
আমরা এখন সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতটা পুরাটা দেখি তাইলে পাই
এখন আমরা দেখতে পাই যে “অনন্তর তাদের
মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর।
তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর
তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। ’’ এই আয়াত দ্বারা কিন্তু
বুঝা যাচ্ছে যে যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে একটি চুক্তি করেই তারপর
তার সাথে মিলিত হতে হবে। হ্যা আর এটাকেই
বলা হয়েছে মুতা বিবাহ। অর্থ্যাৎ মুতা বিয়ের মাধ্যমেই
সাহাবীরা যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে মিলিত হত। তারপর
আমরা যদি এর পরের আয়াতটা দেখি
আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান
নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে তোমাদের
অধিকারভুক্ত মুসলিম ক্রীতদাসীদেরকে বিয়ে করবে। আল্লাহ
তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন।
তোমরা পরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের মালিকের
অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম
অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যে,
তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচা রিণী কিংবা উপ-
পতি গ্রহণকারিণী হবে না। অতঃপর যখন তারা বিবাহ
বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করে,
তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে।
এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত
হওয়ার ব্যাপারে ভয় করে। আর যদি সবর কর, তবে তা তোমাদের
জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। [সুরা নিসা: ২৫]
দেখুন আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এখানে ক্রীতদাসী/
যুদ্ধবন্দী নারীদেরকে বিয়ে করার
ব্যপারে তাগাদা দিচ্ছেন এবং নিয়ম
অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান করার জন্যও বলা হচ্ছে। এর
চাইতে বেশী অধিকার একজন ক্রীতদাসীকে আর
কি দেয়া যেতে পারে? যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে কেউ সেক্স
করতে চাইলে তাদেরকে বিয়ে করার জন্য
তাগাদা দেয়া হয়েছে (৪:২৫)। উম্মুল মুমেনীন জুহায়রিয়া,
রায়হানা ও সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহারা কিন্তু
প্রথমে যুদ্ধবন্দী নারী হিসাবেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসেছিলেন।
পরবর্তীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের কে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। তাই আজকে আমরা হযরত
জুহায়রিয়া, হযরত রায়হানা ও হযরত সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু
আনহাকে উম্মুল মুমেনীন বলি।
নাস্তিকরা শুধু আপনাকে সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতের ১ম
অংশটা বলবে কিন্তু নাস্তিকরা কখনই আপনাকে সূরা নিসার ২৪
নং আয়াতের পুরাটা ও সূরা নিসার ২৫ নং আয়াতের
পুরাটা বলবে না। কারন সূরা নিসার ২৪ ও ২৫ নং আয়াত টা পড়লেই
আপনারা বুঝবেন যে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যুদ্ধবন্দী নারীদের
কে বিয়ে করার হুকুম দিয়েছেন। আবার সেক্স করার জন্য
যুদ্ধবন্দীনি নারীদের উপর কোন জোর-জবরদস্তি করা যাবে না এটাও
কোরআনে বলা হয়েছে- "
যারা বিবাহে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত
না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন। তোমাদের
অধিকারভুক্তদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চায়,
তাদের সাথে তোমরা লিখিত চুক্তি কর যদি জান যে, তাদের
মধ্যে কল্যাণ আছে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে, অর্থ-কড়ি দিয়েছেন,
তা থেকে তাদেরকে দান কর। তোমাদের দাসীরা নিজেদের
পবিত্রতা রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের
লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য কারো না। যদি কেহ তাদের
উপর জোর-জবরদস্তি করে, তবে তাদের উপর জোর-জবরদস্তির পর আল্লাহ
তাদের প্রতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা নুর: ৩৩]
অর্থ্যাৎ সূরা নূরের ৩৩ নং আয়াত মতে বুঝা যাচ্ছে যে কোন
যুদ্ধবন্দী নারী বিয়ে ছাড়া মিলিত হতে না চাইলে তাকে জোর
করা যাবে না। অবশ্যই বিয়ের মাধ্যমে যুদ্ধবন্দী নারীর সাথে মিলিত
হতে হবে। তাইলে আপনারা দেখুন
নাস্তিকরা কিভাবে সূরা নিসার ২৪ নং আয়াতের ১ম অংশ
দিয়ে কিভাবে আমাদের কে বিভ্রান্ত করছে। আল কোরআনের
কোথায় আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যুদ্ধবন্দী নারীদের কে ধর্ষন
করতে বলেছেন ? নাউযুবিল্লাহ। সূরা নিসার ২৪, ২৫ ও সূরা নূরের ৩৩
নং আয়াতগুলি পড়লে আপনারা বুঝবেন যে যুদ্ধবন্দী নারীদের
সাথে মুতা বিবাহ অথবা স্থায়ী বিবাহের মাধ্যমেই শুধু মিলিত
হওয়া যাবে।
এখন ঠিক কোন প্রেক্ষাপটে বনু কোরাইজা ও হুনাইনের যুদ্ধের
পরে কিছু নারী যুদ্ধবন্দী হিসাবে সাহাবীদের কাছে এসেছিল
টা আপনাদের কে এখন আমি বলছি।
খন্দকের যুদ্ধের সময় যখন মুসলমানরা মদীনা নগরী ত্যাগ
করে কাফেরদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত তখন বনু কোরায়জা গোত্রের
ইহুদীরা চুক্তিভংগ করে মক্কার কাফেরদের সাথে হাত
মিলিয়ে পিছন দিক থেকে মদীনা আক্রমন করার চেষ্টা চালায়।
যদিও ইহুদী গোত্র বনু কোরাইজা গোত্রের সেই চেষ্টাটা সফল হয়নি।
খন্দকের যুদ্ধের পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বনু কোরায়জা গোত্রকে অবরোধ করেন। যেহেতু বনু কোরায়জা গোত্র
কাফেরদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ চলার সময় চুক্তি ভংগ করেছে তাই
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনু
কোরায়জা গোত্রকে বলেন তোমাদের ব্যাপারে আমার
ফয়সালা কি হবে ? তখন বনু কোরায়জা গোত্র রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলেন তাদের মিত্র আওস
গোত্রের হযরত সাদ ইবনে মুয়ায রাযিয়াল্লাহু আনহু
যে ফয়সালা করবেন তাতেই তারা সম্মত আছে। হযরত সাদ ইবনে মুয়ায
রাযিয়াল্লাহু আনহু ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতের বিধান
মতে যুদ্ধকালীন চুক্তি ভঙ্গের অপরাধে বনু কোরায়জা গোত্রের সকল
পুরুষ ইহুদিকে হত্যা করা এবং ইহুদি নারীদের
কে দাসী হিসাবে বিক্রি করে দেয়া হোক এই রায় দেন। এরপরে বনু
কোরাইজা গোত্রের ৪০০ পুরুষ ব্যক্তিকে একই দিনে হত্যা করা হয়
এবং বনু কোরায়জা গোত্রের
প্রত্যেকটা যুদ্ধবন্দী নারীকে সাহাবীদের মাঝে বন্টন
করে দেয়া হয়েছিল যেন তারা Public Property তে পরিনত না হয়ে যায়।
পরবর্তীতে সাহাবীরা তাদের কে বিয়ে করে তাদের কে স্ত্রীর
মর্যাদা দিয়েছিলেন।
বনু কোরায়জা গোত্রের ইহুদীরা যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলত যে আপনি আপনার ইচ্ছামত আমাদের
প্রতি আচরণ করেন তাইলে কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঠিকই বনু কোরায়জা গোত্রের সকল
ইহুদীদেরকেই ক্ষমা করে দিতেন। ঠিক যেরকম
টা আমরা দেখি মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মক্কার কাফেরদের
কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তোমরা আমার কাছে কিরকম আচরন
প্রত্যাশা করছ তখন মক্কার কাফেররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলেছিল- “ আপনি হচ্ছেন আমাদের
সম্মানিত ভ্রাতা ও সম্মানিত ভ্রাতুষ্পুত্র। আমরা আপনার
কাছে ভাইয়ের মতই আচরণ প্রত্যাশা করি। “ এরপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কার কাফেরদের
কে বলেছিলেন- “ আজ আমি তোমাদের কে সেই কথাই বলব যেই
কথা হযরত ইউসুফ আলাইহিস সাল্লাম তার ভাইদের কে বলেছিলেন,
আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। তোমরা সবাই
স্বাধীন মুক্ত। “
একটু চিন্তা করে দেখুন যেই মক্কার কাফেররা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে শত সহস্রবার আঘাত
করেছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে উনার
পিতৃভুমি থেকে বহিস্কার করেছিল, বারবার মদীনা আক্রমণ
করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কে হত্যা করতে চেয়েছিল কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের সকল কেই ক্ষমা করে দেন। এরকম ক্ষমার
দৃষ্টান্ত এই পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। যুদ্ধকালীন চুক্তি ভঙ্গের
দায়ে অপরাধী বনু কোরায়জা গোত্রের ইহুদীরাও যদি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ক্ষমা চাইত
তাইলে কিন্তু ঠিকই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামও মক্কার কাফেরদের ন্যায় বনু
কোরাইজা গোত্রের সকল ইহুদীদের কে ক্ষমা করে দিতেন। ঠিক
যেরকম ভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বিভিন্ন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত মদীনার অন্যান্য ইহুদী গোত্র যেমন
বনু নাদিরা, বনু কায়নুকাদের কে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আর বনু
কোরায়জা গোত্রের উপর এই ফয়সালা ছিল ইসরাঈলী শরীয়তের
সামরিক বিধি মুতাবেক। তাওরাতের ১১-১৩ আয়াতে বলা আছে: “যখন
তুমি কোন নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে তাহার নিকটে উপস্থিত হবে,
তখন তাহার কাছে সন্ধির কথা ঘোষনা করিবে।
তাহাতে যদি সে সন্ধি করিতে সম্মত হইয়া তোমার জন্য দ্বার
খুলিয়া দেয় তবে সেই নগরে যে সমস্ত লোক
পাওয়া যাবে তাহারা তোমাকে কর দিবে ও তোমার দাস হইবে।
কিন্তু যদি সে সন্ধি না করিয়ে তোমার সহিত যুদ্ধ করে,
তবে তুমি সেই নগর অবরোধ করিবে। পরে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু
তাহা তোমার হস্তগত করিলে তুমি তাহার সমস্ত পুরুষদের
কে খড়গধারে আঘাত করিবে; কিন্তু স্ত্রীলোক, বালক-বালিকা ও পশু
প্রভূতি নগরের সর্বস্ব, সমস্ত লুট দ্রব্য আপনার জন্য লুটস্বরুপ গ্রহন করিবে আর
তোমার ঈশ্বর প্রদত্ত শত্রুদের লুট ভোগ করিবে” (দ্বিতীয় বিবরণ, অধ্যায়
২০, আয়াত ১০-১৪, পবিত্র বাইবেল, বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি,
ঢাকা) বাইবেলের ২টা ভাগ একটা হল অল্ট টেস্টমেন আরেকটা হল
নিউ টেস্টমেন। বাইবেলের অল্ড টেস্টমেনকেই তাওরাত বলা হয়।
বনী কুরায়জা গোত্রের সাথে মুসলমানদের এই আচরন করার কারন গুলির
বিস্তারিত বর্ননা আপনারা এই লিংকে পাবেন
আর যে উইকিপিডিয়ার
কথা বলে নাস্তিকরা মুখে ফেনা উঠিয়ে ফেলে সেই
উইকিপিডিয়াতেই ইহুদি ঐতিহাসিকদের রেফারেন্স
সহকরে বলা আছে বনু কুরাইজা গোত্র যুদ্ধকালীন চুক্তি ভঙ্গ করেছিল।
নাস্তিকরা কি এখন বলবে যে উইকিপিডিয়ার এই লেখাটাও
আমরা মুসলমানরা লিখে এসেছি? উইকিপিডিয়াতেও
বলা আছে যে বনু কোরাইজা গোত্রের উপর তালমুদীয় শাস্তি প্রয়োগ
হয়েছিল। http://en.wikipedia.org/wiki/Invasion_of_Banu_Qurayza
তারপর মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক মক্কার সকল
কাফেরদেরকে ক্ষমা করে দেয়ার ইতিহাস তো আমরা সবাই জানি।
মক্কা বিজয়ের পরে আরবের প্রায় সব গোত্রই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। কিন্তু
হাওয়াযেন গোত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়নি।
আরবে হাওয়াযেন গোত্রকে কুরাইশদের পর দ্বিতীয়
শক্তি হিসাবে গণ্য করা হত। হাওয়াযেন গোত্রের সাথে আরো বেশ
কিছু উচ্ছৃংখল গোত্র যেমন সাকীফ, মোযার, জোশাম ও সাদ ইবনে বকর
এর গোত্রসমূহ যোগ দেয়। তারা হাওয়াযেন গোত্রের
অধিপতি মালিক ইবনে আওফ কে তাদের
নেতা বানিয়ে মক্কা থেকে ১০ মাইল দূরে হোনায়ন নামক
প্রান্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে এই সকল কাফের গোত্র তাদের পরিবার পরিজন কেও
তাদের সাথে নিয়ে আসে যেন পরিবার পরিজনের মুখের
দিকে তাকিয়ে তারা সবাই মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রানপণে যুদ্ধ
করে। যথারীতি হুনায়নের যুদ্ধে মুসলমানরা জয়ী হয়। সেই সময়ের
যুদ্ধরীতি অনুসারে হুনায়নের যুদ্ধ করতে আসা পরাজিত সকল গোত্রের
নারী পুরুষ, তাদের উট বকরী ও ধন সম্পদ মুসলমানদের হস্তগত হয়।
এবং যথরীতি তা গনীমতের মাল হিসাবে সাহাবীদের
মাঝে বন্টনও করা হয়। কিন্তু গনীমতের মাল বন্টনের ৭ দিন পরেই
হুনায়নের যুদ্ধ করতে আসা সকল কাফের গোত্রপতিরা মুসলমান
হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
কাছে আসেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন
বন্টন হয়ে যাওয়া তাদের সকল পরিবার পরিজন ও তাদের সহায়
সম্পত্তি সাহাবীদের কাছ থেকে নিয়ে তাদের মাঝে ফেরত
দিয়ে দেন। নাস্তিকরা কিন্তু আপনাদের কে খালি এই হুনায়নের
যুদ্ধের গনীমতের মাল বন্টনের কথাটাই বলবে কিন্তু রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে গনীমতের মাল বন্টন হবার ৭
দিন পরেই এই হুনায়নের যুদ্ধ করতে আসা সকল পরাজিত গোত্রপতিদের
কে তাদের পরিবার পরিজন ও সহায় সম্পত্তি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন
তা কিন্তু আপনাকে কখনই বলবে না। এখন আপনি হয়ত বলতে পারেন
যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেন হুনায়নের
যুদ্ধে পরাজিত গোত্রপতিদের পরিবার পরিজন ও সহায়
সম্পত্তিকে গনীমতের মাল হিসাবে বন্টন করেছিলেন ?
আচ্ছা হুনায়নের যুদ্ধে যদি কাফেররা বিজয়ী হত
তাইলে কি তারা আমাদের কে কচুকাটা করত না ? অবশ্যই হুনায়নের
যুদ্ধে মুসলমানরা পরাজিত হলে এখন আর পৃথিবীতে একটি মুসলমানও
বেঁচে থাকত না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
হুনায়নের যুদ্ধে পরাজিত গোত্রপতিদের পরিবার পরিজন ও সহায়
সম্পত্তিকে গনীমতের মাল হিসাবে সাহাবীদের মাঝে বন্টন
করে আরবের অন্যান্য কাফের গোত্রদের কে একটি শক্ত
বার্তা দিয়েছিলেন যে ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ যুদ্ধ
করতে আসলে তাদের পরিনতিও এই হুনায়নের যুদ্ধে পরাজিত এই
গোত্রপতিদের ন্যায়ই হবে।
আপনি হয়ত এখন বলতে পারেন যে ঐ যুদ্ধবন্দী নারীদের
কে সাহাবীদের মাঝে বন্টন করে দেবার কারন কি ? কিন্তু
এটা কি সম্ভব যে ঐ মহিলারা খাবে দাবে কিন্তু তাদের জৈবিক
চাহিদা পূরন করতে পারবে না। আর ইসলমের পর্দা প্রথার
কারনে এটাও সম্ভব ছিল না যে কোন সাহাবীর তত্ত্ববধানে ঐ সব
যুদ্ধবন্দী নারীদের কে সার্বক্ষনিক ভাবে রাখা। কারন
এতে আরো ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি হয়ে যাবে। আর আপনারা একটু লক্ষ্য
করে দেখুন এই হুনাইনের যুদ্ধে যেইসব যুদ্ধবন্দী নারী মুসলমানদের হস্তগত
হয়েছিল তা কিন্তু এই হুনাইনের যুদ্ধ করতে আসা কাফেররাই
নিয়ে এসেছিল। হুনাইনের যুদ্ধের ময়দানে যদি এই মহিলারা তাদের
স্বামীদের সাথে না থেকে তাদের বাড়িতে বসে থাকত
তাইলে কিন্তু তারা কখনই মুসলমানদের হাতে বন্দী হত না। তাই
হুনাইনের যুদ্ধবন্দী নারীদের হস্তগত করারা ব্যাপারে সাহাবীদের
কোন ভূমিকা নেই। বনু কোরায়জা বা হুনাইনের যুদ্ধের
পরে যে নারী গুলি মুসলমানদের হাতে হস্তগত হয়েছিল এদের
মাঝে একটা নারীকেও ধর্ষন করা হয় নি। প্রত্যেক নারীকেই
সাহাবীদের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়েছিল।
সাহাবীরা পরে মুতা বিয়ের মাধ্যমে তাদের সাথে মিলিত
হয়েছিল। ইসলামের মুতা বিয়ের আইন তখনই নাযিল হয়েছিল। যদিও
পরবর্তীতে ইসলাম মুতা বিয়েকে হারাম ঘোষনা করেছে। আর
হুনাইনের যুদ্ধের পর তাদের কাফের স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের
কে যুদ্ধক্ষেত্রে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল। এখন সাহাবীদের
পক্ষে কি সম্ভব ঐ ৩০০/৪০০ মহিলাকে সারা জীবন দেখে শুনে রাখা ?
আর সেইসব ইহুদীরা ও কাফেররা যদি সাহাবীদের
সাথে যুদ্ধে জিতে যেত তাইলে কিন্তু তারাও সাহাবীদের
কে দাস দাসীতে রূপান্তরিত করত। যুদ্ধ কোন মিঠা জিনিস না।
সাহাবীরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই ঐ ২/৩ টা গোত্রের
লোকদের কে দাস দাসী বানিয়েছিলেন যেন কাফের ও
ইহুদীরা মুসলমানদের কে ভয় পায়। আর এই দাস
দাসী বানানো টা কিন্তু ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতের
বিধানমতেই হয়েছিল।
একপেশে চিন্তা ভাবনা না করে আপনারা please উভয় দিকের
ব্যাপারটাই চিন্তা করুন। তাইলেই আপনার সব প্রশ্নের উত্তর
খুজে পাবেন ভাই। আর কোন মুসলমান কে কখনই দাস
দাসী বানানো যায় না। আমরা হলাম মুসলমান
তাইলে পাকিস্তানীরা আমাদের কে কিভাবে দাস
দাসী বানাবে ? পাকিস্তানীরা ৭১ সালে আমাদের উপর
যা করেছিল তা ছিল সুস্পষ্ট জুলুম। আর এই জুলুমের প্রতিদান এখন
পাকিস্তানীরা নিজেরাই বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একজন
আরেকজন কে বোমা মেরে হত্যা করে পাচ্ছে।
যেই ২/১ টা ইহুদী গোত্রের নারীদের
কে মুসলমানরা যুদ্ধবন্দী বানিয়েছিল তারা কিন্তু তাদের ধর্মগ্রন্থ
তাওরাতের বিধানমতেই যুদ্ধবন্দী নারী হিসাবে মুসলমানদের
কাছে নীত হয়েছিলেন। প্রত্যেকটা যুদ্ধবন্দী নারীকে সাহাবীদের
মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়েছিল যেন তারা Public Property তে পরিনত
না হয়ে যায়। পরবর্তীতে সাহাবীরা তাদের কে বিয়ে করে তাদের
কে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। উম্মুল মুমেনীন জুহায়রিয়া,
রায়হানা ও সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহারা কিন্তু
প্রথমে যুদ্ধবন্দী নারী হিসাবেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসেছিলেন।
পরবর্তীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের কে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। তাই আজকে আমরা হযরত
জুহায়রিয়া, হযরত রায়হানা ও হযরত সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু
আনহাকে উম্মুল মুমেনীন বলি। কিন্তু মুক্তমনায় হযরত রায়হানা ও হযরত
সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের রক্ষিতা বলা হয়েছে, নাউযুবিল্লাহ। আর
মুসলমানরা একমাত্র বনু কুরায়জা এই ১ টি ইহুদী গোত্রের নারীদের
কেই যুদ্ধবন্দী বানিয়েছিল। এরপর আর কোন পরাজিত জাতিকেই
মুসলমানরা দাস দাসী বানাইনি।



অনেকেই বলে থাকেন যে আল কোরআনে কেন আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা দাস দাসী প্রথা হারাম ঘোষণা করে কোন আয়াত
নাযিল করল না। আচ্ছা আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যদি সেই সময়ে দাস
দাসী প্রথা হারাম ঘোষণা করে কোন আয়াত নাযিল করতেন
তাইলে তো কাফের ও ইহুদীরা আরো বেশী করে মুসলমানদের
সাথে যুদ্ধে জড়িত হত কারন তারা ভাল করেই জানত
যে আমরা যুদ্ধে পরাজিত হলেও মুসলমানরা আমাদের কে দাস
দাসী বানাবে না। মাদানী যুগে ২৭ টা যুদ্ধ হয়েছিল আর আল
কোরআনে দাস দাসী প্রথা হারাম ঘোষণা করে কোন আয়াত নাযিল
করলে তো সেই মাদানী যুগেই মুসলমানদের সাথে কাফেরদের ২৭০০
টা যুদ্ধ হত। তাই মুসলমানদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই সেই
সময়ে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা দাস দাসী প্রথা হারাম
ঘোষণা করে কোন আয়াত নাযিল করেন নি।
কোরআনে দাস-দাসী ও যুদ্ধবন্দীদের সাথে সদ্ব্যবহার
এবং তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়ার কথা বিভিন্নভাবে এবং বহুবার
বলা হয়েছে। এও বলা হয়েছে যে, এটি একটি অত্যন্ত মহৎ কাজ। দেখুন
কোরানের আয়াত--- ৯০:১২-১৩, ২:১৭৭, ৪৭:৪, ৯:৬০, ৫:৮৯, ৪:২৫, ৪:৯২,
২৪:৩৩, ৫৮:৩।
যুদ্ধবন্দী নারী এই বিষয়টা বুঝতে হলে আপনাদের কে মুসলমানদের
সাথে মদীনার ইহুদীদের আচরণগুলিও বুঝতে হবে। মুসলমানদের
সাথে মদীনার ইহুদীদের আচরণগুলি জানুন
নাস্তিকরা প্রায়ই আযল সংক্রান্ত যেই হাদীস গুলার
কথা বলে এগুলি সব বনু কোরাইজা, বনু মোস্তালাক ও হোনাইনের
যুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত। সেই যুগে দাসীদেরকে স্ত্রীর মত ব্যবহার
করা যেত। আর দাসীর সাথে আযল করা যাবে কিনা এই
নিয়ে সাহাবীরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে প্রশ্ন করেছেন। আরে ভাই আযল
এটা নিজ স্ত্রীর সাথেও করা জায়েজ আছে।আশা করি এই
আলোচনা করার পর যুদ্ধবন্দী নারী নিয়ে আর কোন বিভ্রান্তির
অবকাশ থাকবে না।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:০৮
163488
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : পারলে নিজ থেকে কিছু লেখেন। এরপর এসব কপিপেস্টের আবর্জনা মুছে দেয়া হবে। মনে থাকে যেন।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:২০
163647
বিন হারুন লিখেছেন : সত্য ইতিহাস সহ্য না হলে মুছে দিতে পারেন.
214862
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৮
শুভ্র আহমেদ লিখেছেন :
প্রথম আলো পত্রিকায় প্রতি বুধবার নারীমঞ্চ
নামে একটি পাতা বের হয়। বেশ কিছুদিন
আগে একবার প্রথম আলোর সেই নারীমঞ্চ
পাতায় হিন্দু মেয়েদের পারিবারির আইন
নিয়ে কিছু কথা লেখা হয়েছিল। আচ্ছা এখন
তো ২০১৪ সাল। আপনারা কি জানেন এই ২০১৪
সালেও
হিন্দু মেয়েরা তাদের বাপ মা স্বামীর কোন
সম্পত্তি পায় না। এই ২০১৪ সালেও হিন্দু
মেয়েদের বিয়েতে কোন
সাক্ষী থাকে না।
অগ্নিকে সাক্ষী কে রেখে হিন্দু মেয়েদের
বিয়ে হয়। "সাত পাঁকে বাধা" এই বাক্যটা হয়ত
আপনারা শুনেছেন। বিয়ের অনষ্ঠানে হিন্দু
ছেলে মেয়েরা অগ্নির পাশে ৭ বার
চক্রাকারে প্রদক্ষিন করে । ভারতীয়
বাংলা সিনেমায় বা হিন্দি সিনেমায়
হিন্দুদের বিয়ের অনুষ্ঠানে এই দৃশ্য
টা দেখানো হয়। ঐ হিন্দু মেয়েদের
বিয়েতে এই অগ্নিই থাকে সাক্ষী। ব্রাক্ষণ
পুরাহিত কিছু সংস্কৃত মন্ত্র পাঠ করে এই
বিয়ের অনুষ্ঠান টাকে গুরু গম্ভীর করে তুলে।
ব্যাস এতটুকুই। এই হচ্ছে হিন্দু মেয়েদের বিয়ের
রীতি। না আছে কোন সাক্ষী না আছে কোন
দেনমোহর কিন্তু পাত্রপক্ষের পণপ্রথা ঠিকই
পূরন করতে হয় মেয়ে পক্ষ কে। হিন্দু
ছেলেরা প্রায়ই হিন্দু মেয়েদের
কে বলে যে আমি যে তোমাকে বিয়ে করেছি এর
প্রমান কি ? এমনকি হিন্দু মেয়েদের
বিয়েতে কোন রেজিস্ট্রেশনও হয় না। হিন্দু
মেয়েরা বিয়েতে কোন দেনমোহর
পাওয়া তো দূরের কথা এমনকি হিন্দু
মেয়েদের স্বামী কে তালাক দিবার
ক্ষমতা পর্যন্ত নাই। হিন্দু ধর্মের আইন গ্রন্থ
মনুসংহিতায় লেখা আছে নিম্নবর্ণের হিন্দু
মেয়েদের
স্বামী মারা গেলে তারা সারা জীবন
বৈধব্য পালন করবে আর উচ্চ বর্ণের হিন্দু
মেয়েদের
স্বামী মারা গেলে তারা আগুনে ঝাপ
দিয়ে মরবে। কি সুন্দর এক System ! যেন
মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়াটাই একটা হিন্দু
মেয়ের সারাজীবনের পাপ !
আফসোস আজ পর্যন্ত কেউই এই হিন্দু মেয়েদের
দুঃখ দুর্দশা দূর করার জন্য কোন কিছু লিখল না।
হিন্দু পরিবারের যেইসব ঘরে ভাই বোন
থাকে সেখানে তো কখনই কোন হিন্দু
মেয়েরা তাদের বাপ মার কোন সম্পত্তি পায়
না। কিন্তু আপনারা কি জানেন যেইসব হিন্দু
ঘরে শুধুমাত্র মেয়েরা থাকে তারাও তাদের
বাপ মার কোন সম্পত্তি পায় না।
সেইক্ষত্রে তাদের বাপ মার সম্পত্তি পায় ঐ
হিন্দু মেয়েদের চাচাত মামাত ফুফাত
ভাইয়েরা। একটু চিন্তা করে দেখুন এই হিন্দু ধর্ম
মেয়েদের কে কতটুকু তুচ্ছ
মনে করে যে একটা মেয়ের কোন ভাই
না থাকলেও সেইক্ষেত্রেও ঐ হিন্দু
মেয়েটা তার বাপ মার কোন সম্পত্তি পায়
না। আপনি হয়ত এখন বলবেন কেন বাপ তার
মেয়েদের কে উইল
করে সম্পত্তি দিয়ে দিবে। কিন্তু
আপনি কি জানেন উনি মারা যাবার পরে এই
মুখাগ্নি কে করবে এই ভয়ে কোন হিন্দু বাপই
সাহস পায় না তার মেয়েদের
কে সম্পত্তি লিখে দিতে।
মুখাগ্নি বলতে বুঝায় একটা হিন্দু যখন
মারা যায় তখন মরার
পরে তো তাকে আগুনে পুড়ায় তার
জ্ঞাতিগোষ্ঠীরা। হিন্দু ব্যক্তির
শরীরে প্রথম আগুন টা লাগাতে হয় তার মুখে।
এই মুখে আগুনটা লাগানোকেই বলে মুখাগ্নি।
আর এই মুখাগ্নি করতে পারবে শুধু ঐ ব্যক্তির
ছেলে বা ভাতিজা ভাগনেরা। অন্য কেউ
মুখাগ্নি করতে পারবে না। আমি যদি আমার
ভাতিজা ভাগনে কে সম্পত্তি লিখে না দেই
তাইলে মরার পর আমার এই
মুখাগ্নি কে করবে শুধু এই টেনশনের চাপেই
কোন হিন্দু ব্যক্তিই তার মেয়েদের কে তার
কোন সম্পত্তি লিখে দিতে চায় না। অর্থাৎ
প্রত্যেক হিন্দু পুরুষই ভয় পায় যে আমি যদি আমার
মেয়েদের কে আমার কোন
সম্পত্তি লিখে দেই তাইলে আমার মরার
পরে আমার ছেলে বা আমার
ভাতিজা ভাগনে রা আমার মুখে আগুন
লাগাবে না। দেখুন কি হাস্যকর কারবার
মরার পর উনার মুখে কে আগুন লাগাবে শুধু এই
চিন্তার কারনেই উনি উনার মেয়েদের
কে উনার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করছেন।
১০
220725
১২ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১১
স্বাধীন ভাষী লিখেছেন : নামকা ওয়াস্তে যারা আল-কোরআনের ব্যাখ্যা প্রদান করে তাদের চেয়ে মুর্খ আর কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না। যত পাগল সব অনলাইনে আসছে...

কেন নারীদের নিয়ে মজা করতে খুব ভালো লাগে? তাও আবার সেই মজা করাটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে রিতিমত বানোয়াট ব্যাখ্যা প্রদান.! ছি.! কত নীচ আমরা।

অত ইচ্ছা হয়, তবে নিজের ছোট বোনের সম্ভ্রম নিয়ে এমন কথা লিখতে পার না..? নিজের বোনের সাথে তো .....। ছি..! বলতেও ঘৃণা লাগে। এই সমস্ত নিকৃষ্টদের মানসিকতা কত নিকৃষ্ট...!
১৩ মে ২০১৪ রাত ০১:২০
168390
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : কোরাণের ব্যাখ্যা আপনি একাই বুঝেন নাকি?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File