কাতার সংকটের নেপথ্যে

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ০৯ জুন, ২০১৭, ০৯:২৯:৫৫ রাত

হঠাৎ করে কাতারকে নিয়ে উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতি। তবে এখানে রাজনীতির প্যাচ বেশি একটা জটিল না।

মধ্যপ্রাচ্যে দেশভেদে একনায়কতন্ত্র ও রাজতন্ত্র চলছে গত ৬০ থেকে ৮৫ বছর ধরে। তারা সবাই জানে আজ অথবা কাল নাগরিক আন্দোলন হবেই এবং তাদের বিদায় নিতে হবে। সউদি, মিশর, বাহারাইনের নীতি হল, পেশি শক্তি দিয়ে জনগনকে দমিয়ে রেখে যতদিন সম্ভব ক্ষমতা ধরে রাখা যায়। কাতার সেখানে একটা দূরদর্শী নীতি গ্রহন করেছে।

কাতারের জনসংখ্যা মাত্র ৩-৪ লক্ষ এবং সবাই অনেক ধনী। এখানে শিয়া-সুন্নি সমস্যা নেই। কাতারের রাজ পরিবার অন্য আরব শাসকের তুলনায় অনেক কম সেচ্ছাচারি। তারা এমন নীতি গ্রহন করেছে যেন তাদের বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলন না হয় অথবা হলেও বৃটেন বা জাপানের রাজ পরিবারের মত তাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকে।

তাই তারা কাতারে একদিকে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাল ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা খুলছে, আবার শেইখ ইউসুফ আল কারজাবি, ড. তারিখ রামাদানের মত ইসলামি স্কলারদের গবেষণা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর সুযোগ দিয়েছে। অর্থাৎ থিওলজি এবং বিজ্ঞান; জ্ঞানের দুইটি শাখাতেই কাতার সমৃদ্ধ হচ্ছে।

কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করবে আবার ইসলামি সামার স্কুলও রয়েছে, সারা পৃথিবী থেকে তরুনেরা সেখানে যাচ্ছে। অর্থাৎ, এখানেও দুইদিকেই তারা একটা ভারসাম্য রেখেছে।

এরপরেও নাগরিকরা যেন ক্ষুদ্ধ না হয় এবং পুরা মুসলিম বিশ্বে তাদের সম্মান তৈরি হয় সেটা নিশ্চিত করতে তারা আরবের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড এবং হামাসের সাথে সম্পর্ক ভাল রেখেছে। রোহিঙ্গাদেরও সাহায্য করে প্রচুর। বিশেষজ্ঞদের মতে হামাস এবং ব্রাদারহুডের বাজেটের বড় অংশ আসে কাতার থেকে।

এছাড়া তরুন মুসলিমদের মাঝে জনপ্রিয় তুরস্কের ক্যারিশমাটিক নেতা এরদোগান এবং গনতন্ত্রী ইরানের সাথেও কাতারের সম্পর্ক ভাল।

কাতার আল জাজিরা চালু করেছে। সবগুলো জরিপের মতে, আল জাজিরা মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেল।

এর ফলে যেটা হচ্ছে, পুঁচকে কাতার যে ছিল জায়ান্ট সউদি আরবের তুচ্ছ তল্পিবাহক সেটা তার বলয়ের বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন সউদি বিরোধী অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক নীতি গ্রহণকারী দেশে পরিণত হয়েছে।

মুসলিম বিশ্বে একটা মর্যাদার আসন পেতে যাচ্ছে যেটা সউদি নিজের সম্পত্তি মনে করে।

শেইখ কারজাবি, ড. রামাদানের প্রভাব বৃদ্ধি এবং ব্রাদারহুড, হামাসের শক্তি বৃদ্ধির অর্থ নিশ্চিত ভাবে সউদি গংদের পতন।

তাই কাতারকে থামাতে এই উদ্যোগ...

সউদি শর্ত দিয়েছে ব্রাদারহুড, হামাস এবং শেইখ কারজাবির সাথে সম্পর্ক ছেদ এবং আল জাজিরা বন্ধ করলে সউদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।

মানে, সউদি গংদের দিন বেশি নেই....

অপেক্ষা করুন!

বিষয়: বিবিধ

১১৪০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383318
০৯ জুন ২০১৭ রাত ১১:৫২
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
ভালো লাগলো , অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File