রিপ্লাই টু হুমায়ুন আজাদের আমার অবিশ্বাস

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ০৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:৫৫:০৭ রাত

হুমায়ুন আজাদ ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবে কালজয়ী। তার কবিতাগুলা অসাধারন। তার উপন্যাসগুলোও সমকালীন বস্তাপচা উপন্যাসের ভীরে অনন্য। তবে তার থিওলজির সমালোচনা করে লেখাগুলো বেশ সমস্যাপূর্ণ। আমার অবিশ্বাস বইটা পড়লাম কয়েকদিন আগে। এই বইয়ে কিছু লিখেছেন যা বেশ বিভ্রান্তিকর, বেশকিছু ভুল তথ্য দিয়েছেন, এবং কিছু ঐতিহাসিক সত্যকে অবলীলায় এড়িয়ে গেছেন। তবে সবচেয়ে বিপদজনক ব্যাপার হল এই বইটা তুমুল জনপ্রিয়। তাই মনে হল এটার একটা উত্তর দেওয়া দরকার। পুরো বইয়ের লিখতে আমার আরও একটি বই লিখতে হবে। এখন সে অবস্থা তৈরি হয় নি। যদি কখনো হয় লেখার চেষ্টা করব। আমি এই লেখায় তার ধর্ম নিয়ে লেখা পরিচ্ছেদের উত্তর দিচ্ছি, প্রথমে বইয়ের স্ক্রিন সট দিচ্ছি, এরপর তার উপর কমেন্টারি লিখছি। এই পরিচ্ছেদ তিনি শুরুই করেছেন ধর্মকে আক্রমন করে



এরপর তিনি বলেছেন ধর্ম মানুষ সম্পর্কে খুবই নিম্ন ধারনা পোষণ করে, ধার্মিক মানুষ অমানবিক, লোভী, অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করে না এবং ইতিহাসজুরে তারা রক্তপাত করেছে। [৭৭]



সবগুলো পয়েন্টেরই উত্তর দিচ্ছি। এক- ইসলামি থিওলজিতে মানুষকে বলা হয়েছে আশরাফুল মাখলুকাত বা ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এছাড়া আল্লাহ কুরআনের ৯৫ নম্বর সূরার ৪ নম্বর আয়াতে বলেছেন,

“আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম অবয়বে”

অন্যদিকে আজাদ সাহেব নিজে এই বইয়েরই ষষ্ঠ পরিচ্ছেদে ১০৪ পেজে বলেছেন, “মানুষ একটা তুচ্ছ প্রাণী”।

দুই- ধর্ম মানুষকে লোভী এবং অমানবিক করে।

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে মানবিক শাসন ছিল ৬২৩ সাল থেকে ৬৫৩ পর্যন্ত এরাবিয়ান পেনিনস্যুলাতে। খোলাফায়ে রাশেদার শাসন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নমুনা পাওয়া যাবে না পৃথিবীর ১/৩ অংশের সম্রাট মাএ একজন দেহরক্ষী আর একটা উট নিয়ে কয়েক হাজার মাইল রাস্তা যাচ্ছে। তার মধ্যে আবার অর্ধেক রাস্তা দেহরক্ষী উটের পিঠে গেছে অর্ধেক সম্রাট। এমনটা আমাদের চিন্তা করাও অসম্ভব। এমন কোন উদাহারন আর নেই। আমাদের দেশের সহ বেশিরভাগ দেশের সংবিধানে এমন বিধান আছে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না। ৬৪০ এর দশকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল খেলাফাত। সেই খলিফার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং কোর্ট খলিফার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। চিন্তা করেন তো রশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে মামলা বা ইউএসে ওবামার বিরুদ্ধে। বর্তমান রাশা বা ইউএসের চেয়ে খেলাফত অনেক বড় এবং ক্ষমতাবান ছিল।

তিন, অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করে নাঃ

এর উত্তর আল্লাহ কুরআনের ৬ নম্বর সূরার ১০৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন,

“অন্য ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের উপাসনা করে সেসব দেব-দেবীকে তোমরা গালি দিও না। তাহলে তারাও সীমালংঘন করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দেবে”।

জেরুজালেম নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে এবং সেটা এখনো চলমান। ইতিহাসে একমাত্র মুসলিম শাসন আমলেই সবধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে জেরুজালেমে ধর্ম পালন করতে পারতো। এছাড়া দুনিয়ার সবচেয়ে অদ্ভুত ধর্ম বিশ্বাসের জন্ম ইসলামি খেলাফতেই, তা টিকে ছিলো এবং এখনও মুসলিম দেশগুলোতেই আছে যেমন দ্রুজি, আলওয়াতি, ইয়াজিদি ইত্যাদি। খৃষ্টান ধর্মের লুপ্ত প্রায় সম্প্রদায় গুলোও মুসলিম দেশগুলোতেই বাস করে যেমন সিরিয়াক খৃষ্টান, আর্মেনিয়ান অ্যাসট্রোল, ইস্ট্যান ক্যাথোলিক ইত্যাদি। অর্থাৎ ইসলাম অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করে না, এটা একটা মিথ্যা অভিযোগ।

পয়েন্ট চার- ইতিহাসজুরে ধর্ম রক্তপাত করেছে।

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ হত্যা করেছে যে ব্যক্তি সে হল হিটলার। হিটলার প্রায় ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করে। এরপর জোসেফ স্টালিন। স্টালিন ক্রিমিয়া এবং মধ্যএশিয়ার কয়েক মিলিয়ন মানুষ হত্যা করে সোভিয়েতের সংহতি রক্ষার নামে। এছাড়া ইতালির মুসোলিনি, চীনের মাও সেতুং, হালাকু খাঁ, চেঙ্গিস খাঁ, সম্রাট অশোক [বুদ্ধ ধর্ম গ্রহনের পূর্বে], বুশসহ আমেরিকার বিভিন্ন প্রেসিডেন্ট। এরা কেউই ধর্মপ্রান ব্যক্তি ছিল না। আর যুদ্ধের কথা ধরলে, পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে। প্রায় সারে আট কোটি মানুষ মারা যায় এই যুদ্ধে। এরপর প্রথম মহাযুদ্ধ ১.৬ কোটি। এই দুই মহাযুদ্ধের সাথে ধর্মের দূরতম সম্পর্কও নেই। এরপর আমেরিকা-ভিয়েতনাম যুদ্ধ, আমেরিকার ইরাক হামলা, মোঙ্গলীয়দের ইসলামি খেলাফতে হামলা, আমেরিকার আফগানিস্তান হামলা, পাকিস্তানের বাংলাদেশ হামলা, কলিঙ্গের যুদ্ধ, দুই কোরিয়ার যুদ্ধ ইত্যাদি। এই যুদ্ধগুলোর কোনটির সাথে ধর্মের কোন রকম যোগ নেই। আমি সত্যকে অস্বীকার করছি না, ধর্ম নিয়ে মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের মধ্যে ক্রুসেড হয়েছে দুই বার। ১০৯৯ সালে প্রথম ক্রুসেডে খ্রিষ্টানরা জেরুজালেম দখল করে মুসলিম এবং ইহুদিদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। প্রায় লক্ষাধিক মুসলিমকে তারা হত্যা করে। এর ৮৮ বছর পরে ১১৮৭ সালে সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি দ্বিতীয় ক্রুসেডে জেরুজালেম মুক্ত করে। সালাহ উদ্দিন প্রথম ক্রুসেডের প্রতিশোধ নেননি বা কোন রক্তপাত করেননি। দুই ক্রুসেড মিলিয়ে কয়েক লক্ষ মারা গেছে। এটা মহাযুদ্ধ দূরে থাক আফগান বা ইরাক যুদ্ধের কাছেই তো শিশুমাত্র।

তবে এখানে আপনি বলতে পারেন, আসলে ড. আজাদ বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার কথা বলেছেন। এটা ঠিক না। তার কথার ধরন সার্বজনীন। আর একটা বিষয় বাংলাদেশে নাস্তিকদের রাজনৈতিক শক্তি বা জনসমর্থন কতটুকু? বলতে গেলে নেই। তারপরও ব্লগে, এমনকি ফেসবুকে পর্যন্ত ইসলাম বা মুহাম্মাদ সাঃ কে নিয়ে যে জঘন্য ভাষায় অশ্লীল পর্ণ গল্প লেখে...। যদি রাজনৈতিক শক্তি আসে তাহলে স্ট্যালিন যা করেছিলো, এরাও তাই করবে এটা হলফ করে বলা যায়।

এরপর তিনি প্রশ্ন তুলেছেন পৃথিবীতে এত ধর্ম কেন? [৭৮]



এটা একটা যোক্তিক প্রশ্ন। ইসলামি থিওলজি এর উত্তর দিয়েছে ,

'নিশ্চয় আল্লাহর কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম আল্লাহের কাছে নিজের ইচ্ছাকে সমর্পণ করা ' (সূরা আলে-ইমরান-১৯)

“আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একেকজন রাসূল রয়েছে” (সুরা ইউনুস ৪৭)

বহুধর্মের ব্যাপারে ইসলামের মত হল মানুষ রাসূলদের শিক্ষা কালক্রমে ভুলে গেছে এবং ধর্মে বিকৃতি ঘটিয়ে নতুন ধর্ম প্রচলন করেছে। এর সাপেক্ষে প্রমান সামনেই আসছে।

সামনের অংশে,

তিনি বলতে চেয়েছেন মানুষের আদিম বিশ্বাস অ্যানিমিজম বা সর্বাত্নাবাদ। অ্যানিমিজম থেকে ফেটিজম বা যাদুবাদ। ফেটিজম থেকে টোটেমিজম বা উৎসবস্তুবাদ। এর থেকে এসেছে ধর্ম, [৮১]



খুবই হাস্যকর ভাবে এর সাপেক্ষে রেফারেন্স দিয়ে বলেছেন “পুরাণে”অ্যানিমিজম, ফেটিজম, টোটেমিজমের অনেক নমুনা পাওয়া যায়।



এছাড়া প্রাচীন মিসরীয়রা অ্যানিমিজমি ছিলো বলে মত দেন। আপনাকে ড. হুমায়ুন আজাদ হতে হবে না যেকোন সাধারন হিন্দুকে জিজ্ঞেস করেন সবাই জানে পুরাণের চেয়ে বেদ অনেক বেশি পুরানো। মার্কিন সংস্কৃত বিশেসজ্ঞ Wendy Doniger বলেছেন পুরাণ লেখা হয় ২০০ সাল থেকে ১০০ সাল পর্যন্ত১। থিওলজিয়ান Whitney Bauman এর মতে বেদে লেখা হয় ১৭০০ খ্রিষ্টপূর্বে২। হিন্দু থিওলজিয়ানরা দাবি করে বা সবাই মোটামুটি মেনে নেয় বেদের বয়স আসলে আরও অনেক বেশি। বলাবাহুল্য বেদ হল ধর্মীয় বই। তিনি যেহেতু পুরাণের উদাহারন টেনেছেন, তাহলে তাকে হিব্রু মিথলজিও বিবেচনায় রাখতে হবে। হিব্রু মিথলজি কয়েক হাজার বছর পুরানো। মিশরের ফারাওদের আগের ঘটনাও হিব্রু মিথলজি বর্ণনা করেছে। অর্থাৎ তিনি ফেটিজম বা টোটেমিজম ধর্মের আগে এসেছে বলে তিনি যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা ধোপে টেকে না।

এরপর তিনি কিভাবে ধর্মের উদ্ভব হয়েছে তা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি মত দিয়েছেন আগে ছিল পলিথিয়েজম বা বহুঈশ্বরবাদ, [৮২]



এরপর পলিথেয়েজম থেকে মনোথিয়েজম বা একঈশ্বরবাদের উদ্ভব, [৮৪]



আজাদ সাহেবের এই পয়েন্টটা বেশ সবল স্বীকার করতে হবে। বর্তমানে প্রচলিত ধর্মের মধ্যে হিন্দুইজম সবচেয়ে পুরাতন। এবং এটি পলিথিয়েস্টিক ধর্ম। অন্যদিকে মনোথিয়েস্টিক ধর্ম ইসলাম, খৃষ্টিয়ানিটি এবং জুডাইজম হিন্দুইজমের তুলনায় নতুন। ভসা ভাসা দৃষ্টিতে দেখলে এটাকে খুবই সলিড পয়েন্ট মনে হবে। তিনি ঋগবেদ কোট করেন, [৮৩]



এখানে এসে আমি ঝামেলায় পড়ে গেছি। কারন তিনি ভুল তথ্য দিয়েছেন এর উত্তর দেবো নাকি পলিথিয়েজম/মনোথিয়েজম এর ব্যাখ্যা দেবো। আচ্ছা আগে একঈশ্বরবাদের ব্যাপারে আসি। যদি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে দেখবেন হুমায়ুন আজাদ যা দাবি করেছে সত্যটা আসলে তার ঠিক উল্টা। বহুঈশ্বরবাদ থেকে একঈশ্বরবাদ আসেনি বরং একঈশ্বরবাদ থেকে বহুঈশ্বরবাদ এসেছে। হিন্দু থিওলজির প্রভাবশালী বইগুলো যদি আমরা অধ্যায়ন করি তাহলে দেখবো হিন্দুইজম আদিতে আসলে একঈশ্বরবাদী ছিল। যেমন, ছান্দোগিয়া উপানিষদের অধ্যায় ৬, শ্লোক ২ এ ,

"এক্কাম এবাদিতিয়াম" অর্থ- ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়।

শ্বেতাপত্র উপানিষদ, অধ্যায় ৬, শ্লোক ৯,

“না চাস ইয়া কাসচিজ জানিতা না কাধিপাহ” অর্থ ঈশ্বরের কোন বাবা-মা নেই, তার কোন প্রভু নেই।

যযুবেদ, অধ্যায় ৩২, শ্লোক ৩

“না তাস্তি প্রাতিমা আস্তি” অর্থ মহান ঈশ্বরের কোন প্রতিমূতি নেই।

ভাগবাত গীতা, অধ্যায় ৭ অনুচ্ছেদ ২০

''সেসব লোক যাদের বিচার বুদ্ধি কেড়ে নিয়েছে জাগতিক আকাঙ্খা, তারাই মূর্তি পূজা করে।''

এমন আরও রেফারেন্স দেওয়া যায়। হিন্দুইজমের সবচেয়ে প্রচিন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হল ঋগবেদ। যার কোটেশন ড আজাদ দিয়েছেন কিন্তু রেফারেন্স দেন নাই। ঋগবেদের কোথাও পলিথিয়েজম বা বহুঈশ্বরবাদের কথা নেই। ঋগবেদে বলা হয়েছে ঈশ্বরের বিভিন্ন গুনের কথা। ঋগবেদ ৩৩ টি আলাদা ঈশ্বরের কথা বলা হয়নি, ৩৩ টি গুনবাচক নামের কথা বলা হয়েছে। ৩৩ কোটি দেবতার তো প্রশ্নই উঠে না।

ঋগবেদ গ্রন্থ ১, পরিচ্ছেদ ১৬৪, অনুচ্ছেদ ৪৬

“সত্য একটাই। ঈশ্বর একজনই। তবে জ্ঞানীরা ঈশ্বরকে ডেকে থাকেন বিভিন্ন নামে”

ঋগবেদ গ্রন্থ ২, এক নং পরিচ্ছেদে ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “ঈশ্বর হল বিষ্ণু” বিষ্ণু অর্থ পালনকর্তা।

অধিকাংশ নামই ঋগবেদ গ্রন্থ ২, এক নং পরিচ্ছেদে রয়েছে। যেমন ২ নম্বর অনুচ্ছেদের ৩ নম্বর শ্লোকে বলা আছে “ঈশ্বর হল ব্রাহ্মা” ব্রাহ্মা অর্থ সৃষ্টিকর্তা।

ঋগবেদ গ্রন্থ ৮, ১ নং পরিচ্ছেদের ১ নম্বর অনুচ্ছেদ,

“Ma chidanyadvi shansata” অর্থ হে বন্ধু শুধুমাত্র তারই উপাসনা করো।

ঋগবেদর ব্রাহ্মসূত্র

"Ekam Brahm, dvitiya naste neh na naste kinchan" অর্থ- ঈশ্বর একজনই দ্বিতীয় কেউ নেই, কেউ নেই, কেউ নেই, আর কখনো ছিল না।

যযুবেদ, অধ্যায় ৪০, শ্লোক ৯

“Andhatma pravishanti ye asambhuti mupaste” “তারা অন্ধকারে যাচ্ছে যারা আসাম্ভুতি [প্রাকৃতিক বস্তু যেমন পানি,আগুন, সাপ ইত্যাদির] উপাসনা করে”

এখানে যযুবেদই চমৎকার ভাবে বহুঈশ্বরবাদের সূচনা কিভাবে হয় বলে দিচ্ছে।

ড. আজাদ একটা খোঁচা দিয়ে বলেছেন, [৮৪]



আসলে এখানেও মূল ঘটনা উল্টা, “মানুষ কখনোই সম্পূর্ণরুপে বহুঈশ্বরবাদী হয়ে উঠেনি”। এর প্রমান বহুঈশ্বরবাদী হিন্দু ধর্মের অনুসারি কোন জ্ঞানী হিন্দুকে প্রশ্ন করুন ঈশ্বর কয়জন? উত্তর দেবে একজন। উনিশ শতকের প্রথমদিকে দেব্রেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামমোহন রায় প্রমুখ হিন্দুইজমের মধ্যে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। এটাছিল একঈশ্বরবাদী ধরনা। যাইহোক ড. আজাদ খোঁচাটা দিয়েছেন আসলে খৃষ্টিয়ানিটির দিকে যদিও স্পট করে বলেন নাই। কারন খৃষ্টিয়ানিটিতে ট্রিনিটির ধারনা আছে। অর্থাৎ ঈশ্বরের ৩ রুপ মানে প্রচ্ছন্য ভাবে পলিথিয়েজম। এখানেও বলা দরকার ট্রিনিটির ধারনা বাইবেলের কোথাও নেই। ট্রিনিটি শব্দটা পর্যন্ত বাইবেলে পাওয়া যাবে না। এমনকি সেন্ট পলও ট্রিনিটি নিয়ে কিছু বলেন নাই। এই ট্রিনিটি ধরনাটি দ্বিতিয় শতাব্দির শেষের দশকে চালু হয়। সেন্ট আগস্টিন এবং সেন্ট টেরটোলিয়ান ট্রিনিটি ধারনাটির প্রতিষ্ঠার পেছনে সবচেয়ে প্রভাবশালি ব্যক্তিত্ব হিসেবে ধরা হয়৩। অর্থাৎ সেই একঈশ্বরবাদ থেকে বহুঈশ্বরবাদ।

অর্থাৎ তার দাবি বহুঈশ্বরবাদ থেকে একঈশ্বরবাদ এসেছে তা অসত্য, যুক্তিহীন এবং কাল্পনিক।

#চলবে

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379430
০৪ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ০৫:৩২
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো /
379453
০৪ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৭
তট রেখা লিখেছেন : সাধু উদ্যোগ। আল্লাহ আপনার প্রচেষ্টার সফলতা দান করুন। আমীন।
379460
০৪ নভেম্বর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:০৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ। হুমায়ুন আযাদ এর কবিতায় আপনি পছন্দ করার কি পেয়েছেন সেটা জানতে ইচ্ছা ছিল!! নিজেকে শ্রেষ্ঠ কবি দাবি করলেও তার কবিতা ভাষা বা ভাবে কোনভাবেই উন্নত নয়। এই বইটি মুলত বার্টান্ড রাসেল এর উদ্দৃষ্ট বইটির অনুবাদ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File