স্বচিত্রি (Selfi) তোলার সময় ঠোট কেন বাঁকা ?
লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ১৬ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:২৭:০৮ সকাল
স্বচিত্রি (Selfi) তোলা-টা আমাদের সংস্কৃতির অংশ না। এটি একটি সম্পূর্ণ পশ্চিমা সংস্কৃতির অংশ। তবে বিদেশি সংস্কৃতি হলেই তা গ্রহন করা যাবে না- এমন মত মোটেও যোক্তিক না। আমাদের গর্বের অনেক কিছুই আমরা পশ্চিম থেকে গ্রহণ করেছি, যেমন বই মেলা। এছাড়া পোশাক যেমন পাঞ্জাবি, জামা, ক্যাপ এগুলো কোনটিই আমাদের সংস্কৃতির অংশ না। এগুলো গ্রহনে আমাদের কোন ক্ষতি হয়নি বা সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যায় নি। তবে গ্রহণের পূর্বে আমাদের ভাবার্থ বুঝে ইতিবাচক গুলো গ্রহণ করা জরুরি। না জেনে না বুঝে অন্ধ অনুকরণ করার অর্থ ব্যক্তিত্বহিনতা, জ্ঞানগত এবং মানসিক দৈন্যতা। সবকিছুর-ই একটি অর্থ আছে।
যেমন টিপ পরা। এই টিপ পরার ব্যাপারে দুইটি মিথ চালু আছে।
এক- ধর্মিয়, দুই-ঐতিহাসিক।
ধর্মিয়টি হল- নবি ইব্রাহিম আ. কে হত্যার জন্য নমরুদ একটি বিশাল অগ্নিকুণ্ড নির্মাণ করে। সেটি এত বড় ও ভয়াবহ উত্তপ্ত ছিল যে, তাকে সেখানে নিয়ে নিক্ষেপ করা সম্ভব হচ্ছিলো না। তখন তারা নাগরদোলা বানালো যার সাহায্যে দূর থেকেই ইব্রাহিম আ. কে অগ্নিকুণ্ডের ভিতরে নিক্ষেপ করা যাবে। কিন্তু ফেরেশতারা ভর করে থাকায় নাগরদোলা কাজ করছিল না। শয়তান এসে নমরুদকে বুদ্ধি দিল যে, কয়েকজন সেক্স ওয়ার্কারকে এনে যদি যন্ত্রটিকে স্পর্শ করানো যায় তাহলে ফেরেশতারা চলে যাবে এবং সেটা কাজ করবে। নমরুদ তাই করল এবং দেখা গেল যে সেটি কাজ করছে। তখন নমরুদ ওই সেক্স ওয়ার্কারদের কপালে চিহ্ন দিয়ে রাখল এই ভেবে যে, এদেরকে পরে দরকার হতে পারে। সেই থেকে কপালে টিপ পরার প্রচলন হল।
যদিও এই মিথের কোন ঐতিহাসিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমান নেই।
ইতিহাসে যা পাওয়া যায় সেটা হল- প্রাচিন মিশরে সেক্স ওয়ার্কারদেরকে আমাদের বর্তমান সমাজের মতই বাঁকা চোখে দেখা হত। বাধ্যতামূলক ভাবে তাদের টিপ পরতে হতো।
প্রাচিন ভারতে বিবাহিত মেয়েদের বাধ্যতামূলক ভাবে কিছু চিহ্ন গ্রহণ করতে হতো। তার মধ্যে একটি টিপ।
সেক্স ওয়ার্কার পেশা নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করবো না। কারন এক কথায় এটা নিয়ে কিছু বলা বোকামি। তবে পেশাকে নিচু করে দেখে তাদের জন্য বাধ্যতামূলক সিল বানানো বা বিবাহিত এজন্য সবসময় মাথায় একটি ট্যাটু লাগাতে হবে- এগুলো অত্যান্ত নিচু মানসিকতার চিন্তা। তাই মেয়েদের তুমুল জনপ্রিয় এই প্রথাটি আমার মোটেও পছন্দ হয় না।
এবার আসি আমার মূল বিষয় সেলফি তোলার সময় ঠোঁট বাঁকা করার প্রসঙ্গে।
পুঁজিপতিরা তাদের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অনেক তত্ত্ব এনেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হল সেক্স মার্কেটিং। বর্তমান সমাজকে তারা বলেন, হাইপার সেক্সুয়ালাইজড সোসাইটি। নাটক, সিনেমাসহ সবধরনের বিজ্ঞাপনচিএে তারা সেক্সের যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। এই সেক্স মার্কেটাইনার-রা ‘সেক্সি’র কিছু গুনাগুন বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে একটি হল পাতলা ঠোঁট। সেক্সি হতে হলে ঠোঁট হতে হবে পাতলা বা হাঁসের ঠোঁটের মত (check bones)। এজন্য ইদানিং হলিউড/ বলিউডের সব নায়িকা যাদের ঠোঁট একটু মোটা ছিল তারা সার্জারি করে ঠোঁট পাতলা করে হাঁসের মত করে নিয়েছেন। হলিউড মাতানো নায়িকা আঞ্জেলিনা জোলি থেকে শুরু করে বলিউডের আনুশকা শর্মা সবাই আছে এই দলে। অভিনয়ের বিভিন্ন সময় ঠোঁট বাঁকা করে হাঁসের ঠোঁটের মত করেন, দর্শকদের মধ্যে সেক্স আপিল তৈরি করতে। দর্শকেদের নিজেদের সেক্সি দেখাতে।
এখন মেয়েদের যদি স্বচিত্রি তোলার সময় ঠোঁট হাঁসের মত করেন সেটা কোন সমস্যা না। তবে কার মাঝে সেক্স আপিল তৈরি করার জন্য করেন সেটই ব্যাপার। সামাজিক মাধ্যমে অন্যকে দেখানো আমি সেক্সি- এটা কেমন হল? আমার মাথা কাজ করছে না...
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তদ্রুপ সে আমলে স্বয়ংক্রিয় ম্যাশিনে প্রস্তুত কার্বোনেটেড বিয়ার(Beer) ও ছিল নাল। সুতরাং বিয়ার পান করা ছবি তোলার মতই হালাল।
তদ্রুপ সে আমলে স্বয়ংক্রিয় ম্যাশিনে প্রস্তুত কার্বোনেটেড বিয়ার(Beer) ও ছিল না। সুতরাং বিয়ার পান করা ছবি তোলার মতই হালাল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন