ইসলামকে প্রশ্ন করার আগে আপনার জ্ঞানকে প্রশ্ন করুন
লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ১৪ আগস্ট, ২০১৫, ১২:৫৫:৫৩ রাত
ইসলামের বা মুহাম্মাদ সাঃ এর বিরুদ্ধে একটি প্রধান অভিযোগ হযরত মুহাম্মাদ সা এর সাথে হযরত আয়েশা এর বিয়ে। মুহাম্মাদ সাঃ এর চরিত্র কালিমা লেপন চেষ্টা করা হয় এটা বলে যে তিনি তার চেয়ে অনেক ছোট একজনকে বিবাহ করেছেন। আসুন এটা নিয়ে একটু বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।
হযরত আয়েশা এর বয়স নিয়ে দুই ধরণের মত পাওয়া যায়। এক- তার বয়স ছিল ১৫ বা ১৭। দুই- অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায় তার বয়স ছিল ৯ বছর।
আমি বিশ্বাস করি হযরত আয়েশা এর বয়স ছিল ১৫ বা ১৭ বছর। কারন বিবাহের ব্যাপারে মহানবী সা বেশ কিছু হাদিস আছে যে তিনি বলেছেন, বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ে দুইজনেরই সম্মতি নিতে হবে। মদিনাতে একবার এমনটা হয় মেয়ের অসম্মতিতে বিয়ে হয়েছে, সেই মেয়েটি মহানবী সা এর কাছে গিয়ে ব্যাপারটি জানালো তখন মহানবী সা বললেন তুমি চাইলে বিয়েটি রাখতে পারো বা ভেঙ্গে ফেলতে পারো। এই ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় হযরত আয়েশা এর বয়স ছিল ১৫ বা ১৭ বছর।
তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নেই হযরত আয়েশা এর বয়স ছিল ৯ বছর। তারপরও বিশ্লেষণ রয়েছে।
বিবাহের বয়স ব্যাপারটি পুরাটাই নির্ভর করে সময় এবং সমাজ ব্যবস্থার উপর। ১৫০০ বছর আগের কথা ভুলে যান। আজ থেকে ৮০-১০০ বছর আগে আমাদের দেশে বিয়ের বয়স কত ছিল ভাবুন। আমাদের দাদি/নানিরা কত বছর বয়েসে বিয়ে হয়েছে? আমার দাদির (আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস এ রাখুন) বিয়ে হয়েছিল ১০-১২ বছর বয়েসে। এখন আমাদের দেশে বিয়ের বয়স ধরা হয় ১৮-২০। অ্যামেরিকাতে ১৪-১৬। ইউরোপের কিছু দেশে ১৮-২২। এখন আমরা আমাদের বর্তমান অবস্থা দেখে এই প্রশ্ন করছি হযরত মুহাম্মাদ সা এর সাথে হযরত আয়েশা এর বিয়ের ব্যাপারে। দের হাজার বছর আগে তৎকালীন সমাজের অবস্থা কেমন ছিল। আবার ১০ হাজার বছর পরে কেমন হতে পারে? কুরআন বা ইসলাম এসেছে কিয়ামত এর পূর্ব পর্যন্ত। তাই আমাদের বর্তমান সময়ের একটা সমাজের জ্ঞান দিয়ে ইসলাম এর দিকে আঙ্গুল তোলাটা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই না। আরও একটি ব্যাপার মহানবী সা এর সমালোচনা করার জন্য বা খুঁত ধরার জন্য সে সময়ে মক্কার লোকেরা বা মদিনার পৌওলিক বা ইহুদিরা মুখিয়ে থাকতো। তারা কখনও মুহাম্মাদ সা এর হযরত আয়েশাকে বিয়ের ব্যাপারে কিছু বলেননি। কিংবা এর পরের অন্তত ১০০০-১২০০ বছর মুহাম্মাদ সা এর সমালোচনা করে যত বই লেখা হয় তাতে এ ব্যাপারে কিছু ছিল না। আমার শেষ কথা হল- হযরত আয়েশাকে বিবাহের ইস্যুটা পুরাটাই আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। ইসলামকে প্রশ্ন করার আগে নিজের জ্ঞানকে প্রশ্ন করুন, এবং প্রশ্ন করুন কেন এই ব্যাপারটি আপনার মাথায় এসেছে। । ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৯ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সমস্যা হয় নবীজী কেন অল্প বয়সী একজনকে বিয়ে করলেন
ভলুম-০৯, বই- ৮৭, হাদিস নং-১৪০
আয়েশা হতে বর্নিত- আল্লাহর নবী বললেন, তোমাকে বিয়ে করার আগে আমি স্বপ্নে তোমাকে দুই বার দেখেছি।এক ফিরিস্তা সিল্কে মোড়ানো একটা বস্তু এনে আমাকে বলল- এটা খুলুন ও গ্রহন করুন , এটা আপনার জন্য। আমি মনে মনে বললাম- যদি এটা আল্লাহর ইচ্ছা হয় এটা অবশ্যই ঘটবে। তখন আমি সিল্কের আবরন উন্মোচন করলাম ও তোমাকে তার ভিতর দেখলাম। আমি আবার বললাম যদি এটা আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে এটা অবশ্যই ঘটবে।
সহি বুখারি, ভলুম-৭, বই- ৬২, হাদিস নং-১৮
উরসা থেকে বর্নিত- নবী আবু বকরকে তার মেয়ে আয়েশাকে বিয়ে করার ইচ্ছের কথা জানালেন। আবু বকর বললেন- আমি তোমার ভাই , এটা কিভাবে সম্ভব? নবী উত্তর দিলেন- আল্লার ধর্ম ও কিতাব মোতাবেক আমি তোমার ভাই, রক্ত সম্পর্কিত ভাই না, তাই আয়শাকে আমি বিয়ে করতে পারি।
সহি বুখারি, ভলুম-৭, বই -৬২, হাদিস নং- ৬৫
আয়েশা হতে বর্নিত- মহানবী তাকে ছয় বছর বয়েসে বিয়ে করেন, নয় বছর বছর বযেসে তাদের বিবাহিত জীবন শুরু হয়। হিসাম জানিয়েছিল- আমি জেনেছি আয়েশা মহানবীর মূত্যুর আগ পর্যন্ত নয় বছর যাবত বিবাহিত জীবন অতিবাহিত করেছিলেন।
ইমাম বুখারী নিজে হাদিস রচনা করেননি। তিনি সংগ্রহ করেছেন মাত্র। ভুল হতেই পারে। কোরআনের সাথে কন্ট্রাডিক্ট করলে সেটাকে ভুল মানতে মুসলমানদের আপত্তি নেই।
লেখার জন্যে ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন