মেয়েদের পোশাক নিয়ে তাদের এই লুলামির শেষ কোথায়?

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ০৩ জুন, ২০১৫, ১০:৪২:১৯ রাত



ইদানিং গ্রুপে মেয়েদের ড্রেস নিয়ে কিছু গা-মানুষের লুল মূলক পোস্ট দেখতে পাচ্ছি। তাদের কথা মোটামুটি একই। মেয়েদের অশালীন ড্রেস দেখে তাদের চেতনার দণ্ড দাড়িয়ে যায় এবং এজন্য তারা………।

আমি যে কারনে আতংকিত এবং এটা লিখতে বসলাম তা হল, এই সব লুল লোকজন এর মধ্যে ইসলাম এবং পর্দার কথা নিয়ে আসে।

এখন এদের যুক্তিও সপ্তম নৌ-বহরের মত বিশাল যা দেখিয়া কেউ কেউ সাদ্দামের মত মাটির নিচে আশ্রয় গ্রহন করিতে বাধ্য হয়।

এসব কথা বাদ দিয়ে আসুন দেখি এ ব্যপারে আমাদের স্রষ্টা আমাদের কি বার্তা দিয়েছেন। এই সব লুল লোকজন জানে না যে আল্লাহ কুরআন এ প্রথম ছেলেদের পর্দার কথা বলেছেন, মেয়েদের না। এবং পর্দা বলতে মূলত বোঝানো হয়েছে মনের পর্দা। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,

“ হে নবী (সাঃ)! মু’মিন পুরুষদের বলে দিন তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে। এটি তাদের জন্য বেশী পবিত্র পদ্ধতি। যা কিছু তারা করে আল্লাহ তা জানেন। আর হে নবী! মু’মিন মহিলাদের বলে দিন তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে আর তাদের সাজসজ্জা না দেখায়, যা নিজে নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া। আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে। তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে নিকট আত্নীয় ছাড়া। তারা যেন নিজেদের যে সৌন্দর্য তারা লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে প্রকাশ করে দেবার উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে”।

(সূরা নুরঃ ৩০-৩১)

“হে আদম সন্তান! তোমাদের শরীরের লজ্জাস্থানগুলো ঢাকার এবং তোমাদের দেহের সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য বিধানের উদ্দেশ্যে আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাযিল করেছি। আর তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্যতম, সম্ভবত লোকেরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে”।

(সূরা আল আরাফঃ ২৬)

অর্থাৎ এখানে মূল ব্যপার হল সমস্যাটা ছেলেদেরই বেশি। কারন ইসলামের পোশাকের বিধান শুধু মাত্র মুসলিমদের জন্য। সমাজে অমুসলিমও রয়েছে। তাদের জন্য ইসলামি পর্দা আবশ্যক নয়। তাই পর্দার ক্ষেত্রে তকাওয়ার পর্দা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেদের দৃষ্টি ঠিক রাখতে হবে। খারাপ চিন্তা মাথায় আসলে চোখ অন্যদিকে নিতে হবে। পোশাককে দোষারোপ করার কোন অর্থ নেই। কারন আপনি ইসলাম অনুযায়ি অমুসলিমদের সাথে চুক্তিবদ্ধ বা সংবিধানের আওতাভুক্ত বিষয় ছাড়া কোন কিছুর ব্যাপারে কথা বলতে বা জোর করতে পারবেন না। আর মেয়েদের ব্যাপারেও একই কথা, সব মুসলিমও যদি ছেলে পর্দা মেনে চলে, তারপরও সমাজে অনেক অমুসলিমও আছে। তাদের খারাপ প্রবণতা যেন উস্কে না যায় এজন্য তাদের পর্দা।

তাই তাদেরকে বলি মেয়েদের পোশাক নিয়ে লুলামি না করে ইসলাম নিয়ে একটু পড়াশোনা করেন। আর নিজের চরিত্রের দিকে নজর দেন। কাজে দেবে। কেয়ামতের দিন আল্লাহ আপনাকে আপনার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করবে। কে কি পোশাক পড়েছিলো তা নিয়ে না।

বিঃদ্রঃ- আমি কোন ভাবেই মেয়েদের অশালীন পোশাককে সমর্থন করছি না। তবে আমার ধারণা এই ব্যাপারটি কতটা ক্ষতিকর তারা ভাল ভাবেই জানে, তাই এটা নিয়ে কথা বলে খুব বেশি একটা লাভ নেই।

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

324450
০৩ জুন ২০১৫ রাত ১০:৫৮
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমি নিজে ছেলেদের ও মেয়েদের পোষাক নিয়ে লেখালেখি করি । তবে আমি এই ক্ষেত্রে আমি কুরআনের এই আয়াতটাকে গুরুত্ব দেই :

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ


মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। সুরা নুর : ৩০ ।

তবে আমি বিনীতভাবে বলছি :

কিছু দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তি পর্দা ও শালীনতার নামে এমন পোষাক বা ড্রেস কোড আমাদের সমাজে চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন । আমি যুক্তি সংঘত কারণে আমি এই কাজের বিরোধীতা করে যাবেই । প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নিবো । কারণ এই গোষ্ঠী আমাকে এই পর্যন্ত ৫ বার হত্যার হুমকি দিয়েছে ।




তবে আমি নিজে এমন পোষাক মেয়েরা পড়ুক ও শালীনভাবে চলাফেরা করুক - তা আশা করি এবং এই লক্ষ্যে আমি কাজ করে যাচ্ছি :


https://www.youtube.com/watch?v=PGyoW31Rb60
এই বিষয়ে আমার ৩৫ টা লেখা আছে । তার মধ্যে ৪ টা লেখা শেয়ার করছি :
http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/64036

http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/64512

http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/64156

http://www.monitorbd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/64214
324470
০৪ জুন ২০১৫ রাত ০১:২৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, যদিও কিছু কথা থেকে যায়, তবুও ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহ খাইর
১২ জুন ২০১৫ রাত ০১:৩০
267335
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : কিছু কথা বলে ফেলুন।
১২ জুন ২০১৫ রাত ০১:৫১
267339
আবু জান্নাত লিখেছেন : একান্ত প্রয়োজন বা শরয়ী কোন কারণ ছাড়া মহিলাদের ঘর থেকে বাহির হওয়া নিষেধ, এব্যাপারটি আপনার আলোচনায় মোটেও ঠাই পায়নি, বিস্তারীত জানতে তাফসীরে ইবনে কাসীরের সামান্য ইবারাত তুলে ধরলাম।
وقوله تعالى: { وقرن في بيوتكن} أي الزمن بيوتكن، فلا تخرجن لغير حاجة، ومن الحوائج الشرعية، الصلاة في المسجد بشرطه، كما قال رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم: (لا تمنعوا إماء اللّه مساجد اللّه وليخرجن وهن تفلات) تفلات: أي غير متطيبات وفي رواية: (وبيوتهن خير لهن) وروى الحافظ البزار عن أنس رضي اللّه عنه قال: جئن النساء إلى رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم فقلن: يا رسول اللّه ذهب الرجال بالفضل والجهاد في سبيل اللّه تعالى، فما لنا عمل ندرك به عمل المجاهدين في سبيل اللّه تعالى؟ فقال رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم: (من قعدت - أو كلمة نحوها - منكن في بيتها فإنها تدرك عمل المجاهدين في سبيل اللّه تعالى)، وعن النبي صلى اللّه عليه وسلم قال: (إن المرأة عورة فإذا خرجت استشرفها الشيطان، وأقرب ما تكون بروحة ربها وهي في قعر بيتها) "أخرجه الحافظ البزار والترمذي""، وفي الحديث: (صلاة المرأة في مخدعها أفضل من صلاتها في بيتها، وصلاتها في بيتها أفضل من صلاتها في حجرتها) ""أخرجه الحافظ البزار عن عبد اللّه بن مسعود مرفوعاً وإسناده جيد" আশা করি চিন্তার ধার আরো উন্মুক্ত হবে। শুকরিয়া।
২৭ জুন ২০১৫ রাত ১০:১৪
269982
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : ভাইয়া এটা সম্পর্কে আমি কিছুটা জানি। আপনাকে পলটা প্রশ্ন করি, "একান্ত প্রয়োজন বা শরয়ী কোন কারণ"- এর সজ্ঞা কি কুরআন হাদিস বা কোন ইসলামি বিশেষজ্ঞ দিয়েছেন? আর সেটা নির্ধারণ করবে কে?
324538
০৪ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:২৬
হতভাগা লিখেছেন : একমত । মেয়েদের পোশাকের জন্য বেশী চিন্তান্বিত না হয়ে ছেলেদের উচিত নিজেদের ব্যাপারে আগে সতর্ক হওয়া ।

১২ জুন ২০১৫ রাত ০১:৩১
267336
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File