"সংস্কৃতি" নিয়ে মিডিয়ার লুলামি

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ০২ জুন, ২০১৫, ১১:০০:৪৮ রাত

সংস্কৃতি আমাদের অতি চেনা একটি শব্দ। এই শব্দটি প্রতিনিধিত্ব করে কিছু ধারনার। একজন স্কটিশ বিশেষজ্ঞ (নামটা ভুলে গেছি) খুবই সহজ এবং চমৎকার ভাবে সংস্কৃতির সজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “Culture is what we have and what we do” ।

সহজ ভাবে বহুকাল ধরে আমরা যা করি, যা খাই, যা বিশ্বাস করি এবং যা পালন করি তাই সংস্কৃতি।

আজ শবে বরাত। ইসলামে এই অনুষ্ঠানটি ওতটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ না। তবে আমাদের বাংলাদেশ এর মানুষ এর জন্য দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বহুকাল আগে থেকেই এইদিনে আত্নীয়-স্বজন যারা দূরেও থাকে তারা বাড়ীতে আসে, প্রায় সব বাড়িতেই ভাল খাবার তৈরি করা হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সবাইকে এই দিন আপ্যায়ন করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে একটা কথা খুব চালু আছে, এই দিনে ফকিরদের পাওয়া যায় না। কারন আগে থেকেই তারা দাওয়াত পেয়ে যায় কোন না কোন বাড়ীতে। একদম ছোট থেকে শুরু করে সব বয়েসি পুরুষ মাগরিব এদিনে মসজিদে যায়। প্রতিটা মসজিদেই বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান হয় এবং মিষ্টি বিতরণ করা হয়। সবার সাথে সবার দেখা হয়। আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য এবং একটা অসাধারণ অনুষ্ঠান এই শবে বরাত। এটা আমাদের শিক্ষাদেয় সহনশীলতা, মহানুভবতা, এবং ভাতৃত্ববোধ এর।

কিন্তু কোন একটি অজ্ঞাত কারনে কোন গণমাধ্যমই এ নিয়ে মোটেও আগ্রহী নয়। সংবাদপত্র গুলো একদম নিচের এক কলামে একটি খবর দিয়েই শেষ। আর কয়েকটা টিভি ষ্টেশন গুলো খবরের কোন ফাঁকে ১০ সেকেন্ডের একটি নিউজ দিয়েই শেষ। অথচ যেগুলো আমাদের সংস্কৃতির কোন অংশই না। হয়তো ঢাকার কোন এক অংশে অল্প কিছু মানুষ পালন করছে সেসব অনুষ্ঠান নিয়ে বিশাল বিশাল ক্রোরপত্র, ১০-১২ মিনিটের লিড নিউজ প্রচার করে। বিশেষ অনুষ্ঠানও হয় (যেমন পহেলা ফাল্গুন, চৈত্র সংক্রান্তি)। আর সনাতন, খ্রিস্টান বা বৌদ্ধ ধর্মের ছোট ছোট ধর্মীয় অনুস্টান নিয়ে অনেক মাতামাতি করে আমাদের সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করে। এমন একটা অবস্থা গণমাধ্যম গুলো আমাদের এমন বার্তা দিচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি মানেই নাচা-নাচি (বিভিন্ন টিভির সংস্কৃতি সংবাদ আর আগের যে ভিডিও চিত্র দেওয়া হয় লক্ষ্য করবেন) আর যত অন্য ধর্মের যত প্রকার অনুষ্ঠান আছে তা সব।

অথচ আমাদের পাশের দেশের টিভি ষ্টেশন গুলো দেখুন, ভারতের সাধারন মানুষ যেভাবে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে সমান গতিতে তারা সেগুলো প্রচার করে। এমনকি ধারাবাহিক সিরিয়ালগুলোও সেই সব অনুষ্ঠান নিয়ে বিশেষ পর্ব থাকে। সব অভিনেতা, অভিনেত্রীর টুইটার বা ফেসবুক পেজ যদি ফলো করেন ছাপ পাবেন। আর আমাদের দেশের মিডিয়া?

কোন অনুষ্ঠান এর সাথে ইসলাম এর সম্পর্ক থাকলেই গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্টদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। এহেন গণমাধ্যম এবং অভিনেতা, অভিনেত্রীর দিয়ে আমরা কিহা করিবো, যারা আমাদের বিশ্বাস, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতিকে প্রকাশ করে না বরং অস্বীকার করে। আর যা আমাদের না তা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে?

বিষয়: বিবিধ

৯২৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

324288
০৩ জুন ২০১৫ সকাল ০৬:২৬
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : মানুষের মাঝ হতে ধর্মের প্রতি টান তা উঠে যাচ্ছে। যেদিন গজব পড়বে সেদিন মানুষ আবার সৃষ্টিকর্তাকে ডাকবে।
০৩ জুন ২০১৫ রাত ১০:৪০
266210
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : হুম। ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File