বাসে গন-ধর্ষণ, ভারতের পথে বাংলাদেশ এবং কিছু চিন্তা
লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ২৩ মে, ২০১৫, ১১:৪০:৩১ রাত
অনেকদিন আগে যৌনতা নিয়ে ড. হুমায়ন আজাদ স্যার এর একটি অসাধারন লেখা পড়েছিলাম। লেখাটার বক্তব্য ছিল অনেকটা এমন, যখন মানুষ এর মধ্যে যৌনতা এর ব্যাপারটি আসে, তখন পশ্চিমা সমাজে ছেলে মেয়েদের একে অন্যের সাথে ঘনিস্টতা তৈরি হয়। তারা সেটিকে উপভোগ করে। আর আমাদের প্রাচ্য সমাজের ছেলে মেয়েরা তখন সেটি নিয়ে প্রচণ্ড হতাশায় ভোগে, বিকৃত চিন্তা করে, অস্তিরতার মধ্যে থাকে। যখন তারা সেটি কাছে পায় তখন খুবই বিকৃতভাবে তা ব্যবহার করে এবং এর ফলশ্রুতিতে কোনদিনই তারা যৌনজীবনে সুখি হতে পারে না।
আমি জানি আমাদের সমাজে হুমায়ন আজাদ এর খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা নেই। তবে এই কথাটি খুবই নগ্ন সত্য। তার প্রমান আমরা সব সময়ই দেখি, পহেলা বৈশাখে এটা খুব অশ্লীলভাবে আমাদের চোখে পড়েছে। আমারা এতদিন ভারতকে খুবই বিদ্রুপ করতাম যা নিয়ে, অলাইনে ভারতকে ব্যাঙ্গ করে রেন্ডিয়া (রেপ+ইন্ডিয়া) বলা হয় যে ঘটনার প্রেক্ষিতে সেই একই ঘটনা দুইদিন আগে আমাদের ঢাকায় ঘটলো। মাইক্রোবাসে এক তরুণী গন-ধর্ষণের শিকার হল।
এমন কঠিন না হলেও এ ধরণের ঘটনা আমাদের দেশে নতুন না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবদন্তি জনাব মানিক সাহবে ধর্ষণ এর সেঞ্চুরি ঘটা করে পালন করেছেন। নওয়াব সলিমুল্লাহ মুসলিমদের উচ্চ শিক্ষার জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়েছিলেন সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থার্টি ফাস্ট নাইটে বাঁধন তারই সহপাঠীদের দ্বারা নিপীড়ন এর শিকার হন। বুয়েটে সানি। ইত্যাদি ইত্যাদি। বলা শুরু করলে শেষ হবে না।
আমাদের এখন আমাদের সামনে দুইটা ব্যাপার আছে। এক বিচার করতে হবে এই সব ঘটনার। বিচার হতে হবে খুবই কঠোর। এর একমাত্র শাস্তি হবে মৃত্যুদন্ড। এবং সবচেয়ে ভাল হবে দণ্ডটি যদি সবার সামনে কার্যকর করা হয়। তাহলে বাকীদের মনে ভীতির সঞ্চার হবে। ১০০০ বার ভাববে কিছু করার আগে।
শুধু শাস্তি দিলেই কাজ শেষ হবে এমনটা মনে হয় না আমার। এখন আমাদের এই তরুণদের মধ্য থেকে হতাশা, বিকৃত চিন্তা এবং অস্থিরতা দূর করতে হবে। কিন্তু কিভাবে?
হুমায়ন আজাদ তার লেখায় এর সমাধান দিয়েছেন তা হল পশ্চিমা সমাজ থেকে শিক্ষা নেওয়া। এখন এই সমাধানে কতজন একমত হবেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। খোদ আমি নিজেই এই সমাধানে বিশ্বাসী না। কারন এক- আমাদের সমাজের জন্য এই সমাধান কোন ভাবেই বাস্তবায়ন যোগ্য না। দুই- এটা আরও নতুন কিছু সমস্যার জন্ম দেয় পশ্চিমা সমাজ এখন যেগুলোর সম্মুখীন এর মধ্যে আছে এইডস, পিতৃ পরিচয়হীন শিশু(কয়েকটা দেশে এমন শিশুর পরিমাণ অনেক ৫০ ভাগেরও বেশি)।
তাহলে সমাধান কি হতে পারে?
এটাও তারাই বের করেছে তা হল কম বয়েসে বিয়ে। প্রায় সব পশ্চিমা দেশে বিয়ের বয়স ১৫/১৬। অ্যামেরিকার কিছু রাজ্যে ১৪। জানি অনেকের কম বয়সে বিয়ের ব্যাপারে চুলকানি আছে। কিন্তু এর থেকে ভাল সমাধান আর নাই বা হতেও পারে না।
বিষয়: বিবিধ
১১০৭ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার লেখাটা খুব ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ।
আসলে সব সমস্যার সমাধান একমাত্র ইসলাম।
তাছাড়া আজাদ সাহেবের মতন স্যারেরা নিজেরা ঠিকই বোঝে কিন্তু মানুষকে ভুল বোঝায়। পশ্চিমা সমাজের চেয়ে আমাদের সমাজে যৌনতা কম হয় এটা একেবারে ভুল ধারনা। আমাদের সমাজে সবই হয়, কিন্তু গোপনে। পশ্চিমা সমাজে ব্যাপারটা খোলামেলা।
তবে, আপনার মূল বক্তব্য ঠিক আছে। যেসব ছেলে-মেয়েরা শারিরীক চাহিদা মেটাতে পারে না। তাদের জন্য সহজ সমাধান বিয়ে। বিস্তারিতঃ এখানে দেখুন
তাই কম বয়সে বিয়ে আর অবাধ যৌন সম্পর্ককে সমাধান হিসাবে ধরতে গিয়ে ধর্ষণ এর মত হারাম এবং যেকোন সমাজে অপরাধকে পরোক্ষ সমর্থনই দিচ্ছেন।
সঠিক জ্ঞান ও ধর্মশিক্ষা, সুন্দর পরিবেশে বেড়ে ওঠাই সঠিক সমাধান।
অনেকেই পাশ্চাত্য সম্পর্কে নিজেদের মনগড়া ভূল ধারণাকেই পাশ্চাত্যের হিসাবে চালিয়ে দিয়ে নিজেদের গন্ডমূর্খ্যতার যৌক্তিকতা প্রমাণের প্রতারণামূলক চেষ্টা করে।
কিন্তু ... ঐ যে ইসলাম মানলে উনাদের মৌজ মাস্তি সব বন্ধ হয়ে যাবে , পারিতোষিক পাওয়া আর হবে না । সেজন্যই ইসলামকে নিয়ে তাদের হীন অপচেষ্টার অন্ত নেই।
সুশীলদের শুনলে খারাপ লাগলেও এটাই আসল সমাধান যে, বাল্যবিবাহ বা অল্প বয়সে বিবাহই পারে মানুষকে এই সব অনাচার হতে মুক্ত করতে ।
এটার জন্য আদর্শ ফিল্ড গড়ে তুলতে প্রত্যেক পরিবারকেই মটিভেটেড হতে হবে । কারণ বিয়ে মানেই রিসপনসিবিলিটি : একজন ছেলের একজন মেয়ের প্রতি । অল্প বয়সে সে একজন মেয়ের দায়িত্ব নেবার মত যোগ্যতা সম্পন্ন হয় না বলেই - কোন পরিবার তাদের ছেলেকে এত অল্প বয়সে বিয়ে দিতে চান না এবং কোন পরিবার তাদের মেয়েকে সবে মাত্র ছাত্রের কাছেও বিয়ে দিতে চায় না , এমনকি মেয়েও চায় না ।
কারণ একজন মেয়ের বিয়ের বয়স তার হাত পা বড় হলেই হয়ে যায় , তা তার বয়স ৮-৯ বছর যাই হোক না কেন । যেহেতু মেয়েটির কোনই দায়দায়িত্ব নেই তাই এখানে বয়স ও টাকা পয়সা কোন ফ্যাক্টরই না যেটা ছেলের ব্যাপারে ভীষন খাটে।
দুই পরিবার যদি এমন একটা স্টেপ হাতে নেয় যে ছেলে একটা স্ট্যান্ডার্ড পর্যায়ে স্ট্যাবলিশ না হওয়া পর্যন্ত তারাই বর ও কনেকে চালিয়ে নেবে তাহলে - এরকম সমস্যা কমে আসতে থাকবে।
এটাই সমস্যা সমাধানের উপায় বলে মনে করি । না হলে বিয়ে না হলেও বয়স তো বাড়ছে , বাড়ছে শারিরীক চাহিদাও । ফলে এসব ছেলে মেয়েরা বিয়ে না করে অন্য যা কিছু করবে তা তো সমাজের কি করছে তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি ।
ইসলামী শরিয়তকে পায়ে ঠেলে আমরা যাকে বা যাদের অনুসরণ করবো তাদের কার্যকলাপও আমাদের খুব দ্রুতই রপ্ত হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন