তিন মাস সাগরে ভাসা, অমানবিকতা এবং আমাদের আশু শাস্তি
লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ১৫ মে, ২০১৫, ১০:০৮:২২ রাত
ধরুন আপনার দাদার ৩ ছেলে। আপনার বাবা জীবিকার জন্য নদী পার হয়ে পাশের গ্রামে গেল। ওই গ্রামের মানুষ আপানার বাড়িঘর, সম্পদ জ্বালিয়ে দিয়ে, আপনার বাবা, মা, ভাই, বোন সবাইকে আগুনে পুরিয়ে না হোলে পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেললো। আপনি কোন রকমে সারারাত সাতার কেটে নদী পার হয়ে আপনার বাবার বাড়ির ঘাটে আসলেন একটু আশ্রয় নিতে। আপনার চাচা, চাচাতো ভাই-বোন বললো তাদের বাসায় নাকি জায়গা নেই-এটা ওটা। আপনাকে তীরে উঠেই দিল না। ওই অবস্থায়-ই আপানাকে আবার আপনার গ্রামে ফেরত পাঠাল। আপনি কসাইদের কাছে ফেরত না গিয়ে নদী দিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন......
এখন আপনার চাচাদের আল্লাহর তরফ থেকে কি শাস্তি হওয়া উচিত??
পুনশ্চ -১ চাচাদের জায়গায় নিজেকে মানে বাংলাদেশিদের। আপনার জায়গায় রোহিঙ্গাদের রাখুন। রোহিঙ্গাদের উপর কি ধরনের নির্যাতন হয় তা বর্ণনা করার ক্ষমতা আমার নাই। একটা ছবি দিলাম শুধু।
রোহিঙ্গারা মুসলমান এবং বাঙালি। কৃষিকাজের জন্য আরাকানের কম জন অধ্যুষিত এবং উর্বর উপত্যকায় আশপাশের এলাকা থেকে বাঙ্গালী অধিবাসীদের অভিবাসন করার নীতি গ্রহণ করেছিল ব্রিটিশরা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলাকে আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিল। ১৯ শতকে, হাজার হাজার বাঙ্গালী কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আরাকানে গিয়ে বসতি গড়েছিল। তারাই আজ রোহিঙ্গা নামে পরিচিত।
খবরঃ ৩৫০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী বোঝাই নৌকা তিন মাস ধরে সাগরে ভাসছে। খাবার ও পানির অভাবে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে মূত্র পান করে পানির তৃষ্ণা মিটাচ্ছে। নৌকার যাত্রীরা বিবিসি’কে বলেছে, ক্রুরা তাদেরকে ছেড়ে চলে গেছে এবং ইঞ্জিন বিকল করে দিয়েছে। মৃত যাত্রীদের লাশ সাগরে ছুড়ে ফেলেছে তারা। ৫০ জন নারী এবং ৮৩ জন শিশু শরণার্থী বোঝাই এ মাছ ধরা নৌকাটিকে থাইল্যান্ডে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এটাতো গেল একটা, এমন শত শত নৌকা সাগরে ভাসছে......।
তারা এখন কোথায় যাবে?
মিয়ানমার? সাক্ষাৎ আজরাইল।
বাংলাদেশ? এখানে তাদের দাদারা নাকি অনেক সমস্যায় আছে। ঢুকতে পারবে না।
অন্যকোন দেশেও তাদের নিতে রাজি না।
আল্লাহ, তুমিই তাদের একমাত্র সম্বল। তুমিই সবচেয়ে বড় রক্ষাকারী। । ।
মন্তব্যঃ বাংলাদেশে এর প্রাপ্য এই পেট্রোল বোমা, ক্রসফায়া আর এই দুঃশাসন। হেফাজত সহ ইসলামি দলগুলো কিছু ছাগল কোথায় একটু ব্যা ব্যা করছে তা নিয়ে এত প্রতিক্রিয়া দেখালো আর চোখের সামনে এভাবে গনহত্যা হচ্ছে, মোনাজাত এ একবার দোয়াও করে না।
পুনশ্চ - ২
“আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত কোন বান্দার সাহায্য করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে”
আল হাদিস
“অনেক জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের কাছে আমার আযাব রাত্রি বেলায় পৌছেছে অথবা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত অবস্থায়। অনন্তর যখন তাদের কাছে আমার আযাব উপস্থিত হয়, তখন তাদের কথা এই ছিল যে, তারা বললঃ নিশ্চয় আমরা অত্যাচারী ছিলাম"।
সুরাহ আনফাল- (৫-৬)
বিষয়: বিবিধ
১২৩০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রহিঙ্গা বিষয়ে চাচা/চাচীর যে গল্প ফেদেছন তা মন্দ হয় নি। তবে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, দুবাই, আরব আমিরাত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এর মত এত এত মুমিনের দেশ থাকতে আপনি অযথাই বিচিলিত। সাগরে ঘুরঘুর না করে রহিঙ্গারা ঐসব দেশে হিজরত করলেই লেটা চুকে যায়। চিন্তার কি আছে? সব মুসলমান ভাই ভাই।
নাকি ভুল বল্লাম??
Hip Hip Hurray, তামাম মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান, আফগানিস্তানে এত এত আল্লার মুমিন বান্দা থাকতে রহিঙ্গাদের আবার সমস্যা কি?
"অনেক জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের কাছে আমার আযাব রাত্রি বেলায় পৌছেছে অথবা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত অবস্থায়। অনন্তর যখন তাদের কাছে আমার আযাব উপস্থিত হয়, তখন তাদের কথা এই ছিল যে, তারা বললঃ নিশ্চয় আমরা অত্যাচারী ছিলাম"। সুরাহ আনফাল- (৫-৬)
আরবী কিতাবের হুমকি ধমকি আর কত? শুকনো কথায় চিঁড়ে ভিজে না। আমরা এবার মায়ানমারের বিরুদ্ধে আল্লার ডাইরেক্ট একশন দেখতে চাই। তখন বুঝা যাবে উনি কি ছিড়তে পারেন।
পুনশ্চ- মানুষের দান ভিক্ষা না পেলে মসজিদের ইমাম সাহেবের বেতন দেয়ার মুরাদও আল্লার নেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন