হ্যালোইন ডে এর ইতিহাস

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ৩১ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:২১:৩৬ দুপুর

কর্পোরেট দুনিয়া এবং মিডিয়ার কল্যাণে বেশ কিছু পশ্চিমা রীতির মত হ্যালোইনও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গত বছরও তেমন কিছু হয়নি এবার অস্তিত্ব কিছুটা জানান দিচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে ভবিষ্যৎ জনপ্রিয়তা। আমাদের বর্তমান সমাজের একটি অসাধারন বৈশিষ্ট হল আমরা পশ্চিমা রীতি বা অনুষ্ঠান গুলো না বুঝে না জেনে অন্ধের মত অনুসরণ করি (গড্ডালিকা প্রবাহ- বাগধারাটির কেন প্রচলন হয়েছিল বুঝতে পারছি)। হ্যালোইন এর প্রচলন শুরু হয় প্রাচীন মধ্য এবং পশ্চিম ইউরোপে যা কেল্ট নামে পরিচিত অর্থাৎ বর্তমান আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এর উচ্চ ভূমি এবং ফ্রান্স এর উওর অংশ। এই এলাকায় প্যাগানদের একটি বিশেষ জাতির বাস ছিল। তারা বিশ্বাস করতো ফসল কাটার মৌসুমের শেষ দিন এবং শীতকালের প্রথম দিন রাতে মৃতদের আত্মা পৃথিবীতে আসে তাই তারা ভুত সাজতো যেন ঐ আত্মা গুলো তাদেরকেও আত্মা ভেবে ভুল করে। এরাতে তারা সবাইকে মিষ্টি দিত এই আশায় হয়তো ভুল করে আত্মাকেও দিবে কারন আত্মা মিষ্টি পছন্দ করে এবং এটা পেয়ে খুশি হয়ে তারা তাদের অশেষ উপকার করবে। এখান থেকেই চকলেট দেওয়ার প্রচলন।



হ্যালোইন ডে এর প্রধান প্রতীক ‘the Jack-O-Lantern’ এটা হল কুমড়ার মধ্যে একটি মোম বাতি দেওয়া এবং সামনে বিকৃত মুখ আকৃতি দেওয়া। এটা দ্বারা বোঝায় আত্মা গুলো কষ্টে আছে কিংবা আত্মার স্বর্গ এবং নরকের মাঝা-মাঝি অব্যস্থান।

আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ নিজেকে স্মার্ট এবং আধুনিক প্রমান করতে হ্যালোইন পালন করেন। আবার অনেকের মত নিছক আনন্দ এর জন্য এই অনুষ্ঠান এ যোগদান। এটা ধর্মীয় বা সংস্কৃতি দুই দিক দিয়েই ক্ষতিকর।

নিজের সংস্কৃতির হাজার অনুষ্ঠান রেখে অন্য গোষ্ঠীর কুসংস্কার এবং বিকৃত অনুষ্ঠান (ভালো গুলো যেমন ফাদার বা মাদার ডে গ্রহণকে আমি বিরোধিতা করছি না) গ্রহণ করা মানে নিজের সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করা। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের অনুষ্ঠান গুলোকে জাদুঘরে গিয়ে খুঁজতে হবে।

মুসলিম ধর্মীয় দিক থেকে এটা পালন করার কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। বেশ কয়েকজন ইসলামি স্কলার এতে অংশ নেওয়া হারাম বলেছেন কারন

এক- ইসলাম প্যাগানদের কুসংস্কার এর অন্ধকার থেকে পৃথিবীকে আলো দেখানোর জন্য এসেছে।

দুই- ইসলাম মতে যে যাদের সাথে থাকবে কেয়ামতের দিন তাদের সাথেই উঠবে।

তিন- এ সব অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার একটি সাইকোলজিক্যাল প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে গেলে আপানি তাদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে যাবেন সব কাজেই তাদেরকে অনুসরণ করার চেষ্টা করবেন।

তিন – ইসলাম মুসলমানদের প্যাগানদের কোন অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তাফসীরে কুরতুবিতে বলা হয়েছে একবার মহানবী (সা.) কাবা তাওয়াফ এর সময় হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করেছিলেন তখন কুরায়েশগণ তাকে বাঁধা দিয়ে বলে আমাদের দেবতার নিকটে না গেলে তোমাকে তা স্পর্শ করতে দেব না। তখন রাসূল (সা.) মনে মনে ভাবছিলেন হাজরে আসওয়াদ স্পর্শের বিনিময়ে মূর্তির কাছে গেলে কি পাপ হবে? আমি যে মূর্তি অপছন্দ করি আল্লাহ তা ভালোভাবেই জানেন। আল্লাহ রাসূল সা. এর এমন চিন্তা অপছন্দ করেন এবং তখন সূরা বনি ইসরাইল এর ৭৪-৭৫ আয়াত নাযিল হয়।

“আমি যদি তোমাকে দৃঢ়পদ না রাখলে তুমি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকতে পড়তে তখন আমি অব্যশই তোমাকে ইহ ও পরকালে দ্বিগুন শাস্তি আস্বাদন করাতাম, এ সময় তুমি আমার মোকাবেলায় কোন সাহায্যেকারী পেতে না”

অর্থাৎ কোন অজুহাত দিয়েই প্যাগান অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া যাবে না।

পুনশ্চঃ

1. অনেক নন কেল্টিক ইউরোপিয়ান দেশ এবং আমেরিকার কিছু দেশে এটা পালন হয় না তারা বাঙ্গ করে এই দিনকে beggars day বা ভিক্ষুকের দিন বলে।

2. Differ me by knowledge not emotion.

বিষয়: বিবিধ

১৮৫৮ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

279954
৩১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩
কাহাফ লিখেছেন :
বিষয়টা সম্পর্কে ধারণা ছিল না বিলকুল! উপস্হাপনার মাধ্যমে আমাদের কে অবগত করার অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে।
এ সমস্ত বিষয় থেকে বেচে থাকার চেষ্টা করা উচিত সবার। Catch Catch Catch
৩১ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪০
223716
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই।
279990
৩১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:০৩
মামুন লিখেছেন : আল্লাহপাক আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন-আমীন।
লিখাটি পড়লাম। ভালো লেগেছে। ভালো লাগা রেখে গেলাম। ধন্যবাদ।
৩১ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪১
223717
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : শুকরিয়া। ।
280014
৩১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৭
ইঁচড়ে পাকা লিখেছেন : আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন। এইসব বিষয় থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
৩১ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪১
223718
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : আমীন।
280070
৩১ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
হ্যালোইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নাকি ৩০-৪০ বছর আগে বেশি প্রচলিত ছিলনা। এখন কর্পোরেট প্রচারনার কারনে এটি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনোর হাস্যকর উৎসব থেকে বিরত থাকা উচিত।
০১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:০৯
223775
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : শুকরিয়া।
280080
৩১ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:০৬
আফরা লিখেছেন : আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন। এইসব বিষয় থেকে হেফাজত করুন। আমীন ।

আপনাকে ধন্যবাদ ।
০১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:০৯
223776
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : আমীন
০২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
224053
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আফরা লিখেছেন : আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন। এইসব বিষয় থেকে হেফাজত করুন। আমীন ।

আপনাকে ধন্যবাদ ।
280469
০২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আফরা লিখেছেন : আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন। এইসব বিষয় থেকে হেফাজত করুন। আমীন ।

আপনাকে ধন্যবাদ ।
০২ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৩
224202
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : শুকরিয়া।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File