হাইপার সেক্সুয়ালাইজড সোসাইটি এবং একটি কন্সপিয়ারসি থিওরি

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ২৯ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:৫৭:৩৩ রাত

বর্তমান আধুনিক সমাজ ব্যবস্থাকে বলা হয় Hyper Sexualized Society। এই সমাজ ব্যবস্থার নানা দিক রয়েছে এবং একটি আন্যটির সাথে অসাধারন ভাবে সম্পর্কযুক্ত। এর মুলে রয়েছে একটি অসম্ভব সূক্ষ্ম, দীর্ঘ মেয়াদি এবং নিখুঁত পরিকল্পনা যা বেশি বোঝা মানুষ Conspiracy Theory বলে অভিহিত করার চেষ্টা করে।

মানুষের সবচেয়ে তীব্র এবং ভাল লাগার শারীরিক অনুভূতি সেক্স। এই সেক্সকে নিয়েই তথা কথিত এলিট শ্রেনীর এই মহাপরিকল্পনা। বর্তমানে সব জায়গায় সেক্স এর ছড়াছড়ি দেখবেন। প্রতিটি টেলিভিশন বা সংবাদপএ বিজ্ঞাপনে এটাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। সাবান, স্যাম্পু, তেল বা অনান্য প্রসাধনী তো বটেই ছেলেদের ব্যবহৃত পণ্য যেমন সেভিং ক্রিম, আফটার সেভ, রেজার এ মেয়েদের উগ্রভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। খাবার, পানীয় বা মোবাইল অপারেটর গুলোর সব ধরনের বিজ্ঞাপনেই দেখবেন অর্ধ নগ্ন বা উগ্র পোশাক পরা মেয়েদের। যে পণ্য গুলো মেয়েরা ব্যবহার করে না বললেই চলে যেমন মোটর সাইকেল এর বিজ্ঞাপনেও উগ্র পোশাক মেয়েদের সরব উপস্থিতি। একই অবস্থা রিয়েল স্টেট কোম্পানি, ট্র্যাভেল এজেন্ট, বিমান বা গাড়ি, পোশাক এর বিজ্ঞাপন গুলোতেও। এমনকি ক্রিকেট খেলা যার সাথে এর দূরতম সম্পর্ক নেই সেখানেও এখন চিয়ার লিডারস নামক এক অদ্ভুত বিষয় শুরু করা হয়েছে যা উগ্রভাবে সেক্সকে উস্কে দিচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের জীবন যাপন এর জন্য আমারা যা খাই, যা পরি, যা ব্যবহার করি, যেখানে থাকি, যাতে ভ্রমণ করি, কিংবা অবকাশ যাপনে যাই সবই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সেক্স মার্কেটিং দিয়ে। এটা একদিকে যেমন ব্যবসায় প্রচুর মুনাফা আনছে (একটু লক্ষ্য করে দেখবেন যে সকল কোম্পানির বিজ্ঞাপন যত উগ্র তাদের মুনাফাও বেশি) অন্যদিকে আমাদের এই শরীরবৃওীয় অনুভূতিকে করছে কলুষিত। উগ্র চলচিএ এবং পর্ণ এর দর্শক হু হু করে বাড়ছে। পর্ণ দেখা শুরু করলে আস্তে আস্তে মানুষ এর প্রতি আসক্ত হয়ে যায়। তখন ঘন ঘন এটা না দেখলে আর ভাল লাগে না। মন খারাপ থাকলে বা কোন কাজ না থাকলে কিংবা বোরিং মুডে। তারা পর্ণকেই বেছে নেয় সাথী হিসেবে। এটাকে তারা খুব বেশি খারাপও মনে করে না। সরল চিন্তা আমিতো খুবই বাক্তিগতভাবে এটা দেখছি। কাউকে কিছু বলছি না, সমস্যা কি।

সমস্যা হল এই পর্ণ ধীরে ধীরে মানুষের আত্নাকে ধংস করে দেয়। মানুষকে পরিণত করে পশুতে। এর পর তারা যখন কোন মেয়েকে বা মহিলাকে দেখে তখন তিনটি চোখ দিয়ে তাদের দেখে। ৩য় চোখ যে মেয়েকে দেখছে তার শরীরের অদৃশ্যমান অংশকে স্ক্যান করে ফেলে। তিন চোখ মিলে তারা আর কোন মানুষকে দেখে না দেখে একটি প্রাণীকে। মানুষের প্রতি সন্মান চলে যায়। তারা ঐ মেয়টাকে আর সন্মান করে না যত টা পাওয়া উচিত ছিল। আমাদের সৃজনশীলতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানবিকতা বোধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানুষ হয়ে যাচ্ছে পশু। সমাজেও এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে। সামাজটাই উগ্র হয়ে যাচ্ছে।

কন্সপিয়ারসি থিওরি

আসলে সব ধরনের ব্যবসায় এবং মিডিয়া এর মালিক মূলত অল্প কিছু ব্যক্তির একটি গ্রুপ। <শতকরা ১ ভাগ মানুষের কাছেই ৯০ ভাগ সম্পদ>। এই সেক্স মার্কেটিং দিয়ে তারা সব ধরনের ব্যবসায় এর মুনাফা নিশ্চিত করছে। <লক্ষ্য করেছেন কিনা দেশি কোম্পানি গুলোর বিজ্ঞাপন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি গুলোর মত উগ্র না। অবশ্য এখন কিছু দেশীয় সংবাদপএ এবং টিভি ষ্টেশনও সেক্স মার্কেটিং এর ব্যবহার শুরু করেছে। বিনোদন পাতায় তারাও নায়িকাদের স্বল্প বাসন ছবি দিচ্ছে আর টিভি ষ্টেশন গুলোর কিছু কিছু অনুষ্ঠান এর উপস্থাপিকাদের দেখা যাচ্ছে উগ্র পোশাকে>। অন্যদিকে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করছে। সবচেয়ে মেধবিদের তাদের কোম্পানিতে নিয়ে নিজেদের ব্যাবসায় সমৃদ্ধ করছে এবং একই সাথে দেশীয় কোম্পানিগুলোর উন্নতিতে বাঁধা সৃষ্টি করছে। পর্ণ বা অশ্লীল বিজ্ঞাপন প্রাচ্যের দেশে গুলোর যুবসমাজকে ধসিয়ে দিচ্ছে। তরুণ সমাজ এখন অন্ধভাবে পশ্চিমাদের অনুকরণ করছে। ভবিষ্যৎ শত্রুকে বাড়তেই দিচ্ছে না, না অর্থের দিক দিয়ে না জ্ঞানের দিক দিয়ে। দেশীয় কোম্পানি গুলো পাড়ছে না মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির সাথে। আর এখন এখানে জন্ম হয় না তিতুমীর, জগদীশ চন্দ্র বসু, এফ আর খান, ডক্টর মুহাম্মাদ শহিদুল্লাহ, জামাল নজরুল ইসলাম, বা জহির রায়হানদের। যারা একটু উন্নতি করেছে বলতে গেলে সবাই ইউরোপ বা অ্যামেরিকায় পড়ে।

মেধাহীন, সম্পদহীন প্রাচ্য সমাজ তৈরি করা হচ্ছে যেন কয়েকদিন পর তারা তাদের পায়ের কাছেই পড়ে। এবং তাদের চূড়ান্ত পরিকল্পনা গোটা দুনিয়াকে নিয়ন্ত্রন এবং একবিশ্ব ব্যবস্থা (New World Order) প্রতিষ্ঠিা করা সম্ভব হয়।

বিষয়: বিবিধ

১২০৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

279444
২৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:০৭
তৃতীয় চোখ লিখেছেন : ভালো লাগলো
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:২৪
223214
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : শুকরিয়া।
279450
২৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:২৪
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : মেধাহীন, সম্পদহীন প্রাচ্য সমাজ তৈরি করা হচ্ছে যেন কয়েকদিন পর তারা তাদের পায়ের কাছেই পড়ে। এবং তাদের চূড়ান্ত পরিকল্পনা গোটা দুনিয়াকে নিয়ন্ত্রন এবং একবিশ্ব ব্যবস্থা (New World Order) প্রতিষ্ঠিা করা সম্ভব হয়।

অনেক ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ গ্রহন করুন।
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:২৪
223215
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই।
279471
২৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১১:৫৪
মনসুর লিখেছেন : মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, জাজাকাল্লাহু খাইরান। শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ

সৎ-মুসলমনেরা সাবধান- ইতিমধ্যেই খবিস ইবলিসের অনুসারীরা New World Order প্রতিষ্ঠিার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে !!

মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:২৪
223217
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : আমীন।
279475
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:০৪
আদি মানব লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভাই আপনার লেখার তারিফ করতে হয়। সত্যই আমরা জাতি হিসাবেই দিন দিন পশু হয়ে যাচ্ছি।
আপনার এমন চিন্তাশীল লিখা আরো পাবো বলে আশা রাখি।
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:২৫
223218
চিলেকোঠার সেপাই লিখেছেন : দোয়া করবেন ভাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File