বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল
লিখেছেন লিখেছেন ধূসর পান্ডুলিপি ২২ মার্চ, ২০১৪, ০৩:৪১:৩৩ দুপুর
আশ্চর্য! গত একটা সপ্তাহ ধরে রাতে শান্তিমত ঘুমোতে পারছে না অনিম॥ ভালোবাসা দিবসের প্রস্তুতি এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয়ে গেছে॥ না, আর থাকা যায় না॥ চারদিকে high volume এ গান,এটা যে মাঝরাত কেউ কি বলবে?
অনিমের কাছে ভালোবাসা বিষয়টা এখন মোটামুটি ন্যাকামিই লাগ॥অবশ্য একটা সময় পর্যন্ত ভালোই লাগত॥আস্তে আস্তে অনুভূতিগুলো ভোঁতা হয়ে গেছে॥ সবাই ফাগুনের মাসটাকে ভালোবাসার একটা সময় হিসেবে বিবেচনা করলেও অনিমের কাছে শ্রাবণ মাসটাই প্রিয়,কিংবা সবচেয়ে অপ্রিয়॥তখনই প্রথম দেখে সে রাত্রিকে॥ কাকভেজা হয়ে ছিল মেয়েটা, চুলগুলো খোলা,ঘন কালো॥ প্রচন্ড ভালো লেগে গিয়েছিল অনিমের কাছে॥ জীবনানন্দের মত ঠিক যেন,
". . . . .চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য . . . . . . . ."
আসলেই রাত্রির মুখটা যেন কোনো শিল্পীর হাতের কারুকাজ॥ 'রাত্রি', নামটা আসলেই অনেক সুন্দর॥ তাই হয়তোবা অনিম এই নামটার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিল.. রাত্রিকে প্রথমবার দেখার পর অনিম কখনো ভাবেনি মেয়েটার সাথে তার আবার দেখা হবে॥ কিন্তু প্রকৃতি আসলেই মানুষের সাথে অদ্ভুত সব খেলা খেলে. .রাত্রি নামের যে মেয়েটা অনিমের স্বপ্নে আসত, বাস্তবেও হঠাত্ সে অনিমের কাছে চলে আসে॥ তবে এক ধরণের অবস্বাদ কাজ করে অনিমের মধ্যে,আশ্চর্য এক অবস্বাদ॥এই অবস্বাদ কিসের অনিম জানত না॥ যতদিন রাত্রি তার কাছাকাছি ছিল সে কখনো তাকে পাবার চেষ্টা করেনি॥ কেন? অনিম বোধ হয় ভাবত যে কোনো কিছু পাবার চেষ্টা করলে তবেই তা হারানোর ভয় প্রকট হয়॥ তার চেয়ে বরং নিজের মধ্যে আলাদা এক জগত তৈরী করে তাতে পাওয়া আর না পাওয়ার মাঝে থাকাই ভালো॥ তবে হ্যাঁ ভালোবাসার একটা নিদর্শন তার মনে সবসময় রয়ে গেছে॥ বাদল দিনের সেই প্রথম কদম ফুলের পরের কদম ফুলটি॥ হ্যাঁ, রাত্রি তো কদম ফুলই বটে॥ তবে যে ভালোবাসার কোনো শুরু নেই, সে ভালোবাসার কোনো শেষও নেই,এ কারণেই হয়তোবা রাত্রি অনিমের না হয়েও চিরকাল অনিমেরই থেকে যাবে॥
ফাগুনের এই দিনগুলোতে বসে অনিম এই কথাগুলোই চিন্তা করে॥ মনে খুব একটা যে প্রভাব পড়ে তা কিন্তু না॥ তবে শ্রাবণের দিনগুলো প্রচন্ড কষ্টদায়ক॥ কোনো খোলা মাঠে গিয়ে অনিম ভেজে॥ অপেক্ষা করে থাকে কখন আবার বাদল দিনের সেই দ্বিতীয় কদম ফুলটিকে দেখতে পাবে॥ বৃষ্টিতে ভেজার এই একটাই মজা, চোখের পানিগুলো বৃষ্টির পানির সাথে মিশে যায়. .অনিমও চায় শ্রাবণ দিনের এই প্রবল বর্ষণে তার চোখের পানিগুলো ধুয়ে মুছে যাক॥ মনের মধ্যে শুধুমাত্র একটাই কষ্ট তাকে পুড়ে খাক॥ এই কষ্টের কি কোনো শেষ আছে?
বিষয়: সাহিত্য
১৫৯০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সত্যি দারুণ বলেছেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন