ভারতের কনসার্ট !

লিখেছেন লিখেছেন সমালোচিত সমালোচক ২১ মার্চ, ২০১৪, ১১:২২:৪৬ সকাল

টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের উদবোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে এখনও অনেক সমালোচনা হচ্ছে। তীব্র তর্ক হচ্ছে হিন্দি শিল্পীদের কাছে বাঙালি শিল্পীদের অসহায়ত্ব নিয়ে ।

একটু অন্য আঙ্গিকে আমি বলছিঃ- দেশের বর্তমান শাসক গোষ্ঠির সাথে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। দেশে চেতনা ব্যাবসার আড়ালে সত্যিকার অর্থে কোন বহিঃশক্তির উদ্দেশ্য হাসিলের কাজ চলছে, তা নিয়েও নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু আজকের অবস্থার পেছনে আমাদের দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের ভুমিকা কি ছিল তা নিয়ে অনেক কিছুই বলার আছে।

একটি রাজনৈতিক শক্তি তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে কারও কাছে নির্লজ্জ আত্ম-সমর্পন করতেই পারে। এটাকে তাদের বিজনেস পলিসিও বলা যেতে পারে। কিন্তু দেশের সিংহভাগ বাংলা প্রেমী সংস্কৃতিকর্মী যদি সেই পরাশ্রয়ী রাজনৈতিক শক্তির পিছে ঘুরঘুর করে নিজেরাই নিজেদের ভাত মারেন, তাহলে পাবলিকের কি?

পাবলিকের কাজ হলো অনুষ্ঠানে গিয়ে তামাশা দেখা। সাধারণ পাবলিকের কিছু যায় আসে না তারা লোকাল তামাশা দেখল নাকি ফরেইন তামশা দেখল। তামাশাটা জমলেই হলো।

কিন্তু দেশীয় শিল্পীদের জন্যে উপরের হিসেবটা এতো সহজ না। তাদের পারফরমেন্স দেখানোর সুযোগ যদি তারা নিজেরাই সংকুচিত হতে দেন, হিন্দি-ওয়ালারা এসে কিন্তু আমাদের আমজনতাকে বলে দিবে না যে, “বাপু তোমাদের দেশীয় প্রযোজনার তামাশাও তোমাদের একটু আধটূ দেখা উচিত”। দেশের শিল্পীদেরকেই নিজেদের স্বার্থ দেখতে হবে। দরকার হলে লড়াইয়ে নামতে হবে।

দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বাংলাদেশের মিডিয়া কর্মিদের একটি বড় অংশ ভারত ও হিন্দি তোষণে নিবেদিত প্রান। সুতরাং, এই একই মিডিয়া কর্মিরা যখন ভারতের হাতে নাকাল হন, উচ্ছিষ্টের মতো ব্যাবহার পান, অনুষ্ঠানের সবচাইতে উপক্ষিত স্লটে পারফর্ম করার সুযোগ পান, অল্প সময়ের ভাগ-বাটয়ারা নিয়ে নিজেরা নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি করেন, তখন তাদের প্রতি খুব বেশি সমবেদনা জানানোর প্রয়োজন কি পাবলিকের আছে?

নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে আমাদের দেশে হিন্দি আগ্রাসনে বিরক্ত মিডিয়া কর্মি অনেকেই আছেন। কিন্তু তাদের প্রায় সবাই একটা বড় রোগে ভুগেন। এই রোগের নাম হলো সাহসের অভাবজনিত রোগ। আমাদের মিডিয়া কর্মিদের মধ্যে যারা চেতনার ব্যাবসা কিংবা ভারতের দালালি করেন না, তারাও নিজেদেরকে সুশীল প্রমানে খুব বেশি ব্যাস্ত থাকেন। “আই হেইট পলিটিক্স” মার্কা কথা বার্তা বলেন আর দায়িত্ব এড়িয়ে চলেন। ভাগ্যের পরিহাসে, গা এড়িয়ে চলতে চলতে এই মিডিয়া কর্মিরা এখন তাদের আম ও ছালা উভয়ই হারাতে বসেছেন।

দেশের নায়ক, গায়ক, সেলিব্রেটিদের বলছি। আর কতো ভাবে অপমানিত হলে বুঝবেন কেউ আপনাদের পাছায় লাত্থি দিয়েই যাচ্ছে? আর কতোবার নিজের দেশের মাটিতে, হিন্দি সিঙ্গিং ছাগলের সাথে একই স্টেজে উঠবেন?

সময় থাকতে থাকতে সাহস করে কথা বলা শুরু করুন। প্রতিবাদ করুন।

প্রতিবাদ হিসেবে হিন্দি সিঙ্গিং ছাগলদের সাথে স্টেজে উঠা বাদ দিন। দেশের সব শিল্পিরা যদি একটা সমন্বিত ভুমিকা পালন করেন, স্টেজ বর্জন করেন, তাহলে নির্লজ্জ সরকারকেও তাবেদারি করতে অনেক বেগ পেতে হবে।

দেশপ্রেম-ট্রেম গুল্লি মারেন। নিজেদের শ্রেণী স্বার্থ রক্ষার তাগিদেই চেতনার ব্যাবসার আড়ালে নির্লজ্জ হিন্দি তোষোনের যে মচ্ছব দেশে বসেছে তা রুখে দিন।''

'' গত ডিসেম্বরে যখন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বানানোর অপরাধে দর্জি দের গ্রেফতার করা হচ্ছিলো তখন রাগের বশে বলছিলাম এই দেশের মাটিতে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের “লাল-সবুজের” বদলে দাদাদের “তেরঙ্গা” উড়বে । অনেকেই সেদিন আমাদের জামাত-শিবির বলে গালি দিছিলেন!

এখন বুকে হাত দিয়া বলেনতো আজকে ঢাকা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম কে কোন ভারতের কোন প্রাদেশিক রাজধানীর স্টেডিয়াম ছাড়া অন্য কিছু মনে হইছে ?

যেভাবে আমাদের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি , ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি , সুন্দর বন , তিস্তা দাদাদের হাতে চলে যাচ্ছে ঠিক সেভাবেই আমাদের জাতীয় পতাকার বদলে দাদাদের তেরঙ্গাও একদিন এই বাংলার মাটিতে উড়বে ।কারণটা কি জানেন? আজকে যে লোকগুলা নিজেদের লিজেন্দের অপমান দেখার পর ও এতোক্ষণ ভরে স্টেডিয়ামে বসে অনুষ্ঠান দেখলো তারাই ২৬ তারিখ সবচেয়ে বেশী কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাইবার রেকর্ড ভাংতে ছুটবে ।

করপোরেট দেশপ্রেম দিয়া শো অফ করা যায় স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না

-

মাইন্ড ইট ...

বিষয়: রাজনীতি

৯৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File