কেনো সিম বায়োমেট্রিক্স রেজিস্ট্রেশন করবেন?
লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র আহমেদ ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ০৪:১৭:৪৮ বিকাল
কেনো সিম বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে নিবন্ধন করবেন, তার কিছু প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব এই লেখায় তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি'র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ তারিখ সিম নিবন্ধনের শেষ তারিখ। লেখাটি পড়ে যদি মনে হয় যে, হ্যা নিবন্ধন করা উচিত-তাহলে লেখাটি সার্থক। উল্লেখ্য, লেখাটিতে সকল বক্তব্যের বিরোধিতা করতে কমেন্টে যৌক্তিক আলোচনার আহবান রয়েছে। "
দেশের উন্নয়নের জন্য, নিরাপত্তা শক্ত করার জন্যই বায়োমেট্রিক্স সিম নিবন্ধন পদ্ধতির প্রবর্তন করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু কিছু সচেতন ব্যক্তি এই বিষয় নিয়ে বিশেষ আপত্তি তুলেছেন, তবে অবিবেচকের মতো। তারা নিজেদের গোপনীয়তা সরকারের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছেন না। বেশকিছু সংশয় তারা জানিয়েছেন এবং ঘটনা মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। আদালত বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির পক্ষ্যে রায় দিয়েছে। তাই বোঝা যাচ্ছে, ভয়ের কিছুই নাই। তারপরেও আমাদের মনে কিছু প্রশ্নের উদয় হচ্ছে। এগুলোর অস্ত যাওয়ার জন্য সরকার তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই নাই। আমি এরকম কিছু প্রশ্ন পর্যালোচনা করলে যা পাই তা হলো :
১) প্রশ্ন : যেখানে উন্নত দেশ গুলো বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির প্রয়োগ করে নাই সেখানে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বে এই পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা কী অসামঞ্জস্য হয়ে যাচ্ছে না? "
উত্তর : উন্নত দেশ গুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যরকম। আমাদের দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার তুলনা করলে চলবে না। সেসব দেশের নাগরিকদের বাসার ঠিকানা থেকে শুরু করে সকল তথ্য সরকারের কাছে এমনভাবে সংরক্ষিত আছে যে তাদের সীম নিবন্ধনের জন্য বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তির প্রয়োজন নাই। আর তাদের অপরাধের ধরণ আমাদের অপরাধের ধরণ একরকম না। তাই তাদের সাথে এই প্রযুক্তি উপযুক্ত না। আমাদের জন্য এটা উপযুক্ত তাই আমাদের প্রয়োজন।
.
২) প্রশ্ন : এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় প্রথমে পাকিস্তানের মতো রাষ্ট্রে। বাংলাদেশকে কী পাকিস্তানি রাষ্ট্র বানানোর পায়তারা করা হচ্ছে? "
উত্তর : প্রথমত, পাকিস্তানে এই প্রযুক্তি কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখি যে, পাকিস্তান বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি প্রয়োগের আগেই কুখ্যাত রাষ্ট্র ছিলো, বায়োমেট্রিক্স প্রয়োগের পড়ে না। এটা আমাদের মনে রাখা উচিত। তাহলেই প্রশ্নের অসারত্ব উপলব্ধ হবে।
.
৩) প্রশ্ন : আমার হাতের ছাপ নিয়ে কী হবে? "
.
উত্তর : প্রথমত, কারো হাতের ছাপ নেওয়া হবে না। আপনার হাতের ছাপ একটা জনাব সরকারের ডাটাবেইজ - এ সংরক্ষিত আছে। সেই সংরক্ষিত ছাপের সাথে আপনার ছাপ মিলিয়ে নেওয়ার জন্যই হাতের ছাপ নেওয়া হচ্ছে। যদি মনে করেন বায়োমেট্রিক্স হাতের ছাপ দিবেন না তাহলে NID রেজিস্ট্রেশনের সময় কেনো প্রশ্ন তুলেন নাই? তখনও তো হাতের ছাপ দিয়েছেন। তখন দিতে পারলে এখন সমস্যা কোথায়? হাতের ছাপ নিয়ে আপনাকে খুনের আসামী বানাবে এরকম গুজবে বিশ্বাস করেন? তাহলে এতবছরে সরকার কিছু করলো না কীজন্য? তারা হাতের ছাপ হারিয়ে ফেলেছেন? আসলে এসবই গুজব।
.
৪) প্রশ্ন: শুধু জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি নিলে কী হতো না? "
.
উত্তর : জনাব কাশেম তার জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেলেছেন। এটা যে হারিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না। কিছুদিন পরে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে গেলো। কারণ, তার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত হচ্ছে একটা সিম দিয়ে যা জনাব কাশেমের NID কার্ড দিয়ে নিবন্ধন করা । জনাব কাশেম নিরুপায়। " এরকমই হবে যদি শুধু NID কার্ড দিয়ে নিবন্ধন করার পদ্ধতি চালু হয়। আর যদি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে করা হয় তাহলে জনাব কাশেমকে উক্ত সীম ক্রয়ের সময় হাতের ছাপ দিতে হবে। কিন্তু জনাব কাশেমের আর ভয় নাই কারণ সে তো তার হাতের ছাপ দিয়ে সীম নিবন্ধন করে নাই। কী সুবিধা তাই না?
.
৫) প্রশ্ন : আমার হাতের ছাপ কেনো বেসরকারি কোম্পানির কাছে দেবো? তারা তো আমার হাতের ছাপ তৃতীয় ব্যক্তির কাছেও দিতে পারে। কী বলবেন?
.
উত্তর : প্রথমত, সিম কোম্পানি কোনো তথ্য স্থায়ী ভাবে সংরক্ষণ করছে না। তারা তথ্যগুলো সরকারের কাছে দিচ্ছে - এবং সরকার এগুলো যাচাই করছে। যদি তথ্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তির হস্তক্ষেপ হয় তাহলে আইন মোতাবেক উক্ত কোম্পানিকে ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হবে, এবং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। সুতরাং, আইন ভঙ্গ করে তাড়া এই কাজ করবে না। আর একটা কথা কী জানেন, আপনি যে প্রতিদিন কথা বলছেন, বন্ধুকে টেক্সট মেসেজ পাঠাচ্ছেন, আপনার প্রেমিকার সাথে একান্ত কথা বলছেন - তা সীম কোম্পানির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এইজন্য কিন্তু আপনাকে কখনো টেনশনে থাকতে হয়নি। অর্থাৎ তাদের বিশ্বাস করার সকল প্রকার কারণ আমাদের আছে। তাই নিশ্চিন্তে বায়োমেট্রিক্স নিবন্ধন করতে পারেন।
.
৬)প্রশ্ন : অপরাধীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করবে। সমস্যা তো মিটলো না।
.
উত্তর: বর্তমানে কোনো অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থা নাই যেখানে সিম ছাড়া কথা বলা যায়। অন্তত আমার জানা নাই।
.
৭) প্রশ্ন: আমার তো NID কার্ড পাই নাই। কী করবো?
.
উত্তর : আপনি যদি ১৬ বছর বয়সী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার NID কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। আমরা অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করেছি কিন্তু এখনো কার্ড হাতে পাই নাই। তাহলে আমরা কী করবো? উপায় আছে। এজন্য আপনি চাইলেই নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ত্থেকে আপনার আইডি কার্ডের একটা সফট কপি নিতে পারবেন যেটা দিয়ে আপনি যাবতীয় কাজ করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে কমেন্ট করুন। হাতে ধরে শিখিয়ে দেওয়া হছে এখানে
.
৮) প্রশ্ন: কী হবে আমাদের বায়োমেট্রিক্স সিম নিবন্ধন করে?"
.
উত্তর: আমরা কিছু কেস স্টাডি পড়বো। এগুলো সম্ভাব্য কেস স্টাডি।
.
১) কেস স্টাডি : জনাব মইনুল সাহেবের মোবাইলে একটা কল এলো। বলা হলো, আপনার সন্তানকে আমরা হাইজ্যাক করেছি। যদি সন্তানকে বাঁচাতে চান তাহলে এক্ষুনি অমুক জায়গায় মাত্র এতো টাকা নিয়ে চলে আসুন। এই নিন আপনার সন্তানের চিৎকার শুনুন। " মইনুল সাহেব মধ্যবিত্ত লোক এতো টাকা দিলে তাকে ফকির হতে হবে। তিনি পুলিশের কাছে গেলেন। পুলিশ আততায়ীর নাম্বারের ডাটাবেজ চেক করলো। বেড়িয়ে আসলো জনাব কুদ্দুসের তথ্য। এই কুদ্দুসই তাহলে এই কান্ড ঘটিয়েছে। আইডি কার্ডে কুদ্দুসের বাবার নাম পর্যন্ত লেখা আছে। পুলিশ কুদ্দুসকে ধরার আগেই কুদ্দুসের সমস্ত তথ্য জেনে গেলো। আলহামদুলিল্লাহ বায়োমেট্রিক্স এর কী গুণ ।
.
২) কেসস্টাডি : ম্যাডাম নীলু মহা বিরক্ত। তাকে এক বদমাইশ কল দিয়ে বিরক্ত করছে। আবারও কল দিয়েছে। নীলু ফোন কানে নিলো, " ভালোবাসা দিবি কিনা বল সুন্দরী। মুহাহা " নীলু ফোন রেখে দিলো। নীলু বিকালে থানায় গেলো। সাথে ওর ভাই। পুলিশ আততায়ীর নাম্বারের ডাটাবেজ চেক করে বললো, এইটা তো মফিজের কাজ। দুই মিনিটে ধইরা আনতাছি। জাস্ট ওয়েট ম্যাম। ' নীলু খুশী।
.
৩) কেস স্টাডি : জনৈক রাজনীতিবিদ হরতালে আগুন দিতে লোক ভাড়া করবেন। তিনি পলাতক। ফোনে কল করা যাবে না। ফোন দিয়ে কল করলেই ধরা খাইতে হবে। নতুন সিম কেনা যাবে না, রেজিস্ট্রেশন করতে হবে । কী যে যন্ত্রণা আসলো। বায়োমেট্রিক্স এর গুষ্টি কিলাই।
.
৪) কেস স্টাডি : জনাব হ্যান্ডসাম পোলা প্রতিমাসে একটা এবং বছরে বারোটা প্রেম করেন। প্রতিবার প্রেমিকার সাথে লিটনের ফ্লাট শেয়ার করেন। কিন্তু প্রেমিকারা তাকে আর পায় না। কারণ, প্রেমিকের শুধু নাম্বারটাই সে জানে। নাম্বার তো বন্ধ। কিন্তু তাতে কী? বায়োমেট্রিক্স আছে না? পুলিশের কাছে যান, তথ্য নিন। ধরে ফেলুন জনাব হ্যান্ডসাম কে।
.
আরও অনেক অনেক সুবিধা আছে বায়োমেট্রিক্সের যা বলে শেষ করা যাবে না। শুধু মজার মজার কয়েকটা বললাম।
.
৯) প্রশ্ন: তাহলে এতো মানুষ বিরোধিতা করছে কেনো?
.
উত্তর : কিছু মানুষ আছে বিবেচনা হীন। সরকার যা ই করে তারই সমালোচনা করতে হবেই হবে। হোক সেটা কোনো ভালো অথবা খারাপ জিনিস। তাদের কাজই এটা। আসলে তাড়া চায় ই না সরকারের দ্বারা কোনো উন্নয়ন হোক। তাই তারা এই কাজ করে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের সাথে নিজেদের মিলিয়ে ফেলবেন না। এরা তো এই পদ্ধতি চালু হলে সমস্যাতে পড়ে যাবে। তাই বিরোধিতা না করে উপায় কোথায়? উল্লেখ্য, দেশের কোনো রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দেয় নাই।
১০) প্রশ্ন : তাহলে কী সত্যিই সিম নিবন্ধন করবো? না করলে কী হবে?
উত্তর : হ্যা। আর মাত্র দুইদিন। সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিজেকে যেমন নিরাপদ রাখছেন, অপরাধীদেরও শাস্তি দিচ্ছেন। অর্থাৎ দেশের সেবা করছেন। সিম রেজিস্ট্রেশন না করলে বোঝা যাবে, আপনি দেশের উন্নয়নে পিছিয়ে আসছেন। আপনার সিমটা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এবং নিজেকে একজন একগুঁয়ে অজ্ঞলোক হিসেবে প্রমাণিত করবেন।
পুনশ্চ : আমি কোনো রাজনৈতিক ( রাজনৈতিক) পক্ষের না। একজন সাধারণ বাঙালীর একজন। দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে যা সঠিক মনে করেছি তাই লিখেছি। লেখাটি শেয়ার করার প্রয়োজন আছে মনে করলে শেয়ার করতে পারেন। চাইলে নিজের নামে শেয়ার করতে পারেন সমস্যা নাই।
.
শুভ্র আহমেদ
বিষয়: বিবিধ
১৮৩৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তারানা হালিম কোন জায়গা থেকে আইটি ডিগ্রী নিয়েছেন: ফেসবুকে ব্যারিস্টার পারভেজ আহমেদের প্রশ্ন?
খুন হয়েছে চট্রগ্রামে, আপনার বাড়ি হচ্ছে নোয়াখালী, পরদিন পুলিশ এসে আপনাকে ধরে নিয়ে গেলো, কারণ তদন্তে আপনার আঙুলের ছাপ পাওয়া গেছে, যদিও আপনি জীবনেও দেখেন নি তাকে….!
. ঢাকার পরিত্যক্ত এলাকায় একজন তরুণীর লাশ পাওয়া গেল, সাথে একটি ছুরি। সেই ছুরিতে আপনার আঙুলের ছাপ বসিয়ে আপনাকে আসামী বানিয়ে হাজতে চালান করল। আপনার ডিফেন্স কি?
. ঢাকা শহরের দশ কাঠা জমির মালিক আপনি, কয়েকদিন পর এক লোক এসে আপনার জায়গা দখল করলো, তারা বললো আপনি তাদের কাছে জমি বিক্রি করেছেন, দলিলে আপনার আঙ্গুলের ছাপ স্পষ্ট, মামলা করলেন, বাংলাদেশের
মামলা যুগ যুগ ধরে চলতেই থাকবে…..
. অথবা ধরুন আগামীতে এমন একটি আইন হলো যে ভোট হবে বায়োমেট্রিক দিয়ে। আপনার হাতের ছাপ তো ফোন কোম্পানী আর বিটিআরসি’র কাছ আছেই। ভোটের দিন আপনি বাসায় ঘুমাবেন..আর আপনার ভোট কাস্টিং হয়ে যাবে….
. ইহা কি সম্ভব?
. অসম্ভবের কিছু নাই, আপনি আপনার সর্বোচ্চ সিকিউরিটি তুলে দিচ্ছেন বিদেশী চোরদের কাছে, এই লিলিপুটদের কাছ থেকে হ্যাকিং করা কোন ব্যাপার?
. কিন্তু ম্যাডাম তারানা হালিম যে বললো আঙ্গুলের ছাপ সেভ রাখা হচ্ছেনা?
. তারানা হালিম কোন জায়গা থেকে আইটি ডিগ্রি নিছেন? বলবেন কি?
. সিম কোম্পানি গুলোর ভেরিফিকেইশন করার জন্য হলেও সার্ভারে জমা রাখতে হয়, ধরুন সিকিউরিটি লেয়ার তৈরি করা কর্পোরেট ডাটাবেইজের আড়ালে সব লুকিয়ে রাখলে, তখন যদি ম্যালওয়ার বা রুটকিটের সাহায্যে সকল ডাটাবেজ ডাউনলোড করে রাখে, সেটার খবর গভর্নমেন্ট কিভাবে নিবে?
. তাতে সমস্যা কি??
. সমস্যা না বুঝলে মুড়ি খান, এয়ারটেল যদি তাদের গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর কাছে সব তথ্য দিয়ে দেয়, গ্রামীণফোন যদি সিআইএর কাছে আপনার আঙ্গুলের ছাপ বিক্রি করে, কাল যদি ভারতে কোন হামলা হয়, কিংবা ইংল্যান্ডে আত্মঘাতী আঘাত করে কেউ, দোষটা আপনার ঘাড়ে পড়লে মোটেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই….!
. আর যদি বিদেশে নিয়মিত যাওয়া আসা থাকে, তাইলে….
(কবি এখানে নিরব)
. অথবা কেউ আপনার হাতের ছাপ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা সিম/ফোন চুরি করে নিয়ে গিয়ে কোনো হত্যাকান্ড ঘটালে…বাসায় এসে আপনাকেই চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাবে…!!
. মানুষের আঙ্গুলের ছাপ, চোখের রেটিনা এবং ডিএনএ তথ্য একান্ত ব্যক্তিগত সম্পদ। এ তথ্য নিজস্ব ও রাষ্ট্র ছাড়া কারো কাছে থাকাই নিরাপদ নয়। রাষ্ট্র শুধু এটা প্রটেক্ট করতে পারে বা স্টোর করতে পারে। ওই ডেটাবেজ থেকে যদি কেউ পেয়ে যায় তাহলে তো ডেফিনেটলি ক্রাইম।
. আঙ্গুলের ছাপ তৃতীয় পক্ষের কাছে চলে গেলে নানারকম অপব্যবহার হতে পারে। রিস্কটা হলো অন্য একটা অজানা লোক আপনাকে ইমপার্সনেট করতে পারে সে প্রিটেন্ড করতে পারে যে আপনি অমুক বা আপনি তমুক।
. কোটি কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়া বিদেশী চোর সিম কোম্পানি গুলো নিশ্চই আপনার আমার দুলাভাই লাগেনা???? (কবি আবার নিরব)
. হ্যাঁ, তারানা হালিম বলেছে আঙুলের ছাপের অপব্যবহার করলে ফোন কোম্পানির ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা…LOL যেই সিম কোম্পানি হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দেয় তারা দিবে জরিমানা…
. প্রশ্ন করতে পারেন তাইলে কি করবো? সিম তো বন্ধ করে দিবে…
. কাঁক যেমন ভাতের কাঁঙ্গাল, তেমনি মোবাইল কোম্পানি গ্রাহকের কাঁঙ্গাল। ৭ কোটির ভিতরে এক কোটি গ্রাহকও সিম বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করেনি।
. ৬ কোটি সিম বন্ধ করার মত কলিজা মোবাইল কোম্পানি গুলোর আছে???
. মাস খানেক আগে ফিলিপাইনের দ্য ফিলিপাইন্স কমিশন অন দ্য ইলেকশন্সের ওয়েবসাইট হ্যাক করে ৭ কোটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ চুরি করেছে একদল হ্যাকার, লুজসেক নামের গোষ্ঠীটি ঘোষণা দিয়েছে সরকার বেশি তেড়িবেড়ি করলে সব ইনফরমেশন প্রকাশ করে দিবে…..
. ব্যাপার না, আমাদের সরকার অনেক বেশি সিকিউরিটি সম্পন্ন, আমাদের হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা জিরো…. (!)
. কারণ আমাদের আছে ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বেতনের আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটার বিজ্ঞানী…..
. ওয়েল, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস অফিস অব পারসোনেল ম্যানেজমেন্টর হ্যাকিংয়ে মাত্র দুই কোটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ এবং সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর হ্যাক করা হয়েছিলো !
. ক্যান ইউ ইমাজিন?
. পাকিস্তান বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করেছে সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাঁচার জন্য, পরে তারাই সারা বিশ্বে ফেঁসেছে..বিশ্বের অনেক হামলায় তাদের আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া গেছে….
. বাংলাদেশের কি সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে যার জন্য আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিতে হবে?
. জানিনা আমি, জানার ইচ্ছাও নেই, কারণসামনের হত্যাকান্ড/সন্ত্রাসী হামলা গুলোতে আমার/আপনার নাম আসলেও খুব বেশি অবাক হবো না…
. হাতের ছাপ কেন? নাকের ছাপও নিক..দেশ তো ডিজিটাল হচ্ছে…
লেখাটি সুপ্রিমকোর্ট এর অাইনজীবী, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও রূপসী বাংলা অনলাইন টেলিভিশনের সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার পারভেজ অাহমেদের ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন