প্রকৌশলী মৌমাছি
লিখেছেন লিখেছেন এমদাদ ০২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:২০:৫৮ রাত
গাছ-পালার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়-ঝঞ্ঝা যখন মৌমাছির পরিচিত সকল আলামত নষ্ট করে দেয়, তখনও মৌমাছি পালনে ব্যবহৃত কাঠামোতে বিভিন্ন আকারের বহু সংখ্যক কক্ষ বানায়। এগুলোর মধ্য থেকে ছোট ছোট কক্ষ সাধারণ শ্রমিকদের এবং সবচেয়ে বড়টি হচ্ছে পুরুষ মৌমাছির জন্য। রানি মৌমাছি পুরুষদের জন্য নির্ধারিত কুঠরিগুলিতে অনুৎপাদনশীল ডিম পাড়ে, অথচ স্ত্রী জাতীয় শ্রমিক মৌমাছিও অপেক্ষমাণ রানি মৌমাছিদের জন্য নির্ধারিত কক্ষগুলোতে উৎপাদনশীল ডিম পাড়ে। আর যে সব স্ত্রী জাতীয় মৌমাছি নতুন প্রজন্মের আগমনের অপেক্ষায় দীর্ঘ দিন কাটানোর পর স্ত্রীর ভূমিকায় পরিবর্তিত দায়িত্ব গ্রহণ করে, তারা শিশু মৌমাছির জন্য খাদ্য তৈরি করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। মধু ও তার রেণু চিবানোর অগ্রিম পরিপাকের মাধ্যমে তারা এ কাজটি সম্পন্ন করে। এরপর পুরুষ ও স্ত্রী মৌমাছিদের বয়স বাড়ার পর এক পর্যায়ে তারা চিবানো ও অগ্রিম পরিপাকের কাজ থেকে অবসর নেয়। তারা তখন মধু ও রেণু ছাড়া আর কিছুই অন্যদের খাওয়ায় না। যে সকল স্ত্রী মৌমাছি এভাবে কাজ করে, তারা শ্রমিকে পরিণত হয়। রানি মৌমাছির কক্ষগুলিতে যেসব স্ত্রী-মৌমাছি থাকে, তাদের জন্য খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত থাকে চিবানো ও অগ্রিম পরিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আর এ কাজ যারা করে তারা একদিন মৌমাছিদের রানি হয়ে যায়। পরে শুধু এরাই উৎপাদনশীল ডিম পাড়ে। এই পৌনঃপুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য বিশেষ বিশেষ কক্ষ ও বিশেষ বিশেষ ডিমের প্রয়োজন হয়। অনুরূপ খাদ্য পরিবর্তনের বিস্ময়কর প্রভাবেরও প্রয়োজন হয়। আর এ প্রক্রিয়া সমূহের জন্য যা অত্যাবশ্যক, তা হলো ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করা, বাছ বিচার করে খাদ্যের কার্যকারিতা সংক্রান্ত তথ্য বাস্তবায়ন করা। এই পরিবর্তনগুলো বিশেষভাবে একটি সামষ্টিক জীবনে কার্যকর হয়, যা তাদের অস্তিত্বের জন্যই অপরিহার্য। এ জন্য যে জ্ঞান ও দক্ষতা অত্যাবশ্যক, তা এ সামষ্টিক জীবন শুরু করার পর অনিবার্যভাবে অর্জিত হয়ে যায়। অথচ এই জ্ঞান ও দক্ষতা জন্মগতভাবে কোন মৌমাছির সত্তা ও তার টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য নয়। এ থেকে বুঝা যায় যে, বিশেষ বিশেষ অবস্থায় খাদ্যের কার্যকারিতা সংক্রান্ত জ্ঞান মানুষের চেয়েও মৌমাছির বেশ। কি বিস্ময়কর পরিকল্পনা ! কে এই পরিকল্পনার ইঞ্জিনিয়ার ? বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন লোক উচ্চকণ্ঠে বলে উঠবে যে, একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ এটা করতে পারেন। অন্য কারো দ্বারা এটা সম্ভব নয়। বোকা নাস্তিকরা বলে এটা নাকি প্রকৃতি। কিন্তু প্রশ্ন, এই প্রকৃতিটা কে তৈরি করল ? এ ধরনের প্রশ্ন আর উত্তর চলতে চলতে শেষ পর্যন্ত একখানেই গিয়ে শেষ হবে, তা হচ্ছে একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন- আপনার পালনকর্তা মধুমক্ষিকাকে আদেশ দিলেন : পর্বত-গাত্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু ডালে গৃহ তৈরি কর, এরপর সর্বপ্রকার ফল মূল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উন্মুক্ত পথসমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে নিঃসৃত হয় নানাবিধ পানীয়, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার, নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সুরা নহল, আয়াত: ৬৯)
বিষয়: বিবিধ
১১৩০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ মহান
আল্লাহ মহান
আল্লাহ্ তায়ালা মধুর উপকারীতা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন-
يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
“মৌমাছির পেট থেকে বিভিন্ন রঙের সুস্বাদু পানীয় বের হয়। এতে রয়েছে মানুষের জন্য আরোগ্য। নিশ্চয় এর মধ্যে রয়েছে চিন্তাশীল জাতির
জন্য নির্দশন।” (সূরা নাহাল- ৬)
শুধু তাই নয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তিনটি বস্তুর মধ্যে আরোগ্য রয়েছে: ১) মধু পানে ২) শিঙ্গা লাগানোতে এবং ৩)
লোহা পুড়িয়ে তা দিয়ে দাগ লাগানো দ্বারা। তবে আমার উম্মতকে দাগ লাগাতে নিষেধ করছি। (বুখারী ও মুসলিম)
নবী করিম সা: আর বলেছেন, দু’টি আরোগ্য ব্যবহার করো; কুরআন এবং মধু (তিরমিজি, ইবনে মাজা, বায়হাকি)।
চিকিৎসক গন বলেন মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে সর্দি লাগা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে প্রতিদিন হালকা গরম পানির সাথে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। আসুন নিয়মিত মধু খাই কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ি শিফা লাভ করি।
শুকরিয়া সুন্দর পোস্টটির জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন