বৃটিশ পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি

লিখেছেন লিখেছেন সিংহ শাবক ২০ অক্টোবর, ২০১৪, ০৬:৪১:৫৬ সকাল

অনেক খারাপ সংবাদের মধ্যে একটি ভালো খবর পেয়ে সামান্য হলেও ভালো লাগছে । গত ১৪ অক্টোবর'১৪ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট একটি স্বাধীন ‪ফিলিস্তিন‬ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে রায় দিয়েছে । এতে হ্যাঁ ভোট পড়েছে ২৭২টি আর না ভোট পড়েছে ১২টি । যদিও আইনগত ভাবে এই ভোটের কোন বাধ্যবধকতা নেই তবুও এর নৈতিক মূল্য অনেক এবং আন্তর্জাতিক ভাবে এব প্রভাবও পড়বে ব্যাপক । একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ।

একথা সত্য যে এই বৃটেনই এক সময় অন্যায় ভাবে উসমানী খেলাফত খেকে ফিলিস্তিন দখল করে ইসরাইল নামক ক্যান্সারের জন্ম দিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্য তথা মুসলিম বিশ্বকেই অশান্ত করেছিল । তবে যাইহোক অবৈধ রাষ্ট্র ‪#‎ইসরাইল‬ আস্তে আস্তে তার সমর্থন হারাচ্ছে । উড়ে এসে জুড়ে বসা এই প্রাণীগুলো একটি প্রতিষ্ঠিত জাতির বিরুদ্ধে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে , হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করে, ঘর বাড়ি গুড়িয়ে দিয়ে , সম্পদ নষ্ট করে তারা শুধু মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধই করেনি বরং নূন্যতম মানবিক মানবতার বিরুদ্ধে কালিমা লেপন করেছে । আজ গোটা বিশ্বের লক্ষ কোটি শান্তিপ্রিয় মানুষের কাছে 'জায়নবাদ' একটি নিকৃষ্ট গালির নাম । পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের নোংরা স্বার্থসিদ্ধির জন্য জন্য আরব জাতীয়তাবাদের ধুয়া তুলে রাজতন্ত্রের মায়াজালে আরবদের মোহগ্রস্থ রেখে ইহুদী ইসরাইলকে পাশ্চাত্যের ভেকসিন দিয়ে মুসলিম বিশ্বের জন্য এক মরণ বিষফোঁড়ায় পরিনত করেছে । তবে পৃথিবীর কোন কিছুই স্থায়ী নয় । রঙিন পৃথিবী মাঝেমধ্যেই রং বদলায় । এই নির্যাতিত জনতা একসময় প্রবল শক্তি নিয়ে জেগে উঠবে । জুলুমের নাগপাশ ছিন্ন করে কৃত্রিম এ বিষফোঁড়াকে কেটে ফেলে দিয়ে তাঁরা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গোটা বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষকে উপহার দিবে ।

এই জেরুজালেমের ইতিহাস মুসলিম বীর সন্তানদের ইতিহাস । হাজার বছর ধরে তাঁরা এই পূন্য ভূমিতে বাস করে আসছে । এই জেরুজালেম মুক্ত করেছিলেন খলিফা ওমর (রা) । তারপর মুসলমানদের গাফিলতিতে তা খৃষ্টানদের হাতে চলে যায় । কিন্তু পৃথিবী রং বদলায় বলেই আবারো জেরুজালেম মুক্ত করার জন্য সালাহউদ্দিনের মত বীর সন্তানদের জন্ম হয় । মুক্ত হয় জেরুজালেম । কিন্তু পৃথিবীর রঙিন হাওয়ায় মুসলমান গা ভাসিয়ে দেয় বলেই আবারো হাতছাড়া হয় এই ভূমি । ১৯১৬সালের ১০জুন মক্কার তত্‍কালিন গভর্নর কাপুরুষ নপুংশক মুসলিম জাতির দুশমন শরীফ হোসাইন উসমানী খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে বৃটিশদের আমন্ত্রণ জানায় । ফলে ১৯১৭সালে সিরিয়া, মিশর, ফিলিস্তিন বৃটিশদের অধীনে চলে যায় । ৯ডিসেম্বর ১৯১৮ বৃটিশরা বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে নেয় । সেদিন বৃটিশ জেনারেল গুলবানী ও ফরাসি জেনারেল গোর মহাবীর সালাহউদ্দিনের কবরে পদাঘাত করে অহংকার ভরে বলেছিল , "রে সালাহউদ্দিন ! আমরা এসে গেছি । আমরা জেরুজালেম দখল করেছি । উঠে দেখ ! শক্তি থাকলে আমাদের ঠেকা .....!"

কিন্তু নদীর স্রোত বসে থাকে না । নদীর একূল ভাঙ্গে ওকূল গড়ে এটাই প্রকৃতির নিয়ম । সেদিন খুব বেশী দূরে নয় যেদিন সালাহউদ্দিনের উত্তরসূরীরা আবারো বায়তুল মুকাদ্দাসে কালেমার পতাকা উড়িয়ে বলবে, "রে জাহান্নামের কীট গুলতানী, গোর ! তাকিয়ে দেখ , আমরা আবার ফিলিস্তিন মুক্ত করেছি । তাকিয়ে দেখ, মুক্ত ফিলিস্তিনের উন্মুক্ত আকাশে ইসলামের মহান পতাকা মাথা উঁচু করে উড়ছে ..."

গোটা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ আজ শ্লোগান দিচ্ছে , "ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, জায়নবাদ নিপাদ যাক" । খোদ ইসরাঈলের শান্তিপ্রিয় নাগরিকরাও এই নিকৃষ্ট জায়নবাদের বিরুদ্ধে । গত ২অক্টোবর 'ইন্টাঃ ডে অব নন ভায়োলেন্সে' ইসরাইলী নাগরিক ড. মার্সেলো ইসভিরস্কি ফিলিস্তিনের পক্ষে 'বিডিএস মুভমেন্টের' ন্যায্যতার প্রতি সমর্থন আদায়ের লক্ষে অস্ট্রেলীয়ার নাগরিকদের সাক্ষর করা একটি পিটিশন নিয়ে অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্টে যান । এ সাক্ষর সংগ্রহ করতে তিনি প্রায় ৩০০কিমি পথ পায়ে হেঁটেছেন । একজন ইসরাইলীর পক্ষ থেকে এটি একটি বিরল উদাহরণ । আর বিডিএস মুভমেন্ট হল "বয়কট ডাইভেস্ট এন্ড স্যাঙ্কশন মুভমেন্ট"। এটি ইসরাইল বিরোধী একটি গ্লোবাল ক্যাম্পেইন । যতদিন ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে না, লঙ্ঘন করে চলবে ফিলিস্তিনিদের অধিকার, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা দিবেনা ; ততদিন ইসরাইলের বিরুদ্ধে বয়কট ও নিষেধাজ্ঞা জারি রাখতে হবে । এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য হল , ফিলিস্তিনের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের উপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়িয়ে তোলা । এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫সালের ৯জুলাই ১৭১টি ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক এনজিও এর সমন্বয়ে ।

এভাবে আজ গোটা বিশ্বে ইসরাইল বিরোধী অবস্থান মজবুদ হচ্ছে । ফিলিস্তিনের সুদিন হয়ত খুব নিকটেই । আবারো ফিলিস্তিনের প্রতিটি জনপদ প্রাণ খুলে হাঁসবে , মুক্ত জমিনে শিশুরা খেলা করবে , বিস্তীর্ণ সাগরে সাঁতার কাটবে । মুক্ত আকাশে পাখিরা উড়ে বেড়াবে । আর কোন গুলি বা বোমার শব্দে ওদের ঘুম ভাঙবে না । ওদের ঘুম ঘুম ভাঙবে মুয়াজ্জিনের সুমধুর আজানের ধ্বনিতে ...

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

276224
২০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৭:১৪
বন্যা ইসলাম লিখেছেন : মাথায় এখনো আরব্য রজনীর স্বপ্ন??
276283
২০ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : ফিলিস্তিনীরা হাসুক আমরা সেটাই চাই।
276461
২০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৫৫
সাদাচোখে লিখেছেন : চমৎকার ও সাবলীল লিখা। পড়তে ভাল লেগেছে। আপনার মত করে ভাবতে ভাল লাগছে। কিন্তু ফ্যাক্টসচু্য়াল ইভিডেন্স ও লজিক বলছে - তা হবার নয়। হতে পারেনা। সো আমি আপনার চাওয়ার সাথে একমত হলেও - অমন করে চিন্তা করতে পারছিনা। আর তাই ডিসিপটিভ বৃটিশ ও প্রতারক আমেরিকানরা যাই করুক, যাই বলুক - তাকে ১০০% প্রতারনা ছাড়া আর কিছুই মনে করছি না।

বরং আমি নিচের ফ্যাক্টস সমূহ এর মত কিছু ফ্যাক্টস ও ফিগারকে আগামীদিনের সত্য চিত্র মনে করি এবং সে অনুযায়ী মুসলিমদেরকে প্রস্তুত হতে পরামর্শ দেই ও নিজেকে প্রস্তুত পাবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
১। কোরআন বলেছে - ইয়াজুজ মাজুজ ছাড়া পেলে - দ্বিতীয়বারের মত ভূপৃষ্টে ছড়িয়ে দেয়া বনী ইসরাইলকে তিনি আবার বায়তুল মাখদিস এ জড়ো করবেন - এবং আমরা দেখেছি তা হয়েছে, হচ্ছে এবং আগামীতে তা পূর্নতা পাবে।
২। হাদীস বলছে সূর্য পশ্চিমে উঠলে দাব্বাতুল আরদ তথা ভূপৃষ্ট হতে উদঘত পশুর আবির্ভাব হবে। আমরা আমেরিকার উদয় দেখেছি ৪৫ এ আর পশুর জন্ম দেখেছি ৪৮ এ। আর গাঁজার উপর গত ২টি আক্রমন আমাদেরকে ক্লিয়ার করেছে ভূপৃষ্ঠের পশুর চরিত্র কি হতে পারে।
৩। হাদীস বলছে ইয়াজুজ মাজুজ এর লাস্ট ব্যাচ যখন সি অব গ্যালিলি অতিক্রম করবে তখন তারা তা পানিশুন্য পাবে - বর্তমানে যে হারে পানি কমছে তাতে আগামী ২৫-৩০ বছরে তা পানি শুন্য হবে - সুতরাং প্রফেসী অনুযায়ী প্যালেস্টাইন আর কোন দিন হবে না - কৃত্রিমভাবে / প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে অমন একটি ভূখন্ডের আর দরকার ও নেই। কারন পানিশুন্য সি অব গ্যালিলি - নবী ইসা আঃ কে মুসলিম দের নিয়ে তুর পাহাড়ে যেতে বাধ্য করবে।
৪। হাদীস বলছে ইউফ্রেতিস এর স্বর্ন না চুইতে কিন্তু ইতোমধ্যে না জেনে না বুঝে পুরো পৃথিবীবাসি সে স্বর্ন ধরেছে এবং তার কারনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রফেসী অনুযায়ী প্রতি ১০০০ এ ৯৯৯ মরার জন্য "মালহামা"র মুখোমুখি হয়ে আছি যা ওয়ার্ল্ড বিশ্লেষকদের ধারনা মতে ২০১৬ এর পর হিলারী ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হলে পর সংগঠিত হবে (অবশ্যই আল্লাহ ভাল জানেন) সুতরাং মুসলমানদের আর প্রয়োজন হবেনা প্যালেস্টাইনের - ওটা বাই ডিফল্ট সব সময়ের জন্যই ছিল আছে এবং থাকবে মুসলমানদের জন্য - প্যালেস্টাইনের জন্য নয়।

277558
২৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:২২
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : অনেক অনেক ভাল হয়েছে লিখাটি। আরো আরো লিখা চাই।
জাজাকাল্লাহু খাইর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File