মুসলিম জাতির কয়েকটি বড় ভুল _____________________________________
লিখেছেন লিখেছেন সিংহ শাবক ১১ মার্চ, ২০১৪, ১২:৪৭:৫১ রাত
১। (আল কুরআন) এটি হচ্ছে মানব জাতির জন্য একটি (সুস্পষ্ট) ব্যাখ্যা এবং আল্লাহ তায়ালাকে যারা ভয় করে এটি তাদের জন্য একটি সুস্পষ্ট পথনির্দেশ ও সদুপদেশ ... #আলে_ইমরানঃ১৩৮ ।
২। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, আর তোমাদের উপর আমার (প্রতিশ্রুত) নেয়ামতও আমি পূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের জন্য জীবন বিধান হিসেবে আমি ইসলামকেই পছন্দ করলাম...... #মায়েদাঃ৩ ।
৩। (হে মুসলমানেরা) তোমাদের জন্য অবশ্যই আল্লাহর রাসূলের (জীবনের) মাঝে (আনুকরনযোগ্য) উত্তম আদর্শ রয়েছে...... #আল_আহযাবঃ২১ ।
*** আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, এ দুটি জিনিস আকড়িয়ে ধরলে তোমরা কখনই আবহেলিত হবে না; আর তা হল কুরআন ও সুন্নাহ......#তিরমিজি ।
চরম বৈরী পরিবেশে নবী মুহাম্মদ (স) ইসলামের সুমহান বাণী প্রচার করে তিনি কিছু সোনার মানুষ তৈরী করেছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পৃথিবীর সর্বপ্রথম কল্যাণ সমাজ । অশান্ত পৃথিবীর উত্তপ্ত তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ পঙ্গপালের মত কল্যান সমাজের সুশীতল ছায়ার নিচে আশ্রয় নিতে লাগল। মহাম্মদের (স) অনুসারীরা এই শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিল গোটা বিশ্বময়। মানুষ পেল সঠিক পথের দিশা। মুসলমানেরা গোটা বিশ্বের মানুষের মন জয় করে মর্যাদার উচ্চ আসনে আসীন হল। পৃথিবীকে উপহার দিল জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, আর্ট কালচার সহ নানা সভ্যতা । মানুষ সন্তুষ্ট চিত্তে মুসলমানদের নেতৃত্ব মেনে নিল। অর্ধ জাহান দাপিয়ে শাসন করল মুসলমানরা। কিন্তু যে জিনিস যত ভালো তার নকল বের হয় তত তাড়াতাড়ি। মুসলমানরা আস্তে আস্তে তার মূল প্লাটফর্ম থেকে সরে আসতে লাগল। তাদের গ্রাস করল আভিজাত্য, মদ, নারী, দুনিয়ার রঙ্গমেলা । সে ভূলে গেল তার মূল অস্তিত্বকে, নিজের জাতীয় কৃষ্টি কালচার থেকে চলে আসল বহু দূরে। নিজের অস্তিত্বকে বিসর্জন দিয়ে তারা গ্রহন করল বিজাতীয় কৃষ্টি কালচার, আদর্শ, সংস্কৃতি ও চেতনা। পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে তারা উন্মত্ত পাগলের মত নাচতে লাগল। ফলে পৃথিবী তাকে ছূড়ে ফেলে দিল। সাধারণ মানুষ তাদের উপর আস্থা হারাল। আধঃপতনের চরম সীমায় পৌছতে পৌছতে আজ তারা পৃথিবীর সর্বত্রই নির্যাতিত, নিস্পেষিত, পদদলিত। মুসলিম জাতীয় চেতনার কোমড় ভেঙ্গে সে আজ প্যারালাইজড । মুসলমানদের এই করুণ পরিনতির দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় তাদের কয়েকটি বড় ভুলের কারণে তারা আজ অধঃপতিত।
প্রথমতঃ কুরআনকে মুসলমানরা শুধুমাত্র ধর্মীয়গ্রন্থ হিসেবে গ্রহণ করেছে। অথচ কুরান হল মুসলমানদের সংবিধান। চলার পথের পথপ্রদর্শক। পারিবারিক জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত সকল কিছুর সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে আল কুরান। কিন্তু মুসলমানরা এই সংবিধানকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারা গ্রহণ করেছে অন্য কোন মানব রচিত সংবিধান ।
দ্বিতীয়তঃ ইসলামকে মুসলমানরা শুধুমাত্র ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারা ইসলামকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে নাই। অথচ ইসলাম হল পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। এই আদর্শ দিয়ে যদি মুসলমানরা তাদের জীবন এবং চলার পথকে রাঙিয়ে দিতে পারত তাহলে তাদের অন্য আদর্শ গ্রহণ করতে হত না। বরং অন্যরাই তাদের অনুসরন করত, যা ইতিহাস থেকে প্রমাণিত ।
তৃতীয়তঃ মুহাম্মদ(স) কে মুসলমানরা শুধুমাত্র ধর্ম প্রচারক হিসেবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারা তাঁকে আদর্শিক নেতা হিসেবে গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁর ক্যারেশমেটিক নেতৃত্বের গুনাবলীকে মুসলমানরা অনুসরণ করতে পারেনি। ফলে অধঃপতনের চূড়ান্ত সীমায় তারা উপনিত হয়েছে ।
সুতরাং মুসলমানরা যদি তাদের হারানো সোনালী অতীতকে ফিরিয়ে আনতে চায় তবে তাদেরকে অবশ্যই আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূলূল্লাহ (স) প্রদর্শিত আদর্শিক বিধানকে পূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং বর্তমান প্রগতিশীল অগ্রসরমান পৃথিবীর বাসিন্দার চাহিদাকে পর্যবেক্ষণ করে এগুলোর গুরুত্ব তাদেরকে বুঝাতে হবে। অন্যথায় বিশ্ব নেতৃত্ব ফিরে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই ......
বিষয়: বিবিধ
১২৯৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন