কোরআন অর্থ বুঝে পড়া জরুরী
লিখেছেন লিখেছেন টুটুল মাহমুদ ১৭ মার্চ, ২০১৪, ১১:৫৯:৫২ সকাল
এক সাহাবী একদিন রাসুল সা: কে বললেন ' ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাকে এমন একটি দোয়া শিখিয়ে দিন যা আমি সকাল সন্ধ্যা ( সব সময়) পড়ব। রাসুল সা: বললেন "তুমি পড়- লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, লাশারি কালাহু, লাহুল হামদ ওয়া লাহুল মুলক ওয়া হুয়া আলালা কুল্লি শাই-ইন ক্বাদির।"
সাহাবী একটু চুপ করে থেকে বললেন এতো সব আল্লহর জন্য হলো! আমার জন্য কি হলো? রাসুল সা: তখন বললেন ঠিক আছে তুমি এই দোয়া পড়। "আল্লাহুম্মাগ ফিরলি, ওয়ার হামনি, ওয়ার জুকনি, ওয়াহদ্বীনি ওয়া আ'ফিনি। সাহাবী এবার খুশি হয়ে গেলেন, বললেন ঠিক আছে আমি দুটি দোয়াই পড়ব।"
আমরা কি সবাই বুঝতে পারছি প্রথম দোয়াটি শুনে সাহাবী কেন বললেন এতো সবই আল্লহর জন্য? আর পরের দোয়া শুনে খুশি হয়ে বললেন আমি দুটিই পড়বো?
প্রথম দোয়াটির অর্থ - "আল্লহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। তিনি এক, তার কোন শরীক নাই। সমস্ত প্রশংসা তার, সকল রাজত্ব ও সার্বভৌমত্ব তার। এবং তিনি সকল কিছুর উপর পরাক্রমশালী। " এ জন্যই দোয়াটি শুনে বলেছিলেন সবইতো আল্লহর জন্য হলো।
আর দ্বিতীয় দোয়াটির অর্থ - "আল্লাহ্ আমাকে মাপ করো, আমাকে দয়া করো, আমাকে রিজিক দান করো, আমাকে হেদায়েত দেখাও এবং আমাকে সুস্থতা ও সচ্ছলতা দান করো।"
আহ! কি সুন্দর দুটি দোয়া, পড়লেই মন ভরে যায়। সাহাবীদের ভাষা ছিল আরবী, এ জন্য তারা শুনেই বুঝতে পারতেন এবং মন ভরাতে পারতেন। আমরা কি আরবী শুনে সব বুঝতে পারি! মন ভরবে কিভাবে? সারা জীবন কোরআন হাদিস পড়েই গেলাম কিন্তু গলার নিচে একটি আয়াতও নামলোনা, কি লাভ এমন পড়া পড়ে???
আমাদের হুজুরেরা শিক্ষাদেন কোরআনের একটি হরফে এত এত নেকি। আমরা শুধু নেকি জোগাড়ে ব্যাস্ত আছি। জানিনা আল্লাহ আমাদের কিভাবে নেকি দিবেন। ধরেন, আপনার বাসার কাজের মেয়েকে বাইরে যাবার আগে আপনি লিস্ট করে দিয়ে জান সে কিকি কাজ করবে। লিস্ট দেখে দেখে যেন সে কাজগুলো ঠিক মত করতে পারে। আপনি লিস্ট দিয়ে তাকে বললেন, তোমাকে যে লিস্ট দিছি প্রতিদিন এই কাজ গুলোই তুমি করবে। আর আজ সারাদিনে তুমি যদি এই লিস্ট টা মুখস্থ করে ফেলতে পারো তাহলে আমি বাসায় ফিরে তোমাকে ৫০ টাকা পুরস্কার দিব। আপনি চিন্তা করেছেন তার যদি মুখস্থ থাকে তাহলে কাজের সুবিধা হবে, বারবার লিস্ট দেখতে হবেনা। আপনি যথারীতি দিন শেষে বাসায় ফিরে দেখলেন আপনার কাজের মেয়ে কোন কাজ করেনি। সারাদিন বসে ঐ লিস্ট মুখস্থ করেছে। আর আপনাকে দেখে হাসি মুখে বলল আম্মা আমার ঐটা মুখস্থ হয়ে গেছে। আমার ৫০ টাকা দেন। এখন আপনি তাকে কি করবেন? কথা দেওয়া অনুযায়ী টাকাটা হাসি মুখে দিয়ে দিবেন নাকি বকাঝকা করবেন কোন কাজ না করার জন্য? আপনি তাকে মুখস্থ করতে বলেছিলেন কাজের সুবিধার জন্য, কাজ না করার জন্য না।
ঠিক তেমনি, হাফেজদের অনেক মর্যাদা আল্লহতায়ালা দিয়েছেন। কারন যে ব্যাক্তির কোরআন মুখুস্থ থাকবে তাঁর সব সময় মনে থাকবে আল্লহর আদেশ নিষেধ এবং সে অনুযায়ী সে তাঁর কাজ করতে পারবে। কয়জন কোরআনের হাফেজ আমাদের আছেন যারা অর্থ বোঝে? এ কারনে আমাদের কোরআন পড়ার সাথে এর অর্থ জানাটা জরুরী, যেন আমরা মুখস্থ করার পুরষ্কার নিতে যেয়ে কাজে গাফলতি না করে ফেলি। আল্লাহ্ আমাদের অর্থ সহ কোরআন হাদিস পড়ার তৌফিক দিক, আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটা পড়ে দেখতে পারেন
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন