মিডিয়া ও ইসলাম বিরুধী প্রচারনা
লিখেছেন লিখেছেন টুটুল মাহমুদ ১৬ মার্চ, ২০১৪, ০৪:৪৮:০২ বিকাল
আমাদের দেশের মিডিয়া মুক্তিযুদ্ধের ছবি বানাতে গেলেই মনে হয় একটা সুযোগ পেয়ে যায় ইসলাম বিরোধী প্রচারনা চালাবার। আজ ইউটিউবে একটি মুক্তিযুদ্ধের ছবির সিকোয়েন্স দেখছিলাম আর অবাক হচ্ছিলাম। এই সব নাস্তিকগুলো এত সাহস কিভাবে পেল সরাসরি বোরখা নিধোন কর্মসূচী চালাবার? যেখানে ইসলাম পর্দাকে ফরজ করেছেন সেখানে তাঁরা পর্দাকে ছুড়ে ফেলে দেবার শিক্ষা দিচ্ছে! আসুন ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের সিকোয়েন্সটা একটু দেখে আসি। সাথে আমাদের কথাগুলোও যোগ করি।
ছবির নামঃ কারিগর
কাহিনী, সম্পাদনা, পরিচালনাঃ আনোয়ার শাহদত
প্রধান অভিনেত্রীঃ রোকেয়া প্রাচী
প্রযোজকঃ চ্যানেল আই
প্রাচী একটি গ্রামের রাস্তা ধরে হেটে যাবার পথে একটি বোরকা পড়া মেয়ের সাথে দেখা -
প্রাচীঃ আপনি কি মহিলা, তা বোরকা পড়া থাকলে পুরুষ না মহিলা বুঝবো কেভাবে?
[[ কত বড় বদমাইশ চিন্তা করেন। আমাদের দেশে পুরুষেরাও এখন বোরখা পড়ে রাস্তায় চলা ফেরা করে, যার কারনে সে বুঝতে পারছেনা এটি মেয়ে নাকি পুরুষ!!! ]]
মেয়েটিঃ পুরুষ মানুষ কি বোরকা পড়ে?
প্রাচীঃ পড়ে, ফেরারী আসামীরা পালিয়ে যাবার সময় বোরখা পড়ে।
[[দেখেন প্রাচীর এই ডায়ালগটা, সে বলতে চাচ্ছে বোরকা হলো ফেরারী আসামিদের জন্য, তুমি মেয়ে কেন পরেছো? ভাগ্যিস বলে নাই, আমি প্রাচী যখন পতিতালয়ে যাই তখন এটা ব্যবহার করি। তুমি এখন এটা পরেছো, তুমি কি অখনে যাচ্ছো?]]
মেয়েটিঃ আমি পুরুষও না, অপরাধীও না, আবার পালাইওনা।
প্রাচীঃ বোরখার পর্দা না খুললে বুঝবো কি করে পুরুষ না মহিলা
[[সিকোয়েন্সের প্রথম ডায়লগটা এখানে এসে আবার রিপিট করানো হলো। এতক্ষন কথা বলেও, মেয়ের কণ্ঠ শুনেও প্রাচীর সন্দেহ যায় নাই, যার সাথে কথা বলছে সে মহিলা নাকি পুরুষ? তাঁরমানে মুল উদ্দেশ্য ছিল বোরকা খোলার ব্যাবস্থা করা ।]]
এই কথার পর মেয়েটি নেকাপ সরিয়ে ফেলল
প্রাচীঃ বাহ, কি সুন্দর মেয়ে। বোরকায় নিজেকে ঢেকে রেখেছো কেন?
[[কতবড় স্পর্ধা থাকলে এমন ডায়ালগ ছবির পরিচালক, প্রযোজক ও শিল্পী বলার সাহস পায়! মেয়েটিকে বলা হলো তুমিতো অনেক সুন্দর, তুমি কেন নিজেকে ঢেকে রেখেছো? তারমানে সে বলতে চাইলো যারা অসুন্দর তাঁরা বোরকা পড়তে পারে। অথচ এটি যে ইসলামে ফরজ করা হয়েছে সেটা বাদ দিয়ে সুন্দর অসুন্দরের কথা বলে মেয়েদের বোরকার বাইরে নিয়ে আসতে চাচ্ছে।]]
মেয়েটিঃ আপনিও দেখতে অনেক সুন্দর, পরীর মতন, শহুরা পরী।
প্রাচীঃ তুমিও পরী, বোরকা ঢাকা পরী। আমারতো কোন বোরকা নেই, তোমারটা দেবে? খোল পড়ে দেখবো।
মেয়েঃ আপনি বোরকা পড়বেন?
এ বলে মেয়েটি তাঁর বোরখার উপরের অংশ রাস্তায় দাড়িয়েই খুলে ফেলল, প্রাচী সেটি মাথায় দিল।
[[কাহিনী দাড় করাতে চেয়েছে বোরকা খুলে ফেলা হবে। যার কারনে বলানো হচ্ছে আমি বোরকা পড়ে দেখি, তুমি খোলো। মেয়েটিকে দিয়ে রাস্তার মাঝে বসে সম্পূর্ণ বোরখা খুলে বোঝাতে চাইলো যারা বোরকা পড়ে এটা তাঁদের কাছে কোন বিষয় না। যেকন সময়, যেকন স্থানে তাঁরা ঐটা খুলে ফেলতে পারে।]]
চোখ মুখ বেকিয়ে বেকিয়ে সে ওটা পরিধান শেষ করে জিজ্ঞেস করে-
প্রাচীঃ দেখতো আমাকে কেমন লাগছে? পরীর মতন, শহুরে পরী? ডায়লগটা একটু ব্যাঙ্গ করে।
মেয়েঃ সত্য কথা বলব।
প্রাচীঃ অবশ্যই সত্যি কথা বলবে ...
মেয়েঃ আপনাকে পেত্নীর মত লাগে।
[[চিন্তা করেন, ইবলিশের সিয়ানা বাজি কাকে বলে! ছবিতে বলতে চাচ্ছে যে বোরকা পড়ে সে নিজেকে দেখতে পারেনা তাকে কেমন লাগছে। ঠিক এখানেও যে মেয়েটা বোরকা পড়ে ছিল তাকে দিয়ে আগেই বলিয়ে নিয়েছে প্রাচী দেখতে পরীর মত, আর এখন সেই পরীকে বোরকা পড়ার পরে পেত্নীর মত লাগছে। তোমরা যারা বোরকা পড় সবাইকে অনেক কুৎসিত লাগে!!! কিন্তু তাঁরা যদি বোরকা না পড়তো তাহলে পরীর মত সুন্দর লাগতো।]]
প্রাচীঃ পেত্নীর মত, হা হা হা , (অনেক খুশি)
[[প্রাচী এখানে হাসিটা দিল একেবারে বিজয়ীর মত। বুঝাইতে চাইলো- কিরে মেয়ে, আগে বললি পরীর মত, আর এখন বোরকা পড়ে লাগছে পেত্নীর মত। তাহলে তুমি যে এত সুন্দর অথচ তোমাকেও পেত্নীর মত লাগতেছে।]]
মাথা থেকে বোরখার উপরের অংশ খুলে প্রাচী হাতে নেয়-
প্রাচীঃ বোরখাটা ফেলে দিলে কেমন হয়?
এর পর সে বোরখাটা নর্দমায় ফেলে দিয়ে দুজনে হাটা শুরু করে।
এইবার সিকোয়েন্সের আসল মোজেজা পাওয়া গেল। মুল উদ্দেশ্য ছিল বোরকাকে অপমান করা। তাঁরা সেই বোরকাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গোটা মুসলিম জাতিকে উপমান করলো। একটি মুসলিম প্রধান দেশে থেকে কোন স্পর্ধায় তাঁরা এই দুঃসাহস দেখায়? অনেক সময় পেড়িয়ে যাচ্ছে। এখনও যদি আমরা এর প্রতিরধের ব্যবস্থা না নেই তাহলে এরা আমাদের মা বোনদের কে উলঙ্গ করে ছাড়বে। স্লো পয়জনিং এর মাধ্যমে শুরু করেছে এই অভিযান, সিনামা নাটকের আড়ালে চলছে নাস্তিকতার প্রচার। এগুলো বন্ধের এখনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।
ভিডিও দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুনঃ
https://www.facebook.com/photo.php?v=643654795671300&set=vb.100000803552462&type=2&theater
বিষয়: বিবিধ
১৫৪৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অবশ্যই বিকল্প তৈরী করতে হবেই। সেই প্রচেষ্টা কোথায়?
আবার প্রাচী যখন ঠিক ঐ হিজাবটিই মেয়েটি হতে নিয়ে অর্ধমাথা কভার করে পরলো তখন মেয়েটি তাকে বললো, 'আপনাকে পেত্নীর মত লাগে'।
তার মানে বরং প্রমানিত হয়, হিজাব মেয়ে দুটির সৌন্দর্য হ্রাস বৃদ্ধি করেনি। সৌন্দর্য হ্রাস বৃদ্ধি হয়েছে পরিচালকের বিবেক ও বুদ্ধির সীমাবদ্ধতার কারনে।
তাহলে বলুন এমন অথর্ব পরিচালক এর কাউন্টার করা কি আমাদের জন্য উত্তম হবে, নাকি যারা এদের জন্ম ও বিকাশের পেছনে ছাড়পত্র দিচ্ছে সেই রেগুলেটরদের লিডার এর পেছনে আমাদের কাউন্টার ক্যাপাসিটি নিয়োগ করা উত্তম হবে?
সুতরাং আসুন এ সব সাইকিদের কে আমরা উদাহরন হিসাবে দাঁড় করাই আর তাদের ব্যাকারদের যথাযথভাবে ফেইস করি।
সেই সাথে অবশ্যই আমাদের দরকার পার্ট অব দাওয়াত হিসাবে যথাযথ তথ্যসম্পন্ন প্রোডাকশান নিশ্চিত করা - যাতে তথ্যাভাবে কেউ প্রতারিত না হয়।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন