ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না।

লিখেছেন লিখেছেন ফেলানীর ছোট ভাই ০৪ নভেম্বর, ২০১৪, ০৬:৫৬:৫০ সন্ধ্যা



আজ ১০ই মহররম। পবিত্র আশুরা। প্রতি বছর মহররম মাসের আগমনি বার্তা মুসলমানদের হৃদয়ে জাগিয়ে জাগিয়ে তোলে কারবালার সেই ভয়ংকর চিত্র। ১০ই মহররম যেন মনে করিয়ে দেয় বেদনার ভারাক্রান্ত ঐতিহাসিক ঘটনাবহুল কারবালার মরুপ্রান্তরের সেই মর্মান্তিক র্দূশ্যপট। ইয়াজিদের সেই বর্বর নিষ্ঠুরতম ঘটনার কথা স্বরন করলে আজো মুসলিম উম্মাহ’র প্রতিটি মানুষের গায়ের লোম শিউরে ওঠে। ৬১ হিজরীর আজকের এই দিনে আমাদের প্রিয় নবী বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ ( সা.) এর কলিজার টুকরো এবং অতিপ্রিয় দৌহিত্র ও নবী কন্যা খাতুনে জান্নাত "মা" ফাতেমা (রা: ) আদরের দুলাল, বেহেস্তবাসী যুবকদের সর্দার হযরত ঈমাম হোসাইন বিন আলী (রা: ) উনার সাথীদের নিয়ে কারবালার মরুপ্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মম ভাবে শাহাদাৎ বরন করেন। ইসলামের ইতিহাসে ঐদিন ইয়জিদরা সূচনা করেছিল কলংকজনক এক অধ্যায়। এইদিন ইয়াজিদের ও সিমারের অপকৌশল এতটাই নির্মমতম এবং পৈশাচিক ছিল যে এই পৈশাচিকতার বর্ণনা করতে গিয়ে আমাদের মুসলিম ঐতিহ্যের কবি,জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর মহররম কবিতায় লিখেছেন

নীলসিয়া আস্মান লালে লাল দুনিয়া,-

‘আম্মা! লা’ল তেরি খুন কিয়া খুনিয়া।’

কাঁদে কোন্ ক্রন্দসী কারবালা ফোরাতে,

সে কাঁদনে আঁসু আনে সীমারেরও ছোরাতে।

রুদ্র মাতম্ ওঠে দুনিয়া-দামেশ্কে-

‘জয়নালে পরালো এ খুনিয়ারা বেশ কে।’

‘হায় হায় হোসেনা,’ ওঠে রোল ঝঞ্ঝায়।

তল্ওয়ার কেঁপে ওঠে এজিদেরো পঞ্জায়।

সেই ইয়াজিদ ও সিমারের উত্তরসূরিরা এখনও ইসলামের বিধানের বিরুদ্ধে পাহারসম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তাই আমাদের ঈমান ও আক্বিদা রক্ষায় ইয়াজিদের দোশরদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ইহা ছাড়াও এ দিবসটি মুসলমানদের জাতীয় জীবনের সাথে ঐতিহ্যগত ভাবে জড়িত।এই দিনে বহু ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বিধায় মুসলিম জাতির কাছে আশুরার গুরুত্ব অপরিসীম। হাদিস শরিফে এসেছে, এ দিবসটি মহান আল্লাহর কাছে বছরের অন্যান্য সব দিবস থেকে অপেক্ষাকৃত বেশী মর্যাদাবান। এ দিনে রোজা রাখার জন্য হাদিস শরিফে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর আগে বা পরে আরো একটি রোজা রাখার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে, যাতে ইহুদি জাতির সংস্কৃতির সাথে মুসলিম সংস্কৃতি একাকার হয়ে না যায়। পবিত্র আশুরার দিনে মহান আল্লাহ ভূমণ্ডল, নভোমণ্ডল, সূষ্টি করেছেন। আজকের এ দিনেই হজরত আদম (আঃ ) ও হজরত হাওয়া (আঃ )-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। জান্নাত-জাহান্নামও এ আজকের এই মহান পবিত্র দিনে আল্লাহর তরফ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। আশুরার দিনেই বাবা হযরত আদম (আঃ ) ও মা হযরত হাওয়া (আ.)-এর আল্লাহর আরশে তওবা কবুল হয়েছিল। আজকের দিনে হজরত ইদ্রিস (আঃ )-কে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়। হজরত ইব্রাহিম (আঃ )-এর পূথিবীতে আগমর হয় এই দিনে । আজকের এই পবিত্র দিনে হজরত ইব্রাহিম (আঃ )জালিম নমরুদের বিশাল অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং খলিলুল্লাহ উপাধিতে ভূষিত হন। হজরত মূসা আঃ ৬ লক্ষাধিক বনি ইসরাইলের সাথে নিয়ে সদলবলে লোহিত সাগর পার হয়ে এ দিনে জালিম ফেরাউন থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন। এগুলো ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাবগম্ভীর্ ঘটনার স্বাক্ষী আজকের এই পবিত্র আশুরার দিন। আমরা যেন পবিত্র আশুরার ত্যাগের মহিমায় অনুপ্রাণীত হয়ে ব্যক্তিগত জীবনে শিক্ষা গ্রহন করে বাতিলের পথ উপেক্ষা করে আল্লাহ প্রদত্ত রাসূল (সা: )প্রদর্শিত হ্বক পথ অনুসরন করে আমাদের জীবন পরিচালিত করতে পারি। হে আল্লাহ আজকের এ পবিত্র আশুরার দিনে আমাদেরে এই তৌফিক এনায়েত করুন। আমীন।

বি:দ্র: তথ্য সক্রান্ত কোন ভুল থাকলে ক্ষমা প্রার্থী।

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

281189
০৪ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৯
মামুন লিখেছেন : লিখাটি পড়লাম। ভালো লেগেছে। ভালো লাগা রেখে গেলাম। ধন্যবাদ।
০৪ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৬
224779
ফেলানীর ছোট ভাই লিখেছেন : শুকরিয়া! আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
281196
০৪ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৬
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : ত্যাগের প্রয়োজন আছে । আর ক্রন্দনেরও প্রয়োজন আছে । কারণ এই দিন জান্নাতে যুবকদের সর্দার শাহাদাত বরণ করেছেন ।

বাস্তব জীবনে আমরা অনেক ঘটনাতেই আলোড়িত হই ও শোক প্রকাশ করি । যেমন : এই দুই ছবি তার বড় প্রমাণ ।






বাংলা সাহিত্যে ১০ ই মহররম নিয়ে বিশাল মার্সিয়া সাহিত্য গড়ে ওঠেছে । এসব কি এমনি এমনি গড়ে ওঠেছে ।

জান্নাতের যুবকদের সর্দার শহীদ হয়েছে । তার জন্য শোক করা যাবে না । আর তিনি কীভাবে শহীদ হয়েছেন - তা আলোচনা করা যাবে না । যারা এমন কথা বলছেন তারা কি আদৌ মুসলিম কি না সন্দেহ । অথচ তারা নিজেরােই শোক দিবস পালন করেন । এমন শোক দিবস পালন করার দলীল তারা কুরআন হাদিস ঘেটে দিতে পারবেন না । যেমন : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালের ঘটনা নিয়ে জামায়াত শিবিরের শোক মিছিল ও শহীদ দিবস পালন ।


নিশ্চয়ই এরা মুয়াবিয়া ইয়াজিদের জারজ বংশধর। তাই তো তাদের সেফ করতে বা সঠিক ইতিহাস ঢেকে রাখার জন্য এসব ইসলাম বিরোধী রাজতন্ত্রের দালালেরা মরিয়া হয়ে উঠে ।

মুয়াবিয়া ইসলামের খিলাফত ধংষ করে ৯০ বছরের উমাইয়া রাজতন্ত্র কায়েম করেছিল। এই সেই মুয়াবিয়া যে ইসলাম এর বৈধ খলিফা আলি (রা.)- এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৪৫ হাজার মুসলিম দের হত্যা করেছিল।

( বৈধ খলিফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা কুফুরি) ।

এই মুয়াবিয়া যে ইমাম হাসানের সাথে চুক্তি করেছিল তার মৃত্যুর পর ইমাম. হোসেন রা.- কে খলিফা করা হবে।

অথচ তিনি (শহীদদের সর্দার আমীর হামজা রা. - এর কলিজা চিবিয়ে খাওয়া মহিলা হিন্দার পুত্র হলেন মুয়াবিয়া )ওয়াদা ভংগ করে তার পুত্র ইয়াজিদকে পরবর্তী খলিফা মনোনিত করে যায়।



এই ঘটনা ও তার পরবর্তী ইতিহাস পড়া ও পঠণ জামায়াত - শিবির , আহলে হাদিস ও ওহাবী সম্প্রদায় নিষিদ্ধ ঘোষনা করার পায়তারা করছে ।



এই মন্তব্য লেখার পর আমাকে শিয়া ঘোষনা করে গালি গালাজও করতে পারে ।

উল্লেখ্য আমি শিয়া নই । বাংলাদেশের প্রচলিত ইসলাম অনুসরণ করি । প্রচলিত ইসলাম বলতে হানাফী মাজহাবকে বুঝাচ্ছি ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File