বসুমতি, কেন তুমি এতই কৃপণা?
লিখেছেন লিখেছেন ফেলানীর ছোট ভাই ১৭ মে, ২০১৪, ০৩:২৪:২৩ দুপুর
কত খোঁড়াখুঁড়ি করি পাই শস্যকণা।
দিতে যদি হয় দে মা, প্রসন্ন সহাস—
কেন এ মাথার ঘাম পায়েতে বহাস।
বিনা চাষে শস্য দিলে কী তাহাতে ক্ষতি?
শুনিয়া ঈষৎ হাসি কন বসুমতী,
আমার গৌরব তাহে সামান্যই বাড়ে,
তোমার গৌরব তাহে নিতান্তই ছাড়ে....
আমার এস এস সি পরীক্ষার সারাংশ সারমর্ম এর প্রস্তুতির জন্য শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লিখা কবিতার লাইন গুলো পড়েছিলাম এখনও চোখে ভাসছে। কিন্ত কখনও এর মূলভাবটি বাস্তবে উপলদ্ধি করিনি। কিন্ত কেন জানি আজ এর মূলভাবটি উপলদ্ধি করার প্রচন্ড পরিমান আগ্রহ মনে তাড়া দিচ্ছে.
আজ প্রকাশিত হল এদেশের ১৪ লাখের কিছু বেশি কিশোর কিশোরীর বহুল কাংখিত জীবনের ভীত্তি স্থাপনের প্রথম ধাপ এস এস সি ও সমমাননা পরীক্ষার ফলাফল। এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৩৩১ জন।জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ২৭৬ জন শিক্ষার্থী। রেকর্ড পাসের হার ৯১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। কমলমতি শিক্ষার্থী ভাই বোনেরা হয়তো তাহাদের স্বপ্নগাথা সাফল্যে বহু উচ্ছ্বাসিত। সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয়ও এই সাফল্য সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে চলমান গনতন্ত্রের ন্যায় অর্জিত মাইলফলক বলে কথার ফেনা উড়াবেন সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই। র্কিন্ত প্রিয় ভাই ও বোনেরা মাফ করবেন অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি আপনাদের এই সাফল্যে আপনারা যত বেশী উদ্ভাসিত আমি তার চেয়ে অনেক বেশী শঙ্কিত (যত সম্ভব আপনাদের প্রিয় অভিবাবক মহোদয় গনও)। খুব অল্প শিক্ষার্থী বুকে সাহস নিয়ে বলতে পারবেন যে আমার এই সাফল্যে কোন ধরনের চুল পরিমান থুঁত ছিল না। যাদের এই সৎ সাহস আছে তাদের আন্তরিক মুবারববাদ। শিক্ষার্থীদেরই কি আর দোষ। মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি হলে তো তার স্বাদ কম কম বেশী সবাই ভোগ করবে। আর বিবেক দিয়ে ভালো মন্দ বিচার করার কতটুকু পরিপক্বতা ১৪/১৫ বছরের একজন ছেলে মেয়ের আছে?
কিন্ত যে কুলুর বলদ গুলোর ব্যার্থতার কারনে এই ধরনের অপকর্ম প্রায় প্রতিটি পরীক্ষায় ঘটে যাচ্ছে (শুধু মাত্র এস এস সি আর এইস এস সি না, ভাসির্টি ভর্তি থেকে শুরু করে বিসিএস সহ) দিন শেষে তারই তো মিডিয়ার সামনে নিজেদের সফল হিসাবে জাহির করতে ব্যাস্ত। আসলে বাস্তবতা হল প্রতিটি পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র যে উম্মোচিত হয়েছিল তা বৃথা যাই নাই তার বাস্তব প্রতিফলন হল এই ফলাফল। প্রশ্ন হল এর কত ভাগ শিক্ষার্থী যৌবনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত এই সাফল্যে উদ্ভাসিত হাসি মুখ ধরে রাখতে পারবেন? যে শিক্ষার্থী ৫০০/ ১০০০ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার আগের দিন রাতে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে সকাল বেলায় হবহু সেই প্রশ্নপত্রের পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে পাওয়া সাফল্যে দেশ ও জাতির জন্য ভবিষ্যতে সে কি ই বা করতে পারবে? চুরি করে পাওয়া সাফল্যে কর্ম জীবনে প্রবেশ করে সে কি করে সততার পরিচয় দিবে? এই ১৩ লক্ষ থেকে যারা অল্প কিছুদিন পরেই যখন শ্রান্ত, ক্লান্ত হয়ে পড়বে, হটৎ করে তড়িৎ গতি থেকে কচ্ছপ গতিতে চলতে বাধ্য হবে তাদের জন্য বিকল্প কোন রাস্তা সাফল্যের ফেনা উড়ানো কারীদের খোলা আছে কি?.... এর সংশিস্নষ্ট কর্তব্যরত ব্যাক্তিরা কি কোন জবাব দিবেন?
বিষয়: বিবিধ
২৭১২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন