বাংলাদেশে ছাত্রসন্ত্রাস-তথ্যসন্ত্রাস
লিখেছেন লিখেছেন ছাত্রসন্ত্রাস তথ্যসন্ত্রাস ০৮ মার্চ, ২০১৪, ০৯:৪৭:১৩ রাত
বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার সবচে বড় ও প্রধান কারণ হচ্ছে-দেশের সর্বস্তরে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি আর দলভিত্তিক ও ছাত্রসন্ত্রাস! এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সর্বপ্রথম এসবের নির্মূল তাই অত্যন্ত জরুরি।
প্রয়োজনে প্রশাসনে বিশেষতঃ প্রতিটি সরকারী দপ্তরে দীর্ঘমেয়াদী দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালানো যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে দুদককে আরো স্বাধীন ও শক্তিশালী করে এ কাজের দায়িত্ব দিলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি ছাত্রসংগঠন এবং রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনপ্রদানের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলসহ স্থায়ী/অস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধকরণের শর্তও আবিশ্যিকভাবে জুড়ে দেয়া জরুরি।
সন্ত্রাস প্রমাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠন বা রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা উচিৎ। অন্যথায় সন্ত্রাস বা দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড ব্যতিরেকে আধুনিক যুগে বহুদলীয় একটি গণতান্ত্রিক দেশে দলনিষিদ্ধের অন্যকোন যুক্তিযুক্ত কারণ থাকা উচিৎ নয়।
বর্তমান ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক যুগে প্রকাশ্যে সংঘটিত কোন ঘটনার তথ্যগোপন রাখা খুবই কঠিন ব্যাপার। স্যাটেলাইট চ্যানেলে বিশ্বে যা-ই ঘটুক না কেন, তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে অনলাইন মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়ায়। আর অনলাইনে সার্চ দিলেই ঘটনার ছবি-ভিডিওসহ বিস্তারিত তথ্য পেতে এখন বেগও পেতে হয়না। এই ব্লগেও এই পদ্ধতিতেই বেশীর ভাগ তথ্য-প্রমাণ, ছবি-ভিডিও ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে।
তাই বাংলাদেশের মতো ছোট্ট দেশের ছাত্রসংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডও এখন আর চাপা থাকেনা। কে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, কে নয়, কে কতটুকু জড়িত বা জড়িত নয়, তা আজকাল মিডিয়ায় প্রকাশ হতেই বাধ্য। তাই কোনটি সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠন বা কাকে সেই অপরাধে ব্যান করা উচিৎ এ সিদ্ধান্ত নেয়া ইদানিং খুবই সহজ।
এসব ছাত্রসংগঠনের পরস্পরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ অথবা বাস্তবতাবর্জিত হলুদ সাংবাদিকতাভিত্তিক কিছু মিডিয়ার উদ্দেশ্যমূলক ও একপেশে সংবাদ পরিবেশনের ভিত্তিতেই প্রকৃত সত্যাসত্য নির্ণয় করার মত মানদন্ডকে আমলে নেয়ার মত বোকামী আজকাল কেউই করবেনা এবং সে অবকাশও নেই।
আমার মতে, ১৯৭১ এর আগে ও পরে সৃষ্ট ছাত্রসংগঠনগুলো কর্তৃক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সত্যাসত্যের ধারাবাহিকতা মূল্যায়নের মাধ্যমেই সন্ত্রাসী প্রমাণিত ছাত্রসংগঠনকে আইনতঃ ব্যান করা যায়। রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও একথা খাটে। চাইলে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটিগঠনের মাধ্যমেও প্রকৃত সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠন আর জড়িত সন্ত্রাসীদের সনাক্তকরণের মাধ্যমে শাস্তি দিলে দেশের উন্নতি বৈ ক্ষতি হবেনা। এক্ষেত্রে কারো অতীত বা একটি নির্দিষ্ট সময় বা কাজের সুনামকে মূল্যায়নের কোন সুযোগ থাকা উচিৎ নয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বা আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ কোন সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে সেই তদন্তরিপোর্টের আলোকেই একাজ করা হবে যুক্তিযুক্ত এবং প্রশ্নাতীত। কারণ এদেশে ছাত্রসংঘর্ষের বা ছাত্রসংগঠনগুলোর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্তকমিটির কোন রিপোর্টেই আজ পর্যন্ত আলোর মুখ না দেখায় কোন সরকারের ওপরেই আজ আর কারুর আস্থা নেই। মূলতঃ এবং দৃশ্যতঃ সরকারী ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসের তথ্যপ্রমাণ মিডিয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও তাদের বিচার বা শাস্তি হবার ইতিহাস এদেশে নেই বলেই কোন সরকারের প্রতি মানুষ আর আস্থা পায়না।
তবে এটা ঠিক যে, সরকার চাইলেই নিরপেক্ষতার প্রশ্নে বিচারবিভাগীয় তদন্তকমিটি গঠনের মাধ্যমে একাজটি সহজেই করা যায়, যা হতে হবে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত।
যাহোক, এই ব্লগটি হচ্ছে--প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সন্ত্রাসে জড়িত ছাত্রসংঠনগুলোর তথ্যপ্রমাণসমূহের নিরপেক্ষ এক সংকলন। বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর ন্যায় তথ্যপ্রমাণ ব্যতীতই কোন দলকে সন্ত্রাসীর তালিকাভূক্তকরণ আবার নিজ স্বার্থের কারণে সন্ত্রাসী সংগঠনকে সাদা তালিকাভূক্তকরণের মত হাস্যকর থিউরিতে আমরা বিশ্বাস করিনা।
সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদা এবং লাদেনরা তাই তাদের কাছে কখনো হয়ে যায় বিশ্বস্ত বন্ধু আবার স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটলেই বনে যায় মহাসন্ত্রাসী দল। তবে সন্ত্রাসে জড়িত দল বা ব্যক্তি সংশোধিত হয়ে গনতান্ত্রিক পথে চললে তাকে সমর্থন করতেও আমাদের আপত্তি নেই।
বিশদ জানতে এখানে যান
বিষয়: বিবিধ
১০৯৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন